www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

দীর্ঘ কবিতা- পাচার- পৃষ্ঠা ৩

পাচার

বাঁচা গেল, মা বাবাতো বাঁচবে |
সোনাকে দেখানো হবে আরও ভালো ডাক্তার!
অভাগী আর ওই মুখ নিয়ে বাড়ি ফিরবে না কোনও দিন |
গোপাল জ্যেঠুর মেয়ে ওনাকে 'বাবা' বলে কীভাবে- আশ্চর্য ব্যাপার!

অনাথ বাবু ও যমুনা টাকা পেয়ে খুব খুশি!
গোপাল জ্যেঠুকে জানায় কৃতজ্ঞতা,
বলে, 'অভাগী সত্যি লক্ষী' |
সোনা না জানি কোন দুঃখে করলো আত্মহত্যা!

গোপাল জ্যেঠু বলেন, 'লক্ষ্মী সুখেই আছে' |
যমুনা বলে, 'ও আসবে কবে'? অনাথ বাবু বলে, 'ওই আমার ছেলে' |
দূর থেকে অভাগী বলে বোধহয়,
'সোনার মতো আমিও চিরদিনের জন্য তোমাদের ছেড়ে গেছি চলে' |

পাচার হওয়া মেয়েই জানে অন্ধকারের রূপ-
রোজ সূর্য উঠলেও এখানে নিশ্চুপ জীবন |
এভাবেই মরে বেঁচে থাকতে হবে-
গলা টিপে শ্বাস রোধ করছে প্রতিটি ক্ষণ |

তলপেটের যন্ত্রণাটা এখন বুকে হয়-
হৃৎপিণ্ড নয়, হৃদয়ে ব্যাথা!
মনের ভিতর আছে জমে
একশত বার ধর্ষিতা হওয়ার নীরব কথা |

শুধু মনে পড়ে সোনার মুখ-
অভাগী সঠিক ভাবে জানে না যে সোনা মারা গেছে |
ও ঠাকুরকে বলে, 'সোনা সুস্থ হয়ে উঠুক' |
ওর জীবিত মরদেহে শুধু সোনার সত্তা বাঁচে!

আর পালতে পারবে না ও এই কবরখানা থেকে |
কবরে শুয়ে গুণবে দিন, গুণবে রাত,
গুণবে একেক ফোঁটা চোখের জল |
ও শেষ হলে গোণাও শেষ হবে- শেষ হবে নারীর সাথে মুক্তির সংঘাত |

অভাগীর নাম এখন 'নষ্ট' |
অনাথ বাবু ও যমুনা দূর থেকে ডাকে, 'সোনা' |
গোপাল জ্যেঠু মেয়েকে আটকান, বলেন, 'দিনকাল ভালো নয়' |
অভাগীর কানে কোনও কথাই পৌঁছায় না |

(চলবে)
বিষয়শ্রেণী: কবিতা
ব্লগটি ৩১৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২১/১১/২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast