www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

লোকায়ত রবীন্দ্রনাথ (8)

(পরবর্তী অংশ)
লোকায়তের যে দুটি বৈশিষ্ট্য এখানে ফুটে উঠেছে সে দুটি হলো-1) উলটো-বাঁশি ভাষা যাতে বলা হয়েছে "যাইবি দক্ষিণে বলিবি বামে"।যাতে যারা সাধনপথের অংশীদার নয় তাদের প্রতিহত করা যায়।2)যা জল তাই পানি।নাম বদলালেও
গুণের কোনো পরিবর্তন ঘটে না।তাই তালাকে চাবি বা চাবিকে তালা বললে তাদের গুণের কোনো পরিবর্তন হয় না আবার
অধিকাংশ শিক্ষিতজনকে প্রতিহত বা বিভ্রান্ত করা যায়।সেদিক থেকে বিচার করলে রবীন্দ্রনাথ শুধু বাউলপ্রেমিক নন ক্রমশ একজন বাউলসাধক হয়ে উঠেছিলেন।এবার দুটি তিক্ত প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া যেতে পারে।1)1922 সালে শান্তিদেব ঘোষের পিতা কালীমোহন ঘোষকে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন-"তুমি তো দেখেছ,শিলাইদহতে লালন সা ফকিরের শিষ্যগণের সহিত ঘন্টার পর ঘন্টা আমার কিরূপ আলাপ জমিত।তারা গরীব।পোষাক-পরিচ্ছদ নাই।দেখলে বোঝবার জো নাই তারা কত মহৎ।.....", সেই রবীন্দ্রনাথ কেন 1939 সালে লালনজীবনী রচনার সাহায্যার্থে বসন্তকুমার পালের চিঠির জবাবে তাঁর সচিব সুধীরচন্দ্র করকে দিয়ে লেখাবেন,"ফকির সাহেবকে তিনি জানতেন বটে কিন্তু সে তো বহুদিন আগে,বুঝতেই পারেন এখন সেসব সুদূর স্মৃতির বিষয় তাঁর মনে তেমন উজ্জ্বল নয়।"?2) ছেঁউড়িয়ার আখড়া থেকে যে খাতা তিনি এনেছিলেন সে সম্পর্কে তিনি আজীবন চুপ ছিলেন কেন? উত্তরগুলি হলো-1) রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে লালনের কোনোদিন সাক্ষাৎ ঘটেনি তাই লালনজীবনী রচনা বিষয়ে তাঁর কোনো দৃঢ় তথ্য দেওয়া সম্ভব ছিলনা।2) রবীন্দ্রনাথ আজীবন সন্ধান করেছেন এমন কাউকে যাকে এই গানের সম্ভার অর্পণ করা যায়,কিন্তু পাননি।তাই "আপন সাধন কথা না কহিও যথা তথা" আপ্ত-সাবধান মনে রেখে তিনি চুপ থেকেছেন আর ইতিহাস সবার অলক্ষ্যে ভাবীকালের কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছে লালনের গান ও ভাবাদর্শকে বহন করার দায়িত্ব;একই সঙ্গে তুলে দিয়েছে লোকায়ত দর্শনের মশাল যার আলোয় গভীর নির্জন পথে তারা খুঁজে নেবে পূর্বসূরীদের পদচিহ্ন। (সমাপ্ত)
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৪৩৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/১১/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast