www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ও আরও দুয়েকটি ছন্নছাড়া কথা

বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনাল শুরু হতে যাচ্ছে আজ। এ পর্যন্ত ভালো, সফল, নির্ঝঞ্ঝাট একটি বিশ্বকাপ সমাপ্তির দিকে চলেছে। আর্জেন্টিনা, জার্মানি, স্পেন, পর্তুগাল, যাদের শিরোপা জয়ের দৌড়ে এগিয়ে রেখেছিল ফুটবল বোদ্ধা বিশেষজ্ঞরা, তারা কেউ প্রথম কেউ দ্বিতীয় রাউন্ডের গণ্ডিও পেরোতে পারেনি। আমি ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে ব্যথিত হয়েছি, দ্বিতীয় রাউন্ডে মেক্সিকোর পরাজয়ে। খুব আশা করেছিলাম, ব্রাজিলকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে তারা। কিন্তু তা হয়নি। পরের দিকে খেলাই আর দেখিনি। ব্রাজিল প্রথম রাউন্ডের তৃতীয় ম্যাচ থেকে ছন্দময় ফুটবল খেলছে। আমার এই ব্রাজিল দলের সবচেয়ে প্রিয় খেলোয়াড় গ্যাব্রিয়েল জেসুস। খুবই ভালো লাগে ওকে। প্রচুর পরিশ্রমী ও পরিচ্ছন্ন ফুটবল খেলে থাকে, ফাউল টাউল একেবারেই করে না, আর নেইমারের মতো ন্যাকামো ট্যাকামো তো নয়ই। ওর জন্য বিশেষ শুভকামনা। বড় ক্লাব দলে দেখতে চাই জেসুসকে।

রাশিয়ার উথ্থান চমকে দিয়েছে সারা বিশ্বকে। প্রথম রাউন্ডে দারুণ খেলেছে তারা, তবে সাবেক এক চ্যাম্পিয়ন দল স্পেনকে ২য় রাউন্ডে টাইব্রেকারে হারানোটা সবচেয়ে চমকপ্রদ। এই বিশ্বকাপের মাঠ থেকেই পুতিন আমেরিকার দীর্ঘ একক আধিপত্য ভেঙে আবার বিশ্বের (সোভিয়েত ইউনিয়ন যেমন ছিল) সমান্তরাল আরেকটি প্রধান পরাশক্তি হবার মিশনে নামবেন, বা ইতিমধ্যেই নেমেছেন বলে মনে হচ্ছে। ইদানীং রাশিয়াকে প্রায়শই আন্তর্জাতিক নানান বিষয়ে মত ভিন্নতা থেকে সরাসরি যুদ্ধ, আক্রমণ, সামরিক পদক্ষেপ ইত্যাদির ভয় দেখাতে দেখা যায় সারা বিশ্বকে। রাশিয়ানরা জাতি হিসেবে অত্যন্ত উন্নাসিক, বেপরোয়া, জেদি আর উগ্র স্বভাবের। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ান সৈন্যরা জার্মানিতে পৌছে অত্যন্ত বর্বরতা ও স্থানীয় নারীদের ওপর ভয়াবহ পৈশাচিক শারীরিক অত্যাচার করেছিল। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের শাসক যোসেফ স্ট্যালিনকে এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে, তিনি সরাসরি কোনওরকমের ভণিতা ছাড়াই বেমালুম বলে বসেন, "পাঁচ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে যুদ্ধ করে জার্মানিতে গেছে আমার ছেলেরা। তারা স্বভাবতই এখন ক্লান্ত, এ সময় তাদের একটু আনন্দ ফুর্তির দরকার আছে বৈকি!"

যাই হোক, আজকে প্রথম খেলা উরুগুয়ে বনাম ফ্রান্স। দারুণ একটি ম্যাচ দেখার অপেক্ষা করছি। দুটো দলই সমমানের শক্তিশালী দল। তবে উরুগুয়ের রক্ষণভাগ আর্জেন্টিনার তুলনায় ঢের শক্তিশালী। ফ্রান্সকে গোল পেতে হলে প্রচুর ঘাম ঝরাতে হবে। বিগত খেলাগুলো দেখে আমি এই ম্যাচে উরুগুয়েকেই এগিয়ে রাখবো। ফ্রান্সের রক্ষণভাগ ত্রুটিপূর্ণ। আর্জেন্টিনা প্রচুর সুযোগ তৈরি করেছিল গত ম্যাচে। তবে আবারও বলছি, আমার কথায় বা ভাবনায় তো আর কিছু হবে না, হয়ও না! নইলে ৯৪ সাল থেকে মেক্সিকো কেন কোয়ার্টার ফাইনালের গণ্ডিই পেরোতে পারে না! হা হা হা। আমার তো প্রতিবারই মনে হয়, ব্রাজিল, ইতালি, জার্মানিকে হারিয়ে দেবে তারা, শ্রেয়তর দল হিসেবেই। কিন্তু কোনওবারই তো তা হয় না!

পরের খেলা ব্রাজিল বনাম বেলজিয়াম। এটাও খুব বড় একটা ম্যাচ হতে চলেছে। উভয়ই ফিফা রেটিংয়ের শীর্ষস্থানীয় দুটো দল। ব্রাজিল ১, বেলজিয়াম ৩। এখানেও আমি এগিয়ে রাখবো বেলজিয়ামকে। এ পর্যন্ত বেলজিয়ামকেই আমার ব্রাজিলের থেকে পরিণত, সুগঠিত, শ্রেয়তর দল মনে হয়েছে। মনে পড়ছে ২০০২ সালের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড বা কোয়ার্টারে ফাইনালেই উভয় দল খেলেছিল, দারুণ লড়াই হয়েছিল সেই ম্যাচে। সেখানে তখনকার বেলজিয়াম অধিনায়ক উইলমোস্ট’র শুরুর একটি গোল অফসাইড বা অন্য কোনও কারণে রেফারি কর্তৃক বাতিল করা হয়, পরবর্তীতে এটা নিয়ে অনেকের সাথে, কিংবদন্তী আর্জেন্টাইন ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনাও রেফারির সমালোচনা করেছিল। এই বিশ্বকাপেও রেফারিং নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হচ্ছে, হবেও। এটাসহ আসন্ন প্রতিটি বিশ্বকাপেই হবে। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, "মানুষ মাত্রই ভুল করে"। আর রেফারিরাও তো মানুষই, রোবট কিংবা ফেরেশতা নয়!
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৬৮৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৬/০৭/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast