www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গোপলার কথা - ১০২

নারী ও পুরুষ


মানুষের দুই প্রকৃতি। নারী ও পুরুষ। তবে তৃতীয় লিঙ্গের আর এক প্রকৃতি আছে।
তবে পশুদের মধ্যে এই তৃতীয় অবস্থান আছে কি নেই সেটা বড কথা নয়, বড় কথা হল সে সব বিড়ম্বনা নেই। কিন্তু মানুষের মধ্যে নানান বিড়ম্বনা আছে।
তবে একথা ঠিক। সবার মন আছে।
যেমন দেহের গঠনে নারী ও পুরুষ আলাদা তেমনি মন ও মানসিকতায় আলাদা ছাপ দেখা যায়। প্রকৃতির মাঝে দুজনে কখনই সমান নয়।
তবে কাজের ক্ষেত্রে দুজনের সমান ভূমিকা দেখা যায়। কেউ পিছিয়ে থাকে না। সে কায়িক পরিশ্রম হোক কিংবা মানসিক। দায়িত্ববোধেও অগ্রনী ভূমিকা দেখা যায়।
নারী যেমন প্রাণ সৃষ্টির মূল তেমনি প্রাণ সৃষ্টির সঞ্চারে পুরুষের ভূমিকা অবশ্যই থাকতে হবে। তাই তো বিশ্ব সৃষ্টির আঁকাজোকা বা সভ্যতার অগ্রগমনে দুজনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। শুধু পুরুষ কিংবা শুধু নারীর পক্ষে কোন কিছুই সম্ভব নয়।
তাই তো কবি নজরুল বলেছেন
"সাম্যের গান গাই -
আমার চক্ষে পুরুষ-রমনী কোনো ভেদাভেদ নাই।
বিশ্বে যা-কিছু মহান্ সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।"

আসলে অর্ধেক নয়, প্রতিটি পদক্ষেপে সমান সমান পা ফেলে এগিয়ে যাওয়া। এখানে কম বেশি নয়, হাতে হাত রেখে সম্পূর্ণ করা, সম্পন্ন করা। এবং সেটাই জীবন। সত্যিকারের সভ্যতা।
কে নারী কে পুরুষ বিভাজন তখনই হয় যখন তুমি মানুষ পরিচয়ে ব্যর্থ।
আমি নারীর চেয়ে এগিয়ে কিংবা আমি পুরুষের সমান সমান এসব কথা বলার কোন প্রয়োজন পড়ে না যদি সে তার কাজে কোন ছাপ রাখতে না পারে।
তবে দেশে কালে সমাজে রাজনীতিতে নারীকে দাবিয়ে রাখার ঘর বন্দী করে রাখার ইচ্ছে খুশি ব্যবহারের অধিকার পুরুষরা করে আসছে। এবং এখনও তা চলছে। তাই এই বিংশ শতাব্দীতে এসেও আমাদের নারী পুরুষ নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে।
প্রতিটি মানুষের মধ্যে প্রভুত্ব বাস করে। সুযোগ পেলে সে প্রভু হতে চায়। তবে এই ভাবনাটি খুব বেশি পরিমানে পুরুষদের মধ্যে দেখা যায়। তাই ছোটো সংসারিক জীবন থেকে সে নারীর সঙ্গে প্রভুর মত আচরণ করে।
বাবা হিসেবে মেয়ের উপর, দাদা হিসেবে দিদি ও বোনের উপর, আর অবশ্যই স্বামী হিসেবে স্ত্রীর উপর। আবার বাবা হিসেবে ছেলের উপর দাদা হিসেবে ভাইয়ের উপর এই প্রভুত্ব ততটা দেখাতে পারে না।
এই প্রভুত্ব দেশের দশের সমাজের মানুষে মানুষে পরিচয়ে নানান বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পুরুষ ভাবছে এই প্রভুত্ব করে আমি জয়ী। এই পৃথিবীর বুকে আমার উপরে কেউ নেই। আবার নারী অত্যাচারিত হয়ে উঠে দাঁড়াবার যেটুকু চেষ্টা করছে তাতে পুরুষের এবং সমাজের দেশের দশের ভালোর দিকে সেই সম্ভাবনা এগিয়ে থাকছে না। শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর ভরসারস্থলে সার্বিক উৎকর্ষতা পিছিয়ে পড়ছে। লাভের লাভ কিছুই হচ্ছে না।
তবু দেশে দশে সমাজে আইনে নারীদের জন্য ব্যবস্থা আছে। বাসে আছে গণতন্ত্রে আছে আইনে আছে এমনকি অত্যাচারিত বা ধর্ষণ ইত্যাদির ক্ষেত্রে নারীদের জন্য নানান সুরক্ষানীতি আছে। এই সুরক্ষা ভাবনাটাই যে নারী আলাদা দুর্বল পুরুষ দ্বারা কোথাও না কোথাও প্রভুর দাসী তা প্রমান করে।
আবার যা সংরক্ষিত নয় তাতে নারী পুরুষ উভয়ের অধিকার আছে। তার মানে পুরুষের জন্য কেবলমাত্র টয়লেট ছাড়া আর কিছুই নেই। যেখানে এসব আইন পাশ হয় তাতে কোন নারী কেন প্রতিবাদ করে না?
এ পরে মন ও মানসিকতায় নরম মন হিসেবে চিহ্নিত করার প্রবনতা দেখা যায়। আর ট্রামে বাসে মাঠে ময়দানে গায়ে গা ঠেকানো লেগে যাওয়া ইত্যাদিতে আইন নারীর পক্ষে। মলেস্ট ব্যাপারটা পুরুষদের ক্ষেত্রে আদৌ প্রযোজ্য নয়। বেশিরভাগ নারী মনোভাব তেমনি থাকে। নারীদের সম্মান করলে সমাজ উন্নত। কিন্তু পুরুষদের সম্মান করা না করার কোন অবস্থান নেই। আসলে আইন সমাজ সংসার দেশ দশ মন মানসিকতা ইত্যাদি সবই নারী পুরুষ হিসেবে চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে সুচিত রচিত বা ভাবিত হলে অবস্থান খুব খারাপ হয়।
যদি মানুষ হিসেবে পরিগণিত করে অবস্থান নির্ণয় করলে সভ্যতা আরো বেশি এগিয়ে যেতে পারে। আলোচনা যদি হয় মানুষ ও তার কার্যকলাপ তাহলে অন্য রকম কিছু হত। কিন্তু সমাজ পরিকাঠামে অনেক আগে থেকে হয়ে আছে যাতে কিছু শ্রেণি কিছু নারী কিছু আরো কিছু অবস্থান নানান ভাবে পেছিয়ে আছে দেখে জেনে ভেবে আলাদাকরণ করা হয়েছে। তাতে যে বিরাট কিছু সম্ভাবনা এগিয়ে আসছে তা কিন্তু নয়।
আসলে নারী হিসেবে নয়, পুরুষ হিসেবে নয়, দেহ হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে তার যোগ্যতার পরিচয়ে যদি জীবন সভ্যতা সমাজ দেশ দশ এগিয়ে যায় তাহলে মানুষের মঙ্গল অনিবার্যভাবে সম্পন্ন হবেই হবে।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ২৪০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৫/১২/২০২২

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

 
Quantcast