www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মেয়েদের এক বেত ছেলেদের দুই বেত

ক্লাস ফোর। অঙ্ক ক্লাসে উমর স্যার ব্ল্যাক বোর্ডে ২টা অঙ্ক দিয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের করার জন্য। দুই সারিতে ছেলে-মেয়েরা বসেছে। এক সারিতে ছেলের দল; আরেক সারিতে মেয়েগুলো।

আমি আমার খাতায় অঙ্ক কষছি, (যেহেতু আমি ক্লাসের প্রথম তাই) আমার দেখাদেখি পাশের ছেলেরা উঠাচ্ছে। এভাবে  ক্লাসের সব ছেলে অঙ্ক করছে। তাতে দেখা গেল সব ছেলেদের খাতার ফলাফল একই রকম। আমি (ক্লাসের সেরা ছাত্র হিসেবে ক্লাস লিডার) সব ছেলেদের খাতা টেবিলে জমা দিলাম।

মেয়েদের খাতা জমা দেয় রুমা। মেয়েদের খাতায়ও অঙ্কের ফল সব একই রকম, রুমা যেভাবে করেছে সব মেয়ে একই রকম অঙ্ক কষেছে। কিন্তু আমাদের আর ছেলেদের খাতার ফল ভিন্ন। আমার মুখে মুচকি হাসি! আজ সব মেয়ে গণ পিটুনি খাবে এই আনন্দে । উমর স্যার অন্যান্য দিনের মত আমার খাতা টেনে নিলেন। আমার অঙ্কের ফল দেখে ছেলেদের খাতা দেখে সব টিক চিহ্ণ  দিলেন। এবার মেয়েদের খাতা দেখার পালা। ভিন্ন ফল দেখে সব মেয়েদের খাতায় ক্রস চিহ্ণ দিলেন।

উমর স্যার বেত নিয়ে মেয়েদের দিকে গেলেন। সব মেয়েদের দাড়াতে বলে, প্রথমে রুমাকে দিয়ে বেত মারা আরম্ভ করলেন। একটা করে বেতের  বাড়ি। আমি রুমার  দিকে মুচকি হাসিতে তাকাতে গিয়ে আমার কলজে নড়ে উঠল ওর লাল চক্ষু দেখে। ভীষণ ভয় পেয়ে আমার খাতা আমি( বেঞ্চে দাড়িয়ে ) দেখতে লাগলাম। মনোযোগ দিয়ে দেখি আমার অংক কষা ভুল হয়েছে! আমার ভিতরে তো চরম অবস্থা। আমি জানি এরপর কী ঘটতে যাচ্ছে!
উমর স্যার সব মেয়েদের এক দফা উত্তম-মধ্যম দিয়ে ক্লান্ত ভঙ্গিতে চেয়ারে বসে আমার খাতা টেনে নিয়ে মনোযোগ দিয়ে দেখলেন আর ভুল ধরতে পারলেন। দপ্তরীকে ডেকে এনে বেত আনতে পাঠালেন।

তারপর পুরো ক্লাসে ছেলেদের উপর ভয়ঙ্কর টর্নেডো বয়ে গেল। বেঞ্চের প্রথমে আমি বসা ছিলাম বলে রাগে স্যার পুরো বেতটা ভেঙ্গেই ক্ষান্ত দেন। তারপর চলতে লাগল গণ পিটুনী। কারো পিঠে এক বেত, কারো পিঠে দুই বেত, কারো ৫টারও উপরে আবার কারো পিঠে কোনো বেতের বাড়ি পড়েই নি।

এটা ছিল ইস্কুল জীবনের একমাত্র মার খাওয়ার ঘটনা। তবে কান মলা, ভুড়ি টানা, চিমটি ও মাথায় চক মোছার ড্রাস্টার দিয়ে বাড়ি অনেক খেয়েছি।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৮৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২২/০৯/২০১৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ওয়াহিদ ২৬/০৯/২০১৩
    tongue
  • সুমন ২২/০৯/২০১৩
    যেহেতু এটা বাস্তব ঘট্না, এটাকে গল্প বিভাগে না দিয়ে অবিজ্ঞতা বিভাগে দিলে ভাল হতো।
  • Înšigniã Āvî ২২/০৯/২০১৩
    এরকম প্রহার যারা করে তাদেরকে শিক্ষক বলে মানতে পারি না আর পারবোওনা কোনদিন,
    ৪ নাম্বার লাইনে বোধহয় ওটা 'ফলাফল' হবে 'ফরাফল' এর বদলে
    • আহমাদ সাজিদ ২২/০৯/২০১৩
      আগে তো ক্লাসে কঠিন মার দেয়া হত। এর যেমন খারাপ দিক আছে তেমনি ভাল দিকও আছে। এতে আছে সমান বিতর্ক। আমি বিতর্কে যেতে চাই না। তবে এর মাঝে যে মজাটা ছিল তা সবার মাঝে বিলাতেই গল্পটা ( বাস্তব) শেয়ার করলাম।
 
Quantcast