www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

অসমাপ্ত প্রেম আর অপেক্ষার ভালোবাসা (নাটক)

সকাল ৮টা বাজে। কনকনে শিতে কম্বল মূড়া দিয়ে নিশ্চিন্ত  মনে আচ্ছামত মূমচ্ছে তুষার । সাথে ছিল কোল বালিশ। আর মাথার পাশে বালিশের সাথেই রাখা ছিল
মোবাইলটা। তুষার ঘুমের মধ্যেই ডান দিক থেকে বাম দিকে ঘুরে কাত হয়ে শুতে নিচ্ছিল আর তখনই তার মোবাইল টা বেজে ঊঠল। মোবাইলের আওয়াজ শুনে
কম্বলের ভিতর থেকে বিরক্তিকর ভাব নিয়ে মাথাটা বের করলো সে।এতো সকালে কে ফোন দিলো বলতেই ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে তণ্যির ফোন। ফোনটা ধরেই
তুষার      ঃ        কিরে তুই এতো সকালে দিলিতো আরামের ঘুমটার বারোটা বাজিয়ে।
তণ্যি       ঃ       এখন কটা বাজে আর তুই এখনো ঘুমাচিছস। যা হোক তোকে তো গুড মরনিং টাই জানানো হয় নাই যা গুড মর্নিং।
তুষার      ঃ       গুড মর্নিং।
ত’ষার গুড মর্নিং জানাতেই
তণ্যি       ঃ        ডিয়ার আপনার জন্য একটা হট এন্ড গুড নিঊজ আছে কি শুনবে?
তুষার শোয়া থেকে ঊঠে কমবল পেচিয়ে বসলো।
তুষার ঃ কি খবর বল। অনেক দিন ধরে কোন ভালো খবর পাই না দে ভালো খবর টা দে। সকাল বেলা ভালো খবরটা শুনে দিনটাকে সুন্দর ভাবে শুরু করি ।
তণ্যি     ঃ         আরে মিঃ তোকে যে আমি গুড নিঊজটা দিবো তা তুমি আমাকে কি দিবা
তুষার      ঃ        আরে বল বল তুই আমাকে খবর টা বল তুই যা চাইবি আমি তোকে তাই দিয়ে দিবো। প্লিজ গুড নিঊজ টা বল।
তণ্যি      ঃ       বলবো? বলি শোন আমি তোমার হারানো প্রেমিকা তোমার জানের জান প্রানের প্রান ভালোবাসার মানুষের খবর পেযেছি।
তুষার      ঃ      তুই কার কথা বলছিস আমি তো কিছুই বুঝতে পারতেছি না।
তণ্যি       ঃ        বুঝতে না পারার ই কথা। ৫ বছর আগের কথা তো।
তুষার      ঃ        তার মানে?
তণ্যি       ঃ        আমি তোমার তিথির কথা বলছি।
তিথির নাম শুনতেই তুষার অবাক হয়ে যায় তার চেখের সামনে  ভেসে আসে তিথির হাজারো ছবি। কল্পনায় চলে আসে ৫ বছর অগের হারিয়ে যাওয়া তিথির সাথে
কিছু স্মৃতির কথা। ফোন কানে ধরেই হাসতে থাকে তুষার।
তণ্যি       ঃ        কিরে কি ব্যাপার কথা বলছিস না কেন? তণ্যির কথায় কল্পনা জগত থেকে ফিরে আসে তুষার ।
তুষার      ঃ      তণ্যি তুই সত্যি বলছিস?
তন্যি       ঃ      অবশ্যই।
তুষার      ঃ      ওহঃ তণ্যি জানিস আজ আমি মহা খুশি। আমি জানতাম আল্লাহ আমার সহায় আছেন আমার ভালবাসা একদিন না একদিন সত্যি হবেই, আমি
আমার আমার ভালবাসা কে খুজে পাবোই। দীর্ঘ ৫ বছর পর আজ আমার সে স্বপ্নই সত্যি হতে যাচ্ছে। ইয়াঃ হু আজ আমি মহা খুশি।
তণ্যি        ঃ         আরে মিঃ আপনি তো মহা খুশি এবার এই খুশির খবর টা দেওয়ার জন্য আমাকে কি দিবে?
তুষার       ঃ         ও হ্যা বল তুই কি চাস।আমি বলছি না তুই যা চাইবি আমি তোকে তাই দিবো।
তণ্যি        ঃ         আমি তো বেশী কিছু চাই না আমি চাই তোকে, বলে একটা হাসি দিয়ে ফোন টা রেখে দেয় সে।
তুষার একটু বিব্রত হয়।কিছু না বুঝে পাগল বলে সে ও ফোন রেখে বিছানা ছেড়ে সোজা বাথ রুমে চলে যায়। বাথ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হয় তার পর নাস্তা
সেরে ভার্সিটির ঊদ্দেশে বেগ নিয়ে বের হয়।
বাসা থেকে বের হতেই পকেট থেকে ফোনটা বের করে ফোন দেয় তণ্যি কে। ফোন দিয়েই
তুষার       ঃ         তণ্যি প্লিজ ওর ফোন নাম্বার টা আমাকে দে আমি ওর সাথে কথা বলবো প্লিজ।
তণ্যি বুঝেও না বুঝার ভাব করে বলে
তণ্যি        ঃ         কার ফোন নাম্বার?
তুষার ঃ আরে ওর মানে তণ্যির নাম্বার।
তণ্যি        ঃ         আসলে আমি আমার এক কাজিনের কাছে ওর খবর পেয়েছি আমি ওর ফোন নাম্বার টা এখনো কালেক্ট করতে পারিনি। তবে কোন সমস্যা
নাই অতি শীঘ্রই পেয়ে যাবো। জানিস শুনলাম ও নাকি দেখতে অনেক সুন্দর হয়েছে। আর জানিস ও নাকি আমদের একা ব্যাচ নিচে কারন ও নাকি আই.এ
একবার ফেল করেছে।
তুষার       ঃ         আই.এ কেন মেট্রিকে ফেল করুক একবার কেন দশ বার ফেল করুক তাতে কোন সমস্যা নাই আর সে সুন্দর হয়েছে তাতে ভালো তা না
হইলে ও কোন প্রবলেম ছিলো না প্লিজ তুই ওর ফোন নাম্বার টা জোগাড় কর আমাকে দে আমি ওর সাথে কথা বলবো প্রয়োজনে তুই ওদের বাড়ি যা গিয়ে নামবার
নিয়ে আয়।
তণ্যি        ঃ         হ্যা আমি ওদের বাড়ি যাবো তবে দোস্ত আজকে আর কালকে এই দুই দিন আমি যেতে পারবো না কারন এই দুই দিন আমার জরুরি
কাজ আছে। তবে হ্যা কথা দিচ্ছি পরশু দিন ঠিক ওদের বাড়ি গিয়ে আমি যে ভাবে হোক ওর নাম্বার যোগার করে এনে তোকে দিবো।
তুষার       ঃ         আবার পড়শু দিন।
তণ্যি        ঃ         দোস্ত পাড়লে আমি আজি ওদের বাড়িতে যাইতাম। জানিস ওকে দেখার জন্য আমার মনটা ও খুব ছটফট করছে শত হইলেও আমার
কনটেস্ট্যান্ট তো।
তুষার       ঃ         কি বললি বুঝলাম না।
তণ্যি        ঃ         তুই বুঝস না তোর বোঝার দরকার ও নাই। শুধু আমার চাওয়াটা আমাকে দিলেই হবে। বলেই ফোনটা কেটে দেয় তণ্যি।
এবার ও কিছু না বুঝেই ফেন রেখে দেয়। ফোন টা রেখে সে সোজা চলে যায় ক্যাম্পাসে। আজ আর ক্লাশ নয় সোজা ক্যাম্পাসের ক্যান্টিনে। সেখানে গিয়ে তুষার
তার সব বন্ধুদের মিষ্টি খাওয়ায় আর মনের সুখে গান গায় তবে কেঊ কারন জানতে চাইলে সে কিছুই বলে না। সেখানে জমিয়ে দেয় পাগলামির আসর। ক্লাশ টাইম
শেষে আড্ডা শেষ করে বাসায় ফিরে সে।

বাসায় আসতেই মাকে কাছে পায় সে। মাকে দেখে মাকে ধরে চুমু খায়।
মা           ঃ       (ছেলেকে বলে) কিরে এতো খুশি কি ব্যাপার কি হয়েছে?
তুষার       ঃ         কই মা কিছুই হয়নি তো। মা তাড়াতাড়ি খাবার দাও খুব খিদে পেয়েছে। বলতেই নিজের হাতে থাকা ফাইল টি নিয়ে সোজা চলে যায়
নিজের ঘরে।ঘরে গিয়ে হাতের ফাইলটি ফেলে রেখে তার নাচ আর গান শুরু হয়ে যায়।এদিকে মা টেবিলে খাবার বেরে নিচ থেকেই তাকে খাবার খেতে ডাকে।
মা           ঃ       কিরে খাবার খেতে আয়।
তুষার       ঃ         মা আমি এখন খাবো না আমার পেটে খিদে নাই।
মা           ঃ       সে কিরে এখনি তো বললি খুব খিদে পেয়েছে আর এখুনি বলছিস খিধে নেই।
তুষার       ঃ         মা ভূলে বলেছিলাম। তুমি রেখে দাও আমি পরে ঠিক লক্ষি ছেলের মতো খেয়ে নিবো।
নিজের ঘর থেকেই এসব কথা বলে তুষার। কতক্ষন পর হঠাৎ সে গান থামিয়ে দেয়। শুরু হয় তার বিভিন্ন প্লানিং।এতো দিন পরে তিথির সাথে দেখা হবে কি
পোষাক পরে যাবে। এই ভেবে তার সব পোষাক গুলো একটা একটা করে বের করে আর আয়নার সামনে দাড়িয়ে দেখে তাকে কেমন দেখা যায়। তিথী তাকে
চিনবে নাকি তার সাথে কথাই বলবে না। হাজারো প্রশ্ন উকি দেয় তুষারের মনে। এত বছর পরে তিথির সাথে দেখা হবে তাকে উপহার দিতে হবে। কি উপহার
দেওয়া যায়,কি পছন্দ করবে তিথি। এই সকল নানান প্রশ্ন আর চিন্তা ভাবনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে তুষার।
আর ওদিকে তন্যি তিথরি ঠিকানা মত যায় তিথিকে খুজতে। কিন্তু তন্যি ঠিকানা মত গিয়ে দেখে সেই বাড়িতে কেউ নেই। সেই বাড়ির গেইট লক।অবাক হয়ে যায়
তন্যি। সে আবার ঠিকানা মিলিয়ে দেখে এটাইতো সে বাড়ি ঠিকিতো আছে। এবার সে পাশের বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো
তণ্যি        ঃ         এ বাড়ির মানুষ জন কোথায়? এ বাড়িতে তালা কেন? এ বাড়িতে কি তিথি নামের কেউ থাকে?
লোকজন   ঃ  হ্যা থাকে আর তিথির বাবা যে ব্যাংকে চাকরি করেন,এ বাড়িতে সে ব্যাংকের চাকুরীজিবীরা থাকে। ব্যাংক থেকে তারা পিকনিকে গেছে তাই বাড়ি
তালা দেওয়া। আরও জানতে পারে তারা অনেক দুরে গেছে তাই দুই দিন পরে তারা আসবে। আপাতত এ খবর নিয়েই সেখান থেকে চলে আসে তন্যি।
বাড়িতে এসে তন্যি তুষারকে ফোন দিয়ে এসব কিছু জানায়। এসব কথা শুনে বিরক্ত বোধ করে তুষার। সে তন্যির সাথেই রাগ দেখায়।
তুষার       ঃ         কেন আজকে পিকনিকে গেল কেন আর দুই দিন বা ১সপ্তাহ পরে যাইতে পারলোনা,যত্তসব। যাই হোক আসবো কবে সেইটা কিছু জানস?
তণ্যি        ঃ         হ্যা জানি ওরা নাকি দুই দিন পরে তার মানে পরশু দিন আসবো। তা তুই দেশে আসবি কবে?
তুষার       ঃ         আমারতো এখনি আসতে মনে চাচ্ছে কিন্তু ভার্সিটিতে ২টা পরীক্ষা আছে।পরীক্ষা দুইটা দিয়া আমি ঠিক ৭দিন পরেই চলে আসবো আমার
জানকে দেখতে। আর তার আগেতো কথা হইবোই।
তণ্যি        ঃ         তুই আসার আগে তোর সাথে ওর কথা হইবো কিভাবে ?
তুষার       ঃ         আরে তুই আছসনা। তুই যাবি পরশু দিন ওদের বাড়িতে। তারপর ওর সাথে একসাথে হয়ে আমাকে ফোন দিবি ব্যাস।
তণ্যি        ঃ         ব্যাস হয়ে গেল। তুই তো বললি ব্যাস। কিন্তু আমি যে এত কষ্ট করে একবার গেলাম আর একবার যাব ভাল কথা। আমি যা চাইলাম তাতো
আমাকে দিলিনা।
তুষার       ঃ         তার মানে, তুই কি চাস?
তণ্যি         ঃ         (আস্তে করে) বললাম না তোকে। বলেই হাসি দিয়ে ফোনটা কেটে দেয়। কিছুই বোঝেনা তুষার।
তুষার বাসায় পরীক্ষার পরে দেশে যাবার খবরটা জানায় মাকে।
তুষার        ঃ         মা আমি আগামি সপ্তাহে দেশে যাবো।
মা            ঃ       কেনরে কোন কারণ ছাড়া হঠাৎ কেন দেশে যাবি?
তুষার ঃ অনেকদিন ধরে পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা দিতে দিতে কেমন যেন ক্লান্ত হয়ে গেলাম। তাই টায়ার্ডনেসটা কাটানোর জন্য একটু দেশে গিয়ে বেরিয়ে আসব।
মা           ঃ       ঠিক আছে তোর বাবার সাথে ফোনে জিজ্ঞেস করে তোকে জানাবো।
তুষার        ঃ         আর মা আমাকে এবার একটু বেশি টাকা দিতে হবে কিন্তু।
মা           ঃ       কেনেের বেশি টাকা দিয়ে কি করবি?
তুষার       ঃ         মা লাগবে প্লিজ।
মা           ঃ       তা কত লাগবে?
তুষার       ঃ         মা আমাকে দশ হাজার টাকা দিলেই হবে।
মা           ঃ       (রীতিমত চমকে উঠে) ১০০০০,এত টাকা দিয়ে কি করবি?
তুষার       ঃ         ও মাই ডিয়ার সুইট মম বলেই মাকে চুমু দিয়ে চলে যায় নিজের ঘরে।
কেটে যায় ২ দিন। তন্যি ২য় বারের মত যায় তিথির সাথে দেখা করতে। প্রথমে চিনতে একটু কষ্ট হয়েছিল দুজনের ই পরে অবশ্য সাথে সাথেই তারা একে অন্য
কে চিনে ফেলে। চিনার পর দু জনই তো আনন্দে আতœহারা। তণ্যি তিথি কে দেখ তো অবাক কারন তিথি প্রেগমেন্ট। তন্যি আর তিথি  নিজেদের মধ্যে কূশল
বিনিময় করে তিথি তার হাই স্কুল জিবনের সব বন্ধুদের খবর জেনে নেয়।
তণ্যি        ঃ         তিথি তা তোর স্বামী কি করে?
তিথি       ঃ       সে বাইরে থাকে।
দুই বান্ধবি কথা বলতেছে এমন সময় আরাই বছরের একটি ছেলে এসে মা মা করে তিথির কোলে চলে আসে।তণ্যি আরো অবাক হয়। তণ্যির অবাক হওয়া
দেখে তিথি বলে
তিথি       ঃ       অবাক হওয়ার কিছুই নেই ও আমার প্রথম সন্তান পর্ব।
তণ্যি        ঃ      (কোলে নিয়ে) ও তাই নাকি ও তো অনেক সুইট হয়েছে ঠিক তোর মতো।
স্বামী বাইরে থাকার কারনে তণ্যি এখন তার বাবা মায়ের সাথে এই বাড়িতেই থাকে। এক পর্যায়ে তণ্যি তিথির ফোন নাম্বার জানতে চায়।
তণ্যি        ঃ         তো ঠিক আছে তোর নাম্বার টা দে আর আমার নম্বারটাও রেখে দে।
তিথি       ঃ       আসলে আমি তো কোনো ফোন ইউজ করিনা। আর তোকে যে বাবার নাম্বার দিবো তাতে ও কোন লাভ হবে না কারন বাবা কে ফোন দিলে বাবা
আমাকে ফোন দিবে না বরং যে ফোন দিবে তার সাথে আরও খারাপ ব্যাবহার করবে। আজ বাবার জন্যই তো এ অবস্থা বলতেই কেদে দেয় তিথি। বাবা ই তো
আমাকে জোর করে একটি অশিক্ষিত ছেলের কাছে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেয়। আর সে জন্যই তো বিয়ে হয়েছে পাচ বছর যেতে  না যেতেই দুই বাচ্চার
মা। ভবিষ্যতে যে আরো কত বার মা হতে হবে বলতেই কান্না থেকে হেসে দেয় তিথি তণ্যি দু জনই।যা  হোক থাক এসব কথা থাক
তিথি       ঃ       মা আমাদের কিছু খেতে দাও
খেয়ে দেয়ে
তন্যি       ঃ       (তার নিজের  নাম্বার টা দিয়ে) ঠিক আছে আমার নাম্বার টা রাখ আর তুষার এর নাম্বার টা ও রেখে দে।
তিথি       ঃ       তুষারের নাম্বার তুই দিতে চাইলে আমি রাখতে পারি কিন্তু রেখে কোন লাভ হবে না। কারন কোন ছেলেকে ফোন দেওয়া আমার সম্পূর্ণ নিষেধ।
তার চেয়ে বরং তুই তোর নাম্বারটাই আমাকে দিয়ে যা তাতেই হবে।
কথা বার্তা শেষ করে সেখান থেকে চলে আসে তণ্যি।বাসায় এসে তুষার কে ফোন দেয়। ফোন দিয়েই
তণ্যি        ঃ         দোস্ত দেখা হইছে আমার প্রান প্রিয় বান্ধবি আর তোর জানের জান তিথির সাথে।
তুষার       ঃ         দোস্ত ও ভালো আছে? তুই ওরে আমার কথা বলেছিস,ও আমার কথা জিজ্ঞেস করেছে ? তিথি ও কি আমার মত আমাকেও অনেক
ভালোবাসে?ও হ্যা তুই কি ওর নাম্বার এনেছিস প্লিজ তোর সাথে কথা বলতে আর ভালো লাগছে না। তুই ওর নাম্বার টা আমাকে দে আমি ওর সাথে কথা বলবো।
প্লিজ তিথির নাম্বার টা দে।
তণ্যি        ঃ         দোস্ত এতো ব্যাস্ত হচ্ছ কেন? আমি তো তোমাকে সবি বলবো তবে এতো তাড়াতাড়ি না ধীর সে। তবে হ্যা আমি তোমাকে সবি বলবো তবে
তোমার আমাকে একটা কথা দিতে হবে।
তুষার ঃ  এইতো তোর একটা সমস্যা কোন কিছু বলার আগে শর্ত মানতে হবে তোর কথা রাখতে হবে। যাই হোক কি কথা বল তবে বেশি দেরি করা যাবে না।
তণ্যি        ঃ         দোষ বল আর গুন বল আমার সাথে তোমাকে কথা দিতে হবে যে এখন আমি তোমাকে যা বলবো তা তোমাকে মানতে হবে।
তুষার       ঃ         আচ্ছা বাবা তুই ব্যাপারটা কে এতো পেচাচ্ছিস কেন? সোজাসুজি বলে দিলেই তো হয়।
তণ্যি       ঃ         আমি সোজাসুজিই বলে দেই, আমার প্রতি তোর বিশ্বাষ আছে?
তুষার       ঃ          হ্যা আছে, কিন্তু বিশ্বাষ অবিশ্বাষের প্রশ্ন কেনো?
তণ্যি        ঃ         সেটা পরে শুনলে ও চলবে , তবে আমার প্রতি বিশ্বাষ আছে শুনে অনেক ভালো লাগলো।
তুষার       ঃ         তোর ভালো লাগলো এবার কথাটা বলে আমার ভালো লাগা।
তণ্যি        ঃ       বিশ্বাষ যেহেতু আছে সেহেতু আমি এখন তোকে যে কথা গুলো বলবো সে কথা গুলো একটু সিরিয়াস ভাবে নিবি আর ১০০% বিশ্বাষ করবি।
তুষার       ঃ         আহা তুই বলবি আর আমি সিরিআস ভাবে নিবো না! আর তার আগে বল তুই এতা ভাব নিচ্ছিস কেন? দেখ তোর ভাব দেখার মত সময় বা
মুড কোনটাই আমার নাই তুই আমাকে আসল কথা বল । তিথির নাম্বার দে আমি ওর সাথে কথা বলবো প্লিজ। আর তুই ভাবছিস তিথির কথা বলে দিলে আমি
তোর খোজ নিবো না।আমি তোর চাওয়া পূরন করবো না ।শোন তোর চিন্তার কোন কারন নেই তুই এখনি আমাকে বলতে পারিস তোর কি চাই আমি দিয়ে দিবো।
তণ্যি        ঃ         আমার চাওয়া মনে হয় এখন আমাকে আর চাইতে হবে না। এমনিতেই পেয়ে যেতে পারি।
তুষার       ঃ         আচ্ছা বাবা তুই চাইলে চা না চাইলে নাই আর পাইলে পা না পাইলে নাই। তুই তিথির কথা বল।
তণ্যি        ঃ         বাই দা ওয়ে তুই আমার সাথে আবার প্রোমিজ কর তুই ব্যাপারটা একদম ইজি ভাবে নিবি। আর তুই কোন পাগলামি করতে পারবি না।
তুষার       ঃ         আচ্ছা বাবা প্রোমিজ প্রোমিজ প্রোমিজ এবার হইছে তো? এবার বল।
তণ্যি ঃ সাহস করে তুষার কে তিথির বিয়ে বাচ্চা স্বামী সংসার ইত্যাদি ইত্যদি সব ব্যাপার খুলে বলে। প্রথমে তুষার হেসে দেয়। তাৎখনাত তুষার রেগে যায়।
তুষার       ঃ         তণ্যি তুই আমার সাথে ফাইজলামি করতাছস কেন? একটা ব্যাপার নিয়া তোরে আমার এতো রিকোয়েস্ট করতে হইবো কেন? আর তোরে
রিকোয়েস্ট করার পরও তুই আমার সাথে আসল কথা টা বলতে পারিস না, আসলে আমি বুঝলাম না তোর সমস্যা টা কোথায়?
তণ্যি        ঃ         হে ডিয়ার ডন্ট বি এক্্রাইটেড আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম আমার কথা গুলো সিরিয়াস ভাবে নিতে হবে আর আমার কথা ১০০% বিশ্বাষ
করতে হবে। আর আমি যখন তোমাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমার ঊপর তোমার বিশ্বাষ আছে কিনা তখন তুমি কি বলেছিলে?
তুষার       ঃ         আমি বলে ছিলাম বিশ্বাষ আছে তাই বলে তুই যা ইচ্ছা তাই বলবি আর আমাকে তাই বিশ্বাষ করতে হবে ?
তণ্যি        ঃ         আমি তোর সাথে ফাজলামি করতেছিনা।
তুষার       ঃ         তণ্যি তুই সত্যি করে বল তুই আমার সাথে মিথ্যা কথা বলতেছিস।
তণ্যি        ঃ         দোস্ত আমি সত্যি করে বলতেছি আমি তোকে যা বললাম তা একশো ভাগ সত্যি।
তুষার       ঃ         আচ্ছা ঠিকআছে বলে ফোন রেখে দেয়।
তুষার ফোন কেটে দেওয়া তে তণ্যি ভয় পেয়ে যায়। সে ভাবে এমন কঠিন খবর শুণে রাগে দূঃখে তুষার যদি কিছু করে ফেলে তাহলে কি হবে? একথা ভেবে তণ্যি
সাথে সাথেই তুষার কে ফোন দেয়। তুষার ফোন ধরে না । তন্যি আবার ফোন দেয় সে আবারো ফোন ধরে না বার বার ফোন দিলে তুষার ফোন অফ করে রাখে।
তণ্যি এতে করে আরো বেশি দূঃশ্চিন্তার মধ্যে থাকে।
এদিকে তুষার সারারাত ভাবতে থাকে কি হল এটা এত বছর পরে সে এটা কি শুনতে পেল? রাতে মা তাকে ভাত খেতে ডাকলে ভাত ও খায় না সে। রাত যখন
একটা বাজে তখন বিছানায় যায় শুইতে। শুইলে কি হবে ঘুম আসে না শুয়ে শুধু বিছানার এপাশ আর ও পাশ করে। ডিম লাইট জ্বালিয়ে সারা রূম শুধূ পায়চারি করে
আর চিন্তা করে। এভাবেই সারারাত কেটে যায় তুষারের।
তণ্যির ও নানা জলপনা কল্পনার মধ্যে কেটে যায নির্ঘুম একটি রাত।সারারাত সে তুষার কে ফোন দিতে থাকে আর সারারাত তুষারের নাম্বার বন্ধ পায় তবে
মোবাইল টা সারারাত তার হাতেই ছিল। সকাল হতে না হতেই তুষার তণ্যি কে ফোন দেয় তুষার। ফোন দিতেই
তণ্যি        ঃ         কি খবর তুষার কি হইছে তোর রাতে তোরে  এতোবার ফোন দিলাম আর তুই আমার ফোন রিসিভ করলি না তার পরে আবার মোবাইল বন্ধ
কি সমস্যা কি তোর? সারারাত আমার যে কি অবস্থা ছিল।
তুষার       ঃ         এমনিতেই মোবাইলে চার্য ছিলো না তো তাই।
তণ্যি        ঃ         আমি ভাবছিলাম ......
তুষার       ঃ         তুই কি ভাবছিলি ?
তণ্যি        ঃ         না কিছু না।
তুষার       ঃ         যাই হোক শোন কালকে তুই আমাকে যা বললি তা চিন্তা করে দেখলাম তোর কথা সত্যি না হয়ে মিথ্যা হওয়ার তো কোন কারন নাই।তিথির
বিয়ে হইছে তাতে কোন সমস্যা নাই বাচ্চা দুই টা কেন দুই ডজন হইলেও? কোন সমস্যা নাই আসলে এগুলো তো হওয়ার ই জিনিস না....।তা ও নাকি অসুস্থ ওর
এখন কি অবস্থা
তণ্যি        ঃ         সে শীঘ্যই তার দ্বিতিয় সন্তানের মা হতে যাচ্ছে। ডাক্তারের তারিখ অনুযায়ি আর মাত্র ৬ দিন বাকি।
তুষার       ঃ          তা হলে তো ভালোই হল ৬ দিন পরে আমি ই তো দেশে আসতেছি। সেটা যাই হোক তিথি না হয় কাঊকে ফোন দিতে পারে না তার
অনুমতি নাই কিন্তু তুই যখন ওর পাশে ছিলি তখন ও তো আমাকে ফোন দিতে পারতি? আমি ওর সাথে কথা বলতে পারতাম।
তণ্যি        ঃ         হ্যা আমি সেটাই চেয়েছিলাম কিন্তু ব্যাডলাক। তোকে ফোন দিতে গিয়ে দেখি আমার মোবাইলে ব্যালেন্স নাই । আমি আগে থেকেই টাকা
রিচার্য করে রাখছিলাম কিন্তু মোবাইলতো আমার ব্যাগে ছিলো তাই চাপ পরে ভূল নাম্বারে চলে যায় আর গেছে যেন কোন ইডিয়েটের নাম্বারে যতক্ষন পর্যন্ত টাকা
ছিলো ততক্ষন পর্যন্ত লাইন কাটে নাই যখন টাকা শেষ হয়ে গেছে এমনিতেই লাইন কেটে গেছে সে জন্য মিস কল দেওয়ার ব্যালেন্স ও ছিল না।তুুষার রাগ হয়ে
ভেরি সেড বলে ফোন টা রেখে দেয়।
তুষার চলে যায় ভার্সিটিতে। সে এখন জোর দিয়ে পড়ালেখা করছে আর ওয়েট করছে কখন পরীক্ষা শেষ হবে। আর কবে দেশে যাবে। ভাবতে ভাবতে পরীক্ষা
শেষ হয়ে গেল। আর পরীক্ষা শেষ মানেই দেশে।
এবার দেশে যাবে সে আর দেশে যাওয়ার জন্য তার বন্ধুদের কাছ থেকে একটা মটর সাইকেলের ব্যাবস্থা করলো। মটর সাইকেল বাসায় নিয়ে আসে তুষার।
মটর সাইকেল দেখে মা জিজ্ঞেস করে
মা           ঃ       কিরে মটর সাইকেল কার বাসায়ই বা  নিয়ে আসছিস কেন?
তুষার       ঃ         মা এটা আমার ফ্রেইন্ড তনয়ের কালকে আমি দেশে যাবোতো সেইজন্য এনেছি। দেশে মটর সাইকেল দিয়ে ইচ্ছে মত ঘুরবো আর দেশে
থেকে এসে আবার ওকে দিয়ে দিবো।
মা           ঃ       আমি বুঝলাম না দেশে যাওয়ার ই বা কি হল আর সেখানে এতো ঘুরারই বা কি হল সেখানে তো কোন অনুষ্ঠান নেই।
তুষার       ঃ         মা তুমি একদম বোঝনা একঘেয়েমি পড়ালেখা না। মাঝে মধ্যে বিনোদন করতে হয় মাঝে মধ্যে বাইরে বেরিয়ে আসতে হয়।
মা           ঃ       হ্যা আমি তো কিছুই বুঝি না যা বোঝার সবইতো তুই ই বুঝিস।
মা ঘরে চলে যায় আর তুষার ও মটর সাইকেল রেখে তার ঘরে চলেযায়। পরের দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে ঊঠে যায় তুসার। ঊঠেই তাড়াহুড়ো করে রেডি হয়
দেশে যাওয়ার জন্য। সকালের নাস্তা কোন রকম সেরে মটর সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পরে দেশের ঊদ্দেশে।
ওই দিকে তিথির মা তণ্যি কে ফোন দিয়েছে।
তিথির মা       ঃ         মা তুমি কোথায়? তিথি ভোর রাতে অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সে এখন হাসপাতালে এডমিট আছে।
তিথির অসুস্থতার কথা শুনে
তণ্যি        ঃ           কি বলেন আন্টি ও কোন হাসপাতালে আছে?
তিথির মা       ঃ         ও কে ডামূড্যা সেন্ট্রাল হাসপাতালে ইমার্জেন্সিতে রাখা হয়েছে।
তণ্যি        ঃ         ঠিক আছে আন্টি আপনি কোনো টেনশন করবেন না আমি এখনই চলে আসছি।
তণ্যি ও চলে আসে হাসপাতালে। তিথির অবস্থা ভালো না তাকে অপারেশন করতে হব্।ে তিথিকে নিয়ে যাওয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে তিথির অপারেশন চলতে
থাকে তণ্যি বাইরে তিথির ছেলেকে নিয়ে বসে থাকে। ঐ দিকে তুষার মটর সাইকেলে চড়ে আসতেছে।
কতক্ষন পরে অপারেশন শেষ হয়।ডাক্তার বেরিয়ে আসে। ডাক্তার কে দেখে তিথির মা তণ্যি সবাই ছুটে আসে ডাক্তারের কাছে। তণ্যি জানতে চায় কি হয়েছে।
ডাক্তার           ঃ        ছেলে বাবু হয়েছে তবে----
তিথির মা        ঃ         তবে, তবে কি ডাক্তার?
ডাক্তার           ঃ         আসলে আমরা আমাদের চেষ্টার কোন ত্র“টি রাখিনাই তারপরও
তণ্যি             ঃ         তারপরও কি ডাক্তার?
ডাক্তার           ঃ        আসলে বাচ্চার মায়ের বয়স অনেক কম এরি মধ্যে দুই দুই টা বাচ্চা তার জন্য খুবই রিস্কি হয়েগেছে আর সে জন্যই তাকে বাচনো
আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় নাই। ডাক্তারের কথা শুনতেই তিথির মা আল্লারে বলে চিৎকার করে ওঠে।তন্যির চোখ দিয়ে পানি গরিয়ে পরতে থাকে তণ্যি অবাক হয়ে
যায় সে কি করবে কিছুই বুঝতে পারছিল না। এক পর্যায়ে সে তার ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে তুষার কে ফোন দেয়।
তুষার মোটর সাইকেল ড্রাইভ করে আসছিল তাই ফোনের আওয়াজ শুনতে পায়নি। তাই ফোন ও রিসিভ করতে পারেনি।তন্যি আবারো তাকে ফোন দেয়।এবার সে
আওয়াজ শুনতে পায় আর ফোন রিসিভ করে ।তুষার আগেই জানতো যে তিথি হাসপাতালে এডমিট আছে। তুষার ফোন রিষিভ করেই
তুষার      ঃ        কিরে তিথি কে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসছিস ওর এখন কি অবস্থা ও হ্যা ওর কি হয়েছে ছেলে না মেয়ে?
তণ্যি       ঃ       (খুব করুন সুরে) তিথির ছেলে হয়েছে কিন্তু....
তুষার      ঃ        (হাসতে হাসতে) এই খুশির খবরের মধ্যে আবার কিন্তু কি? ছেলে অনেক কালো হয়েছে অনেক মোটা হয়েছে নাকি জমজ কি কি হয়েছে বল।
তণ্যি       ঃ       আসলে ব্যাপারটা ওর ছেলের না তবে---।
তুষার      ঃ        তা হলে কি বলবি তো ?
তণ্যিঃ আসলে তিথির ছেলে হয়েছে সিজার করে আর অপারেশনের সময় তিথি
তুষার      ঃ        বল অপারেশনের সময় তিথি কি?
তণ্যি       ঃ       আসলে অপারেশনের সময় তিথি মারাগেছে।
কথাটা শুনতেই তুষার সেন্সলেস হয়ে যায় সে আর সামনে কিজছু দেখতে পায়না । মোবাইলটা তার হাত থেকে শার্টের পকেটে পড়ে যায় সামনে থেকে একটি বাস
এসে তুষার কে চপা দেয়। আর ঐ দিকে তণ্যি মোবাইল কানে ধরে হ্যালো হ্যালো করতে থাকে আর সব আওয়াজ শুনতে পায়। আওয়াজ শুনে তণ্যির হাত থেকে
মোবাইল পড়ে যায় সে ও থ হয়ে দাড়িয়ে থাকে।
এভাবেই শেষ হয়ে যায় তিথি আর তুষারের কাহীনি আর মিডল পয়েন্টে থেকে যায় তণ্যি। তণ্যি তুষার কে পেতে চেয়েছিলো ঠিকই তবে এভাবে নয় তার
ভালোবাসা দিয়ে। কিন্তু সব সময় যে আর প্লাসে প্লাসে প্লাস হয় না। মাঝে মাঝে মনে হয় ভালোবাসা আসলেই খুব অসহায়। পেয়েও যেনো হয় না পাওয়। থাকে শুধু অপেক্ষা।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১০৬৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/০৯/২০১৪

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ভাল লাগলো ।
  • বানান সতর্কতা দরকার্।
 
Quantcast