www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

উপন্যাস

###উপন্যাস####
---#অচেনা আপন#---

_________এমরান হোসেন


আরিয়ান ছোটবেলায় বাবা-মায়ের সাথে লন্ডনে চলে যায়। যদিও পারিবারিক সমস্যার কারণে তার মা-বাবা দেশে আসতে চান না। কিন্তু আরিয়ান চায় দেশে আসতে। বাবা-মায়ের না আসার কারণে আরিয়ানেরও আর দেশে আসা হয়না। হঠাত একদিন সকালবেলা আরিয়ানের ছোট খালা আরিয়ানদের বাসায় আসলেন। আরিয়ানকে ঘুম থেকে ডেকে বললেন বাবা আগামী সপ্তাহে খালা দেশে যাব। তোমার বাবা-মা যদি রাজি থাকেন তাহলে তোমাকেও নিয়ে যাব। সেই ছোটবেলা থেকে তুমি আর স্বদেশে যাওনি! নিজের গ্রাম, আত্মীয়স্বজন কারও সাথে তোমার দেখা হয়নি।এভাবে জেদ করে বাবার মত নিজের আত্মীয় স্বজন থেকে দূরে থাকা ভাল নয়। খালার এমন কথা শুনে আরিয়ান অবাক! সে ভাবতেছে যে দেশে যাওয়ার জন্যে পাগল, যে আত্মীয়স্বজন দেখার জন্যে ব্যকুল তাকে খালা এমন উপদেশ দিচ্ছেন কেন? এর মানে কি খালা কিছুই জানেন না? বিষয়টা বুঝার জন্যে আরিয়ান তার খালাকে বলল 'আচ্ছা খালা আমি জেদ করে আছি এটা তোমাকে কে বলল?
--- কেন তোর মা-বাবা দুজনেই সেদিন বললেন ।
-- কি বললেন?
--- তুই বলেছিস আর দেশে যাবিনা, তুই ভুলে যাবে যে দেশে তোর কেউ আছেন।
-- খালা বিশ্বাস কর এমনটা আমি বলিনি। প্লিজ তুমি তোমার সাথে আমাকে নেওয়ার ব্যবস্থা কর আমি দেশে যাব।
--- সত্যিই তুই দেশে যাবি?
-- হ্যা খালা সত্যিই যাব।

খালার সুপারিশে শেষ পর্যন্ত আরিয়ানের দেশে যাওয়া হল। ছুটি যদিও দুই মাসের ছিল কিন্তু আরিয়ান সেটা মেনে নেয়নি। দেশে আসার পর সিদ্ধান্ত নিল সে আর লন্ডনে যাবেনা।অবশেষে তাই হল সে আর লন্ডনে যায় নি। অনেক বুঝানোর পর মা-বাবাও ব্যর্থ হলেন ছেলেকে লন্ডনে ফিরিয়ে নিতে। এজন্য দেশেই লেখা-পড়া চালিয়ে যেতে পরামর্শ দিলেন। সে লন্ডন থেকেই ইন্টারমিডিয়েট কমপ্লিট করে এসেছে। এজন্য দেশে এসেই সে অনার্সে (ইংরেজিতে) ভর্তি হল।

একাকী আর পরিচয় গোপনের জন্যে সে আর নিজের বাড়িতে থাকলনা। মামার বাড়িতেই থাকার সিদ্ধান্ত নিল। মামার বাড়ি থেকেই সে কলেজে ক্লাস শুরু করল। কলেজে প্রথম ক্লাস করতে যেয়ে অনেকের সাথে তার পরিচয় হল । অল্পদিনে সে সবার নজর কাড়লো। কারণ সে ইংরেজিতে স্মার্টলি অনর্গল কথা বলতে পারে। সে যদিও সবাইকে চিনেনা কিন্তু এখন তাকে সবাই চিনে। শিক্ষকদের কাছেও সে অল্পসময়ে প্রশংসার পাত্রে পরিণত হল।
একদিন বিকেলবেলা আরিয়ান তার ফ্রেন্ড ফাহিমকে নিয়ে নিজ গ্রাম দেখতে গেল। ফাহিমের মামার বাড়ি আবার আরিয়ানের পাশের বাড়ি। আরিয়ান সব বুঝতেছে বা চিনতেছে কিন্তু তাকে কেউ বুঝতেছেন না চিনতেছেন না। এমনকি ফাহিম ও জানেনা যে আরিয়ান এই গ্রামের ছেলে। চা-নাস্তা করার পর ফাহিম আরিয়ানকে বলল চল একটু ঘুরে আসি। দুজন বাড়ি থেকে বের হতেই আরিয়ান তার চাচীকে দেখতে পেল উঠোনে দাড়িয়ে আছেন পাশে তানহা, তানিয়া আর রাইহান। সে তাদের দিকে অপলক চেয়ে রইল। তার অজান্তেই দু-গাল বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগল। ফাহিম তা দেখে অবাক স্বরে বলল।
--- আরিয়ান তোর কি হয়েছে? তুই কাঁদছিস কেন?
-- তুই বুঝবিনা আজ আমার কত আনন্দ লাগছে! আমি দুঃখে কাঁদতেছিনা আমি সুখেই কাঁদতেছি।
--- ফালতু কথা বাদ দিয়ে কি হয়েছে সেটা বল।
-- আসলেই আমার কিছু হয়নি তবে কিছু একটা হবে মনে হয়।
--- পাগলের মত কি বলছিস? তোর আবার কি হবে?
-- তুই বুঝবিনা। চল আমরা এখান থেকে চলে যাই কালকে কলেজ গেলে সব বুঝবি।
--- ঠিক আছে তোর যখন মন খারাপ তখন আর এখানে না থাকাটাই ভাল।

দুজনেই এখান থেকে চলে গেল। রাত্রে শুয়ার পর আরিয়ান ভাবতেছে আমার চাচাতো বোন আমার ক্লাসমেট আমি চিনতে পারিনি এতদিন। আজ যদি চাচীর সাথে উঠোনে না দেখতাম তাহলে প্রতিদিন কলেজে দেখলেও আমার বোনকে আমি চিনতে পারতাম না। এই কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আরিয়ান ঘুমিয়ে পড়ল।
পরদিন সে ফাহিমের সাথে কলেজ গেল। যাওয়ার পথে ফাহিমকে তার সব ঘটনা খুলে বলল। ফাহিম সবকিছু শুনার পর আরিয়ানকে বলল,,,,
---তুই এক কাজ কর আজকে তানহাকে ডেকে এনে তোর পরিচয় দিয়ে দেয়। যদি সে পারিবারিক সমস্যাকে বড় মনে করে তোর সাথে কথা না বলে চলে যায়, তাহলে তুইও তাকে এড়িয়ে চলবে। আর যদি সবকিছু ভুলে তোকে ভাই বলে কথা বলে তাহলে তুই পারিবারিক সমস্যাটা সমাধানের পথ খুঁজবে। আমি তোর সাথে আছি সবসময় তোকে হেল্প করব কথা দিলাম।
---- ঠিক আছে মানলাম। তবে আমি তানহাকে ডাকতে যাবনা। তুই তাকে ডেকে আমার কাছে নিয়ে আসবি।
--- আচ্ছা ঠিক আছে। তুই এখানে দাড়া আমি ওকে নিয়ে আসি।

আরিয়ান দাড়িয়ে দাড়িয়ে ফাহিম আর তানহার অপেক্ষা করছে এমন সময় আরিয়ানের মোবাইলে ফোন আসল । আরিয়ানের বাবার ফোন! আরিয়ান ফোন রিসিভ করল।
---আসসালামু আলাইকুম। আব্বু কেমন আছেন?
---- ভাল তোর অবস্থা কি?
--- জ্বি আব্বু ভালো আছি।
---- আচ্ছা শোন তুই দেশে গেছিস ভালো। লেখাপড়া করতেছিস তাও ভালো। তবে একটা কথা মনে রাখবি। তোর চাচা-চাচী, তাদের সন্তানাদি কারও সাথে কোনো ধরণের সম্পর্ক রাখবেনা। যদি কখনো শুনি তাদের সাথে তুই সম্পর্ক রাখছিস তাহলে আমাকে আর তুই পাবিনা।
--- না আব্বু এমনটা বলবেন না। আমি তাদের সাথে সম্পর্ক রাখবো না। তাদের সাথে দেখা হলে পরিচয় দিবনা।
---- আচ্ছা ঠিক আছে তাই যেন হয়। অকে ফোন রাখছি।
---জ্বি ঠিক আছে।

আরিয়ান ফোন রাখতেই তার চোখ থেকে অঝরে জল ঝরতে লাগলো। এমন সময় ফাহিম তানহাকে নিয়ে হাজির। আরিয়ান তানহাকে দেখে কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। ফাহিমকে বলল
--- ফাহিম আমার খুব তাড়া আছে এক্ষুনি যেতে হবে। তুই আমার সাথে চল।
---- কি বলছিস তুই তানহাকে ডেকে এনে ওকে কিছু না বলে চলে যাবি?
--- তুই বুঝবিনা আমার প্রবলেম,, প্লিজ তুই দেরি করিসনা।
----আচ্ছা ঠিক আছে চল।

আরিয়ান চলে যাওয়ার আগে তানহাকে বলল আমি আপনাকে ডেকে আনছি তবে সময় দিতে না পারায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
--- না সমস্যা নেই অন্য সময় কথা হবে। তাহলে আমিও এখন যাই।

তানহা ক্লাসে চলেগেল আর ফাহিম ও আরিয়ান ক্লাস না করে কলেজ থেকে চলেগেল।
কলেজ গেট পার হয়েই ফাহিম আরিয়ানকে বলল
---- তুই কলেজ আসার সময় কি বললি আর এখন কি করলি? তানহাকে তোর পরিচয় দিলেনা কেন? জানিস তুই ডাকছিস বলায় তানহা কতটা খুশি হয়েছে?
--- শোন ফাহিম আমি সব বুঝি। রক্তের ও একটা টান আছে আমি সেটা স্বীকার করি। তবে আমি যে পরিস্থিতির কাছে হেরে গেলাম। আব্বু ফোন দিয়ে কি বলেছেন জানিস। আব্বু বলেছেন তাদের সাথে কোনো সম্পর্ক রাখলে আমি বুঝি আর আব্বুকে পাবনা। তুই ত জানিস আমার কাছে আমার আব্বু আম্মু সবকিছু। সুতরাং আমি তাদের কথার বাহিরে চলতে পারবনা।
----ঠিক আছে বুঝলাম। এখন কি করবি সেটা বল?
--- কি আর করব। আমার মূল পরিচয় গোপন রেখে কথা বলব। সবসময় ওর পাশে থাকব তবে বুঝতে দিবনা আমি ওর ভাই। তুইও প্লিজ কোনোভাবেই ওকে আমার পরিচয় দিবিনা।
----আচ্ছা ঠিক আছে।

পরদিন কলেজে আসার পর তানহা আরিয়ানের কাছে এসে বলল,,,
---- আজ কি আপনার কথা বলার সময় আছে?
--- হ্যা আছে! তবে কি কথা বলব সেটা মনে নেই।
---- আচ্ছা ঠিক আছে আমি মনে করিয়ে দিব।
--- ওরে বাবা!! আপনি মনে করিয়ে দিবেন! তাহলে দেন মনে করিয়ে।
---- আজ থেকে আপনি আমাকে আপনি বলবেন না।
--- কেন আপনি বলবনা?
---- আমার চেয়ে দু-মাসের বড় আমার একটা চাচাতো ভাই ছিল আমি ওরে ভাইয়া ডাকতাম। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে ক্লাস ফাইভ পাস করেই ও লন্ডনে চলে যায় আর আসেনি। আপনাকে প্রায় ওর মত লাগে। তবে ক্লাস ফাইভের পর ওরে আর দেখিনাই। এজন্য মুখটা ক্লিয়ারলি মনে নেই।
--- আচ্ছা ঠিক আছে আর আপনি বলবনা।
---- অহ খুব খুশি হয়েছি।
--- ঠিক আছে তবে আমাকেও আপনি না বলে তুমি করে বলবে।
---- ঠিক আছে ভাইয়াকে তো তুমি করেই বলব।
--- ক্লাসের সময় হয়েছে পরে কথা হবে।
---- ক্লাস শেষে আমাকে সাথে নিয়েন।
--- ওকে ঠিক আছে।

ক্লাস শেষে কেউ কাউকে না পেয়ে যারযার চলেগেল। তানহা ভাবল যদি নাম্বার রাখতাম তাহলে ভাইয়াটা আমাকে সাথে নিত। যাক কালকে কলেজ আসলে প্রথমেই নাম্বার এনে রাখবো।

