www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

জাগো বাহে কোনঠে সবাই

"কে আছ জোয়ান হও আগুয়ান হাঁকিছে ভবিষ্যৎ।
এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার।"
জাতির বিবেক আজ সংকুচিত, ঘোর অমানিশার অন্ধকারে পতিত।এ যেন কলিযুগের কুৎসিত ছায়ায় আবৃত কোন নবযুগ।যে নবযুগের হৃৎপৃন্ড হতে প্রতিনিয়ত ক্ষরন হয় মানবিক মূল্যবোধের রক্ত,চেতনার রক্ত,বিবেকের রক্ত,।
যে নবযুগে কুম্ভকর্ণের ন্যায় জাতির চক্ষু যুগল ঘুমন্ত থাকে, সেই জাতির হৃদপিন্ডকে কৃত্রিম শ্বাসপ্রণালীর মাধ্যমে বাচিয়ে রাখা ছাড়া কোন গতি থাকে না।যে মানবিক মূল্যবোধটুকু, চেতনাটুকু,বিবেকটুকু অবশিষ্ট আছে, সেও অসুখে বিসুখে আজ মৃতপ্রায়।
এ যেন কলিযুগেরই নবরূপ !
কেনই বা হবে না বলুন?
যেখানে প্রতিনিয়ত কুমারীদের কুমারিত্বের রক্ত কণিকা বৃষ্টির মতো বর্ষিত হয়, অন্যায়ের কাছে ন্যায়,অসত্যর কাছে সত্য পরাজিত,অনিয়ম যখন নিয়মে পরিনত হয় আর সেই চাপিয়ে দেয়া নিয়মকে আমরা মাথা পেতে সানন্দে গ্রহন করি, মানবরূপী দেবতাদের তুষ্ট করতে না পারলে অনুগ্রহ,কৃপা কিছুই জোটে না তাকে কলিযুগের নবরূপ না বলে অন্য কিছু বলতে আমার চোখের পর্দায় আটকিয়ে যায়।
এতো কিছু আমাদের সামনে তবুও আমরা কাঠের চশমা পরে আর কতদিন--আর কতো যুগ অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকবো যে, কোন দেবতা কালী রূপে,চন্ডি রূপে,দূর্গা রুপে আমাদের উদ্ধার করতে আসবে -?
আর সেই দেবতার তুষ্টিতে নম নম মস্তকে পূজা অর্চনা করে যাবো?
আর কতো যুগ --?
যখন মাত্র দুই বছরের দুগ্ধ শিশুর যৌনাঙ্গ ছিড়ে খাওয়ার বাসনা করে মানবরূপে কোন হায়েনা, যখন মাত্র তিন বছরের অবুঝ শিশুকে ভোগ করতে তার যৌনাঙ্গ ধারালো ব্লেড দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে কোন মানবরূপী জানোয়ার,যখন নেতিয়ে পড়া যৌনাঙ্গের বৃদ্ধাও রেহায় পায় না শকুনের থাবা থেকে তখনও কি আমরা ঘরে চুপটি করে চোখে কালো চশমা দিয়ে কোন দেবতার আশায় অধির আগ্রহে বসে থাকবো?
দেবতারা কি এতোই অপাঙ্গ করে আমাদের পাঠিয়েছেন শুধু নম মস্তকে তাদেরই পূজা অর্চনা করতে?
মানবরূপের এসব হায়েনা,জানোয়ার রা কি গোটা মানব সমাজেরই কলঙ্কিত রূপ নয়?
আর কতো যুগ দেবতাদের অপেক্ষায় প্রহর গুনবো আমরা?
আসলে যে যার স্বার্থেই ব্যস্ত।আমরা যেমন আমার ঘর,আমার পরিবার নিয়ে ব্যস্ত ঠিক তেমনি দেবতারাও ব্যস্ত তাদের ঘর সংসার নিয়ে।দেবতারাও বোধকরি জানেন যাদের টা তাদেরই সামলাতে হয়, আর তাইতো শত পূজাতেও তাদের আসন টলে না,মন গলে না।
আর আমরা অভাগা, অপাঙ্গরা পরিত্রানের আশায় তাদের পথ চেয়ে চেয়ে জীবনাবসান করি।
সৈয়দ শামসুল হকের মতো বলতে ইচ্ছে করে "জাগো বাহে কোনঠে সবাই"
আমাদের কে জাগতে হবে,আমাদেরকেই আওয়াজ তুলতে হবে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে,শোষনের বিরুদ্ধে,নীতি হীনতার বিরুদ্ধে,হীনতার বিরুদ্ধে,জড়তার বিরুদ্ধে,কাপুরুষতার বিরুদ্ধে।প্রতিবাদ করতে হবে,জাগতে হবে, জাগাতে হবে।
আপনি প্রতিবাদ করুন।মুখের প্রতিবাদ কেবল লোকই জড়ো হয় এতোকাল যা হয়ে এসেছে।তাতে লাভ কিছু হয় না।আপনি জুতসই আঘাত করুন তাতে মানুষ জানবে। সমাজ আপনা আপনি বদলে যায় না, একে বদলাতে হয়,নিজেদের এগিয়ে আসতে হয়।যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে শিখতে হয়,প্রতিবাদ করতে হয়।এ হয়তো ক্ষুদ্র এক অন্যায়- কিন্তু অনেকে বলবে দেশে আরো কতো বড় বড় অন্যায় হচ্ছে,নির্যাতন হচ্ছে আগে সেগুলো সামলাও -বড় অন্যায় দূর হলে সাধ্য আছে ছোট অন্যায় থাকে।না কোন অন্যায় কে ভদ্রতা করে এড়িয়ে যাওয়া অথবা অপরাধী কে লজ্জিত হতে না দিয়ে নিজে লজ্জা পাওয়া অথবা সকল অন্যায়ের জন্য সমাজ ব্যাবস্থাকে দোষ দিয়ে মাথা নিচু করে সরে যাওয়া সে তো মানব জন্মেরই ধিক্কার,অবজ্ঞা,কলঙ্ক।তাই তো বারবার বলি,বারবার আহ্ববান করি,জাগুক সমাজ,জাগুক শোষিত ভুবুক্ষ মানুষ,ধর্ষিতা,নির্যাতিতা,লাঞ্চিতা সকলেই। তারাও ছোবল দিতে শিখুক, তারাও ঘুরে দাড়াক, সজোরে আঘাত করুক ঘুনে ধরা আসনে।
জাগুক সকলে।
আজ যে ধর্ষিত হলো তাকেও বলি জেগে উঠো,যে ধর্ষিত হয় নি তাকেও বলি জেগে উঠো।নির্যাতিত হয়েছে যে পরিবার তাদেরকেও বলি জেগে উঠো,যারা তদের নির্যাতনের অপেক্ষার সিরিয়ালে আছেন তাদেরকেও বলি জেগে উঠো।স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী,কাজের লোক,আবাল বৃদ্ধা বনিতা,ঘুটে কুড়ানির দল,মাঠে রৌদ্রে পোড়া হাড্ডিসার কৃষক তাকেও বলি জেগে উঠো। জেগে উঠো সবাই, প্রবলভাবে জেগে উঠো,চমৎকারভাবে জেগে উঠো।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৮২০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২২/০৯/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast