www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

হিয়ার দাহ্যে প্রিয় পর্ব ১৫

#হিয়ার_দাহ্যে_প্রিয়
#তাবেরী ইসলাম
#পর্ব ১৫

সময়ের গতিতে বহমান, আমি আর রাফসা বেড়াতে এসেছি, সাথে সিয়াম আর রাফসার ফিয়েন্স। ছোট খাট একটা আড্ডা কিছু বন্ধুরা মিলে। সন্ধ্যার সময় পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। সবাই মিলে হাটছি অগোছালো ভাবে। রাফসা আর আমি একটা গলির রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছি এসময় পাশে ধুপধাপ কিছু শব্দ হলো।

নির্জন এই গলির ভেতরে উঁকি দিতেই দেখা গেল একটা মানুষ পড়ে আছে রক্তে মাখা ভীত-সন্ত্রস্ত চোখে চটপট করছে। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ গুলো দেখছে। আমি রাফসা দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে ওর ফোন দিয়ে ছবি তুললাম। হাত পা কাঁপছে আমাদের। রাফসা আমার হাত ধরে দৌড় লাগালো। মানুষের ভীড়ে রাফসা পড়তে পড়তে বাঁচল। সিয়ামের সাথে ধাক্কা লাগতেই হুস এলো আমার। রাফসার ফিয়েন্স নাফিজ এসে হাজির হলো। নাফিজ ভাইয়া বিরক্ত হয়ে রাফসার হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে আর বলছে কই ছিলে খাবে না সবাই অপেক্ষা করছে তোমাদের।

সিয়াম হাত উপরে তুলতেই রক্ত দেখে আমি আরো বিচলিত হয়ে উঠলাম। রিলাক্স রিমু কিচ্ছু হয় জাস্ট একটু কেটেছে। আমার চোখে সেই লোকটির রক্ত ভাসছে।এর মধ্যে আঙ্গুলে রুমাল পেছিয়ে শক্ত করে হাত মোট করে রেখেছেন। বুকে ঝাপটে ধরে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি।

গল্প গুজব করে খাবার খেয়ে সবাই শেষ করে। রাফসার ফোন দিয়ে দিলাম পরে দেখা হবে বলে একে একে সবাই যার যার গন্তব্যে চলে এলাম।

গাড়িতে উঠে সিয়াম আঙ্গুলে প্লাস্টার লাগিয়ে দিলেন। আমার খারাপ লাগছে, শার্টের হাতা পেছিয়ে মাথা উনার কাঁধে রাখি। সিয়াম উষ্ণ স্পর্শ বাড়িয়ে দিলেন আরো ফিসফিস করে বললেন বাকিটা বাসায় গিয়ে। আমি চোখ বুজে আছি। একটু সহ্য কর।

রাত্রের ডিনার করছেন ভাইয়া আর ভাবি। লাবিব আর মুনা দৌড়ে আসে আমাদের কাছে। চকলেট দিয়েছি রাত্র জাগতে নেই বলে ওদের রুমে দিয়ে আসি।

কি ব্যাপার রিমু তুমি এমন করছ কেন?? আমি কেঁদে দিলাম উনাকে ধরে অনেক কিছু বলতে চাইছি কিন্তু পারছি না। মন মস্তিষ্ক বিভ্রান্ত ভীত হয়ে আছে। আমি ফোন থেকে পিক টা সিয়ামকে দেখালাম।

--তুমি ওটা কবে দেখেছ? অবাক হয়ে সিয়াম জিজ্ঞেস করলো। আপনি যে সময় আমাদের খুঁজছিলেন আমি আর রাফসা এটা দেখেছি। লোকটা কি গুন্ডা টাইপের মানুষের রুপে কি ভয়ানক! ঠিক আছে কিচ্ছু হয় নি আমি আছি তো বোকা। এখন আর কোনো চিন্তা না।

বক্ষস্থলে ঘুমিয়ে আছি এটাই আমার একমাত্র শান্তি চিন্তাহীন স্থান। রিমু ঘুমিয়ে আছে দেখে সিয়াম গায়ে শার্ট জড়িয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ে।

ফোনের পিক টা সিয়াম পাঠিয়ে দিলো আর ফোন করে বলল একটা প্রুফ আমরা হাতে পেয়ে গেছি। আশা করি এটা কাজে দিবে। ছবি টা কেটে দিলেন ফোন থেকে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------

শার্টলেস হয়ে আছেন কোনো আর এতো সকালে গোসল করেছেন। আমাকে কি হৃত্তিক এর মতো লাগছে না আর বিবাহিত পুরুষের প্রতিদিন সকালে গোসল না করলে জীবন বৃথা, জানেন না বুঝি। আমি কাথা মুড়ি দিলাম ভালো করে। বেলাজ মানুষের এসব না শুনাই ভালো।

জোর করে সিয়াম আমাকে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে বললেন জলদি আসো প্লিজ আমার ক্ষিধে পেয়েছে।সকালের খাওয়া দাওয়া করে নিয়াজ ভাইয়া অফিসে আর ভাবি বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে চলে গেলেন।আমার ভালো লাগছে না আমি আজ বাহিরে যাব না। সিয়াম নিজের ফাইল পত্র ঘাটছেন।

ফোন হাতে নিয়ে সময় দেখলাম সকল সাড়ে নয়টা। গ্যালারিতে ছবি টা নেই। ফুস করে শ্বাস ছেড়ে বললাম ছবি কাটলেন কেন? যদি কিছু একটা করতে পারে রাফসা।

-' সিয়াম বিরক্তিকর ভাবে চেয়ে বললেন ওই ছবি থাকুক আর তুমি ওটা নিয়ে ভেবে ভেবে ভয় পাও আমি এটা কখনো চাই না। আর ছবিটা কোনো ভাবে পাবলিশ না হয় রাফসাকে বলে দিও।কেন কি হবে পাবলিশ হলে??

-' যাও তো এক কাপ লেবুর চা নিয়ে আসো। চা বানিয়ে নিয়ে এলাম সিয়ামের জন্য। আমি পাশে বসে রইলাম। চায়ে চুমুক দিয়ে তাকালেন আমার দিকে। মন খারাপ রিমু দু'হাতে আমার মুখ তুলে বললেন। মাথা নাড়িয়ে না বুঝালাম। তুমি বুঝতে পারছ না ছবির লোকগুলো রাজনীতির সাথে জড়িত। হিংস্র জানোয়ার তাদের আরেক রুপ। সেটা পরিবারের সাথে শত্রুতা সৃষ্টি করবে। তোমাদের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগব আমি।তোমার কিছু হলে কি হবে আমার। বাস্তবতা বুঝার চেষ্টা কর। স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা কর প্লিজ। কপালে অধর চুয়ে দিলেন, জড়িয়ে ধরলাম উনাকে ভালো লাগছে না আমার। কাগজ পত্র ঘুচিয়ে সিয়াম জিজ্ঞেস করলেন ঔষুধ খেয়েছ?

-'না মনে ছিলো না। রাফসাকে ফোন দিয়ে পেলাম না,হতাশ হয়ে ট্রেক্স করে দিলাম। উনি উঠে ঔষুধ নিয়ে খাইয়ে দিলেন। এখন একটু শুয়ে পড়,বলেই মাথায় বিলি কেটে দিচ্ছেন সিয়াম। এখন আরাম লাগছে, ঘুমে তলিয়ে গেলাম। কিছু প্রহর এভাবেই কেটে গেল।

-'ভাবি চলে এলেন বাসায়। ভাবি রিমুর একটু খেয়াল রেখ, শুয়ে আছে ও। কেন কি হয়েছে সিয়াম?? রাত্রে ভয় পেয়েছে বেশ তাই। আমি হস্পিটালে চলে যাচ্ছি। ও কে বলে দিও উঠলে।

রাত্রের নির্জনতায় স্তব্ধ চারপাশ। ভাবি আর আমি টিভি দেখছিলাম, ফোন কলের শব্দে উঠে আসলাম। হ্যালো বলতেই রাফসা হন্তদন্ত হয়ে বলল, কিরে কি এমন জেনেছিস যার জন্য ছবি পাবলিশ করতে মানা করছিস??

চলবে---
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ২২৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২২/০১/২০২৩

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • Osadharon
  • ধারাবাহিক রচনা ভাল লাগলো।
  • ফয়জুল মহী ২২/০১/২০২৩
    বাহ্ দারুণ রচিলেন
  • বেশ!
 
Quantcast