www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গোপলা কথা - ২৭

প্রত্যেকের নিজস্বী
-------------

প্রত্যেকেই জানে সে কতটা পারে। তবুও সময়ের প্রেক্ষিতে আপ্রাণ চেষ্টা করে তার চেয়ে আরও বেশিদূর যেতে। আবার কিছুটা উপরে উঠে নীচে যারা আছে তাদেরকে বোকা বানানো সহজ। এ রকম ভাবনাও কাজ করে। ফলে নীচের মানুষের বোকামিকে বোকা ভেবে উপভোগ করা আর এক সবর্নাশের পিছ পা।
কোন কনসার্নে একটা পদ্ধতি কারো না কারও মাথা থেকে প্রথমে বের হয় তারপর তার রেক্ট্রিফিকেশন হয়। এভাবে সেই ব্যবস্থার নির্ভরশীলতার উপর এগিয়ে চলে সেই ব্যবস্থা। সেখানে পরিচালনের জন্য যার উপরে ব্যবস্থা ন্যস্ত থাকে সে বুঝিয়ে ধমক দিয়ে কিংবা হুইপ জারি করে তাকে টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে। অনেক কর্মী সম্বন্বয়ে প্রায় সব পদ্ধতি এভাবে অবলম্বন করতে হয়।
জনমত বা জনমানস কিন্তু সবসময় একটা প্রশ্রয়ে লালিত হতে ভালোবাসে। চটপট কাজটা শেষ করে গাছতলায় বসে জনমানস অন্য প্রশ্রয়ে থাবা বসাতে চায়।
অর্থাৎ ধরুন, জন্ম সার্টিফিকেট দরকার। তার জন্য বাচ্চার জন্মের পর সংশ্লিষ্ট জায়গায় লিখিত জানাতে হবে এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। সেখানের আধিকারিক তা মিলিয়ে দেখবেন। রেজিস্টার্ড করবেন। তারপর ইসু করবেন। এবং সবক্ষেত্রে সঠিক ও নির্ভুল লিখিত দিতে হবে। যা সময় সাপেক্ষ।
এখন এই ব্যাপারটা কেউ যদি কিছু গুঁজে দিয়ে মাত্র একবার গিয়েই পেয়ে যায় কিংবা কেউ ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে জন মানস সেদিকেই ছুটবে। এই প্রশ্রয়ের যারা হোতা তারা এক নয় অনেক এবং সিস্টেমে আবদ্ধ। টাকা পয়সা যদি নাও লাগে অন্যাহ্য ব্যাবস্থা করে দেওয়াও প্রশ্রয়ের মধ্যে পড়ে।
এখন এই ব্যবস্থা যদি অনেকদিন চলতে থাকে তাহলে তাকেই জন মানস ঠিক বলে ধরে নেবে। তারপর হয়তো কোনদিন কেউ এল বা সিস্টেম এল, যে যেমন জমা দেবে সে সেভাবেই পাবে। তাহলে জন মানস কি তাকে মেনে নেবে?
বলবে, না তা হতে পারে না। এভাবে হয়, এভাবেই হবে। তার উপর সেই সব না-প্রশয়ী হোতা সঠিক চলেও অচলে লিখিত হয়ে যায়। যদিও সত্যের জয়। কিন্তু এসব ভেঙে আবার নতুনের দিশারি হতে এবং জন মানসকে প্রস্তুত করতে অনেকটা সময় চলে যায়। অনেক সময় নিতে হয়। অনেক সময় পেরিয়ে হয়তো ভাল অনেকে বলবে। কিন্তু তারা কতটা বা কতটুকু তার উপর নির্ভর করে সেই অনেক সময় দেবে।
ঠিক নয় জানি, অন্যায় জানি, করা উচিত নয় জানি, তাও হাত বাড়াই। আমি আপনি সবাই। যদি পেয়ে যাই, ভালো। না পেলেও ক্ষতি নেই। কিন্তু পেয়ে যাওয়া ভাগ জেদ বাড়তেই থাকে সেটাই হয়ে যায় চলন। তার বিরুদ্ধে যে রুখে দাঁড়াবে তাকে জন মানস মেনে নেবে কি? সত্য অসত্য ভাল মন্দ কর্মের পদ্ধতিতে পাল্টে যায়।
বিচার বিবেচনার কৌশলে তার রঙ বদল হয়। তাই প্রশ্রয় ভাবনা কি মারাত্মক এবং অনাদায়ী সুদূর প্রসারী তাও অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়।
প্রায়ই শোনা যায় ব্যবহার ঠিক করুন। একই কথা একটু শান্ত ভাষায় বললে অনেক কাজ হয় একথা ঠিক। কিন্তু সেকথা শোনার বা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে বোঝার জন্য জন মানস কতটা প্রস্তুত। তাও ভাবা দরকার।
একই মানুষ মদের দোকানে ব্যাঙ্কে সিনেমা হলে ডাক্তার খানায় লাইন দিচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কিন্তু পাড়ার মুদি দোকানে সব্জিওয়ালার কাছে ওষুধের দোকানে রেশনে সরকারী হাসপাতালে বা সরকারী দপ্তরে এক দু মিনিটও দাঁড়াতে রাজি নয়। চোটপাট শুরু করে দেবে। ফলে উপরের বড় বড় ক্ষেত্রে যদি বা লাইন মেনে চলে নীচে সম্ভব নয়। যদি বা কেউ করে তার রেহাই পাওয়া মুশকিল।
খারাপ ব্যবহার কেউ ইচ্ছেকৃতভাবে করে না। যে নিয়মের সামনে আমি দাঁড়িয়ে তার নিয়ম ফলো করলে যে নিয়ম রক্ষা করছে তার সুবিধা হয়। কাজ ও ব্যবহার সেভাবেই সে প্রস্তুত করে।
দু একটা উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ওষুধের দোকানে প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে ওষুধ কেনার সময় যদি জিজ্ঞেস করেন - এগুলো কিসের ওষুধ?
আপনি যে রোগ ডাক্তারবাবুকে দেখিয়ে এসেছেন এগুলো নিশ্চয় সেই রোগের ওষুধ। তবুও জিজ্ঞেস করলেন। আবার আপনিও জানেন একই ওষুধে অনেক রকম রোগ সারে। তার মানে আপনি হয় ডাক্তারকে সন্দেহ করছেন অথবা ওষুধের দোকানদারকে। তাহলে দোকানদার কি উত্তর দেবেন?
আবার ডাক্তারবাবুকে যদি বলেন - ডাক্তারবাবু, এই ওষুধে আমার রোগটা সারবে তো? ডাক্তারবাবু কি উত্তর দেবেন?
শোরুমে ঢুকে যদি কোন প্রোডাক্ট কেনার সময় বলেন - এটা অরিজিন্যাল তো? তো তিনি কি উত্তর দেবেন?
রাস্তায় কাওকে জিজ্ঞেস করলেন - দাদা, উমুক জায়গাটা কোন দিকে? তিনি আপনাকে রাস্তাটা ভাল করে বুঝিয়ে দিলেন। তারপর আপনি প্রশ্ন করলেন - ওইদিকে গেলে আমি ঠিক জায়গায় পৌঁছে যাব তো? তো তিনি কি উত্তর দেবেন?
কিন্তু আমি যদি সেই বাঁকা পথের নিয়মের সামনে দাঁড়িয়ে অন্য আবদার জুড়ে দিই তাহলে নিয়মরক্ষাকারী একটু কটু প্রয়োগ করবেই। তাকেই তখন বলা হয় বাজে লোক। আবার সেখানে যদি বে-নিয়মী কেউ বসে সে তার ফায়দার জন্য মোলায়েম করে লম্বা দেবে। তাকে সবাই বলবে বাহ, দারুণ ছেলে।
আদপে কিন্তু তা নয়। কে ভালো কে মন্দ কে বিনয়ী কে ব্যবহারী বোঝার জন্য কিছু শুদ্ধ জন মানসের প্রয়োজন হয়। এই শুদ্ধ মানসিকতা গড়ে তুলতে হলে পদ্ধতি সিস্টেমে এবং পদক্ষেপ সঠিক নেওয়া প্রয়োজন। কখনই প্রশ্রয় ভাবনা আনা উচিত নয়। আমি যদি ঠিক থাকি তাতেই ধীরে ধীরে সবাই ঠিক পথে এগিয়ে আসবে। প্রশ্রয় নৈব নৈব চ।
আবার এই প্রশ্রয়ের হাত ধরে অনেকেই কায়দা করে ফায়দা লুটে নিচ্ছে। তার নিজস্ব পারার ক্ষমতাকে ছাপিয়ে অনেক উপরে উঠে যাচ্ছে। গাড়ি বাড়ির সাথে সাথে সম্মানপ্রাপ্তিও সহজলভ্য হয়ে যাচ্ছে।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৯৬৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৫/০১/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • Abheek ১৭/০১/২০১৭
    বেশ ভালো
  • সোলাইমান ১৩/০১/২০১৭
    বেশ নাইস
  • মোনালিসা ০৭/০১/২০১৭
    দারুন
  • পরশ ০৬/০১/২০১৭
    দারুন লেখা
  • আব্দুল হক ০৫/০১/২০১৭
    সুন্দর লিখার জন্য ধন্যবাদ
 
Quantcast