www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বড়দিনের শিক্ষা

২৫শে ডিসেম্বর বিশ্বের খ্রীষ্টান সম্প্রদায় বড়দিন হিসেবে উদযাপন করে থাকে। দিনটা আসলে বড় নয়। এ দিনটা অনেক ছোট দিনের মতই ছোট। তাহলে এটাকে বড় বলা হয় কেন? এটাকে এর নিগূঢ়তাত্বিক অর্থের জন্য এটাকে বড়দিন হিসেবে অখ্যায়িত করা হয়। আজ থেকে ২০২০ বছর আগে এ শুভ দিনে যীশু খ্রীষ্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এটাই এই দিনের মূল তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। জন্ম সবসময়ই আনন্দের। কাজেই যীশুর জন্মদিনও অনুরুপভাবেই আনন্দের। যীশুর জন্মের স্থান-কাল-পাত্র বিশ্লেষণ করলে বড়দিনের আসল মমার্থ বুঝা যায়।
যীশু এ পৃথিবীতে আগমন করেছেন মানুষকে পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য। পৃথিবী যখন পাপে ভারাক্রান্ত ঠিক তখনই মহান যীশু খ্রীষ্ট এই ধরাতে আগমন করেন। তিনি মানুষের সেবা করার জন্য এ ধরাতে আসেন। তিনি পরম পবিত্র আতœার প্রভাবে আগমন করেন। তাঁর জন্মটা স্বাভাবিকভাবে নিয়ম অনুসারে হয়নি। তাঁর জন্ম যেহেতু পবিত্র আতœার দ্বারা হয়েছে তাই তাঁর জন্ম গোশালায় না হয়ে কোন চকচকে বিরাট বিল্ডিং-এ হতে পারতো। লোকেরা তাঁকে বলতে পারতো যে, তিনি রাজাধিরাজ। কিন্তু তিনি তা করেননি বা পিতা ঈশ্বরের পরিকল্পনা তা ছিলো না। পিতা ঈশ্বরের পরিকল্পনা ছিলো যে তিনি গরীব বেশে জন্ম গ্রহণ করবেন। তাই তিনি গোশালায় জন্ম নিয়েছিলেন। পিতা ঈশ্বর যীশুর জন্মের মাধ্যমে তাঁর অপার ক্ষমতার কিছুই দেখাননি। এখানেই বড়দিনের তাৎপর্য। যীশু ছোট ঘরে জন্ম নিয়ে আমাদের ছোট হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন। আমাদের অন্তরে ছোট জিনিষকে গ্রহণ করার উদার মানসিকতা থাকতে হবে। যীশু বড় হয়েও আমাদের ছোট হওয়ার শিক্ষা দিয়ে গেছেন তা সত্যিই তুলনাহীন। পৃথিবীতে এমন উদাহরণ আর নেই। বাস্তব জীবনে আমরা বড় কিছু/বেশী কিছু চাই। ছোট কিছু আমরা কেহই চাইনা। সবাই যদি আমরা বড় কিছু চাই তবে অবস্থা কেমন হবে একটু ভাবুন তো?
যীশু কনকনে শীতের রাতে যাবপাত্রে জন্ম গ্রহণ করেছেন। শীতের সময় আমাদের কাছে আরামদায়ক নয়। সেই শীতের সময় তিনি জন্ম নিয়েছেন। তিনি সুন্দর একটি নাতিশীতোষ্ণ দিন দেখে কোটি টাকার পালংকে জন্ম নিতে পারতেন। তাঁকে যিনি পাঠিয়েছেন তাঁর সে ক্ষমতা ছিলো। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছেন শীতের রাত। এখানে কি তাঁর জন্মের মহাত্ব খুঁজে পাওয়া যায়না? আমাদের তো ক্ষমতা থাকলে আমরা সব কিছুই করতে চাই। ক্ষমতার ব্যবহারের চেয়ে অপব্যবহার আমরা বেশী করি। আমরা যদি ক্ষমতা পাই তবে আমরা ভালো কাজ করি না। কি করে দেশ ও সমাজের উন্নতি হবে তা ক্ষমতাবানরা একটুও চিন্তা করেন না। কিভাবে অন্যের ক্ষতি করে নিজে লাভবান হওয়া যায় তা নিয়ে ক্ষমতাবানদের সদা চিন্তা। ফলে আমাদের দেশে উন্নতির দিকে যেতে পারছে না। অথচ ২০ বছর আগে পৃথিবীর যে দেশগুলি অবস্থা আমদের চেয়ে খারাপ ছিলো তারা আজ উন্নতির চরম শিখরে পৌছে গেছে। তারা ক্ষমতার ব্যবহার করেছে, অপব্যবহার নয়।
বড়দিনে আমরা যীশুর আদর্শ বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করবো। বড়দিনে কোণ ধরনের চাকচিক্য চলে না। অথচ আমরা তাই করি। বড়দিনে কোন ধরনের মদ খাওয়া চলে না। অথচ এটা না হলে আমাদের বড়দিন হয় না। বড়দিনে আমরা দামী দামী পোষাক পরিধান করে মজার মজার খাবার খাই। আমরা গরীবদের কিছূই দেই না। এটা বড়দিনের অর্থ হতে পারে না। বড়দিনের অর্থ হতে হবে সহযোগিতা ও সহমর্মিতা। একজনে খাবে, অন্য জন না খেয়ে থাকবে এটা বড়দিনের মর্মার্থ নয়। মোট কথা, বড়দিনে সবাইকে মনেপ্রাণে বড় মানুষ হতে হবে। তবেই যীশু আমাদের মধ্যে বিরাজ করবে এবং বড়দিন স্বার্থক হবে।
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৩০৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৫/১২/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • ভাল তথ্য।
  • অনন্য নিবেদনে মানবিক উচ্চারণ।
  • ফয়জুল মহী ২৫/১২/২০২০
    অসাধারণ উপলব্ধি। শুভকামনা
 
Quantcast