www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর যাত্রা

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সংযোজিত হলো বহুল প্রত্যাশিত দুটি আধুনিক সাবমেরিন ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’। এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করল। এভাবেই সাবমেরিন যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। সাবমেরিন দুটি আনুষ্ঠানিকভাবে নৌবহরে কমিশনিং করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। সাবমেরিন দুটির অধিনায়কদের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেয়া দিয়ে নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী আনুষ্ঠানিকভাবে নামফলক উন্মোচন করা হয়। ‘বিএনএস শেখ হাসিনা’ নামে একটি ঘাঁটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। যা হবে বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ সাবমেরিন ঘাঁটি। চীন থেকে সংগৃহীত সাবমেরিন দুটি কনভেনশনাল ডিজেল-ইলেকট্রিক ধরনের সাবমেরিন, যার প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার ও প্রস্থ ৭.৬ মিটার। এর সর্বোচ্চ গতি ঘন্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল এবং ডিসপ্লেসমেন্ট ১,৬০৯ টন। টর্পেডো ও মাইন সজ্জিত এই সাবমেরিন দুটি শত্রু জাহাজ ও সাবমেরিনে আক্রমণ করতে সক্ষম। সাবমেরিন যুগে প্রবেশের ঘটনা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও আমাদের নৌবাহিনীর সাবমেরিন ছিল না। অত্যাধুনিক এই সাবমেরিন যুদ্ধ জাহাজ আমাদের নৌবাহিনীর সক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়েছে। আক্ষরিকভাবেই এখন বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিশ্বের মাত্র গুটিকতক দেশ সাবমেরিন পরিচালনা করে থাকে। সেই তালিকায় আজ বাংলাদেশের নাম স্থান পাবে। এটি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার। বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে যা ফোর্সেস গোল-২০৩০ অনুযায়ী বাস্তবায়িত হবে। ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী গঠনের লক্ষ্যে প্রথম ধাপ ছিল নৌবাহিনীর জন্য আকাশসীমা উন্মোচন। বর্তমান সরকারের আমলে হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট নিয়ে গঠিত হয় নেভাল এভিয়েশন। শীঘ্রই এতে আরো মেরিটাইম এয়ারক্রাফট ও অত্যাধুনিক সমরক্ষমতা সম্পন্ন হেলিকপ্টার সংযোজিত হবে। এর ফলে বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্বল্প সময়ে বিশাল সমুদ্র এলাকায় টহল এবং পর্যবেক্ষণ সক্ষমতা অর্জন করেছে যা সমুদ্রসীমা ও সমুদ্র সম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে সংযোজিত সাবমেরিন দুটি দেশের সঙ্কটময় মুহূর্তে আত্মরক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। এর পাশাপাশি বহিঃশত্রুর আগ্রাসন হতে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে সাবমেরিন দুটির অভূতপূর্ব সক্ষমতা রয়েছে। নৌবাহিনীর বহরে সাবমেরিন অন্তর্ভুক্তির ফলে দেশের জলসীমায় সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সার্বিক সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি তেল, গ্যাস অনুসন্ধানের ব্লকসমূহে অধিকতর নিরাপত্তাসহ সার্বিকভাবে দেশের ব্লু ইকনমি উন্নয়নে এই সাবমেরিন দুটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৫৯১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/০৩/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast