www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মূর্তি বা ভাস্কর্যঃ ইসলামী দৃষ্টিকোণ

সব সমাজে সব মানুষের নিজস্ব স্বাতন্ত্রতা রয়েছে। সে আলোকে সবার জীবন যাপন পদ্ধতি পরিচালিত হয়। সকল মানুষই মহান আল্লাহর সৃষ্টি। যে এই স্বাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ এক অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নাই এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দাহ ও রাসূল সেই ই মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত হয়। মুসলমানদেরও নিজস্ব স্বকীয়তা সংস্কৃতি রয়েছে। আর তা মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে পরিচালিত হয়। মহান আল্লাহর ঘোষণা- ‘ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে কার কথা উত্তম হতে পারে যে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকে এবং নিজে সৎ কাজ করে এবং ঘোষণা করে আমি মুসলমান।’ সূরা হা মী ম আসসিজদা আয়াত -৩৩। বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে গুগল ইন্জিন সার্চ করে কুরআন হাদীসের আলোকে শিরোনাম বিষয়ে আলোচ্য আলোচনার উপক্রমণিকা। সবার মধ্যে মহান আল্লাহ ভয় ও ভালোবাসা জাগ্রত হোক।

‘হযরত আদম (আ.) থেকে মানবজাতির সূচনা। এরপর শীষ (আ.) ও ইদরীস (আ.) নবী হন। প্রায় দুই হাজার বছর পর হযরত নূহের যুগ। তখনই মানুষ প্রথম আল্লাহকে অস্বীকার করে আর কিছু মানুষ আল্লাহর সাথে শরীক করে। এদের দ্বারাই প্রথম মূর্তিপূজা সংঘঠিত হয়। মূর্তিপূজা আসলে পূজা হিসেবে শুরু হয়নি। এসব হয়েছিল শ্রদ্ধা নিবেদন থেকে। নূহ (আ.)-এর আগেকার জাতি সবাই ছিল তাওহীদে বিশ্বাসী। তারা কেবল আল্লাহরই ইবাদত করত। তখন পর্যন্ত বিস্তারিত শরীয়ত নাযিল হয়নি।’

‘মানবজাতির প্রাথমিক সময়, সভ্যতার ঊষালগ্ন তখন। জীবন, জগৎ ও সভ্যতা বিষয়ই আল্লাহর ওহী আসত। বিস্তারিত জীবন বিধান আসতে শুরু করে হযরত নূহ আলাইহিস সালামের যুগে। আদিযুগের মানুষের মধ্যে সৎ, মহৎ ও অধিক খোদাভীরু লোকদের মৃত্যুর পর তাদের ভক্তরা শোক ও দুঃখ ভুলার জন্য এবং তাদের স্মৃতিকে জাগরুক রাখার জন্য পাথরে তাদের প্রতিকৃতি আঁকে।’

‘পরের প্রজন্ম ছোটবেলা থেকে দেখা সেই প্রতিকৃতি যা রোদ বৃষ্টি ঝড়ে মুছে গিয়েছিল সেসব খোদাই করে ভাস্কর্য তৈরি করে। এরপরের প্রজন্ম আরও মমতা মিশিয়ে পাথর কেটে ছেটে নিপুণ মূর্তি তৈরি করে। তখন এসব তারা উঠান, বাজার ও চত্বরে স্থাপন করেছিল। পরের প্রজন্ম এসবকে উপাসনার স্থানে স্থাপন করে ঘরটিকে দেবালয়ে রূপ দেয়।‘
‘শুরুতে তারা আল্লাহর ইবাদতের ঘরের পেছনের দেওয়ালে মূর্তিগুলো ঠেস দিয়ে রাখে। মূলত তারা আল্লাহরই ইবাদত করত। বলতো, এসব মূর্তি আমাদের প্রভু নয়। আমরা এদের ইবাদতও করি না। আল্লাহর এসব প্রিয় বান্দা আর মহৎ ব্যক্তিকে স্মরণ ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভেরই চেষ্টা করি মাত্র।’

দু’য়েক প্রজন্ম পর শ্রদ্বেয় ব্যক্তিদের পেছনে রাখাটা আর তাদের ভালো লাগেনি। ইবাদতখানার সামনের দেওয়ালে এসব মূর্তি স্থাপিত হয়। নূহ (আ.) প্রথম এই ক্রমান্বয়ে প্রচলিত শিরকের প্রথম সংশোধনকারী। ৯৫০ বছর তিনি এসব মানুষকে হেদায়াতের দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু খুব সামান্য লোকই তারা তাঁর ডাকে সাড়া দেয়। বাকি সব মানুষ তাদের বাপদাদার সংস্কৃতি ও মনগড়া শিরকী চেতনা ছাড়তে সম্মত হয়নি।

মহান আল্লাহ বিষয়টি এভাবে বলেছেন, তাদের নেতারা বলল, তোমরা (নূহ আ. এর কথায়) তোমাদের দেবতাদের ত্যাগ করো না। তোমরা ছেড়ে দিও না, ওয়াদ, সুয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নাসরকে। (সূরা নূহ : আয়াত ২৩)।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, কোরআনে বর্ণিত ওয়াদ, সুয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নাসর হচ্ছে, নূহ (আ.) এর কওমের কিছু মহৎ লোকের নাম। তাদের মৃত্যুর পর শয়তান জনগণকে বোঝালো, তোমরা এসব ব্যক্তির বৈঠকখানার পাশে একটি ভাস্কর্য তৈরি করো। প্রতিটি ভাস্কর্যকে তোমরা সেই মহৎ ব্যক্তির নামে নামকরণ করবে।
অতএব তারা শয়তানের প্ররোচনায় ভাস্কর্য তৈরি করল বটে, কিন্তু কোনোদিনই সেগুলোর উপাসনা করেনি। অবশ্য কিছুদিন পর নতুন প্রজন্মের লোকজন ভক্তি ও স্মৃতির সীমা লংঘন করে এসব মূর্তির উপাসনা শুরু করে। (সহীহ বুখারী : ৪৬৩৬;)।

‘মূর্তিপূজা প্রথম উপাসনা বা পূজা হিসেবে শুরু হয়নি। হয়েছিল শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের মাধ্যমে। স্মৃতি তর্পণের মাধ্যমে। প্রজন্মান্তরে এসব ভাস্কর্য ও মূর্তি আল্লাহর আসন দখল করে নেয়। (নাউযুবিল্লাহ)। আদম (আ.) থেকে নূহের আঃ আগ পর্যন্ত পৃথিবী তাওহীদে ভরপুর ছিল। মানবজাতি ছিল শিরকমুক্ত। মহৎ লোকের ভাস্কর্যই ঈমানদার মানবজাতির জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো।’

কোনো প্রাণীর-মূর্তি নির্মাণ করা ইসলামী শরীয়তে কঠিন কবীরা গুনাহ ও হারাম । মূর্তি সংগ্রহ, মূর্তি সংরক্ষণ এবং মূর্তির বেচাকেনা ইত্যাদি সকল বিষয় কঠিনভাবে নিষিদ্ধ।

মূর্তিপূজার কথা তো বলাই বাহুল্য, মূর্তি নির্মাণেরও কিছু কিছু পর্যায় এমন রয়েছে যা কুফরী। কেউ কেউ মূর্তি ও ভাস্কর্যের মধ্যে বিধানগত পার্থক্য দেখাতে চান। এটা চরম ভুল। ইসলামের দৃষ্টিতে মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোই পরিত্যাজ্য। কোরআন মজীদ ও হাদীস শরীফে এ প্রসঙ্গে যে শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোকেই নির্দেশ করে। এ প্রসঙ্গে কোরআন মাজীদের স্পষ্ট নির্দেশ : তোমরা পরিহার করো অপবিত্র বস্তু অর্থাৎ মূর্তিসমূহ এবং পরিহার কর মিথ্যাকথন।’ (সূরা হজ্জ : ৩০)। ‘

‘এই আয়াতে পরিষ্কারভাবে সব ধরনের মূর্তি পরিত্যাগ করার এবং মূর্তিকেন্দ্রিক সকল কর্মকান্ড বর্জন করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আরো লক্ষণীয় বিষয় এই যে, উপরের আয়াতে সকল ধরনের মূর্তিকে ‘রিজস’ শব্দে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘রিজ্স’ অর্থ নোংরা ও অপবিত্র বস্তু। বুঝা যাচ্ছে যে, মূর্তির সংশ্রব পরিহার করা পরিচ্ছন্ন ও পরিশীলিত রুচিবোধের পরিচায়ক।’

কাফের সম্প্রদায়ের দুটো বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা যেতে পারে : ১. মিথ্যা উপাস্যদের পরিত্যাগ না করা। ২. মূর্তি ও ভাস্কর্য পরিহার না করা। তাহলে মিথ্যা উপাস্যের উপাসনার মতো ভাস্কর্যপ্রীতিও কোরআন মাজীদে কাফেরদের বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিহ্নিত। অতএব এটা যে ইসলামে গর্হিত ও পরিত্যাজ্য তা তো বলাই বাহুল্য।

আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, এগুলো হচ্ছে নূহ আ.-এর সম্প্রদায়ের কিছু পুণ্যবান লোকের নাম। তারা যখন মৃত্যুবরণ করেছে তখন শয়তান তাদের সম্প্রদায়কে এই কুমন্ত্রণা দিয়েছে যে, তাদের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলোতে মূর্তি স্থাপন করা হোক এবং তাদের নামে সেগুলোকে নামকরণ করা হোক। লোকেরা এমনই করল। ওই প্রজন্ম যদিও এই সব মূর্তির পূজা করেনি কিন্তু ধীরে ধীরে প্রকৃত বিষয় লুকিয়ে হয়ে গেল এবং পরবর্তী প্রজন্ম তাদের পূজায় লিপ্ত হলো। (সহীহ বুখারী হাদীস : ৪৯২০)।

কোরআন মাজীদে মূর্তি ও ভাস্কর্যকে পথভ্রষ্টতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এক আয়াতে এসেছে: ‘ইয়া রব, এরা (মূর্তি ও ভাস্কর্য) অসংখ্য মানুষকে পথভ্রষ্ট করেছে!’ (সূরা ইবরাহীম : ৩৬)। অন্য আয়াতে এসেছে : ‘আর তারা বলেছিল, তোমরা পরিত্যাগ করো না তোমাদের উপাস্যদের এবং পরিত্যাগ করো না ওয়াদ্দ সুওয়াকে, ইয়াগূছ, ইয়াঊক ও নাসরকে। অথচ এগুলো অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে।’ (সূরা নূহ : ২৩-২৪)।

‘কোরআন মাজীদে একটি বস্তুকে ভ্রষ্টতার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে এরপর ইসলামী শরীয়তে তা বৈধ ও গ্রহণযোগ্য থাকবে-এর চেয়ে হাস্যকর কথা আর কী হতে পারে। কোরআনের ভাষায় মূর্তি ও ভাস্কর্য হলো বহুবিধ মিথ্যার উৎস।’ ইরশাদ হয়েছে : তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে উপাসনা কর (অসার) মূর্তির এবং তোমরা নির্মাণ কর ‘মিথ্যা’। (সূরা আনকাবুত : ১৭)।

মূর্তি ও ভাস্কর্য যেহেতু অসংখ্য মিথ্যার উদ্ভব ও বিকাশের উৎস তাই উপরের আয়াতে একে ‘মিথ্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই আয়াতগুলো থেকে পরিষ্কার জানা যাচ্ছে যে, মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোই সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাজ্য।

‘মূর্তি ও ভাস্কর্যের মধ্যে বিধানগত কোনো পার্থক্য নেই। যারা মূর্তি ও ভাস্কর্যকে আলাদা বলেন, তারা সঠিক বলেন না।’

হাদিস শরীফেও নবী করীম (সা.) মূর্তি ও ভাস্কর্য সম্পর্কে পরিষ্কার বিধান দান করেছেন। নিম্নে কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করা হলো :
হযরত আমর ইবনে আবাসা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা আমাকে প্রেরণ করেছেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার, মূর্তিসমূহ ভেঙে ফেলার

এবং এক আল্লাহর ইবাদত করার ও তাঁর সঙ্গে অন্য কোনো কিছুকে শরিক না করার বিধান দিয়ে। (সহীহ মুসলিম : ৮৩২)।

আবুল হাইয়াজ আসাদী বলেন, আলী ইবনে আবী তালেব রা. আমাকে বললেন, ‘আমি কি তোমাকে ওই কাজের দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করব না, যে কাজের জন্য নবী (সা.) আমাকে প্রেরণ করেছিলেন? তা এই যে, তুমি সকল প্রাণীর মূর্তি বিলুপ্ত করবে এবং সকল সমাধিসৌধ ভূমিসাৎ করে দিবে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে এবং সকল চিত্র মুছে ফেলবে।’ (সহীহ মুসলিম : ৯৬৯)।

আলী ইবনে আবী তালেব (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) একটি জানাজায় উপস্থিত ছিলেন। তখন তিনি বললেন, ‘তোমাদের মধ্যে কে আছে, যে মদীনায় যাবে এবং যেখানেই কোনো প্রাণীর মূর্তি পাবে তা ভেঙে ফেলবে, যেখানেই কোনো সমাধিসৌধ পাবে তা ভূমিসাৎ করে দিবে এবং যেখানেই কোনো চিত্র পাবে তা মুছে দিবে?’ আলী রা. এই দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত হলেন। এরপর নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে কেউ পুনরায় উপরোক্ত কোনো কিছু তৈরি করতে প্রবৃত্ত হবে সে মুহাম্মাদের (সা.) প্রতি নাজিলকৃত দ্বীনকে অস্বীকারকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ : ৬৫৭)।

‘এই হাদিসগুলো থেকে স্পষ্ট জানা যাচ্ছে, যে কোনো প্রাণী মূর্তিই ইসলামে পরিত্যাজ্য এবং তা বিলুপ্ত করাই হলো ইসলামের বিধান। আর এগুলো নির্মাণ করা ইসলামকে অস্বীকারকারী সম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য।’

আবু হুরায়রা রা. নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন : ওই লোকের চেয়ে বড় জালেম আর কে যে আমার সৃষ্টির মতো সৃষ্টি করার ইচ্ছা করে। তাদের যদি সামর্থ্য থাকে তবে তারা সৃজন করুক একটি কণা এবং একটি শষ্য কিংবা একটি যব! (সহীহ বুখারী : ৫৯৫৩)। ’হাদিসটি বর্তমান সময়ের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, যখন ভাস্কর-চিত্রকর, এমনকি গল্পকার ও ঔপন্যাসিকদের পর্যন্ত ‘স্রষ্টা’ বলতে এবং তাদের কর্মকান্ডকে ‘সৃষ্টি’ বলতে সামান্যতমও দ্বিধাবোধ করা হয় না। কোনো কোনো আলোচকের আলোচনা থেকে এতটা ঔদ্ধত্যও প্রকাশিত হয় যে, যেন তারা সত্যি সত্যিই স্রষ্টার আসনে আসীন হয়ে গিয়েছেন!’ (নাউযুবিল্লাহ)

সহীহ বুখারীর বিখ্যাত ভাষ্যকার হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী (রহ.) লেখেন- এই ভাস্কর ও চিত্রকর সর্বাবস্থাতেই হারাম কাজের মধ্যে লিপ্ত। আর যে এমন কিছু নির্মাণ করে যার পূজা করা হয় তার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। আর যে স্রষ্টার সামঞ্জস্য গ্রহণের মানসিকতা পোষণ করে সে কাফের।’ (ফতহুল বারী : ১০/৩৯৭)

উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) ও আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : এই প্রতিকৃতি নির্মাতাদের (ভাস্কর, চিত্রকরদের) কিয়ামত দিবসে আযাবে নিক্ষেপ করা হবে এবং তাদের সম্বোধন করে বলা হবে, যা তোমরা ‘সৃষ্টি’ করেছিলে তাতে প্রাণসঞ্চার করো। (সহীহ বুখারী : ৭৫৫৭; ৭৫৫৮)।
এই হাদিসগুলো থেকে প্রমাণিত হয় যে, ভাস্কর্য নির্মাণ অত্যন্ত কঠিন কবীরা গুনাহ। আর কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা কুফরীর পর্যায়েও পৌঁছে যায়।

ভাস্কর্য, মূর্তি প্রতিমা প্রস্তরে খোদাই করা কাজ অথবা SCULPTURE, STATUE , FIGURE,MODEL, BUST যা-ই বলেন না কেন সব ই এক যদি তা প্রাণী জাতীয় কিছু হয়। অপ্রাণী কিছু হলে সৌন্দর্য বর্দ্ধনের জন্য হতে পারে।
’যে আকৃতি বা ছবি খোদাই করে তেরী করা হয় তা-ই ভাস্কর্য,প্রতিমা,মূর্তি। যত গুলো পৌত্তলিকতা বিরোধী ধর্ম আছে তার মধ্যে ইসলাম সবার সেরা এবং পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশী সোচ্চার।পৌত্তলিকতা বলতে বলা যায় মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি মারাত্মক অবিচার। ক্ষমার অযোগ্য অন্যায়। অবশ্য যারা ভোগবাদী, বস্তুবাদী, দুনিয়ামুখী ও সুযোগসন্ধানী দর্শনে বিশ্বাসী এবং সৃষ্টিকর্তা ও পরকাল যাদের কাছে তুচ্ছ বা গুরুত্বহীন তাদের কাছে কি পৌত্তলিকতা আর কি একত্ববাদ কোন বিষয়ই নয়।’

হযরত ইবরাহীম আ. তার পিতা ও সমাপ্রদায়কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা এ মূর্তিগুলোর সামনে অবস্থান করো কেন?’ তারা বলল, ‘আমাদের পূর্ব পুরুষদের এ রকম করতে দেখেছি?’

ইবরাহীম আ. বলল,‘যদি তোমরা ও তোমাদের বাপ দাদারা সুস্পষ্ট ভ্রান্তিতে থাকে তবুও তাদের অনুসরণ করবে? সূরা আম্বিয়া-৫২-৫৪
মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের সতর্ক করে বলেছেন,‘যারা অন্যায় ভাবে পৃথিবীতে অহঙ্কার করে বেড়ায় আমি শীর্ঘই তাদের দৃষ্টিকে আমার নিদর্শন হতে ফিরিয়ে দেব। তারা আমার নিদর্শন দেখলেও তাতে বিশ্বাস করবে না। তারা সত্য পথ দেখলেও তাকে পথ হিসাবে গ্রহণ করবে না। তারা বক্র পথ দেখলে তাকে পথ হিসাবে গ্রহণ করে। তার কারণ হলো তারা আমার নিদর্শনগুলোকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছে আর এ গুলোর ব্যাপারে তারা ছিল একেবারে চিন্তা ভাবনাহীন। সূরা আ’রাফ আয়াত-১৪৬।

এখানে গর্ব অহঙ্কার বলতে বুঝায় মহান আল্লাহর আয়াত ও আহকামের মোকাবিলায নিজেকে বড় মনে করা। এবং অন্য লোকদের তুচ্ছ মনে করা। অহঙ্কার মানুষের জন্য মোটেও শোভনীয় নয়। অন্য জায়গায় বলা হয়েছে- অবশ্যই যাদের ব্যাপারে তোমার প্রতিপালকের কথা সত্য হয়েছে তারা বিশ্বাস করবে না যদিও তাদের নিকট সমস্ত নিদর্শন সমাগত হয়। যে পর্যন্ত না তারা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রত্যক্ষ করছে। সূরা ইউনুস আয়াত-৯৬-৯৭।

আমরা আমাদের সকল পাপ পঙ্কিলতা থেকে মহান আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। তিনি আমাদের ঈমানের উপর অটল অবিচল রাখুন। বলি – ‘হে অন্তরের পরিবর্তন কারী আমাদের অন্তরকে তোমার দ্বীনের আলোতে পরিপূর্ণ করো এবং অবিচল রাখো।’ ‘হে প্রিয় প্রতিপালক ক্ষমা করো রহম করো।’ মুসলমান না হয়ে মরণ দিওনা।’ ‘সত্য সমাগত মিথ্যা অপসৃত। মিথ্যার পরাজয় নিশ্চিত।’

সংগ্রহ সূত্রঃ
১.কুরআন ও হাদীস
২. পত্র পত্রিকা
৩.মিডিয়া
৪. বিভিন্ন আলোচনা
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৫৩০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৩/১২/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • এস এম শাহনূর ১৫/১২/২০২০
    এ ধরনের তথ্য নির্ভর লেখা নিয়মিত দেখতে চাই।
  • ... ০৪/১২/২০২০
    সুন্দর লিখেছেন। অনেক তথ্যবহুল লেখা। শুভ কামনা ভাই। সুস্থ থাকুন।
  • আসরে মিথ্যার জয় নেই।
  • ফয়জুল মহী ০৩/১২/২০২০
    প্রাণবন্ত লেখা । পড়ে ভালো লাগলো।
 
Quantcast