www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

দৃঢ়

যত দিন যাচ্ছে আমার বিশ্বাস তত দৃঢ় হচ্ছে। আজকে আমি যাচ্ছি রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন।
কেন যাচ্ছি?
যাচ্ছি যে দুটি ভাইকে আমি ভালবাসি। যাদের সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক নেই কিন্তু ভালোবাসার সম্পর্ক আছে, তাদেরকে যেন রামকৃষ্ণ মিশনে ভর্তি করতে পারি সেইজন্য রামকৃষ্ণ মিশন এর কোশ্চেন যেনতেন প্রকারেণ আদায় করার জন্য ।তবে অবশ্যই পুরনো বছরের কোশ্চেন। এই বছরের নয়।
বাদলের দিনে যেতে মানা করেছিল শতাব্দী। কিন্তু তার কথা আমি শুনিনি।
শুনিনি তার কারণ ও ওর দিক থেকে সম্পূর্ণ ঠিক, আবার আমাকেও আমার কর্তব্য করে যেতেই হবে। কর্তব্য বললে ভুল হবে।
কোনো টিউশন টিচারের দায় কাঁদেনি তার ছাত্রদেরকে রামকৃষ্ণ মিশনে ভর্তি করার জন্য 100 কিলোমিটারের বেশি সফর করে গিয়ে নিজের পকেট থেকে টাকা খসিয়ে টিকিট কেটে কোশ্চেন গুলো নিয়ে আসার।
কিন্তু আমি যাচ্ছি কেন?
যাচ্ছিকারন আমি ওদেরকে ভালোবাসি আর ভালোবাসায় কর্তব্য টর্তব্য হ্যান ত্যান ভ্যানতেড়া নেই। ভালোবাসায় মন যেমন চাইবে তেমন করতে হবে।আমার মন বলেছে ওদের জন্য কোশ্চেন আনতে হবে তো আনতেই হবে। পাব কিনা জানিনা।
চেষ্টা করো তো দেখতে হবে যে কি করে পাওয়া যায়।এদিকে তো পাওয়া যাচ্ছে না।
এবার লিখি কেমন করে বিশ্বাস দৃঢ় হলো। আমিএখন বিশ্বাস করি যে মানুষ কখনো খারাপ হতে পারে না।
তার কর্ম খারাপ হতে পারে, চরিত্র খারাপ হতে পারে সে নিজে খারাপ হতে পারে না। তার বিশ্বাসের কারণে তার কর্মের ধারা পাল্টে যেতে পারে কিন্তু সে নিজে খারাপ হয়ে যায় না। সবথেকে বড় খুনি ও একজন ভালো মানুষ যদি তার মধ্যে থাকা ভালো টাকে টেনে বের করে আনা যায়। যেটা আমি করি ।
আমি তাদের সঙ্গে মিশি যাদের সঙ্গে সমাজের তথাকথিত শিক্ষিত ভদ্র এবং নিঃসন্দেহে মহাজ্ঞানী,অহংকারী মানুষেরা মেশে না।
আজ মিশলাম স্টেশনে ফল বিক্রি করা কয়েকজন কম বয়সী বাচ্চাদের সাথে ।দেখলাম নিজেদের মধ্যে আনন্দ করছে। আমি আনন্দ করতে গিয়ে মিশে গেলাম।
তাদেরকে গিয়ে ধরলাম আমার বানানো ধাঁধা।প্রথমে খুব হাসলো ।তারপর বলতে পারল না। তারপর আমি বলে দিলাম।
এইভাবে চলতে থাকলো ।একবার ওরা ধরে একবার আমি ধরি ,একবার ওরা ধরে একবার আমি ধরি ,শেষে যখন সবাই ক্লান্ত হলাম তখন কথা বলে দেখলাম প্রত্যেকেই কিছু না কিছু ভালো জিনিস ভাবছে।
আমার একটি বানানো দুলাইনের পংক্তি ওদেরকে শোনালাম। শুনে ওরা কেউ বলল না যে ভুল লিখেছি ।আর ওরা হলো প্রাণ খোলা সহজ মনের ছেলে।ওদের বিচার ই আসল বিচার।
ওরা মনের কষ্টিপাথরে ফেলে কোন জিনিসকে সোনা বুঝতে পারলেই নিজের পকেটে পুরে নেয়। করলোও তাই।
ধীরে ধীরে ওদেরকে আমার আর আশ্রমিক বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যের কথা বললাম।
আমার পয়সা নিয়ে কাজ করার মানসিকতা ত্যাগের কথা বললাম।
সব শুনে ওরা আমাকে এগিয়ে যাওয়ার কথাই বলল ।আমি ওদেরকে এও জানালাম যে আমার মাথার সমস্যার জন্য আমি ওষুধ খাই। সেটা ওরা কিছু মনেই করল না।
আমি দেখেছি সমাজের অনেক শিক্ষিত ভদ্র বেশ ধারী মানুষ আমাদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেন কিন্তু ওরা নিজের দাদার মতো ভালোবাসা দিলো ।এই ভালবাসা নামক সত্যটিই তো আমি চাই।
কই?
একবারও তো আমার নাম জিজ্ঞেস করল না।জিজ্ঞেস করল না আমার ধর্ম ।দেখলাম আপন মনে কখন ধর্মের ভেদাভেদ থেকে ওর উপরে উঠে গেছে।আবার বিশ্বাস হলো মানুষ জন্মগতভাবে ভালো ।
সমাজের কিছু বিপথগামী সত্বা ভুল পথে চালনা করে ওদের মাথায়, তথা আমাদের মাথায়, সাথে সাথে আমার মাথায় নকল ধর্মের ভূত ঢুকিয়ে ভেদাভেদ করে নেয়।
জানেন ওদেরকে যখন আমি কথার মাঝে বললাম যে নামাজ পড়া বা পুজো করার থেকে আর্ত মানুষের সেবা করা ভালো। এককথায় মেনে নিলে গো!!
আর সাথে সাথে আমারও বিশ্বাস হয়ে গেল আমি যেটা করছি সেটা একদম ঠিক ।আমি পুজো করার বা নামাজ পড়ার সময় পাইনা।
কিন্তু মজা,আনন্দ,সেবা এগুলো করি বেশি। আমার বিশ্বাস মানুষেই আমার মুক্তি হবে। আমার বিশ্বাস মানুষই সেই সমাজকে আবার গড়ে তুলবে যেটাকে তারা নিজের হাতে নষ্ট করেছে ।আমার বিশ্বাস দৃঢ় হল যে ভালোবাসা আর সত্যর থেকে বড় কিছু নেই ।মানুষের থেকে বড় কেউ নেই।
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ৩৯৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/০৫/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast