একটি পুলের আত্মকথা (৬)
আমি একটি পুল। পুল-এর অর্থ সাঁকো বা সেতু। এটা শুদ্ধভাষা। গ্রামের ভাষায় আমরা বলি পুল। তবে সাঁকো বললে গ্রামের অনেক লোক বুঝতে পারবে না। তাই সাঁকোর চেয়ে পুল বলাটাই আমার কাছে অধিকতব গ্রহণযোগ্য বলে মনে করি।
তো যা হোক, আমার অবস্থান একটা খালের উপর। আমার প্রধান দায়িত্ব হল- খালের এক পাড়ের সাথে অন্য পাড়ের সংযোগ ঘটানো। এই যে সংযোগ ঘটানো, এটা একটি বিরাট বিষয়। এই সংযোগের মাধ্যমে এক গ্রামের শিক্ষা অন্য গ্রামে যায়। এই সংযোগের মাধ্যমে এক এলাকার সংস্কৃতি অন্য এলাকায় যায়। এই সংযোগের মাধ্যমে এক পরগনার কৃষ্টি অন্য পরগনায় যায়।
আমি কাঠ দিয়ে তৈরী একটি পুল। এবং আমার খুটি বাঁশের তৈরী। আমার নীচে পানি। তবে শুকনা মৌসুমে কোন পানি থাকে না। আমার মধ্য দিয়ে যখন মানুষ হাঁটে তখন আমার সারা শরীর কাঁপতে থাকে। মনে হয় এই বুঝি ভেঙ্গে পড়বো। আমার উপর দিয়ে মানুষ যখন হাটে তখন মানুষও অনেকটা ভয় পায়। কিন্তু আমি তাদের অভয় দিয়ে বলি, আমার জীবন থাকতে আপনাদের কোন ক্ষতি আমি করবো না। ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হলে, পাড়ার যুবকরা মাঝে মাঝে আমাকে মেরামত করে। তখন আমি
আবার অনেক সতেজ হয়ে উঠি। আমার মধ্য দিয়ে যখন অনেক মানুষ একসাথে চলাচল করে তখন আমার অনেক কষ্ট হয়। সাধারণত বিয়ে বা নির্বাচনের সময় অনেক মানুষ আমার উপর দিয়ে চলার চেষ্টা করে। কষ্টে আমি নুয়ে পড়ি। তবুও মানুষকে পড়তে দেই না। আমি মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হিসেবেই মনে করি এবং তার সম্মানে সব কিছু করি। আমি মানুষকে বলি আমার উপর দিয়ে একজন একজন করে হাঁটার জন্য। কিন্তু মানুষ আমার কথা শুনতে চায় না। অনেকজন আমার বুকের উপর দিয়ে চলাচল করার ফলে আমি কাতর হয়ে পড়ি। তার পরেও আমি কিছু বলি না।
কিছূদিন আগে একটা সুখবর পেয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বর বলেছেন, আমাকে তারা পাকা করে দিবে। অরথাৎ আমাকে সিমেন্ট দিয়ে তৈরী করা হবে। পাকা-পোক্ত করা হবে। বাজেট পাশ হয়ে গেছে। আগামী বছরই কাজ শুরু হবে। খবরটা শুনে আমি বড়ই আনন্দিত। আমি পাকা হয়ে গেলে আমার উপর দিয়ে গাড়ী ঘোড়াও চলতে পারবে অনায়াসে। তখন মানুষের আর কোন অসুবিধাই হবে না। মানুষ খুশি তো আমি ও খুশি।
-স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৯.০৪.২১
তো যা হোক, আমার অবস্থান একটা খালের উপর। আমার প্রধান দায়িত্ব হল- খালের এক পাড়ের সাথে অন্য পাড়ের সংযোগ ঘটানো। এই যে সংযোগ ঘটানো, এটা একটি বিরাট বিষয়। এই সংযোগের মাধ্যমে এক গ্রামের শিক্ষা অন্য গ্রামে যায়। এই সংযোগের মাধ্যমে এক এলাকার সংস্কৃতি অন্য এলাকায় যায়। এই সংযোগের মাধ্যমে এক পরগনার কৃষ্টি অন্য পরগনায় যায়।
আমি কাঠ দিয়ে তৈরী একটি পুল। এবং আমার খুটি বাঁশের তৈরী। আমার নীচে পানি। তবে শুকনা মৌসুমে কোন পানি থাকে না। আমার মধ্য দিয়ে যখন মানুষ হাঁটে তখন আমার সারা শরীর কাঁপতে থাকে। মনে হয় এই বুঝি ভেঙ্গে পড়বো। আমার উপর দিয়ে মানুষ যখন হাটে তখন মানুষও অনেকটা ভয় পায়। কিন্তু আমি তাদের অভয় দিয়ে বলি, আমার জীবন থাকতে আপনাদের কোন ক্ষতি আমি করবো না। ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হলে, পাড়ার যুবকরা মাঝে মাঝে আমাকে মেরামত করে। তখন আমি
আবার অনেক সতেজ হয়ে উঠি। আমার মধ্য দিয়ে যখন অনেক মানুষ একসাথে চলাচল করে তখন আমার অনেক কষ্ট হয়। সাধারণত বিয়ে বা নির্বাচনের সময় অনেক মানুষ আমার উপর দিয়ে চলার চেষ্টা করে। কষ্টে আমি নুয়ে পড়ি। তবুও মানুষকে পড়তে দেই না। আমি মানুষকে সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হিসেবেই মনে করি এবং তার সম্মানে সব কিছু করি। আমি মানুষকে বলি আমার উপর দিয়ে একজন একজন করে হাঁটার জন্য। কিন্তু মানুষ আমার কথা শুনতে চায় না। অনেকজন আমার বুকের উপর দিয়ে চলাচল করার ফলে আমি কাতর হয়ে পড়ি। তার পরেও আমি কিছু বলি না।
কিছূদিন আগে একটা সুখবর পেয়েছি। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বর বলেছেন, আমাকে তারা পাকা করে দিবে। অরথাৎ আমাকে সিমেন্ট দিয়ে তৈরী করা হবে। পাকা-পোক্ত করা হবে। বাজেট পাশ হয়ে গেছে। আগামী বছরই কাজ শুরু হবে। খবরটা শুনে আমি বড়ই আনন্দিত। আমি পাকা হয়ে গেলে আমার উপর দিয়ে গাড়ী ঘোড়াও চলতে পারবে অনায়াসে। তখন মানুষের আর কোন অসুবিধাই হবে না। মানুষ খুশি তো আমি ও খুশি।
-স্বপন রোজারিও (মাইকেল) ০৯.০৪.২১
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
ন্যান্সি দেওয়ান ১৬/০৪/২০২১Bah real story naki ?
-
আব্দুর রহমান আনসারী ১১/০৪/২০২১অভিনবত্বে পূর্ণ
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ১০/০৪/২০২১ছোটবেলায় এরকম অনেক রচনা পড়তাম।