www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গোপলার কথা -২১

নৈতিকতা
-----

রাস্তাটা আমরাই দেখিয়েছিলাম। মানি আর নাই মানি। আমরা গোপনে করতাম। এখন ওরা প্রকাশ্য করছে। আমরা বার বার যেটা লুকিয়ে করার চেষ্টা করতাম আজ ওরা কি করে যেন সবই জেনে ফেলেছে। সামনে চলে আসছে সেই সব, একেবারে সামনে।
এখন আমরা সেই পরিস্থিতির সামনে দাঁড়িয়ে বলছি - এই, কি হচ্ছে কি? এভাবে কেন করছো? এটা ঠিক না। ভদ্রতা বলেও তো একটা কথা আছে, নাকি? এমন অভদ্র আচরণ করো না?
ওরা তার পাল্টা জবাব দিলেই আমাদের চোখ ছানাবড়া হয়ে যাচ্ছে - কি? এত বড় কথা? বড়দের সামনে? একটু মর্যাদার কথা তো ভাববে, না কি?
অথচ আমরা যখন করতাম এবং করেছি ও করছি তখন ভেবেছি, কে আর দেখছে? কি আর হবে?
সেটাই যখন বুমেরাং হয়ে আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে তখন আমরা তা মানতেই পারছি না। মেনে নেওয়া যেমন কষ্টকর তেমনি ঘটে যাওয়া অনভিপ্রেত।
কেউ তো আর আকাশ থেকে বা মাটি ফুঁড়ে কখনো কিছু শেখে না।
জন্মের অধিগত অবস্থানে শেখে। কেউ কেউ ভাবতেই পারে। আমি তো করিনি, তাও কেন এমন হল? তাও কেন ওরা এমন করল? আরে বাবা, তুমি তো একা নও। আরও যেসব সামাজিক অবস্থান আছে, তারা? তারা যে সব করে তার কিছু তো ওদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বেই।
তুমি তখন অন্যের এমন আচরণ দেখেছিলে অথচ না দেখার ভান করেছিলে। প্রতিবাদ তো দূরের কথা, একটুও রা কাড়োনি। মনের মধ্যে তখন কি ঘুরপাক খাচ্ছিল - না, এটা ঠিক হচ্ছে না। ঠিক হচ্ছে না। কিন্তু আমিই বা কি করতে পারি! ভেবে, হাল ছেড়ে দিয়েছিলে।
হাল ধরে রাখলেই যে আকাশ কুসুম লাভ করে ফেলতাম, তাও নয়। অন্ততপক্ষে একটা উদাহরণ তো হতে পারতে। ঠিক নাকি ভুল? এসব কে বিচার করবে? সবার মুখে শুধু নাই আর নাই। সব ঐতিহ্য সংস্কার সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে গেল!
আর সবার ভাবনা শুধু আরো চাই, আরো চাই। আরে বাবা, আরো কত চাই! আসলে যা আছে তাতে কেউ সন্তুষ্ট নয়। এই অসন্তুষ্টির অসন্তোষ বীজ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমাগত। কিংবা বলতে গেলে আমিই কিংবা আমরাই ছড়িয়ে দিচ্ছি।
সেই ছড়ানো যখন আরো বিস্তৃতি লাভ করে আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে তখন আর সহ্য করতে পারছি না। দুর্ভাবনায় দিন কাটাচ্ছি, হায় হায় এ কি হল? কেন এমন হল?
আবার উল্টো দিক দিয়ে ভাবলে দেখা যায়, এসব নিয়ে অনেকে ভাবেই না। বোমা বানিয়ে এসে বা দু চারটে লাশ ফেলে এসে অনেকেই হাত পা ধুয়ে বিন্দাস খেতে বসে যায়। মনে মনে প্রসন্ন লাভ করে, ভালই করেছে। নিজে যেমন ভাবে তেমন অন্যের কাছ থেকে, বাবুর কাছ থেকে কিছু পিঠ চাপড়ানিও পায়।
এই সব অবস্থান যেখানে ইচ্ছে খুশি প্রশ্রয় পাক না কেন, সে কিন্তু আমাদের বাড়িয়ে দেওয়া উঠোনেও আজ না হোক কাল ছড়িয়ে পড়বে এবং পড়ছে।
যত রকমের চিন্তাধারায় শিক্ষার ব্যবস্থা হোক না কেন কিংবা শিক্ষা দেওয়া হোক না কেন সবার আগে শিক্ষা দিতে হবে মানবতার। সেই ভাবনা শুধু আমরা নয়, আমাদের সবার জন্য।
তার মানে রাস্তাটা করাই ছিল। আজকাল যেন একটু বেশিই ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই অস্থির অমানবচিত ধ্বংসমূলক গোপন কাজ। তাই জীবনকে অন্য রকম লাগছে। দু'মুঠো ভাতের রঙ কিন্তু পেটে না পড়লে অজানাই থেকে যায় খিদের অভিজ্ঞতা। শ্রমিকের অবস্থান মালিকের হেঁটে যাওয়া পায়ের শব্দে চমকে উঠে। আবার জয়ধ্বনি করে।
তাই এ রাস্তা আমাদেরকেই বন্ধ করতে হবে।
আমরা লুকিয়ে সিগারেট খেতাম। এখনকার প্রজন্ম প্রকাশ্য খাচ্ছে। আমরা কখনো মেয়েরা সিগারেট খেতে পারে ভাবতেই পারতাম না এখন ওরা খাচ্ছে।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৯৬২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/১০/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • বেতন দিয়াছিস!
    চোপরাও যতো মিথ্যেবাদীর দল।
    কত পাই দিয়ে কুলিদের তুই এ ক্রোর পেলি বল।
    বলতে পারবে না।শ্রমকে মূল্য দিতে হবে। সাথে শ্রম বিপণন কেন্দ্রকেও ভালো বাসতে হবে।
    অনেক ধন্যবাদ। কবি ও লেখক।
  • মনের কথা - ভালো কথা,
    সুন্দর হৃদয় গাঁথা ।
  • মোবারক হোসেন ৩০/১০/২০১৫
    ভাল লাগলো পড়ে।
 
Quantcast