www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

সুজনের ঈদ

সুজনের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও-এ। সে মাঝে মাঝে ঢাকায় এসে রিক্সা চালায়। ঢাকার তার কোন বাসা নেই। রিক্স চালিয়ে গ্যারেজেই রাত কাটিয়ে দেয়। দুই/তিন দিন পর পর সে ট্রেনে করে বাড়িতে চলে যায়। বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নিয়ে আবার ঢাকা আসে রিক্সা চালানোর জন্য। এভাবে রিক্সা চালিয়ে তার দিন কাটতো। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে মার্চ মাসের শেষ দিকে ঢাকা শহর লকডাউন হয়ে যায়। ফলে সুজন বিপদে পড়ে যায়। অন্যদিকে গাড়ি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে সে বাড়িতেও যেতে পারেনি। লকডাউনের প্রথম এক মাস সে সরকারী ত্রাণ সহযোগিতা পেয়ে ভালই চলেছে। কিন্তু এক মাস পর সরকারী সহায্য আর নিয়মিত আসে নি। ফলে সে আবার রিক্সা চালাতে শুরু করে। কিন্তু মানুষ ঘর হতে বের হয়নি বিধায় তার রোজগার কমে যায়। দিনে যা কামাই করে তা তার খাদ্য কিনতেই চলে যায়।
এক পর্যায়ে সরকার লকডাউন কিছুটা শিথিল করে। সীমিত আকারে অফিস আদালত খুলতে থাকে। ফলে তার আয়-রোজগার অনেকটা বৃদ্ধি পায়। এ পর্যায়ে সে খেয়ে পড়ে কিছু টাকা জমাতেও পারছে। জমানো টাকা দিয়ে সে তার মেয়ের জন্য একটি জামাও কিনে ফেলে। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের জন্য পাঞ্জাবী-শাড়ীও ক্রয় করে সে। গাড়িঘোড়া না থাকার কারণে সে বাড়িতে যেতে পারে নি। শেষদিকে সরকার বাড়ি যাওয়ার জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি এলাউ করেছিলো। কিন্তু তার তো ব্যক্তিগত গাড়ি নাই?
সুজন এবারের ঈদে বাড়ি যেতে পারে নি। তাকে ঢাকাতেই ঈদ করতে হবে। এটাই তার পরিবার পরিজন ছাড়া প্রথম ঈদ পালন।
২৪.০৫.২০ (মধুবাগ, ঢাকা)
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৩৭৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৬/০৫/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast