www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ভাস্কর্য বনাম জ্বী হুজুর

দেশের সবচেয়ে আলোচিত টপিক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি বা ভাস্কর্য।
এমনিতেও দেশের যেকোন ইস্যু ঘষামাজার ফলে ঘটনার চেয়ে কথা বেশ বড় হয়ে যায়...
ঠিক তেমনি ভাস্কর্য ইস্যু একশ্রেণীর মানুষের কাছে নাপাক-নাপাক হয়ে তা দ্রোহের মতো যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব তাদের আচরণে!
কিন্তু কেন?
কারণ, ভাস্কর্য তৈরী শির্কের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আপনি যদি চিন্তা করে দেখেন পৃথিবীতে কিভাবে শির্কের সূচনা হয় তবে দেখবেন,
এর একমাত্র কারণ হলো নেককার লোকদের নিয়ে বাড়াবাড়ি-
তাদের যা মর্যাদা তার চাইতে বেশী তাদের সম্মান করা।

শুধু কি মূর্তি বা ভাস্কর্যই শির্ক আর কিছু নেই?

আছে, কবর ও মাজারের মাধ্যমে।
কবর পূজারীদের কেউ কেউ বলতে পারে,
তোমরা আমাদের উপর বেশী বাড়াবাড়ি করছ।
আমরা তো কোন মৃতের ইবাদত করিনা,
ভাস্কর্যকে সম্মান দেখাই না-
কবরে এ সমস্ত ওলী-আউলিয়া নেককার লোক।
আল্লাহর কাছে তাদের সম্মান রয়েছে, তারা আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশ করতে পারেন!
জবাবে আমরা বলব, এটাই ছিল কুরাইশ কাফেরদের কথা তাদের মূর্তি সম্পর্কে।
পাথর পূজা আর কবর পূজার মধ্যে কি পার্থক্য আছে?
কি পার্থক্য আছে সেই ব্যাক্তির মাঝে,
যে মূর্তির কাছে নিজ প্রয়োজনের কথা বলে আর যে গলিত মাঠি মিশ্রিত হাড্ডির কাছে যায়!
কোনই পার্থক্য নেই।

''আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা এমন বস্তুর উপাসনা করে যা তাদের কোন লাভ বা ক্ষতি করতে পারে না এবং বলে এরা আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশকারী।
তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহর এমন বিষয়ে অবহিত করছ;
যে সম্পর্কে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে?
তিনি পুত:পবিত্র ও মহান সে সমস্ত থেকে যাকে তোমরা শরীক করছো।"
(সূরা ইউনুস [১০]:১৮)

অতএব, শুধু ভাস্কর্য নয় একজন মুসলিম হিসেবে উচিৎ কবর বা মাজারের বিরোধিতা করা।

এখন আসা যাক বর্তমান সময়ের মূর্তি বিরোধী আলেমসমাজদের ব্যাপারে।
আলেমদের কাজ প্রথমে নিজের ধর্মের যাবতীয় অনাচার থেকে ধর্মকে সঠিক পর্যায়ে নিয়ে এসে তা অনুসারীদের কাছে সঠিক পথে পৌঁছে দেওয়া-
দেশে সেই শাহ জালাল (রহঃ) মৃত্যুর পর থেকে যে পরিমাণ শির্কের কারখানা মাজার প্রতিষ্ঠা হয়েছে তা কি তারা চোখে দেখেনি?
তারা দেখেনি যে আল্লাহ ও রাসূল (সাঃ) এর পবিত্র নামের বিকৃত জিকির করে তালে তালে ছন্দে নারী-পুরুষের অবাধ যৌন উন্মুক্ত গাঁজা খোরের নাচন!!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য হচ্ছে সম্প্রতি সময়ে,
আশার কথা হলো-
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের সামনে কেউ পূজা দেয়নি সন্তানের জন্য উনার ভাস্কর্যের নিচে গড়াগড়িও খায়নি এমনকী সন্তান লাভের প্রলোভনে কেউ খাদেম বা পীর দ্বারা ধর্ষণ হওয়ার সুযোগ নেই।
কিন্তু ইসলামের নাম ভাঁঙিয়ে দরগাহ মাজারে বড়বড় ওয়াজ ও জিকিরের আয়োজন করা শির্কবাদীদের দ্বারা ধর্মের চরম ক্ষতি হচ্ছে -
সে বিষয়ে ভাস্কর্য বিরোধী আলেমসমাজ চুপচাপ-খামোশ।
ওসব ধর্মের কথা বলে তাই না!

ফাজলামির একটা সীমা থাকা উচিৎ-
নিজের ধর্মের ভিতর শির্কের কারখানা খোলা রেখে একজন মহান নেতার তর্জনী উঁচু হাতের ভাস্কর্যের বিরোধীতা কতটা যৌক্তিক?
ভাস্কর্য বিরোধীতার ফতোয়া দেওয়ার আগে ফতোয়া দিন মাজার নামক ভন্ডদের বিরুদ্ধে।
ভাঙতে হলে প্রথমে ভাঙুন মাজার গুলো,
বুল্ডুজার চালিয়ে গুড়িয়ে দিন প্রতারক ধোঁকাবাজ বাটপার গুলোর বেহায়াপনার আর্থিক উপার্জনের আস্তানা।

কিন্তু তা না করে আপনার হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নিচে!
একটা গনতান্ত্রিক দেশে কে আপনাদের ধর্মীয় নীতিমালা প্রয়োগ করতে প্রমোট করলো?
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৫১২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১২/১২/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast