www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

হাসপাতালে অতৃপ্ত আত্মা

হাসপাতালে অতৃপ্ত আত্মা
- জয়শ্রী রায় মৈত্র


হেমন্তর শেষ । বাতাসে হাল্কা শীতের আমেজ । এ-সময়ে সকালের দিকে গা-টা একটু শিরশির করে । রবিবারের সকাল । ডঃ দেবী প্রসাদ রায় তাঁর বাগবাজারের ফ্ল্যাটের বারান্দায় একটা বেতের চেয়ারে গা এলিয়ে দিলেন । হাতে ধূমায়িত এক পেয়ালা চা । রোদের উষ্ণ পরশ নিতে নিতে তিনি চায়ের পেয়ালায় চুমুক দিচ্ছেন আর বারান্দায় রাখা টবের বাহারি ফুলের গাছগুলো লক্ষ্য করে চলেছেন । বাহারি ফুলগাছ তাঁর খুব প্রিয় । তিনি যত্ন করে ফুলগাছগুলো টবে লাগিয়েছেন । বারান্দায় টবে রাখা বোগেনভেলিয়া, নানা জাতের চন্দ্রমল্লিকা, সূর্যমুখী গাছগুলো বারান্দাটাকে আলো করে রেখেছে । বোগেনভেলিয়া গাছটা বেগুনী ফুলের রাশিতে যেন ভেঙ্গে পড়ছে । এ-সব দেখতে ডঃ রায়ের খুব ভালো লাগে । চায়ের পেয়ালা শেষ করে কাপটা পাশে রাখা টি-টেবিলে রাখতে গিয়ে হঠাৎ তাঁর নজর পড়ল টি-টেবিলের নীচের অংশের তাকে । বেশ কয়েকটি পুরানো নিউজ পেপার ও কয়েকটি ম্যাগাজিনের পাশে পুরনো এক ছোট এ্যালবাম । সযত্নে এ্যালবামটি তিনি তুলে নিয়ে কোলের উপর রেখে তার পাতা ওলটাতে শুরু করলেন । এ্যালবামের ছবিগুলো অনেকদিনের । তিনি যখন কর্মসূত্রে দীর্ঘদিন সিকিমে ছিলেন তখনকার তোলা সব ছবি । এ্যালবামের পাতা ওলটাতে ওলটাতে সিকিমের কত কথা তাঁর মনে পড়ে গেল । সেখানে সবার কাছে তিনি দেবতুল্য ছিলেন । ডাক্তার হিসাবে তিনি যতটুকু পেরেছেন সকলকে উপকার করার চেষ্টা করে গেছেন । এ্যালবামের বেশীর ভাগ ছবিই সাদা-কালো । সবই তাঁর কর্মজীবনের বিভিন্ন অবস্থায় তোলা । কিছু ছবি বয়সের ভারে বিবর্ণ । পর পর ছবিগুলো দেখে যাচ্ছিলেন ডঃ রায় । হঠাৎই এ্যালবামের শেষের দিকে একটা পাতায় তিনি থেমে গেলেন । দুটো ছবি পর পর রয়েছে । সিন্থামে তোলা । ছবি দুটোর উপর কয়েকবার আস্তে আস্তে হাত বোলালেন । একটি ছবি তাঁর নিজে হাতে সাজানো হাসপাতাল । অপরটি তাঁর থাকার বাংলো । নানা জাতের রঙ-বেরঙের ফুল গাছে লন সাজানো । মালির সহায়তায় এটাও তাঁর নিজের হাতে তৈরি । এত বছর পর সেখানকার সরল সহজ মানুষগুলোর মুখ স্মৃতির পটে ভেসে উঠতেই তাঁর চোখদুটো জলে ভরে গেল । পাতা উল্টে পরের পাতায় যেতেই হাসপাতালের পিছনের অংশের একটা ছবি চোখে পড়ল । সেখানে ছিল টি,বি, ওয়ার্ড আর গ্যারেজ । গ্যারেজের ঠিক পিছনেই ছিল পোস্টমর্টেম ঘর । ছবিটা দেখে ডঃ রায় কেমন যেন স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়লেন । হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক- চিকিৎসক হিসাবে ওই পোস্টমর্টেম ঘরে তাঁকে কত পোস্টমর্টেম করতে হয়েছে । সব ঘটনা মনে না পড়লেও অতীতের সিঁড়ি বেয়ে তাঁর মনে পড়ে যায় এক মর্মন্তুদ ঘটনার কাহিনী । যে ঘটনার সাক্ষী তিনি নিজে । কয়েক ফোঁটা চোখের জল গড়িয়ে পড়ল তাঁর কোলে রাখা ছবিটার উপর । ডাঃ রায় ফিরে গেলেন পিছনে ফেলে আসা তাঁর কর্মজীবনের কয়েকটি দিনে ।

প্রায় তিরিশ বছর আগেকার কথা । তারিখটা মনে নেই । তখন সকাল ন’টা । ডাঃ রায় হাসপাতালে রাউনডে বেরিয়েছেন । রোগীদের বেডের কাছে গিয়ে তাদের কুশল সংবাদ নিচ্ছেন । প্রেসক্রিপশন রিভিউ করে প্রয়োজনমত ওষুধ লিখে দিচ্ছেন । হঠাৎ ছুটতে ছুটতে ঘরে ঢুকল ওয়ার্ড-বয় সুরেশ প্রধান । ডাঃ রায় চমকে উঠলেন ।



-২-


-“কি হল সুরেশ ?”
-“ডাক্তার বাবু, একটা খবর আছে ।“
-“কি খবর ?”
-“দু’দিন আগে পাশের ঐ গুরুং বস্তি থেকে যে মেয়েটা নিখোঁজ হয়েছিল, তার দেহটা আজ পাওয়া গেছে । হাজার ফুট নিচে খাদে পড়েছিল । সিকিম পুলিশ উদ্ধার করেছে ।“
-“ডেড বডি কি এখানে নিয়ে এসেছে ?”
-“হ্যাঁ ডাক্তারবাবু । সঙ্গে বাড়ির লোকজন আছে । পুলিশও এসেছে । ওর মা ভীষণ কান্নাকাটি করছে । পরের মাসেই নাকি মেয়েটির বিয়ে হবার কথা ছিল । কেন যে এমন কাণ্ড ঘটলো কে জানে ? সবাই বলাবলি করছে মেয়েটি নাকি আত্মহত্যা করেছে ।“
-“সুরেশ, তুমি ওদের অপেক্ষা করতে বলো । আমার আর কয়েকটা পেসেন্ট দেখতে বাকি আছে । আধ ঘণ্টার মধ্যেই আসছি ।“
-“ঠিক আছে ডাক্তারবাবু ।“ – সেলাম ঠুকে সুরেশ দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে গেল ।

আধ ঘণ্টার মধ্যে ডাঃ রায় ভিজিট সেরে তাঁর অফিস ঘরে ঢুকলেন । অফিস ঘরে তখন অনেক লোক তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে । একজন পুলিস অফিসার তাঁর টেবিলের সামনে রাখা চেয়ারে বসে । ঘরের এক কোণে রাখা বেঞ্চিতে বসে এক বয়স্ক মহিলা অঝোরে কেঁদে চলেছে । ডাঃ রায় তাঁর চেয়ারের দিকে এগোতেই ঐ মহিলা ছাড়া সকলেই উঠে দাঁড়ালো । হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার শুভেন্দু বোস তখন কাগজপত্রের ফর্মালিটিস মেইনটেন করছে । ডাঃ রায় সবাইকে বসতে বলে নিজের চেয়ারে বসলেন । পুলিশ অফিসারকে বললেন – “কি ব্যাপার বলুন ?”
পুলিশ অফিসার বলল – “ ডঃ রায়, দু’দিন আগে আমাদের কাছে মিসিং ডাইরি হয়েছিল যে সুজান গুরুং নামে গুরুং বস্তির একটা মেয়ে নিখোঁজ । আজ সকালে তার ডেড বডি পাওয়া গেছে । ঐ বস্তির কাছেই প্রায় হাজার ফুট নিচের খাদ থেকে সিকিম পুলিসের রেসকিউ টিমের জওয়ানরা উদ্ধার করে আমাদের থানায় হ্যান্ড-ওভার করেছে । আমাদের গাড়িতে কফিনবন্দী ওর দেহটা আছে । সুইসাইড কেস। পোস্টমর্টেম করতে হবে”।
পুলিশ অফিসারের কথাগুলো কানে যেতেই বয়স্কা মহিলাটি কান্না ভেজানো গলায় বলল –
-“ না স্যার এ হতে পারে না । আমার মেয়ে সুই-সাইড করতে পারে না । ওর পছন্দমত ছেলের সাথে সামনের মাসের ১২ তারিখে ওর বিয়ের দিন ঠিক হয়েছে । বিয়ের বাজারও হয়ে গিয়েছে ।“
ডাঃ রায় বললেন – “আপনি শান্ত হন । আপনার মনের অবস্থা বুঝতে পারছি ।“
-“ডাক্তারবাবু ও সুই-সাইড করতে পারেনা । ওকে কেউ মেরে ফেলে দিয়েছে ।“
-“কেন, এই কথা আপনার মনে হচ্ছে কেন ?”
মহিলা তার দুচোখের জলের ধারা দুহাতের আঙ্গুল দিয়ে মুছতে মুছতে বলে চলল –
-“পরশু দিনের আগের দিন বিকালে বস্তির দু’জন বন্ধুর সাথে পাশের বস্তির এক বন্ধুর বাড়িতে আমার মেয়ে নেমন্তন্ন খেতে গিয়েছিল । রাত হয়ে যাচ্ছে অথচ মেয়ে ফিরছে না দেখে ঐ রাতেই ওর বন্ধুদের বাড়িতে খোঁজ নিতে যাই । সেখানে জানতে পারি – একটা বিশেষ কাজ আছে বলে অনেক আগেই আমার মেয়ে নাকি সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ে । তারপর থেকেই খোঁজাখুঁজি শুরু হয়ে যায় । তারপর আজ সকালে এই খবর ।“


-৩-


কথাগুলো বলেই আবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল মহিলা । ডাঃ রায় মহিলার কথা মন দিয়ে শুনলেন । এ-রকম পরিস্থিতিতে সন্তানহারা মাকে সান্তনা দেওয়া ছাড়া কি আর করার আছে । ডাঃ রায় মহিলাকে শান্ত হতে বললেন ।
-“একটু ধৈর্য ধরুন । দেখি কি করা যায় ? তবে আপনার মেয়ে তো আর ফিরবে না । নিয়মানুযায়ী আগে পোস্টমর্টেম তো করতে হবে । তারপর রিপোর্ট অনুযায়ী আমাদের এগোতে হবে ।“
বেল বাজিয়ে ডাঃ রায় দু’জন মর্গ-কর্মীকে ডেকে পুলিশ ভ্যান থেকে মৃতদেহ মর্গে পাঠালেন । লিগাল ফর্মালিটিগুলো মেইনটেন করে পুলিশ অফিসার উঠে পড়ল । অন্যান্য সকলে যখন মেয়েটির মাকে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল তখন তার বুকফাটা কান্নায় ছোট্ট হাসপাতালটা খানখান হয়ে যাচ্ছিল । এ-দৃশ্য ডাঃ রায়কে ভীষণ ভাবে বেদনাহত করে তুলল । এতদিনের ডাক্তার-জীবনে যে অনুভূতি তিনি এতদিন পান নি সেই অনুভূতি আজ তিনি পেলেন । তিনি অনুভব করলেন তাঁর দুচোখের পাতা জলে ভিজে গেছে ।

বিকাল পাঁচটা নাগাদ দু’জন কর্মীকে নিয়ে ডাঃ রায় মর্গে ঢুকলেন । ডি-সেকসান টেবিলে মেয়েটির ডেড-বডি রাখা হল । উনিশ-কুড়ি বছরের সুন্দরী মেয়ে । সারা শরীর নীল হয়ে গিয়েছে । পোষ্ট-মরটেমের সময় শরীরের আঘাতের চিহ্নগুলো লক্ষ্য করে ডাঃ রায়ের মনে সন্দেহের দানা বাঁধল । বিভিন্ন লক্ষণ দেখে তিনি মনে মনে একরকম নিশ্চিত হলেন যে মেয়েটির মা একেবারে মিথ্যে বলেনি । উঁচু পাহাড়ি টিলা থেকে নীচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলে যে ধরনের আঘাতে মৃত্যু হবার কথা সে ধরনের আঘাতের সাথে আরও কিছু সূক্ষ্ম চিহ্ন মেয়েটির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে । মেয়েটির গলায় হাতের নখের আঁচরের দাগ স্পষ্ট । ডাঃ রায় আরও নিশ্চিত হলেন যে মেয়েটির উপর পাশবিক অত্যাচারও করা হয়েছে । ডাঃ রায় সত্যের পূজারী । কারও কাছে তিনি হার মানবেন না । পোস্টমর্টেম সম্পন্ন করে যথাযথ রিপোর্টও তৈরি করে ফেললেন । নিয়মানুযায়ী রিপোর্টের একটা কপি থানায় পাঠালেন ।

রাতে বাংলোয় ফিরে ডাঃ রায় কিছুতেই শান্তি পাচ্ছিলেন না । নিস্পাপ মেয়েটির মুখ তাঁর চোখের সামনে ভেসে উঠছে । এর আগে অনেক এক্সিডেন্টাল কেসের পোস্টমর্টেম তিনি করেছেন কিন্তু এই মেয়েটির কথা ভাবতেই তাঁর মনটা ব্যাথায় ভরে উঠল । অনেক চিন্তা ভাবনা করে তিনি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন । মেয়েটি সুইসাইড করেনি, ওকে ধাক্কা দিয়ে গভীর খাদে ফেলে দেওয়া হয়েছে । তাঁর রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপ নেবে বলেই তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস । ডাঃ রায় রাতের খাবার খেলেন না । বিছানায় ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দিলেন ঠিকই কিন্তু কিছুতেই তাঁর ঘুম এল না । সারারাত অস্বস্তির মধ্যেই কাটালেন ।

এরপর দু’এক দিন কেটে গেল । ডাঃ রায়ও তাঁর হাসপাতালে কর্মব্যস্ততার মধ্যে চলতে লাগলেন । একদিন সকালের দিকে ডাঃ রায় তাঁর অফিস ঘরে বসে আছেন এমন সময় হঠাৎ তাঁর গাড়ির ড্রাইভার শ্যাম মুখটা বিষণ্ণ করে তাঁর সামনে এসে দাঁড়াল । শ্যামের বিষণ্ণ মুখ দেখে তার কি হয়েছে জানতে চাইলেন ডাঃ রায় । শ্যাম সরাসরি কোন জবাব না দিয়ে কেমন যেন ইতস্ততঃ করতে লাগল । ড্রাইভারের এ

-৪-

হেন আচরন লক্ষ্য করে ডাঃ রায় বুঝলেন ও কিছু বলতে চায় কিন্তু বলতে দ্বিধা হচ্ছে । ডাঃ রায় এবার ধমকের সুরে বললেন – “কি হয়েছে বলতে পারছ না ? শরীর খারাপ ? ছুটি চাই ?”
শ্যাম মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল – “না, তা নয় স্যার” ।
-“তাহলে, কি হয়েছে বল” ।
-“স্যার, কাল রাত থেকে আমার ভীষণ ভয় করছে”।
-“সে কি ? ভয় করছে ? কি ব্যাপার বল তো ?”
-“স্যার, কাল রাতে আপনাকে পৌঁছে দিয়ে গাড়ি গ্যারেজ করে গেটে তালা লাগিয়ে বাড়ির পথে এগোচ্ছি এমন সময় হঠাৎ গ্যারেজ থেকে আসা একটা জোর আওয়াজ শুনে দাঁড়িয়ে পড়লাম । পিছন দিকে তাকিয়ে দেখি গ্যারেজের গেটটা কে যেন ভেতর থেকে ধাক্কা মারছে । এত জোরে ধাক্কা মারছে মনে হল গেটটা ভেঙ্গে যাবে। আমি তাড়াতাড়ি দারোয়ান বাহাদুর সিং-কে ডেকে আনলাম । কিন্তু বাহাদুর আসার পর আর কোন শব্দ শোনা গেল না । আমরা দু’জনে গ্যারেজের গেট খুলে টর্চ জ্বেলে চারিদিক দেখলাম । ভেতরে কাউকেই দেখা গেল না। আমি ভয় পেয়ে গেলাম । ব্যাপারটা বুঝে উঠতে পারলাম না”। একনাগাড়ে কথাগুলো বলে শ্যাম হাঁফাতে লাগল ।
শ্যামের অবস্থা দেখে ডাঃ রায় একটু হাসলেন । এ-রকম ঘটনা কোন প্রকৃতিস্থ মানুষের পক্ষে দেখা সম্ভব ? নিশ্চয়ই সে-সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিল । ডাঃ রায় বললেন –
-“শ্যাম, এ-রকম ঘটনা ঘটতেই পারেনা । ওটা তোর মনের ভুল । গতকাল সারাদিন তোর খুব খাটুনি গিয়েছে, তাই মনে হয় তোর মাথাটা ঠিক মত কাজ করছিল না । দুপুরের পর একবার আমার কাছে আসিস, তোর প্রেসারটা চেক করে দেব”।
-“না স্যার, আমি ঠিক আছি । আপনি আমাকে বিশ্বাস করুন স্যার, ঘটনাটা আমি ঠিকই দেখেছি । সেদিন স্যার আমি ড্রিংক করিনি । স্বাভাবিক ছিলাম । আর তা ছাড়া গ্যারেজের ঠিক পিছনেই লাশ কাটা ঘর । সেজন্য খুব ভয় পেয়ে গিয়েছি”।
-“তোকে নিয়ে আর পারা যাচ্ছে না । এতদিন এখানে ডিউটি করছিস কিছু হল না, আর হঠাৎ কি দেখতে কি দেখেছিস তাতে তুই ভয় পেয়ে গেলি ? তুই কি ভূতের ভয় পাচ্ছিস ? তুই পুরুষ মানুষ না !”
- “একটা কথা স্যার আপনাকে বলা হয়নি । সেদিন রাতে গ্যারেজের গেটে ধাক্কার শব্দ বন্ধ হবার পর এবং গ্যারেজ থেকে বেরিয়ে আসার পর ভেতর থেকে একটা মেয়েলি গলায় কান্নার আওয়াজ শুনেছি । সে কান্নার আওয়াজ দারোয়ানও শুনেছে স্যার”।
শ্যামের এ-সব কথা শুনে ডাঃ রায় বেশ চটে গেলেন । কি বলছে শ্যাম ? ওর কি মাথা খারাপ হয়ে গেল ? অদ্ভুত সব গল্প শোনাচ্ছে । বেশ রাগত স্বরে বললেন –
-“তোদের দু’জনের মাথাই খারাপ হয়ে গেছে । কালই রাঁচি পাঠিয়ে দেব”।
শ্যাম নাছোড়বান্দা । ডাঃ রায়ের কথা তাকে কিছুতেই পথে আনতে পারছে না । সে আগে কত রাত পর্যন্ত ডিউটি করেছে । রাতের নির্জন হাসপাতালে কোনদিন এ-ভাবে তাকে ভাবায় নি । কিন্তু এখন হাসপাতালের এ-রকম ভৌতিক পরিবেশে তার গা ছমছম করে ওঠে ।
-“স্যার আপনার পায়ে পড়ি, রাতে গ্যারেজে আর গাড়ি রাখতে যাব না । আপনি অনুমতি দিন স্যার আপনার কোয়ার্টারের নীচে খালি জায়গায় গাড়ি রাখব”। কথাগুলো বলে শ্যাম প্রায় কেঁদে ফেলল ।
-“ঠিক আছে বাবা । আমি দেখছি কি করা যায় । এখন আমাকে কাজ করতে দে”।
ড্রাইভার শ্যামকে বিদায় দিয়ে ডাঃ রায় তাঁর অফিসের কাজে মন দিলেন ।


-৫-

শ্যামের পীড়াপীড়িতে সেদিন রাত থেকেই ডাঃ রায় তাঁর গাড়িটা তাঁর কোয়ার্টারের পাশে রাখার ব্যবস্থা করলেন । দু’এক দিনের মধ্যেই ডাঃ রায়ের ভুল ভাঙ্গল । শ্যাম একেবারে মিথ্যে বলেনি । কারণ এই কয়েকদিনের মধ্যেই বেশ কিছু অভিযোগ তাঁর কাছে আসতে লাগল । বেশ কয়েকজন হাসপাতাল কর্মী, কয়েকজন রোগী এবং তাদের সাথে থাকা আত্মীয়-স্বজন গভীর রাতে কয়েকটি অস্বাভাবিক ঘটনায় ভয় পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে । বিশেষ করে টি,বি, ওয়ার্ডের রোগীদের কাছে অভিযোগের মাত্রা বেশি । কয়েকজন টি,বি, রোগী বাড়ি চলে যেতে চেয়েছে । বেশ কিছু নার্স রাতে ডিউটি করতে চাইছে না । ডাঃ রায়ের জুনিয়র ডাঃ শুভেন্দু বোস । নাইট শিফট তারই তত্ত্বাবধানে থাকে । বেশ কয়েকদিন ধরে সে যেন কেমন বিমর্ষ হয়ে পড়েছে । সেটা ডাঃ রায়ের চোখে ধরা পড়েছে । ডাঃ রায় হাসপাতালের ঘটনার কথা তার কাছে জানতে চাইলেন । সেও ডাঃ রায়কে সরাসরি কিছু বলতে পারল না । তবে কতকগুলো অভিযোগ যে তার কাছে এসেছে সেটা সে ডাঃ রায়কে জানালো ।

একদিন হাসপাতালের সিনিয়র নার্স মিস ডলি গোমসের রাতে ডিউটি ছিল টি,বি,ওয়ার্ডে । রাত তখন গভীর । মিস গোমস তার টেবিলে মনোযোগ সহকারে রোগীদের ফাইলগুলো দেখছিল । হঠাৎ ওয়ার্ডের বারান্দায় একটা অদ্ভুত আওয়াজ হতেই চমকে গেল । অসীম সাহসী হিসাবে মিস গোমসের বেশ সুনাম আছে । যার জন্য রাতের ডিউটি তার বেশি পড়ে । মিস গোমস উঠে কাঁচের জানালার কাছে গিয়ে বাইরে তাকাতেই দেখল অল্প বয়সী একটা মেয়ে চাদরে মাথা ঢেকে করিডোর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে । মিস গোমস জানালা ছেড়ে একদৌড়ে দরজা খুলে বারান্দায় এল । কিন্তু কাউকেই সে দেখতে পেল না । শুধু কানে এল দূর থেকে ভেসে আসা মেয়েলি গলায় অস্ফুট কান্নার আওয়াজ । বেশ ভয় পেয়ে গেল মিস গোমস । কাউকে কিছু বলাও যাচ্ছে না । কাছাকাছি কোন ওয়ার্ড বয়কেও সে দেখতে পেল না । গভীর রাতে নিস্তব্ধ হাসপাতালে টি,বি, ওয়ার্ডে ঘুমন্ত কয়েকজন রোগী আর সে একা । অনুসন্ধিৎসা না বাড়িয়ে ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে মিস গোমস তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকে পড়ল আর কোন রকমে রাতটা কাটিয়ে দিল ।

পরদিন সকালে ডাঃ রায় অফিস ঘরে আসতেই মিস গোমস ভয়ে ভয়ে তাঁর সামনে এসে দাঁড়াল । ডাঃ রায়কে হাতজোড় করে নমস্কার করে বলল – “স্যার কয়েকটা দিনের জন্য রাতের ডিউটি থেকে আমাকে অব্যাহতি দিন” । মিস গোমসের এ-হেন আচরণে ডাঃ রায় একটু আশ্চর্য হয়ে গেলেন । মিস গোমসকে বললেন – “কেন ? আপনার আবার কি হল ? এভাবে ডিউটি করলে হাসপাতাল চলবে ?” মিস গোমস একটা ঢোক গিলে বলল – “ আপনি তো সবই জানেন স্যার । ওয়ার্ড বয়দের থেকে শুরু করে নার্সরা, ড্রাইভাররা এমনকি রুগীরাও আতঙ্কে ভুগছে । ডাঃ বোস-ও এ-ব্যাপারে জানেন । তিনিও চিন্তিত”। ডাঃ রায় বললেন – “ও কিছু না, মন থেকে সব ঝেড়ে ফেলুন । দেখবেন সব ঠিক হয়ে গেছে”। মিস গোমস বলল – “স্যার, এতদিন এখানে কাজ করছি, কোনদিন কিছু বলেছি আপনাকে ? স্যার একটা কথা বলব ? গুরুং বস্তির ঐ মেয়েটার এখানে পোস্টমর্টেম হবার পর থেকেই যত গণ্ডগোল শুরু হয়েছে”। ডাঃ রায় মিস গোমসের কথা শুনলেন । কিন্তু এ-ব্যপারে তিনি কি করতে পারেন ? হাসপাতাল তো তিনি বন্ধ করে দিতে পারেন না ! ডাঃ রায় মিস গোমসকে সাহস জুগিয়ে বললেন – “ব্যস্ত হবেন না মিস গোমস । আমি থাকতে ভরসা হারাবেন না। দেখছি কি করা যায়”? কথা আর না বাড়িয়ে ডাঃ রায় হাসপাতাল পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়লেন ।


-৬-

দুপুরের লাঞ্চ সেরে চেয়ারে শরীরটাকে এলিয়ে দিলেন ডাঃ রায় । সারাদিনে কর্মব্যস্ততার মধ্যে এই একঘণ্টা সময় তাঁর নিজস্ব । কোন এমারজেন্সি না থাকলে এই সময় কেউ তাঁকে ডিস্টার্ব করেনা । আজ তাঁর মাথায় একটা চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে । কয়েকদিন ধরে হাসপাতালের বিভিন্ন অস্বাভাবিক কার্যকলাপ তাঁকে বেশ ভাবিয়ে তুলেছে । সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ডাঃ রায় একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন । তাঁর তন্দ্রালু চোখের সামনে গুরুং বস্তির সেই মেয়েটির মুখটা ভেসে উঠল । অস্ফুট স্বরে সে বলে উঠল – “ডাক্তারবাবু আমি সুইসাইড করিনি । আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম । বিয়ে করে ঘর বাঁধতে চেয়েছিলাম । কিন্তু ওরা আমাকে বাঁচতে দিল না । আমি ওদের কোন ক্ষতি করিনি । যাদের বন্ধু বলে বিশ্বাস করেছিলাম তারাই আমার ক্ষতি করল । ওদের ক্ষমা করবেন না ডাক্তারবাবু । কোর্টে আপনার সাক্ষ্যতেই দোষীরা সাজা পাবে”। চমকে উঠলেন ডাঃ রায় । নিমেষে তাঁর তন্দ্রাচ্ছন্নতা কেটে গেল । চারিদিকে তাকিয়ে দেখলেন কেউ কোত্থাও নেই । ঘরের দরজাও তো বন্ধ । তাঁর অজান্তে কি ঘটলো তিনি বুঝে উঠতে পারলেন না । এ নিশ্চয়ই তাঁর মনের ভুল । এ-সব ব্যাপারে তিনি এত চিন্তা করছেন যে এ-রকম ভুল হতেই পারে । তবে মনের ভুলে যাই ঘটুক না কেন তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন কোর্টে সাক্ষ্যদানের সময় তিনি পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ীই বলবেন । কোন প্রশাসনিক চাপ কিংবা বদ শক্তির কাছে মাথা নোয়াবেন না । তিনি সত্যকে অস্বীকার করতে পারবেন না ।

এরপর কয়েকটা দিন ভালো ভাবেই কেটে গেল । এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে কোন ভূতুড়ে ঘটনা ঘটেনি । কোন অভিযোগও আসেনি । ডাঃ রায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন । কিন্তু তাঁর মাথায় ঐ কেস ডায়েরি মাঝে মাঝেই ঘোরাফেরা করে । কেসটার যে কি হল তিনি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না । এখন পর্যন্ত কোর্ট থেকে তাঁর কাছে কোন ডাক আসেনি । কোর্টে সাক্ষ্য দেবার জন্য তিনি মুখিয়ে আছেন । সত্যকে সামনে টেনে আনার দায়বদ্ধতা তাঁকে সব সময় কুরে কুরে খায় ।

হাসপাতাল স্বাভাবিক হয়ে উঠছিল। প্রশাসনিক কাজকর্ম ছন্দে ফিরে আসছিল । হঠাৎ একদিন গভীর রাতে একটা হৃষ্টপুষ্ট কালো বিড়াল বিকট চিৎকার করতে করতে সারা হাসপাতাল প্রদক্ষিণ করতে লাগলো । সে চিৎকার এতটাই কানঝাঁঝালো আর অদ্ভুত ছিল যে কারোর পক্ষে সহ্য করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ালো । প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে বিড়ালের সে অদ্ভুত কান্না মাখানো চিৎকার থামলো লাশ-কাটা ঘরে । শুধু একদিন নয় । এ-রকম ঘটনা ঘটে চলল এক সপ্তাহ ধরে । রোজ রাত বারোটায় । নাইট সিফটে কর্মরত সকলেই এমনকি রোগীরাও বিড়ালের কান্নায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠল । প্রত্যেকেই বলাবলি করতে লাগল এ-রকম বিড়ালের কান্না তারা জীবনে কোনদিন শোনেনি । বিড়ালটাকে তারা কিছুতেই ঠেকাতে পারছে না । তাড়িয়ে দিতে গেলে মাঝে মাঝে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে । ডাঃ রায়ের কানে এই ঘটনার বিবরণ যেতেই তিনি নিজে একদিন রাতে হাসপাতালে এলেন । তিনি নিজে সেদিন ঘটনা প্রত্যক্ষ করলেন । সত্যিই বিড়ালের এ-রকম ভয়ঙ্কর কান্না তিনি নিজেও সহ্য করতে পারছিলেন না । তিনি পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না যে কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায় । তিনি কাউকেই মুখে কিছু বললেন না । তিনি বুঝে গেলেন আসল ঘটনাটা কি ? দোষীরা শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত গুরুং বস্তির মেয়েটির আত্মা শান্তি পাবে না । আর এও বুঝে গেলেন মেয়েটি তাঁর উপর অনেক আস্থা রেখেছে ।



-৭-

প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে যাবার পর একদিন আদালতের নোটিস পেলেন ডাঃ রায় । নির্দিষ্ট দিনে আদালতে উপস্থিত হয়ে মহামান্য বিচারককে মেয়েটির পোস্টমর্টেম রিপোর্ট সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পেশ করলেন । সেদিন কোর্টে মেয়েটির মা এবং তাদের কিছু আত্মীয় পরিজনও উপস্থিত ছিল । বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণ, ভিসেরা রিপোর্ট এবং ডাঃ রায়ের পেশ করা পোস্টমর্টেম রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রমানিত হল মেয়েটি আত্মহত্যা করেনি । ঘটনার দিন বিকালে মেয়েটির সাথে যে দু’জন ছিল তাদেরও মহামান্য বিচারক আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন । সেদিন সরকারী উকিলের জোরালো জেরার মুখে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল । আদালতে মহামান্য বিচারকের সামনে তারা স্বীকার করতে বাধ্য হল যে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই মিথ্যা কথা বলে তারা সুজানকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল । কিন্তু সেদিন পরিস্থিতি এমনই হয়েছিল যে সুজান ভয়ে পালাতে গিয়েছিল আর অন্ধকারে পা ফসকে হাজার ফুট নীচে খাদের অতলে তলিয়ে যায় ।

সুজান-কেসের বিচার পর্ব শেষ । মহামান্য বিচারক দুই অপরাধীকেই দোষী সাব্যস্ত করে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করলেন । ডাঃ রায় অপরাধীদের উপযুক্ত সাজা হওয়াতে খুশী হলেন ঠিকই কিন্তু মনেপ্রাণে খুশী হতে পারলেন না । এতে সুজানের আত্মা প্রকৃত অর্থে কি শান্তি পাবে ? বিচারক আর কিই বা শাস্তি দিতে পারেন ! আইনের কাছে তাঁর হাত-পা বাঁধা । আইনের ধারা অনুযায়ী সর্বচ্চ শাস্তিই তিনি দিয়েছেন। তিনি তো আর সুজানকে ফেরত দেবার নির্দেশ দিতে পারেন না কিংবা অপরাধীদের মেরে ফেলারও নির্দেশ দিতে পারেন না । ডাঃ রায়ের চোখের সামনে ভেসে উঠল পোস্টমর্টেম ঘরে সেদিনের সুজানের নিস্পাপ মুখটা আর তাঁর অফিস ঘরে সুজানের মায়ের বুক-ফাটা হাহাকার । ডাঃ রায় সেদিন তাঁর চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি । দু’ফোঁটা অশ্রুজল তাঁর সার্টের সামনের অংশটা ভিজিয়ে দিল ।

এই বিচারে হয়তঃ সুজানের আত্মা শান্তি পেয়েছিল । ডাঃ রায়কে হয়তঃ আর কষ্ট দিতে চায়নি সুজান । তাই তারপর থেকে সে আর কোন উপদ্রপ করেনি এবং হাসপাতালে আর কোন অদ্ভুত ভৌতিক ঘটনাও ঘটেনি । হাসপাতালের সকলেই শান্তিতে কাজকর্ম করতে লাগল । এরপর একমাসের মধ্যেই ডাঃ রায়কে তাঁর নিজ হাতে গোছানো হাসপাতালকে ভুলে যাবার নির্দেশ এল । স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে প্রোমোশন সহ ট্রান্সফার অর্ডার পেলেন । তাঁকে ডেপুটি ডাইরেক্টর, স্বাস্থ্য মন্ত্রক, ওয়েস্ট বেঙ্গল গভর্নমেন্ট পদে যোগ দিতে হবে । এ-কথা জানাজানি হতেই বন্ধু-বান্ধব, হাসপাতালের সকল কর্মী বিমর্ষ হয়ে পড়ল । তারা কেউই চায়না ডাঃ রায়ের ট্রান্সফার । হাসপাতালের প্রতি, সকল জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি এবং সর্বোপরি সংশ্লিষ্ট সমস্ত কর্মীবৃন্দের প্রতি তাঁর প্রগাঢ় আস্থা ও ভালবাসায় সকলেই আকৃষ্ট । কিন্তু এক্ষেত্রে ডাঃ রায়ের কিচ্ছু করার নেই। উপরতলার নির্দেশ তাঁকে মানতেই হবে । সিন্থামের সবাইকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানিয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি কোলকাতায় চলে এলেন ।

সিন্থামের খোলা এ্যালবামটা নিয়ে কতক্ষণ যে তিনি স্মৃতি রোমন্থন করছেন ডাঃ রায় খেয়ালই করেননি । পরিচারিকার ডাকে যখন সম্বিৎ ফিরে পেলেন তিনি দেখলেন এ্যালবামটা তাঁর চোখের জলে ভিজে গেছে । চোখের জল মুছে তাড়াতাড়ি এ্যালবামটা বন্ধ করে যথাস্থানে রেখে উঠে পড়লেন তিনি । তাঁর স্নানের গরম জল রেডি । ********
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৫৪৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৮/০৪/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • আবুল খায়ের ২৬/০৯/২০১৭
    ভালো লেখা, শারদীয় শুভেচ্ছা
  • আগুন নদী ২৭/০৪/২০১৫
    গল্পকার হিসেবে দারুণ বর্ণিলেন,
    লেখকের এই বিষয়ক হাতে অভিজ্ঞতার ছাপ পেলাম।
    আমি গল্পলেখক কে সাধুবাদ জানাই।
    আমার আবার একটানাভাবে পড়ে শেষ করার ধৈর্য্য কম।
    তবুও গল্পটি বেশ টানলো। ভালো ও লাগলো ঘটনাবহ।
    এখানেই লেখকের (কবি ও বটেন) সার্থকতা।
    অভিনন্দন আপনাকে।
  • আবু সঈদ আহমেদ ২৫/০৪/২০১৫
    ভালো লাগল। আরো চাই।
  • অগ্নিপক্ষ ২১/০৪/২০১৫
    ভয় পেলাম না!
  • দীপঙ্কর বেরা ১৯/০৪/২০১৫
    বাহ
    বেশ লেখা তো
    ভাল লাগল
  • অনেক ভাল লাগল !
 
Quantcast