www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

প্রবাসীদের রেখে যাওয়া দেশের সংসার এবং বাস্তবতা

যাদের চুলকানি এবং অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তারা আমার লেখা থেকে দূরে থাকেন । আমি সুশীল না, আমার লেখার ভাষাও যথেষ্ট মার্জিত না ! তাই নিজ দায়িত্বে পড়বেন ।
• বাল্যবিবাহ এবং স্বল্প সময়ের জন্য বিদেশ ফেরত ছেলেদের কাছে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার বিপক্ষে সবসময়ই আমার অবস্থান ।

• একটা মেয়ের বিয়ে উপযুক্ত হতে যেমন তারা শারীরিক গঠন প্রয়োজন, ঠিক তেমনি তার মানসিক গঠনও প্রয়োজন । বিয়ের পর কোন মেয়ে গৃহিণী হোক বা চাকরিজীবী, সে একটা পরিবারের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত । তার কাঁধে একটি পরিবারের দায়িত্ব চলে আসে ।
• সে যদি বুঝতেই না পারে এই দায়িত্ব সে কিভাবে পালন করবে, কিভাবে একটা পরিবারকে আগলে রেখে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আগামীর জন্য পথচলা শুরু করবে, তাহলে তার জন্য সাংসারিক জীবনের দিনগুলো পার করা কষ্টের হয়ে পড়ে ।
• আমাদের সমাজ,পরিবার এবং সাংসারিক জীবনের বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য করণীয় বিষয়গুলো তার নিজের মধ্যে আয়ত্ব করতে তাকে বিয়ের পূর্বে যথেষ্ট সময় দেওয়া উচিত ।
• মেয়ের বাবা-মা মেয়েকে বিয়ে দিতে পারলেই যেন চিন্তা মুক্ত হন ! কিন্তু বিয়ে দেওয়ার আগে মেয়ের মতামত বা মেয়ের স্বপ্ন,ভবিষ্যৎ ভাবনা, তার ইচ্ছাগুলোর দিকে মোটেও দৃষ্টিপাত করেন না । এমনি কি বিয়ের ব্যাপারে তাদের সাথে আলোচনা পর্যন্ত করেন না ।
• কিছু কিছু মেয়ের বাবা যদি শুনে ছেলে বিদেশ থাকে তাহলে কোন কিছু বাছবিচার না করেই মেয়ে বিয়ে দেওয়ার জন্য রাজি হয়ে যান । ভাবেন, ছেলে যেহেতু বিদেশে থাকে, ছেলের অনেক টাকা-পয়সা আছে, বিয়ে দিলে মেয়ে সুখেই থাকবে, তার কোন কষ্ট থাকবে না, পরিবারে অভাব অনটন থাকবে না । যথারীতি মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন, একবার খোঁজও নেন না ছেলে বিদেশে কিসের চাকরি করে ! বিয়ের পরেই শুরু হয় সংসার। কিন্তু বিয়ের আমেজ বা আনন্দ কাটতে না কাটতেই বেজে উঠে বিদায়ের সুর । ছেলে বিয়ে করতে আসছিলো, বিয়ে করা শেষ, বংশের প্রদীপ জ্বালানোর জন্য বীজ বপন করাও হইছে, ছেলের বাবা-মা কে দেখার জন্যও একজনকে পার্মানেন্ট ভাবে পাওয়া গেছে,এখন বিদেশ গিয়ে নিশ্চিন্তে থাকা যাবে !
• কিছু দিন পর সুখবর আসে ছেলের বপন করে যাওয়া বীজে চারা গজাবে । চারিদিকে আবার উৎসবমুখর পরিবেশ,সবাই ব্যস্ত যে যার কাজ নিয়ে । বছর যেতে না যেতেই চারা গজায়, চারা গাছ পৃথিবীর আলো দেখে । একটু একটু করে বড় হতে থাকে । কিন্তু গাছের বাপের দেখা নাই ! দেশে ফেরার নাম নাই ! শুধু মাস শেষে কিছু টাকা পাঠিয়েই যেন তার যেন দায়মুক্তি !
• কেউ কি কখনও ঐ মেয়েটার মনের কথা একবারও ভেবে দেখেছেন, বিয়ের ১৫ দিন বা ১মাস পর স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকে প্রতিটা দিন, প্রতিটা রাত কিভাবে সে পার করেছে,কতোটা বিষণ্ণতার মধ্যে দিয়ে সে দিনগুলোকে অতিক্রম করছে, আর অপেক্ষা করছে তার ফিরে আসার ! বিলেত ফেরত সেই ছেলে কখনো কি তার স্ত্রীর গর্ভধারণের সময় থেকে বাচ্চা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তার পাশে থেকে তাকে সাহস যুগিয়েছে ? তার পাশে থেকে তার ব্যাথা কি কখনো অনুভব করেছে ? তাহলে সন্তান হবার খবর শুনে সে কিভাবে পিতা হবার আনন্দ উপলব্ধি করবে ?
• অতঃপর সন্তান বড় হয়ে গেছে ( প্রায় বছর ২ পর ) তখন আবার তার দেশে প্রত্যাবর্তন ঘটে । সন্তানের মা, দাদী তখন সন্তানের সাথে বাবার পরিচয় করিয়ে দেয়, এই দ্যাখ তোর বাবা, তোর বাবা আসছে ! কতো গৌরবের এই পিতৃপরিচয় !
• ১-২ মাসের ছুটি নিয়ে ছেলে দেশে এসেছে, সকল আত্মীয় স্বজন দেখা করা, তাদের বাড়ীতে বেড়াতে বেড়াতেই ছুটি প্রায় শেষ,যাওয়ার পূর্বে আবারও একই কর্মপদ্ধতি,একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ! আরও একটা সন্তান জন্মদানের জন্য বীজ বপন করে বিদেশ গমন !
• এরই নাম কি বিয়ে ! এটাই কি মেয়ের জন্য মেয়ের বাবার স্বপ্নে দেখা সেই সুখের সংসার ! এটাই হচ্ছে প্রবাসীদের দেশে রেখে যাওয়া সংসার ! সন্তান জন্মদান একটা মাধ্যম হওয়া ছাড়া আর কি পেয়েছে ঐ মেয়েটি এই বিয়ের মাধ্যমে ?
• বিদেশের চাকরি-বাকরির পাঠ চুকিয়ে যখন ছেলে দেশে ফিরে আসেন তখন তার পড়ন্ত বয়স, আর মেয়েটির তখন আর নিজের জন্য কোন ভাবনা চিন্তা বা স্বাদ আহ্লাদ বলতে জিনিসগুলা থাকে না । তখন তার জীবন হয়ে যায় তার সন্তাদের জীবন । তার ভাবনার সকল কিছুই তার সন্তানদেরকে ঘিরে আবর্তিত হয় । জীবনটাকে উপভোগ করার সুযোগই সে কখনো পায় না !
• প্রায় প্রতিটা প্রবাসীর রেখে সংসারের চিত্রনাট্য একই রকম । স্বামী বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ের মধ্যে যদি ঐ মেয়ের নৈতিক চরিত্রের অবক্ষয় হয় এবং সে কোন অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়,তাহলে সে জন্য তখন দায়ী কে থাকবে ? মেয়ের বাবা-মা, নাকি ঐ মেয়ের স্বামী ? কারন জৈবিক চাহিদাকে আপনি কখনোই এড়িয়ে যেতে পারবেন না !
• এইসব ঘটনার পরও আরও অনেক ঘটনা থাকে, যেগুলো ঘটনা গুলোকে আরও বেদনাদায়ক করে তোলে । যখন পত্রিকার কোন খবরের শিরোনাম এমন হয় --মেহেদির রং মোছার আগেই স্বামীহারা
বিয়ের পর কয়টা দিন দুজন একসাথে কাটিয়েছে এই মেয়েটি কেউ কি বলতে পারেন ? এখন তার ভবিষ্যৎ কি কেউ কি বলতে পারেন ?
• জন্ম-মৃত্যু আমাদের হাতে নেই । মৃত্যু যখন তখন সেখানে সেখানে হতে পারে । কিন্তু মৃত্যু আমাদেরকে আলাদা করার আগেই আমরা আলাদা হয়ে যাচ্ছি । বিয়ের মেহেদির রং মিশে যাওয়ার পূর্বের এই অল্প দিনগুলাও কি সে দেশে থাকতে পারতো না ! যদি দেশে থাকতে না-ই পারে, তবে এই অল্প কয়েক দিনের জন্য বিয়ে করার কিইবা দরকার ছিল ?
• এই ধরনের বিয়ে গুলো কি একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট নয় ? অবিভাবকদের ভুল সিদ্ধান্তের কারনে আর কতো মেয়েকে এইসব কুলাঙ্গারদেরকে বিয়ে করতে হবে ? ১৫ দিন বা ১ মাসের জন্য বিয়ে করতে আসা কুলাঙ্গারদেরকে সামাজিক ভাবে প্রতিহত করা দরকার । বিয়া যদি করতেই হয়, তাইলে বিদেশ যাওয়ার সময় সাথে করে স্ত্রীকেও নিয়ে যেতে হবে । যদি সেটা করতে না পারে তাহলে তার কাছে মেয়ে বিয়ে দেবার দরকার নাই । কারন আপনার এই সিদ্ধান্তের কারনেই একটা মেয়ে হয়তো চরিত্রহীন হবে, নতুবা তার জীবন বিষণ্ণতায় ছেয়ে যাবে ! আর এই আবাল কুলাঙ্গারের দল এতো বছর যখন অবিবাহিত থাকতে পারছে, তবে ১৫ দিনও বিয়া না কইরা থাকতে পারবে ।
• কেউ যদি বল্লার বাসায় গুতা দেয়, তবে বল্লায় তাকে কামড়াইবে নিশ্চিত । আর যদি সে গুতা দিয়া স্থান ত্যাগ করে তবে, বল্লার বাসার কাছ থেকে যে যাইবে বল্লায় তাকেই কামড়াইবে । এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী কে ? যে বল্লার বাসায় গুতা দিছে সে, নাকি যে চলার পথে কামড় খাইছে তার ?
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৯০০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/০৫/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সামসুল ইসলাম ২১/০৫/২০১৪
    এমন ঘটনা অহরহ ঘটতেছে জে, প্রবাশীর বধূ পাশের বাড়ির ছেলের সাথে অবৈধ সম্পর্ক, হাত ধরে পলায়ন। দোষারোপ করা হয় নারীকে। কিন্তু কেউ কি চিন্তা করে দেখেচেন যে, বিয়ের ১ মাস পর ছেলে বিদেশ পাড়ি দেয়োয়ার পর মেয়েতি তার যৌবন কীভাবে কাটাচ্ছে। আর ছেলে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর থাকছে, মেয়েটাকে কার কাছে দিয়ে যাচ্ছে?
  • অমর কাব্য ১৫/০৫/২০১৪
    সুন্দরতা নীবার
  • কবি মোঃ ইকবাল ১৩/০৫/২০১৪
    "সংবাদ" বিভাগে
    "এডমিন এবং ব্লগারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি" নামক একটি ব্লগ লিখেছি। যেখানে "তারুণ্য"কে কীভাবে আরো জমজমাট ও জনপ্রিয় করে তোলা যায় তার জন্য সকল ব্লগারদের মূল্যবান মতামত চাওয়া হয়েছে। উক্ত ব্লগে এডমিন নিজেই আমাদের অর্থাৎ সকল ব্লগারদের মতামত চেয়েছেন।
    তাই আশারাখি উক্ত ব্লগটি পড়বেন এবং আপনার মূল্যবান মতামত প্রকাশ করবেন।
    আপনার তথা সকল ব্লগারদের সহযোগিতা একান্ত কাম্য।
    ভালো থাকবেন নিরবধি।
 
Quantcast