www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

সর্বজনগ্রাহ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধিমালাতে আমূল পরিবর্তন

আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিধিমালা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এ (আরপিও) -তে বড় ধরনের সংস্কার আনা হচ্ছে। নির্বাচনে পেশীশক্তির দমন, কালো টাকার অবাধ ব্যবহার রোধ, সর্বোপরি অবাধ, প্রভাবমুক্ত ও সর্বজনগ্রাহ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনেই এই বিধিমালাতে আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বিদ্যমান আরপিওর ২৭টি ধারার ৩৫টি অনুচ্ছেদে সংযোজন-বিয়োজন এবং সংশোধন ও বিলুপ্তির লক্ষ্যে প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সংযোজন হবে ২১টি, বিয়োজন হবে ৩টি, সংশোধন হবে ৭টি এবং অপ্রয়োজনীয় ৪টি অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির সুপারিশ করা হয়েছে। গত রোববার একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী দেড় বছরের কাজের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (সিইসি)। ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরো অর্থবহ এবং সহজ করতে আইনি কাঠামোয় কতিপয় যুগোপযোগী ধারণা প্রবর্তন দরকার বলে মনে করছে সংস্থাটি। সে ধারণার আলোকেই, বিদ্যমান আরপিওর ২৭টি ধারার ৩৫টি অনুচ্ছেদে সংযোজন-বিয়োজন এবং সংশোধন ও বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে। ইসির প্রকাশিত রোডম্যাপে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘পরিবেশ-পরিস্থিতির পরিবর্তনের মুখে আইনগুলো আরো যুগোপযোগী করার সুযোগ রয়েছে। যাতে ভোট প্রক্রিয়া আরো সহজতর ও অর্থবহ হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও নির্বাচন পরিচালনা বিধি অনুযায়ী ‘পোস্টাল ব্যালটে’ ভোটে দেয়ার প্রক্রিয়াটি জটিল। বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরতদের সহজ পদ্ধতিতে ভোট দেয়ার কাঠামো বের করা প্রয়োজন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীর গেজেট প্রকাশ নিয়ে বিধিতে অস্পষ্টতা রয়েছে। এটি দূর করতে হবে। এতে বলা হয়েছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে এ পর্যন্ত দু’শতাধিক সংশোধনী আনা হয়েছে। এ আইনটি যুগোপযোগী করতে আরো সংস্কারের প্রয়োজন। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও সীমানা পুননির্ধারণ অধ্যাদেশ বাংলা ভাষায় রূপান্তর করা গেলে ভোটার, প্রার্থী ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবার কাছে সহজবোধ্য হবে বলে মনে করছে ইসি। সীমানা পুনর্বিন্যাসে নতুন প্রশাসনিক এলাকা ও বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোকে নিয়ে নির্বাচনী এলাকা পুননির্ধারণেরও প্রস্তাব রয়েছে কমিশনের। এদিকে ইসির সুপারিশ করা প্রস্তাবনার মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে এবং কমিশনের নিরপেক্ষতার নিমিত্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিলমারা কিংবা কেন্দ্র দখলের অপচেষ্টা বানচালের স্বার্থে সংশ্লিস্ট কেন্দ্রের ভোট বাতিলের জন্য রিটার্নিং অফিসারের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া রাজনৈতিক সরকারের অধীনে চাকরিরত আমলাতন্ত্রকে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ থেকে মুক্ত রাখতে চাকরি থেকে অবসরের পর বর্তমানে উল্লেখিত ৩ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে প্রার্থীতার জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা, প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের জন্য ব্যালটে ‘না’ ভোটের বিধান প্রবর্তন করা, আচরণবিধি দেখভালে ইসির কর্মকর্তাদের বিচারিক ক্ষমতা দেয়া (বিদ্যমান ম্যাজিস্ট্রেটদের বদলে ইসির কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা), ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী দু’জন প্রার্থীর ভোটের ফল সমান হলে বিদ্যমান লটারি প্রথা বাতিল করে পুনঃভোটের বিধান যুক্ত করা, স্থানীয় নির্বাচনের মতো সংসদ নির্বাচনেও প্রার্থীর মনোনয়নপত্র অনলাইনে জমা দেয়ার বিধান সংযোজন করা এবং নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর দেয়া ব্যয়ের হিসেবে স্বচ্ছতা ফেরাতে বিদ্যমান জরিমানা ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১ লাখ টাকা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। প্রস্তাবনা সমূহ বিবেচনায় আনা হলে আগামী নির্বাচন আরো গ্রহণযোগ্য, অবাধ, প্রভাবমুক্ত ভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলেই সংশ্লিষ্ট সকলের প্রত্যাশা।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৬০৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২০/০৭/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast