www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মেঘ বৃষ্টির কাব্য - ১

অনেকের সাথেই দেখা হয় ক্যাম্পাসের গণ্ডিতে, কজনকেই আর মনে থাকে, তাদের মুখ, কথার ধরন, হাসি। তবুও কাউকে কাউকে ভুলতে দেয়না মন। তার ছবি এঁকে ফেলে হৃদয়ের ক্যানভাসে। হৃদয়ের মরুময় ভূমি পায় বৃষ্টির স্পর্শ। জেগে উঠে সবুজ ঘাস, গুল্ম, লতা-পাতা আর একটি মহীরুহ। বৃষ্টি, নামের মতই অনিন্দ্য সুন্দরের স্নেহময়তা তার চোখে, মুখে, চাহনিতে। ক্যাম্পাসের পাঁচ বসর জীবনে কেউ-ই কারো না কে হ্যাঁ বা হ্যাঁ কে না বলেনি। বিবেক বিবর্জিত হতে দেয়নি মন। একদিন বৃষ্টিকে রেখে স্মৃতিময় ক্যাম্পাস ছেড়ে আসতে হয় মেঘের বাস্তবতায়। তখনও সে জানেনা সামনে উপরে উঠার ইট-বালি-সিমেন্টের সিঁড়ি তাতে কত শ্যাওলা, সবুজ, ধুসর, অল্প আলোতে পিচ্ছিল। পা গুলো ফেলতে হচ্ছে সাবধানে। যখন সিঁড়ি গুলো মসৃণ হতে শুরু করল তখন শহরের অদূরের ছোট্ট ভাড়ার ফ্ল্যাটটিকে অনেক বড় মনে হতে লাগল। ক্লান্তি, অবসাদ, নির্ঘুম তার সাথে এসে ভিড় করল। দক্ষিণের বারান্দায় বসে ও ক্লান্তি, অবসাদ কাটেনা। বৃষ্টি ও তত দিনে ক্যাম্পাস ছেড়েছে। সে ও উপরে উঠার সেই শ্যাওলা ধরা সবুজ ধুসর সিঁড়ি খুঁজছে।

একদিন সেই ছোট্ট ফ্ল্যাটে পরিচিত, আত্মীয়দের উৎসবাগমন। নিয়নের আলোয় জ্বলমল করতে লাগল সারা বাড়ি। বৃষ্টির মেহেদির আলপনায় রঙিন হাত মেঘের হাতে পড়ল। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সেই রাতে প্রথম তাকে কাছে পাওয়ার, একসাথে, একঘরে থাকার আনন্দ। সবাই চলে যায়, শুধু থাকে দুজন দুজনাতে বিভোর, আদর, খুনসুটি ধারাবাহিক জীবন। আস্তে আস্তে মেঘের ছুটি গুলো ফুরিয়ে আসে। কিভাবে দিনগুলো কেটে গেল তা টের পেলনা কেউই। তার পর আবার টিকেট কেটে বাসে জন্য লাইন, সিট না পেয়ে ঝুলে ঝুলে অফিস, অস্থির, কাজে মন বসেনা। প্রতীক্ষা, বার বার ঘড়ি দেখা। ও দিকে যে ফ্ল্যাটে একা সে ও চোখ রাখে সাদা ঘড়ির কালো কাটাতে। দুপরে খেতে ইচ্ছে করে না একা একা, তবুও রান্না হয়, গান শুনে, টিভি দেখে, সময় কাটে। তার পর ও ঘড়ির কালো কাটায় চোখ, কখন আসবে নির্দিষ্ট স্থানে কালো ছোট কাটাটি। ডোর বেল বাজবে তার সাথে বাড়বে বুকের কম্পন।

এক সময় ডোর বেল বাজে, দরজা খুলে তার হাসি মাখা মুখ। ঘামে ভেজা কাপড় ছেড়ে ঢুকে যায় বাথরুমে। ও দিকে চা হয়ে যায়, পটে করে দেওয়া হয় দক্ষিণের বারান্দায় সাজানো টেবিলে, সাথে আরো কিছু । দুজন মুখোমুখি বসে। চায়ের কাপ হাতে কথা হয়না মুখে। শুধু দু’চোখ অন্য দু’চোখে পলকহীন। বুঝতে চায় ভাষা। দিনের আলো নিভু নিভু, ঘরে ফেরা পাখির কলতান। দক্ষিণ দিকটা এখনো ফাঁকা, ইট-বালির ছোঁয়া পড়েনি এখনো, নিঃশ্বাস নেয়ার জায়গা। মাঠের বুকে সবুজ ঘাস। তাদের দৃষ্টি যায় সেদিকে সুদূর সবুজের পানে, এই ক্ষণটির জন্য অপেক্ষা ।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৮১৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৬/১২/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • সোলাইমান ১৫/১২/২০১৬
    কল্প কথার গল্পরে ভাই... লেখার ছলে লিখি
    ভাবতে পারেন এমন করেই প্রেমপিরিতি শিখি!
    লাডডু খাবো, কোথায় পাবো? দিল্লি অনেক দূর!
    ঝিমিয়ে পরা জীবন এখন শান্ত সমুদ্দূর!
    ভাবনা কি আর ওসব মানে! লাগাম ছাড়া ছোটে।
    তার ছোঁয়াতেই প্রেম-পিরিতি কাব্য কথায় ফোটে।
 
Quantcast