এদিকে বিকেলবেলা আরিয়ান ফাহিমের সাথে দেখা করে সব ঘটনা বলল। ফাহিম শুনে বলল ভালই হয়েছে, আসলে পরিচয় দিলে ও কিছুতেই তোকে পারিবারিক সমস্যা দেখাবেনা।
---হ্যা আমারও বিশ্বাস তানহা এমন করবেনা। তবে আমি যে পরিচয় দিতে পারবনা।
---- সমস্যা নেই এভাবেই থাক।
একটু ঘুরাফিরা করে দুজন যারযার বাড়িতে চলেগেল।
পরেরদিন আরিয়ান আর ফাহিম এক সাথে কলেজে উঠতেই তানহার সাথে দেখা। তানহা আরিয়ানকে দেখে খুব খুশি! কাছে এসেই প্রথম কথা "ভাইয়া আগে তুমার নাম্বারটা দাও"
---আচ্ছা ঠিক আছে দিচ্ছি। তবে প্রথমেই কোনো কথা না বলে নাম্বার চাওয়ার মানে কি?
---- আমাকে নাম্বার দিতে সমস্যা!! আচ্ছা লাগবেনা নাম্বার।
--- নাম্বার দিবনা বলেছি?
---- না বললে কি হবে? মানে চাও কেন? আমার ইচ্ছা নাম্বার নিব, দেয়ার হলে দাও মানে জিজ্ঞেস করবেনা।
--- আচ্ছা তুল নাম্বার।
আরিয়ান নাম্বার বলার সময় তানহার বান্ধবী রীমা তানহার সাথে সাথে তার মোবাইলে আরিয়ানের নাম্বারটি তুলে ফেলল। কারণ রীমা যেদিন আরিয়ানকে প্রথম দেখে সেদিনই সে আরিয়ানের প্রতি দূর্বল হয়ে যায়। কিন্তু আরিয়ানের সাথে কথা বলার কোনো সুযোগ পায়নি। তানহার কারণে আজ নাম্বারটি নেওয়ারও সুযোগ পেয়ে গেল। কিছুক্ষণ কথা বলার পর সবাই কাসে চলেগেল। ক্লাস শেষে বাড়ি গিয়েই রীমা whatsaap ঢুকে আরিয়ানের নাম্বারে ক্লিক করতেই দেখে last seen today 04:10 pm
রীমা ভাবল আহারে যদি একটু আগে ডাটা অন করতাম তাহলে আরিয়ানকে অনলাইনে পেতাম। যাক আমার ভাগ্যটাই খারাপ! তবে আজ আর মোবাইল হাত থেকে রাখবো না! দেখি আরিয়ান আবার অনলাইনে আসে কি না। অপেক্ষা করতে করতে এক সময় অপেক্ষা করাটা স্বার্থক হল। প্রায় ঘন্টাখানেক পর রীমা দেখতে পেল আরিয়ান অনলাইনে আছে। যাকে অনলাইনে পাওয়ার জন্যে এত অপেক্ষা! কিন্তু তাকে অনলাইনে পাওয়ার পর রীমার সাহস হারিয়ে গেল। রীমা ভাবতে লাগলো আরিয়ানকে কি sms করা যায়? কি পাঠাবে এটা ভাবতে ভাবতে আরিয়ান আবার অফলাইনে চলেগেল। রীমা বসেবসে ভাবতেছে আসলেই আমার ভাগ্যটা কি এতই খারাপ! এভাবে চিন্তা-ভাবনা করলে কোনোদিনও আর আরিয়ানের সাথে কথা হবেনা। যাক আজ থেকে আর চিন্তা-ভাবনা করবনা। আরিয়ানকে যা বলার সোজা বলে দেব। এতে যদি আরিয়ান মেনে না নেয় তাও ভালো আর মেনে নিলে তো সোনায় সোহাগা। এসব ভাবতে ভাবতে রীমা আরিয়ানকে নিয়ে কল্পনার সাগরে ডুব দিল! হঠাত আজানের ধ্বনি শুনে তার কল্পনার ঘোর কাটল,  চমকে গিয়ে উঠে দাড়ালো।  নিজেকে সামলে নিয়ে ওজু করে এসে মাগরিবের সালাত আদায় করল। সালাত শেষে আরিয়ানকে পাওয়ার জন্যে প্রাণ ভরে দোয়াও করল। নামাজ থেকে উঠে একটু রং চা খেয়ে পড়তে বসল। মনের ভেতর প্রেম যখন উকি ঝুকি মারে তখন কি আর পড়তে মন চায়?  পড়ার টেবিলে বসে রীমা আরিয়ানকে নিয়েই ভাবছে। হঠাত রীমার মা রীমার ঘরে আসলেন,,,,,

-কিরে রীমা, পড়তে বসে যদি এভাবে গালে হাত দিয়ে বসে থাকিস তাহলে এই পড়তে বসার তো কোনো মানে হয়না!
-- না মা একটা বিষয় নিয়ে ভাবছি!  স্যার আজ ক্লাসে একটা কথা বলেছিলেন কিন্তু এই কথাটার মানে বুঝিনি!  এখনও পর্যন্ত কিছুই বুঝতে পারিনি। তাই ওটা নিয়ে ভাবতেছি।
- কি এমন কথা দেখি আমাকে বল!  আমি বুঝতে পারি কিনা?
-- থাক মা পরে বলছি, আমাকে আবার একটু রং চা  দাও।
- আচ্ছা ঠিক আছে তুই পড় আমি চা এনে দিচ্ছি।

রীমার মা চলে যাওয়ার পর রীমা ভাবতেছে,  আজ মায়ের সাথে একটা ডাহা মিথ্যা কথা বললাম! আসলেই কথাটা সত্যিই যে, "মানুষ প্রেমে পড়লে মিথ্যা কথা বলে"!  আজ এই সত্যটা আমার ক্ষেত্রেও প্রমাণিত হল।  কিছুক্ষণ পর রীমার মা রীমাকে রং চা দিলেন,  চা খেয়ে রীমা এশারের সালাত আদায় করে নিল।  সালাত শেষে আরও কিছুক্ষণ  পড়ার জন্যে রীমা টেবিলে বসল। কিন্তু বসে কি লাভ! পড়া আর হলনা,,  রীমার কাছে আজ মনে হচ্ছে বইয়ের প্রতিটা পৃষ্টায় যেন শুধু আরিয়ানের কথা লেখা। এজন্য সে শুধু আরিয়ানকে নিয়ে ভাবছে।  কোনোরকম টাইম পাস করে পড়ার টেবিল থেকে উঠল। মায়ের সাথে ভাত খেয়ে শুয়ে পড়ল। রাত যখন প্রায় ১১ টা বাজে তখন রীমা আরিয়ানকে অনলাইনে দেখতে পেল।  অনলাইনে দেখে রীমা আরিয়ানকে একটা message দিল। Hi... লিখে।  যদিও message seen হয়েছে কিন্তু কোনো রিপ্লাই আসলনা।  রীমা রিপ্লাইয়ের আশায় মোবাইলের দিকে চেয়ে রইল।  প্রায় ১০ মিনিট পর রিপ্লাই আসল।

-আসসালামু আলাইকুম।  আপনাকে ঠিক চিনতে পারিনি। দয়া করে পরিচয়টা দিন।
-- ওয়ালাইকুমুসসালাম।  জ্বি আমি রীমা।  আপনার সাথে পড়ি একই বিভাগে।
- ওহ আচ্ছা।  তবুও পুরোপুরি চিনলাম না কিছু মনে করবেন না। 
-- জ্বি না মনে করার কি আছে,  কলেজ গেলে চিনতে পারবেন।  আমি তানহার বান্ধবী।
- আচ্ছা ঠিক আছে ভালো থাকেন।  শুভ রাত্রি।
-- ঘুমিয়ে পড়বেন?
- না,  এত তাড়াতাড়ি ঘুম আসবেনা।
-- তাহলে শুভ রাত্রি বললেন?
- না এমনিতেই বললাম,  কারণ প্রয়োজন ছাড়া আমি কারো সাথে বেশ কথা বলিনা।
-- আচ্ছা ঠিক আছে,  তো অনলাইনে কতক্ষণ আছেন?
- রাত ১২ টা পর্যন্ত।
-- ওরে বাবা! তাহলে কথা বলি আমিও থাকব আপনার সাথে ১২ টা পর্যন্ত।
- না অন্যদিন কথা হবে।  আমার অনেক পরিচিতজন অনলাইনে আছেন,  message দিচ্ছেন আমি তাদের message রিপ্লাই দিতে হবে।
-- অহ তাই!  আমি এখনও পরিচিতজন হইনি।  আচ্ছা তানহা দেখছি অনলাইনে আছে।  তার সাথেও কি কথা বলছেন না?
- আপনার message রিপ্লাই দিতে গিয়ে তানহার message এখনও পড়া হয়নি।
-- অহ তাহলে তাড়াতাড়ি রিপ্লাই দেন।  ও কিন্তু খুব রাগী,, পরে আপনাকে ব্লক মেরে দিবে।
- না এমনটা হবেনা।  তানহা কোনোদিন আমাকে ব্লক মারবেনা এটা আমি ১০০% নিশ্চিত করে বলতে পারি।
-- এতটা নিশ্চিত কিভাবে হলেন?
- মন থেকে হয়েছি।
-- অহ তাই!
- হ্যা ঠিক তাই।
-- আচ্ছা তাহলে আপনি আপনার পরিচিতজনদের সাথে কথা বলুন।
- ঠিক আছে।  শুভ রাত্রি।
-- শুভ রাত্রি।

রাত প্রায় ১১:২০ মিনিট বাজে! আরিয়ান অনলাইনে কিন্তু তানহার লেখার রিপ্লাই দিচ্ছেনা! তানহা মনেমনে ভাবতেছে ভাইয়া অনলাইনে কিন্তু আমার লেখার রিপ্লাই না দেওয়ার কারণ কি হতে পারে? হয়ত আমাকে গুরুত্ত্ব দিচ্ছেন না! কারণ আমি তো উনার আপন কেউ নই! যাইহোক আর মিসেজ দিয়ে বিরক্ত করবোনা, ঘুমিয়ে পড়ি। তানহা হাত থেকে মোবাইল রেখে ঘুমাবার চেষ্টা করতেছে, কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসতেছেনা! শুধু ভাবতেছে ভাইয়া সত্যিই কি আমার সাথে এমন করতে পারেন? বিশ্বাস হচ্ছে আবার হচ্ছেনা!

এদিকে রীমার সাথে কথা শেষ করে আরিয়ান তানহার লেখা দেখতেছে,,
তানহার দেয়া শেষ লেখাটি পড়ে আরিয়ান চিন্তিত হয়েগেল! তানহার দেয়া শেষ লেখাটি ছিল "ভাইয়া আমি তুমার আপন বোন নই এটা আমি জানি! আমি এটাও জানি যে আমি সামনে গেলে তুমি আমাকে গুরুত্ত্ব দেও কিন্তু আড়াল হলেই ভুলে যাও এবং একটুও গুরুত্ত্ব দেওনা। আমি এতক্ষণ তোমাকে অনলাইনে দেখলাম; প্রায় ১০ টি মিসেজ দিলাম, রিপ্লাই দেয়া দূরে থাক লেখাগুলো পড়লেই না! আমি আর বিরক্ত করতে চাইনা তাই ঘুমিয়ে পড়ছি। কালকে কলেজে দেখা করবে কিছু কথা আছে, আর হ্যা অতিরিক্ত মেসেজ দিয়ে যে বিরক্ত করেছি এজন্য ক্ষমা চাইবো। ভাল থেকো। আল্লাহ হাফিজ। "

আরিয়ান এবার ভাবতেছে কি করে তানহাকে বুঝাবো যে আমি আসলে ওরে সময় দেয়ার জন্যেই ওর লেখার রিপ্লাই দেইনি। যা হবার তা হয়েগেছে দেরি না করে ওকে নক করি দেখি কি বলে। আরিয়ান তানহার সালামের জবাব দিয়ে সব লেখার রিপ্লাই দিল। মেসেজ delivered হচ্ছে কিন্তু ৪ seen হচ্ছেনা। কারণ তানহা অনলাইনে নেই।

বারবার মেসেজের শব্দ পেয়ে তানহা ভাবতেছে ভাইয়া ছাড়া এত মেসেজ আর কেউ দেবার কথা নয় মনে হয় ভাইয়া। এই বলে তানহা মোবাইল হাতে নিয়েই দেখে সত্যি আরিয়ানের মেসেজ। একটু অভিমান বুঝাতে তানহা লেখাগুলো পড়ে কোনো রিপ্লাই দিলনা।
এদিকে আরিয়ান ভাবতেছে তানহা মনে হয় খুব রাগ করেছে আর না হয় আমার লেখার রিপ্লাই দিত। আরিয়ান আবার মেসেজ করল।

-তানহা প্লিজ ভাইয়াকে ভুল বুঝিসনা। আমি যা বলেছি তাই সত্য।
-- আমি ভুল বুঝলেও কি আর না বুঝলেও কি?
-প্লিজ রাগ করিস না।
-- রাগের কি আছে? আমি আপন বোন হলে লেখার রিপ্লাই পেতাম এটাই স্বাভাবিক। আমি তো তোমার কিচ্ছুনা এজন্য রিপ্লাই পাইনি! তাতে রাগ করব কেন?
- প্লিজ বোন আমার আমাকে বিশ্বাস কর!
--বিশ্বাস করলে কি আপন বোন হয়ে যাব?
-আল্লারে কি করে তোরে বুঝাই!
-- বুঝানো লাগবেনা!
-আচ্ছা মানলাম আমি তোকে গুরুত্ত্ব দেইনা! তুই যদি আমাকে গুরুত্ত্ব দিয়ে থাকিস আমাকে সত্যিই ভাই ভেবে থাকিস তাহলে রাগ না করে প্লিজ একবার বিশ্বাস কর। আমি কথা দিলাম এরকম আর হবেনা। যদি এরকম হয় তাহলে তুই আর কথা বলিস না।
-- ঠিক আছে মানলাম। তবে তুমি আমার সাথে হাজারদিন এরকম করলেও আমি তোমার সাথে কথা বলব। কারণ আমি যাকে অন্তরে স্থান দেই তাকে সারাজীবন অন্তরেই রাখি যদিও সে আমাকে অন্তরে না রাখে।
- দেখ তুই আমার অন্তরে আছিস আর থাকবি। প্লিজ আর এরকম বলিস না।
--আচ্ছা ঠিক আছে। এবার বল কেমন আছ?
- টেনশনে আছি।
-- কিসের টেনশন?
-জানিনা কেন জানি মনে হচ্ছে তুই আমাকে হয়ত আর আগের মত বিশ্বাস করবিনা!
-- দেখো এসব নিয়ে আর টেনশন করনা। বিশ্বাস করি কিনা পরিক্ষা করে দেখতে পার।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
--কালকে কলেজ যাব না!
-কেন?
-- এমনিতেই যাবনা ভাল্লাগেনা!
-আগে যে বললি কালকে কলেজ এসে আমার কাছে ক্ষমা চাইবি!
--আমি কি ভুল করেছি ক্ষমা চাইব।
-না সেটা বলছিনা। তুই আগে বললে কলেজ আসবে আর এখন না করছিস এজন্য বলেছি।
-- আগে তো তুমি লেখার রিপ্লাই দেওনি এজন্য ভুল বুঝেছিলাম এজন্য ক্ষমা চাইব বলেছিলাম।
-অহ আচ্ছা তাহলে কালকে কলেজ আসবিনা?
--কয়বার না বলতাম। কালকে রীমার বোন সুমা আপুকে তিনার হবু শশুর বাড়ির লোকজন দেখতে আসবে। এজন্য রীমাদের বাড়িতে যাব।
-রীমা কে?
--ওরে বাবা! রীমা চিননা! আমার সাথে চ্যাট না করে যার সাথে কথা বললে এখন তাকে চিননা!
-দেখ তুই ভাইয়াকে উল্টা বুঝিস না! ওর সাথে কি কথা বলেছি তোরে সব দেখাবো তবুও তুই আমাকে ভুল বুঝিস না।
--আচ্ছা ঠিক আছে। রীমা দাওয়াত দেয়নি?
-এতটা কথা হয়নি। আমি আগ থেকে জরুর দেখিয়ে ওকে বিদায় দিছি।
--আচ্ছা তাহলে আমার পক্ষ থেকে দাওয়াত রইল। তুমি ফাহিম ভাইকে নিয়া চলে এসো।
- না তা কি করে হয়?
-- আমি দাওয়াত দিছি এজন্য যদি না আস তাহলে আসিওনা।
-দেখ তোর বাড়ি হলে আমি না করতাম না। অন্য কারো বাড়ি এজন্য না করছি।
--আমার মামার বাড়ি সেটা। রীমা আমার আপন মামাতো বোন! সো নো চিন্তা তুমি কালকে আসবে কিন্তু আমি রীমাকে বলব।
-আচ্ছা তাহলে ঠিক আছে। তবে তাদের বাড়ি তো চিনিনা!
-- সোজা আমাদের বাড়ির সামনে এসে উত্তর দিকে ২ কিঃমিঃ গিয়ে "তারা মসজিদ" আর "তারা মসজিদের" টিক বিপরীত পাশে মানে হাতের বামের বাড়িটাই রীমাদের। সেখানে গিয়ে কল করলে আমি রাস্তা থেকে রিসিভ করব।
-আচ্ছা ঠিকাছে। রাত অনেক হইছে ঘুমিয়ে পড়।
--জ্বি ঘুমাচ্ছি। শুভরাত্রি। আল্লাহ হাফিজ।
-আল্লাহ হাফিজ।

আরিয়ান এবার ফাহিমকে মেসেজ দিয়ে দাওয়াতের কথা জানিয়ে দিল।

পরদিন ঘুম থেকে উঠে সালাতুল ফজর আদায় করে আরিয়ান দেখতে পেল রীমার কাছ থেকে একটা মেসেজ এসেছে। মেসেজটায় লেখা ছিল,, রাতে আপনাকে বিরক্ত করার জন্যে দুঃখিত। আর হ্যা আগামীকাল আপনি আমাদের বাড়িতে আসবেন আপনার দাওয়াত রইল। আর সাথে ফাহিম ভাইকে আনবেন। নিশ্চয় তানহা সব বলেছে সুতরাং মিস যেন না হয়।

আরিয়ান কি আর বলবে,,,,
-ওকে ঠিকাছে, এই বলে একটা রিপ্লাই দিয়ে শুয়ে পড়ল।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফাহিমকে কল করে রেডি হতে বলল।

দুপুর বেলা মানে ঠিক ১২ টার দিকে আরিয়ান আর ফাহিম "তারা মসজিদের" সামনে গিয়ে হাজির। ফোনে পাওয়া লোকেশন মত যদিও তারা বাড়ি চিনতে পেরেছে (এছাড়া ছোট বেলা আরিয়ান অনেকবার এসেছে) তবুও একাকী বাডিতে না ঢুকে কথামত আরিয়ান তানহাকে কল দিল। কল পেয়েই তানহা খুশি হয়ে তাড়াতাড়ি দুজনকে রিসিভ করে বাডিতে নিয়ে গেল।
আরিয়ান আর ফাহিম ছাড়াও অন্যান্য আত্মীয়রা আগ থেকেই উপস্থিত ছিলেন। তারা দুজন তাদের সাথে গিয়ে বসল। তানহা নাস্তা নিয়ে আসল সাথে রীমাও! কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলার পর তারা দুজন চলে গেল।

আরিয়ান আর ফাহিম গল্প করছে এমন সময় তাদের বয়সী একটি ছেলে এসে রুমে প্রবেশ করল। আরিয়ান প্রথমে সালাম দিল,,,

-আসসালামু আলাইকুম
--ওয়ালাইকুমুসসালাম। আমার নাম জাহিদ। আপনাদের ঠিক চিনতে পারলাম না।
-জ্বি আমার নাম আরিয়ান আর ওর নাম ফাহিম।
-- ওহ আচ্ছা! তাহলে তুমি আরিয়ান! তানহার কাছে তোমার নাম শুনেছি।
-ওহ ঠিকাছে।
-- আপনি তানহার কি হোন?
-ভাইয়া।
-- ভাইয়া না অন্য কিছু?
-দেখেন নেগেটিভ চিন্তা করবেন না। এই বিষয়ে আমাকে জিজ্ঞেস না করে তানহাকে জিজ্ঞেস করুণ।
--আচ্ছা ঠিকাছে। মাইন্ড করবেন না।
-না মাইন্ড করার কি আছে!
-- গতকাল রাত্রে আমি তানহাকে মেসেজ দিলে সে আমাকে বলেছিল ভাইয়ার সাথে কথা বলছি। বললাম ভাইয়া কে? উত্তর দিল আরিয়ান! এই পর্যন্ত আর কোনো কথা হয়নি। তবে অনেক্ষণ অনলাইনে দেখেছি। বিষয়টা নিয়ে জিজ্ঞেস করার সময় পাইনি তাই কি কথা হয়েছে ঠিক জানতে পারিনি।
-কিছু মনে না করলে একটা প্রশ্ন করি?
--জ্বি করেন সমস্যা নেই।
-তানহার সাথে আমি কি কথা বলেছি সেটা আপনি জানবেন কেন?
--সে অনেক কথা! আপনাকে বুঝানো যাবেনা।
-দেখেন আমি জানিনা তানহা আপনার কি হয়। তবে এটা জানি আমি তানহার ভাই। আমাকে নিয়ে তানহার সাথে কথা না বলাটাই আপনার ভালো হবে। আর না হয় অফলাইন ছাড়া অনলাইনে তানহাকে নাও পেতে পারেন।
-- আমি তানহার কতটা ক্লোজ হয়ত তোমার জানা নেই। আমি চাইলে আজ থেকে তানহা আর তোমার সাথে চ্যাট করবেনা।
-আচ্ছা সমস্যা নেই আপনি তাই করুণ।
--ঠিকাছে ও এখানে আসলেই বলব।

ফাহিম এবার চিন্তায় পড়েগেল! আরিয়ানকে ফিসফিস করে বলছে, দেখ আরিয়ান হয়ত ওর সাথে তানহার ক্লোজ সম্পর্ক, আর না হয় ও এত জোর করে এমন কথা কিভাবে বলবে!
-তুই এসব নিয়ে চিন্তা করিস না। ও হচ্ছে রীমার মামাতো ভাই, তানহার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। আর আমি হচ্ছি তানহার ভাই।
-- জানিনা কি হবে।
-নো টেনশন কিচ্ছু হবেনা।

ফাহিম আবার আরিয়ানকে কিছু বলতে চাইলে তানহা এসে হাজির,,, এসেই আরিয়ানকে উদ্দেশ্য করে,,

-ভাইয়া আজকে থাকবে এখানে কালকে সকালে একসাথে যাব।
--না রাত্রে কাজ আছে আজকে থাকা যাবেনা! অন্যদিন আসলে থাকব।
-কি কাজ বউ আছে নাকি?
--ফাইজলামু করিস না। নইলে,,,,,,,,!!
-নইলে কি?,,,, চড়,, থাপ্পড় ইত্যাদি?
--ওকে থাক মেহমান কবে আসবেন?
-না এইতো এসে যাবেন।

তাদের কথার মাঝে জাহিদ বলে উঠল তানহা ভাইয়াকে পেয়ে দেখি একদম বদলে গেলি?
-কই বদলালাম?
--আমার সাথে দেখি কথাই বলতেছত না!
-কি যে বলেন! এই মাত্র এলাম ভাইয়ার সাথে এখনো কথা শেষ হয়নি। কথা না বলে যদি চলে যেতাম তাহলে এমনটা বললে মেনে নিতাম।
--আচ্ছা থাক এসব। একটা প্রশ্ন করি?
-হ্যা করেন।
--এখন যদি কেউ বলেন আমি আর তোর ভাইয়ার মধ্যে যে কোনো একজনকে whatsapp এ ব্লক মারতে হবে।
--তুই কাকে ব্লক মারবি?
-তোমাকে!
-- আমি তোর কাছে এতই পর হলাম?
-আপন ছিলে কোনদিন? তুমি হলে রীমার মামাতো ভাই,, এই হিসেবে আমিও ভাই ডাকি। আর ভাইয়া তো আমার ভাইয়া।

চলবে,,,,,,,
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৮৪৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৫/১২/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast