www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

আশা

গ্রামের নাম পলাশপুর। সদ‍্য বড় বাজার হওয়ার পথে রোজই বেড়ে উঠছে। সে অনেক বছর আগের ঘটনা। পলাশপুরে এসেছে সার্কাস। প্রতিদিন সার্কাসে উপচে পড়া ভিড়। পশুর খেলা দেখারই আগ্রহ বেশী। হাতি, বাঘ, সিংহ, জলহস্তি, গন্ডার, টিয়া, ময়না, কুকুর ঘোড়া, বানর সব পশুরই খেলা দেখানো হয়। এত পশুর ভিড়ে একটা হাড্ডিসার গাধাও ছিল। সার্কাসের খেলায় তার কোন ভূমিকা নেই। তবু আছে। এই গাধা প্রতিদিনই সার্কাসের তাঁবুর বাইরে সবুজ মাঠে চরে খায়। মাঠে চরতে গিয়েই এক গৃহস্থের নাদুস নুদুস নধর গাধার সাথে তার বন্ধুত্ব হয়। বন্ধুত্ব ক্রমেই গাঢ় হয়। একদিন গৃহস্থের গাধা সার্কাসের গাধাকে বলে বন্ধু তুমি সার্কাসে ভালই আছ। কত দেশ ঘুরতে পাও, আর আমার বন্দী জীবন! সার্কাসের গাধা বলে, না বন্ধু, আমার কষ্টের জীবন। প্রচন্ড খাটিয়ে নেয়, খেতে দেয়না। না হলে আমার শরীর ভেঙে পড়বে কেন? বন্ধুর দুঃখের কথা শুনে গৃহস্থের গাধা বলে যে তুমি সার্কাস ছেড়ে চলে এস। মনিবকে বলে তোমার একটা কাজ জুটিয়ে দেব। দুজনে মাঠের ঘাস খাব আর একসাথেই থাকব। শুনে সার্কাসের গাধা বলে চলে আসতে মন চায়, কিন্তু একটা প্রত‍্যাশায় আসতে পারিনা। গৃহস্থের গাধা বলে কী সেই প্রত‍্যাশা, সার্কাসের গাধা উত্তর দেয়, তুমি একদিন ছুটি নিয়ে সার্কাস দেখতে এস বলব।
গৃহস্থের গাধা ছুটি নিয়ে সার্কাসের গাধার দৌলতে ফ্রী তে সার্কাস দেখছে। মন উসখুস করছে বন্ধুর সার্কাস ছেড়ে না যাওয়ার কারন জানতে। এমন সময় বারের খেলা শুরু হয়েছে। একটা সুন্দরী তন্বী হাতে বাঁশ নিয়ে তার বেয়ে উপড়ে উঠছে। কোনক্রমে যেন পড়ে না যায় তার সব ব‍্যবস্থায় করা আছে। রিং মাষ্টার নীচে দাঁড়িয়ে বলছে, এই মেয়ে তুই যদি পড়িস্ তাহলে গাধার সাথে তোর বিয়ে দেব। অবশ‍্য রিং মাষ্টার প্রতিদিনই একই কথা বলে, মেয়েটি পড়েনা কোনদিনই।
সার্কাসের গাধা এবার মুখ খোলে। বলে বন্ধু কিছু বুঝলে ? আমি শুধু এই অপেক্ষায় আছি কবে মেয়েটি পড়বে আর আমার সাথে বিয়ে হবে। এই আশাতেই আমি সার্কাস ছাড়তে পারিনা। গৃহস্থের গাধা হতবাক দাঁড়িয়ে যায়।




রচনাকাল............২৩/০৫/২০১৮
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ২৮৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৬/১০/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast