www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

সাজিদের করোনা জয়

সাজিদ সংগঠন করতে খুব ভালোবাসে। কিন্তু মজার ব্যাপার হল- সাজিদ তার এলাকায় যত ধরনের সংগঠন ছিলো তার সবগুলোর সাথে সম্পৃক্ত ছিলো কিন্তু কোন সংগঠনের উচ্চ পদে আরোহন করেন নি বা করতে পারেন নি। অর্থাৎ তিনি কোন সংগঠনেরই সভাপতি ছিলেন না। সভাপতি না হওয়ার ফলে সংগঠন থেকে প্রকাশিত বার্ষিক ম্যাগাজিনে তার ছবিসহ কোন বাণী প্রকাশিত হয়নি। এজন্য সারা জীবন তার মনটা খারাপ। কিন্তু মন খারাপ হলেও সংগঠনের মাধ্যমে গ্রামের ছোট ছোট উন্নয়ন কাজ করা ছিলো তার শখ। যেমন- গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ফ্রি কোচিং এর ব্যবস্থা, সকলে মিলে গ্রামের রাস্তা মেরামত করা, বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরী করা, একত্রে পেঁয়াজের দানা রোপন করা, নাটক করা ও ছোট-খাঁট প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে শিক্ষা ও সাংস্কৃতি প্রতিযোগিতা আর কি! এসকল অতি ছোট কাজগুলোর মাধ্যমে সাজিদ গ্রামের মানুষগুলোকে সবসময় সচেতন ও চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করেছে।
এসএসসি পাশ করার পর গ্রামের গন্ডি পার হয়ে সাজিদ এবার ঢাকার একটা নামকরা কলেজে ভর্তি হয়। বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়ায় নিয়মিত ক্লাস ও ব্যবহারিক ক্লাস করতে করতে তার অবস্থা কাহিল। তার উপর আবার প্রতি সপ্তাহে গ্রামে এসে সমাজ উন্নয়ন করে করে তার নিজের উন্নয়ন করতেই ভুলে গেছে। ফলাফল যা হবার তাই হল অর্থাৎ দ্বিতীয় বিভাগে পাশ। বিজ্ঞানে দ্বিতীয় বিভাগের কোন দাম নেই। সুতরাং বিজ্ঞান ছেড়ে পরে দ্বিতীয় বিভাগে বি এ পাশ করে সাজিদ।
এরপর চাকুরি করার পালা। চাকুরী কি আর অত সহজে পাওয়া যায়। মামা-খালার জোর না থাকলে এ বাজারে কি আর চাকুরী পাওয়া যায়? ৬ মাস বেকার থাকার পর সাজিদের মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো। সে চিন্তা করলো একটি সমবায় সমিতি গঠন করবে। যেই চিন্তা, সেই কাজ। সাজিদ আবার গ্রামের বাড়ী চলে গেল। সেখানে সে একটি সমবায় সমিতি গঠন করলো। সাজিদ সেই সমিতির প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করে তার জীবন নির্বাহ করতে লাগলো। যাকে বলে স্ব-কর্মসংস্থান। বাংলাদেশের প্রতিটা যুবক যদি নিজে নিজে স্ব-কর্মসংস্থান করতে পারতো তাহলে চাকুরী নামের সোনার হরিণের পিছনে কাউকে ছুটতে হতো না।
সাজিদ কয়েকদিন থেকে জ¦রে ভুগছে। সাথে সাথে তার কাঁশি ও শ^াসকষ্ট মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে যায়। সাজিদের স্কুলের হেড মাস্টার তাকে করোনা পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন। পরে গ্রামের লোকজন সাজিদকে নিয়ে হাসপাতালে যায় করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য। পরীক্ষায় সাজিদের করোনা পজেটিভ আসে। এতে সাজিদসহ কেউই বিচলিত হয় নি। ডাক্তার সাজিদকে ওষধ দেয় এবং তাকে বাড়ীতে আলাদা থাকার পরামর্শ দেয়। সাজিদ দৃঢ় মনোবল নিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে শুরু করে। ১০ দিন পরে সাজিদ আবার করোনা পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষায় তার করোনা নেগেটিভ আসে। করোনা হলেই যে মানুষ মরে যাবে এর কোন মানে নেই। ৯০-৯৫% করোনা রোগী ভালো হয়ে যায়। এতে ভয়ের কিছুই নেই।
ঢাকা, ০৭.০৫.২০২০
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ২৮৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৮/০৫/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast