অণুগল্প
" অণুগল্প "
স্বপ্ন ভাঙ্গে আবার জুড়াও লয়।
চলছিল বেশ মোটামুটিভাবেই যাপিত জীবন সুখ-দুঃখে হাঁসি-আনন্দে ;
এবার ভাবছিলাম অন্যকিছু ;
মহাজনের থেকে নেয়া দেনা সব পরিশোধ করে একটু মুক্ত হবো , আর কিছু করি আর না করি গৃহ'কে পরিপূর্ণ করে ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে
গরু দুটির ভালভাবে যত্ন নেবো,
আর তাছাড়া অনেক দিন হলো বউয়ের একটা ভালো শাড়ি নেই, ছেঁড়া শাড়ি দিনের পর দিন পরেই চলেছে,
তবু কখনো মুখ ফোটে বলে ও না যে আমার এটা নেই, ওটা নেই !
সবে ভাবছিলাম সুখের কথা।
কিন্তু !
----------------------------------
কিন্তু,
এর'ই মধ্যে শুরু হয়ে যায় বজ্রপাতের হুংকার আকাশের চারদিক ঘিরে ভয়াল অন্ধকার ,
নেমে আসে কালবৈশাখী ঝড় , অঝড়ে ঝড়ছে বৃষ্টি ঝড়ছে পাথর,
বলতে গেলে লাগা-তার সপ্তাহ খানেক জুড়ে সূর্যের কোন দেখা পাইনি বল্লেই চলে ;
এভাবে দু-চার দিন কাটতে না কাটতেই অবাধে সব স্বপ্নের ফসল ডুবে যায়,
নেমে আসে হাহাকার।
বজ্রপাতের আঘাতে একটি গরু গৃহে ফিরেছে, আরেকটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না,
অনেক খুঁজা-খুঁজির পর পাশের গ্রামে মৃত অবস্থায় খুঁজে পেলাম , কি দুর্ভাগ্য!
এদিকে বউয়ের ও ভীষণ অসুখ, হাতে তেমন টাকাও নেই,
শেষে বাধ্য হয়ে গোয়ালঘর শূন্য করে আদুরে সেই গরুটাও বিক্রি করতে হলো,
হৃদয়টা কাঁদছে ভীষণ, কিন্তু কি করবো, এছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না আমার।
অবশেষে, বউয়ের ডাক্তারি করে ছেলেকে ভর্তি করে আরো বেশ কিছু টাকা বেচেছিলো,
সেই টাকা থেকে মহাজন'কে কিছু টাকা দিয়ে বললাম আরো দু-চার মাসের মধ্যেই বাকী টাকা দিয়ে দেবো,
কিন্তু ওনি কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না,
অনেক কষ্টে হাতে-পায়ে ধরে তাকে রাজি করালাম।
আর কিছু টাকা দিয়ে ঘরের জন্য আহার কিনে নিয়ে ঘরে ফিরলাম।
রাতের রান্না হলো,
ঘরে ছিলো লাউ আর ডাল তা দিয়ে খেয়ে সবাই একসাথে ঘুমিয়ে পড়লাম,
সবাই ঘুমিয়ে আছে
কিন্তু আমার কিছুতেই ঘুম আসছিলো না,
শুধু ভাবছিলাম---
আর ভাবতে, ভাবতে হঠাৎ করেই দুচোখে ঘুম চলে আসে ।
ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি ভোর হয়ে গেলো হাত-মুখ দুয়ে বেড়িয়ে পড়লাম কাজের সন্ধানে,
একরুশে চলে গেলাম গেরেজে,
গেরেজের মালিক ওনি আমার খুব পুরানো বিশ্বস্থ্য বন্ধু ছিলো, এখনো আছে,
ওনাকে সবকিছু বলার পরে ওনি আমার হাতে একটা রিক্সা ধরিয়ে দিলেন,
তারপর এভাবেই চলতে থাকে জীবন,
চলতে চলতে মহাজনের দেনাও শোধ হলো, আবার শূন্য গোয়ালঘরটা পূরণ করার জন্য ভাঙ্গা স্বপ্ন'কে জুড়ো লাগাতে কিনলাম ছোট্ট একটা বাচ্চা-গরু ;
শুরু হয় নতুনভাবে জীবন আসলে এ সবই বিধাতার ইচ্ছা,
এভাবে চলতে চলতে ঘরও হলো বউয়ের শাড়িও হলো।
হঠাৎ এক কালবৈশাখী ঝড়ে সকল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে
জীবন করে দেয় স্তব্ধ !
তখন আমাদের মনে হয় আর কিছুই করার থাকেনা, আসলেই কিন্তু তাই নয়,
বেঁচে থাকার তাগিদেই বেঁচে থাকতে হয়, স্বপ্ন ভাঙ্গে আবার জুড়াও লয়।
তানভীর আহমেদ (মুসা)
নবীগঞ্জ।
স্বপ্ন ভাঙ্গে আবার জুড়াও লয়।
চলছিল বেশ মোটামুটিভাবেই যাপিত জীবন সুখ-দুঃখে হাঁসি-আনন্দে ;
এবার ভাবছিলাম অন্যকিছু ;
মহাজনের থেকে নেয়া দেনা সব পরিশোধ করে একটু মুক্ত হবো , আর কিছু করি আর না করি গৃহ'কে পরিপূর্ণ করে ছেলেকে মাদ্রাসায় ভর্তি করে
গরু দুটির ভালভাবে যত্ন নেবো,
আর তাছাড়া অনেক দিন হলো বউয়ের একটা ভালো শাড়ি নেই, ছেঁড়া শাড়ি দিনের পর দিন পরেই চলেছে,
তবু কখনো মুখ ফোটে বলে ও না যে আমার এটা নেই, ওটা নেই !
সবে ভাবছিলাম সুখের কথা।
কিন্তু !
----------------------------------
কিন্তু,
এর'ই মধ্যে শুরু হয়ে যায় বজ্রপাতের হুংকার আকাশের চারদিক ঘিরে ভয়াল অন্ধকার ,
নেমে আসে কালবৈশাখী ঝড় , অঝড়ে ঝড়ছে বৃষ্টি ঝড়ছে পাথর,
বলতে গেলে লাগা-তার সপ্তাহ খানেক জুড়ে সূর্যের কোন দেখা পাইনি বল্লেই চলে ;
এভাবে দু-চার দিন কাটতে না কাটতেই অবাধে সব স্বপ্নের ফসল ডুবে যায়,
নেমে আসে হাহাকার।
বজ্রপাতের আঘাতে একটি গরু গৃহে ফিরেছে, আরেকটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না,
অনেক খুঁজা-খুঁজির পর পাশের গ্রামে মৃত অবস্থায় খুঁজে পেলাম , কি দুর্ভাগ্য!
এদিকে বউয়ের ও ভীষণ অসুখ, হাতে তেমন টাকাও নেই,
শেষে বাধ্য হয়ে গোয়ালঘর শূন্য করে আদুরে সেই গরুটাও বিক্রি করতে হলো,
হৃদয়টা কাঁদছে ভীষণ, কিন্তু কি করবো, এছাড়া আর কিছুই করার ছিলো না আমার।
অবশেষে, বউয়ের ডাক্তারি করে ছেলেকে ভর্তি করে আরো বেশ কিছু টাকা বেচেছিলো,
সেই টাকা থেকে মহাজন'কে কিছু টাকা দিয়ে বললাম আরো দু-চার মাসের মধ্যেই বাকী টাকা দিয়ে দেবো,
কিন্তু ওনি কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না,
অনেক কষ্টে হাতে-পায়ে ধরে তাকে রাজি করালাম।
আর কিছু টাকা দিয়ে ঘরের জন্য আহার কিনে নিয়ে ঘরে ফিরলাম।
রাতের রান্না হলো,
ঘরে ছিলো লাউ আর ডাল তা দিয়ে খেয়ে সবাই একসাথে ঘুমিয়ে পড়লাম,
সবাই ঘুমিয়ে আছে
কিন্তু আমার কিছুতেই ঘুম আসছিলো না,
শুধু ভাবছিলাম---
আর ভাবতে, ভাবতে হঠাৎ করেই দুচোখে ঘুম চলে আসে ।
ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি ভোর হয়ে গেলো হাত-মুখ দুয়ে বেড়িয়ে পড়লাম কাজের সন্ধানে,
একরুশে চলে গেলাম গেরেজে,
গেরেজের মালিক ওনি আমার খুব পুরানো বিশ্বস্থ্য বন্ধু ছিলো, এখনো আছে,
ওনাকে সবকিছু বলার পরে ওনি আমার হাতে একটা রিক্সা ধরিয়ে দিলেন,
তারপর এভাবেই চলতে থাকে জীবন,
চলতে চলতে মহাজনের দেনাও শোধ হলো, আবার শূন্য গোয়ালঘরটা পূরণ করার জন্য ভাঙ্গা স্বপ্ন'কে জুড়ো লাগাতে কিনলাম ছোট্ট একটা বাচ্চা-গরু ;
শুরু হয় নতুনভাবে জীবন আসলে এ সবই বিধাতার ইচ্ছা,
এভাবে চলতে চলতে ঘরও হলো বউয়ের শাড়িও হলো।
হঠাৎ এক কালবৈশাখী ঝড়ে সকল কাঙ্ক্ষিত স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে
জীবন করে দেয় স্তব্ধ !
তখন আমাদের মনে হয় আর কিছুই করার থাকেনা, আসলেই কিন্তু তাই নয়,
বেঁচে থাকার তাগিদেই বেঁচে থাকতে হয়, স্বপ্ন ভাঙ্গে আবার জুড়াও লয়।
তানভীর আহমেদ (মুসা)
নবীগঞ্জ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আজাদ আলী ২২/০৯/২০১৭Real thought. Thanks
-
ন্যান্সি দেওয়ান ০৮/০৯/২০১৭Good
-
দীপঙ্কর বেরা ০৮/০৯/২০১৭Bhalo
-
মুহাম্মাদ রাসেল উদ্দীন ০৭/০৯/২০১৭জীবনটা এমনই হয়
-
সাঁঝের তারা ০৬/০৯/২০১৭খুব বাস্তব ...