www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে কোথায় পাকিস্তানে




রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না! বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে কোথায়? পাকিস্তানে?
সাইয়িদ রফিকুল হক

রামপাল নিয়ে, সুন্দরবন নিয়ে, আর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে এখন চলছে ভয়ানক এক রাজনীতির খেলা! তবে আত্মগোপনকারী তথাকথিত রাজনৈতিক নেতারা রয়েছেন এর পিছনে। আর সামনে খুব বাড়াবাড়ি করছে একদল অর্বাচীন আর রাজনীতিতে থিতু হতে ইচ্ছুক একশ্রেণীর আনাড়ী খেলোয়াড়। এরা আবার যাতে শিক্ষক! তা-ও যে-সে শিক্ষক নয়! একেবারে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। একজন তো সারাবছর শিক্ষার্থীদের না-পড়িয়েই শিক্ষক! আর কিছুসংখ্যক এইসব অশিক্ষকের সঙ্গে থেকে একেবারে রাতারাতি শিক্ষক। এদের কিন্তু জনসমর্থন নাই। কিন্তু এদের কিছুসংখ্যক ষণ্ডা আছে। আর তারা রাতারাতি নানারকমের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডসহ যাবতীয় সরকারবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী অপতৎপরতা চালাতে ওস্তাদ!

বাংলাদেশের তথাকথিত বামপন্থী, আধাবামপন্থী, আর ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ধারক-বাহকরা এখন চিন্তাভাবনায়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগ্রহণে এক ও অভিন্ন। এরা এখন একদলীয় ও একজাতীয়। এদের মধ্যে সামান্য কয়েকটি পার্থক্য ব্যতীত আর-কিছু নাই। বলতে গেলে এরা এখন ভাই-ভাই। এদের একমাত্র কাজ হলো: দেশের ভিতরে দেশের জন্য যা-কিছু সংঘটিত হবে তাতেই ‘ভারতীয় গন্ধ’ খুঁজতে হবে। তা-না-হলে এদের পেটের ভাত হজম হবে না। আর এরা যা বোঝে দুনিয়াতে আর-কেউ কিছু বোঝে না। এরা একেকজন আত্মস্বীকৃত পরিবেশবিদ, পরিবেশবিশারদ, পরিবেশবিজ্ঞানী, বনবিশেষজ্ঞ, বনগবেষক, নদীগবেষক, নদীবিশেষজ্ঞ, সমুদ্রবিজ্ঞানী, ভারতবিশেষজ্ঞ ইত্যাদি। এরা ছাড়া বাংলাদেশে আর যেন কোনো বুদ্ধিমান নাই! এরা সব বোঝে—আর এরাই সব করে! আর এরাই যেন সব পারে! এদের পারার কোনো শেষ নাই।

আজকে যারা রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র-স্থাপনে প্রবল বাধাসৃষ্টি করার জন্য সবরকমের ব্যবস্থা করাসহ ভারতবিরোধিতায় নেমেছে—তার নজির পৃথিবীতে নাই। এরা কিছু হলেই ভারতকে জড়িয়ে আর ভারতকে নির্বিচারে আষাঢ়-মাসের বৃষ্টির মতো গালিগালাজ করে নিজেকে সমাজের একজন বড় পণ্ডিত হিসাবে জাহির করতে চায়। মানুষ পাণ্ডিত্য দেখাবার জন্য প্রতিভাবিকাশের নানারকম চেষ্টা করে থাকে। আর আমাদের দেশে রাজনীতি থেকে সামাজিকভাবে টিকে থাকার জন্য কেউ-কেউ এখন কৌশল হিসাবে ভারতবিরোধিতাকে কাজে লাগাচ্ছে। আর এরা মনে করছে: দিন-রাত ভারতকে কষে গালি দিতে পারলেই সে বড়সড় একটাকিছু কিংবা একরাতে জিয়াউর রহমান ও এরশাদের মতো নেতা হয়ে যাবে। আর এদের রক্ষাকবচ হবে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ ও ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’! এইধরনের ভণ্ডরাই এখন রাজনীতিতে সুবিধা করতে না পেরে সুন্দরবন নিয়ে ব্যাপক হাঙ্গামাসৃষ্টি করে দেশের ভিতরে একটা অশুভ-গোলোযোগ বাধাতে চাইছে। এরা অনেক পুরাতন পাপী। এদের জ্বালায় কানসাটে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করতে আমাদের বহু ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। এরাই আবার নতুনভাবে ক্ষেপে গেছে—আর সুন্দরবনে বিদ্যুৎকেন্দ্র-নির্মাণ করতে দিবে না। সবখানে এদের অযাচিত-পাণ্ডিত্য! আর এরা খুব বেশি পণ্ডিত! এরা ছাড়া বাংলাদেশে যেন আর-কেউ কিছু বোঝে না!

পরিবেশরক্ষার দোহাই দিয়ে যারা সুন্দরবন-বাঁচাবার আন্দোলন করছে—তাদের আন্দোলন একেবারে হাস্যকর। এরা দেশের ভালো চায় না। এদের বিদেশীপ্রভুরা সদাতৎপর। এরা তাদের এজেন্ডা-মাফিক আন্দোলনে নেমে পড়েছে। শুধু তাই নয়, এরা সরকারের বিরুদ্ধে যা নয় তা-তো বলছেই—সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশীরাষ্ট্র ভারতকে জড়িয়েও নানারকম কুৎসারটাতে দ্বিধাবোধ করছে না। আর বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ সরকারগঠন করলেই এদের ভারতবিরোধিতা বেড়ে যায়। আর এরা যেন ভারত-ভারত করে একেবারে ক্ষেপে যায়! কথিত-পরিবেশরক্ষার কথা বলে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র-নির্মাণে যারা বাধার সৃষ্টি করে তারা যা বলছে, তা মোটেও সত্য নয়। তারা গায়ের জোরে বলছে: সুন্দরবন থাকবে না, সুন্দরবন দূষিত হবে, পানি দূষিত হবে, নদী দূষিত হবে, বাতাস দূষিত হবে, রাস্তাঘাট দূষিত হবে ইত্যাদি। আসলে কি তা-ই? সুন্দরবনের কাছে সরকারিভাবে যে-প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগগ্রহণ করা হয়েছে, তা জাতীয় স্বার্থেই করা হয়েছে। আর এজন্য দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট পরিবেশবিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে সবকিছু পর্যালোচনা করেই কাজটি হাতে নেওয়া হয়েছে। আর কাজ করতে গেলে একটুআধটু পরিবেশ দূষিত হতেই পারে—তবে তা সহনীয় মাত্রার হলে দোষণীয় নয়। এক্ষেত্রেও তা-ই। এখানে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার জন্য পরিবেশের দিকে একশত ভাগ খেয়াল রাখা হয়েছে। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আর দেশপ্রেমিক-সরকার রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। এরা কি দেশকে ভালোবাসে না? এরা কি সুন্দরবনকে বাঁচাতে চায় না?

রামপালের যেখানে প্রস্তাবিত-বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হবে সেখান থেকে আমাদের সুন্দরবনের দূরত্ব কমপক্ষে ১৩ কিলোমিটার। এখানে, প্রস্তাবিত-তাপ-বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হলে তাতে পরিবেশ-দূষণের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। আর দুনিয়ার এমন কোন স্থান আছে যে—কোনো স্থাপনা-তৈরিতে যৎসামান্য পরিবেশ দূষিত হয় না? সেই তুলনায় আমাদের প্রস্তাবিত-রামপাল-বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কোনোপ্রকার দূষণ ছাড়াই প্রতিষ্ঠিত হবে। আসলে, এই দেশের কিছুসংখ্যক দেশবিরোধী-এনজিও আর তাদের দালাল সবসময় ‘জাতীয় স্বার্থে’ একটি বাগড়া দেওয়ার অপচেষ্টা করে থাকে। এদের থেকে দেশবাসী সাবধান!

বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে কোথায়? যেখানে যাচ্ছি সেখানেই বাধাসৃষ্টি! এটি কোন ধরনের রাজনীতি? নিশ্চয়ই অপরাজনীতি। রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না, কানসাটে বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যাবে না—তাহলে, এখন বলতে বাধ্য হচ্ছি: বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে কোথায়? পাকিস্তানে?


সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
০৫/০৮/২০১৬
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৬৩৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/০৮/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • আমরা লোডশেডিং চাই, তবুও সুন্দরবন ধংস করে রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাই না
    • সুন্দরবন বাঁচিয়েই বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হবে। আর আমরা তো লোডশেডিং চাই না। অন্ধকার বেজায় মন্দ!
      আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
  • পরশ ২৮/০৮/২০১৬
    লেখাটি পড়ে ভাল লাগলো।
  • পরশ ২৮/০৮/২০১৬
    খুব ভাল হয়েছে।
 
Quantcast