www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ছেঁড়া জুতো জোড়া

ছেড়াঁ জুতো জোড়া
        
                       গ্রামের নাম মুসাপুর। গ্রামের উত্তর পাশে দাড়িঁয়ে থাকা তাল গাছগুলো অনেক দূর থেকেই নজরে পড়ে। বসতি মাঝারি। গ্রামের পূব দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঠো রাস্তাটির কালভার্টের দ্বারে বাস করে হাশেম আলী ও তার পরিবার। তার পরিবারের মোট ছয় জন লোকের বাস।বাবা,মাও তিন ছেলে এক মেয়ে। দিন মজুরি করে সে কায়ক্লেশে সংসার চালায়। কখনো কখনো উপোস-আপোস ও করতে হয়। আবার কোনদিন বা অর্ধাহারে। চাতক পাখির মতো এক অন্তিম আশা বুকে নিয়ে পাড়ি দিতে থাকে সংসার সাগর। কিন্তু আশা পূরণ হবার কোন পথ দেখেনা সে।
     সেদিন হাশেম আলী  কাজে গিয়েছিল মুন্তাজ উদ্দিনের। সাত-আট দিন ধরেই তার কাজ করছে সে। ক্ষেতে হাল দিয়ে-আগাছা বেছে-বীজ ফেলে পরে তার বিদায় হয়। সন্ধ্যাবেলা বিদায় লগণে নিজ পারিশ্রমিক চায়তে গেলে মুন্তাজ উদ্দিন বলে-"টাকা পরে নিসরে হাশেম। এখন মহা ঝামেলায় আছি।" এমন সংক্ষিপ্ত  অথচ বাকরোধ্যকর কথায় হাশেমের আর কিছু বলার থাকেনা।তবুও সে  কাপাঁ কাপাঁ গলায় বলে-"দিলে ভাল অয়ত ভাইসাব। সামনে ঈদ।পোলা-মাইয়া গুলার কিচ্ছু নাই। ওগুরে জামা-কাপুড় কিইনা দিতাম!" কথাগুলো বলে যেন সে মহা অপরাধ করে ফেলে;তাই সে অপরাধীর মতো কুণ্ঠিত,বিব্রত হয়ে নিচে তাকিয়ে মাটিতে ডান পায়ের দ্বারা অর্থহীন আচড়ঁ কাটতে থাকে। মুন্তাজ উদ্দিন গুড়গুড়ি টানতে টানতে কোমল গলায় বলে-"তোর  অবস্থা আমি বুঝিরে হাশেম। কিন্তু কি করবে ক দেখি! আমার মাইঝা পোলাডার ঘাড় কেমুন ট্যাড়া তুই ত জানস। হেই আজকা ধরল, যেই কইরাই হোক মার্কেট করবার টাকা দিতে। তুই দুঃখ  করিস না ভাই। আমি চেষ্টা করুম তরে ঈদের আগে দিয়া দিবার লাগি।"
           বাড়িতে আসতেই হাশমকে ঘিরে ধরে ছেলেমেয়েরা। ছোট ছেলে বলে -"বাজান,তুমি কি আমারে জামা কিইনা দিবা না!জানো...আমার না একটা জামাও নাই।" তার  আট  বছরের দ্বিতীয়  ছেলে বলে-"আমি তোমার লগে হাটে যামু বাজান। নিজের চোখে বাইছা আমার লাগি, তোমার লাগি, মায়ের লাগি, সবার লাগি জামা কিইনা আনুম। তুমি ত বাড়িত থাকনা বাজান, ময়নার বাপ ময়না আর হের ভাইয়ের লাগি কত্ত জামা আনছে!" হাশেম কোন কথা বলেনা। কথা বলে শুধু চারপাশ থেকে। তার বড় ছেলে বলে -"হ বাজান, মুসার বাপও মুসারে জামা কিইনা দিছে। কি...সুন্দর দেখতে! আমারেও ওই রকম জামা-ই কিইনা দিবা বাজান।" ছেলেমেয়েদের মাঝখান থেকে হাশেম  বাড়ির বাইরের দিকে পা বাড়ালে, মেয়ে আয়শা পেছন থেকে হাতে ধরে বলে -"বাজান আমারে জুতা কিইনা দিবা না?"
           এমনিতেই অভাব।আরো মালিকের কাছ থেকে মজুরি না পেয়ে  মনটা তার ঠিক নেই। রাতের অন্ধকারে পথ ভুলা পথিকের মতো পথের সন্ধান পেয়ে আবার হারিয়ে ফেলে সে। সে মনে মনে চিন্তা  করেছিল-হিসাব মিলিয়ে রেখেছিল মনে মনে যে, মুন্তাজ উদ্দিনের কাছ থেকে আজ টাকা এনে  কাল সকালেই ওদের নিয়ে বাজারে চলে যাবে।তাদের ইচ্ছেমত জামা-কাপড় কিনে দিবে। গত ঈদেও কিছু দিতে পারেনি ওদের।ঘরনিকেও কিছু দিবে বলে আশা করেছিল। আর,তার নিজের ও ত কিছু নেই।নেই ভালো জামা-ভালো লুঙ্গি। একটি  জামা নেই যা  অক্ষত। রোদ-বৃষ্টির সাথে যুদ্ধ করতে করতে পরিশ্রান্ত সৈনিকের মতো হাঁপিয়ে পড়েছে ;আর প্রতিপক্ষের আঘাতে এখানে ওখানে জখম হয়ে গেছে। বাজার থেকে  হাশেম আলী ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি নিজের জন্যও একজোড়া জুতো কিনে নিত। তিন বছর যাবৎ জুতো দু'টি ছিঁড়ে গেছে। তালি তুলি দিয়ে কোনরকম এপর্যন্ত চালিয়ে এসেছে। এখন আর তালি দেবার জায়গা নেই। সেই অলক্ষুণে জুতোর মতো হাশেম আলীর অলক্ষুণে পায়ে শোভা পেয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে এই জুতো জোড়া। এই জুতো জোড়া দেখে কারো কারো এমন অবস্থা হয় যে, বাধভাঙ্গা উত্তাল বেপরোয়া নিচে গড়িয়ে আসা পানির  মতো মুখ থেকে হাসি বেরিয়ে আসে ;কোন বাধাঁ মানেনা।ছেলেমেয়েদের আবদারের মুখে হাশেম আলী বিরক্ত হয়ে বলে -"জুতা জুতা জুতা। তোরা আমারে হাটে বেইচা ফেল্।অনেক পয়সা পাবি!অকর্মার গোষ্ঠি। জুতা-জামা কি পেট ভরাইব নাকিরে!  আরে, আমাগো মতন মানুষের  অত শখ করা সাজে না। নুন মরিচ দিয়া দুইবেলা দুইমুষ্ঠি ভাত খাইয়া খোদার শোকর করতে অয়। ফের যদি জুতা জামার কথা বলিস ত থাপড়ে....।" আর বলতে পারল না। কণ্ঠ জড়িয়ে যায় তার।
          "ঈদ আমাগো লাগি না।" এসব অসংলগ্ন কথা যেন সে বলেনি। কেউ যেন বলায় তাকে দিয়ে। বলার পর এমনি ভাব হয় তার। তারপর সে কোন এক অদৃশ্য শক্তির টানে যেন ঘর থেকে বের হয়ে যায়। সন্তানেরা পিতার কাছ থাকে এরুপ আশাতীত ব্যবহার লাভ করে খুবই হতাশ এবং ক্ষুণ্ণ  হয়। অথচ হাশেমই কাল বলেছিল ওদেরকে আজ বাজারে নিয়ে যাবে। ঘরনি রুবাইয়া চুপ হয়ে দাওয়ার এক কোণে দাড়িঁয়ে আছে। ভালো করে দেখলে বুঝা যায় যে চক্ষু যুগল থেকে তার নিরব বর্ষার ন্যায় ফুটি ফুটি বৃষ্টি ঝরছে। এই বৃষ্টি যেন আসমানের মালিকের প্রতি কোন এক বোবা বেদনা আর অভিমানে ঝরে পড়ছে। কি সেই বেদনা আর অভিমান সে নিজেও তা জানেনা।কিন্তু ঐযে একজন বসে আছেন চির নিদ্রাহীন -তিনি তো খুব ভালো করেই জানেন।
         অনেক রাত্রে বাড়ি ফেরে হাশেম।অপরাধীর মতো-চোরের মতো চুপি চুপি ঘরে ঢুকে সে। সেই সন্ধ্যা থেকে এতটা সময় পর্যন্ত টাকার জন্য সে এখানে-ওখানে ঘুরে বেড়িয়েছে।কোথাও টাকা পায়নি। কতজনের কাছ থেকে হাওলাত চেয়েছে-পায়নি। সারা জীবন সে সুদকে ঘৃণা করে এসেছে। আজ সে সুদে পর্যন্ত টাকা চেয়েছে।তবুও কেউ দেয়নি। তারা বলে, তাকে সুদে টাকা দিলে সে সুদ দিবে কোথা থেকে? বরং,আসলই ফাদেঁ পড়ার আশংকা। ঘরে ঢুকতেই রুবাইয়ার দৃষ্টিগোচর হয় সে। রুবাইয়া পিদিম জ্বেলে বসে রয়েছে এতটা রাত পর্যন্ত। ছেলেমেয়েরা সব ঘুমিয়ে পড়েছে। সারাদিনের আশায় ছেঁদ পড়ায় অনেক কেঁদেছে তারা। ছোট ছেলেটার গালে এখনো পানি শোকানোর দাগ দেখা যায়। পিতার কাছ থেকে কপট প্রবঞ্চনা পেয়ে মাতার কাছ থেকেও সহানুভূতি পায়নি তারা।অভাবের তাড়নায় সহানুভূতি হয়তো বিদায় নিয়েছে-নয়তো চাপা পড়েছে অভুক্ত আত্মার আর্তনাদের নিচে।রুবাইয়ার সামনে ক্ষীণ প্রদিপটি দপ দপ করছে। হয়তো নিভে যাবে এখনি। এতরাত পর্যন্ত জ্বলে তেল ফুরিয়ে এসেছে এর। প্রদিপটাও হাশেমের সাথে থাকতে থাকতে অভাব আর উপোস-আপোসে হয়ে গেছে চির দারিদ্রের প্রতিক। এটি যেন নিজের সামর্থনুযায়ী এই দারিদ্রের ঘেরা পরিবারে  আলো বিতরণ করে চলেছে জনম ধরে। হাশেমকে দেখে রুবাইয়া বলে-"কই ছিলা এতক্ষণ? খাবে না? ভাত যে ঠান্ডা অইয়া গেল!" ব্যর্থ হাশেম স্ত্রীর কাছে বসে।মুখে তার হতাশার ছাপ। চুলগুলো উসকোখুসকো। স্রীর কথার জবাব  না দিয়ে অপরাধীর অপরাধ স্বীকার করার মতো সে বলে -"পাইলাম না গ! কোথ্থাও টাকা পাইলাম না। সারাটা গেরাম ঘুরছি, কেউ দেয় নাই। বরং,আরো উপহাস, পরিহাস,বিড়ম্বিত কইরা দিছে। এখন আমি কি করুম? এই রুবাইয়া, এখন আমি কি করুম কওনা তুমি। আমি ত কোনো রাস্তা দেখতেছিনা গ। যেই দিকেই চাই সব আন্ধার-সব আন্ধার। রাত পোহায়া ঈদ। পোলা-মাইয়ার মুখে হাসি নাই -পেটে ভাত নাই। আল্লা......" গুমরে কান্না আসতে চায় তার।দাঁতে দাঁত চেপে রুখে তা। স্রীর সামনে এভাবে কাঁদতে চায়না সে। তবুও চোখে দু'ফোটা জল বেরিয়ে যায়। স্বামীর মাথায় হাত বুলায় সত্বীপ্রাণা, পতীব্রতা,খোদার প্রতি এক অগাধ বিশ্বাসীনী নারী রুবাইয়া। সে বলে-"আমাগোর এত্ত কিচ্ছুর দরকার নাই। খোদা যেইভাবে রাখছে সেইভাবেই শোকর।" স্ত্রীর কথায় শান্ত হয়না হাশেম। ছেলেমেয়েদের মুখে হাসি নাই ; কি করেই বা শান্ত থাকবে সে? সন্তানেরা গায়ে ছেঁড়া পোষাক আর চারপাশ দিয়ে নতুন পোষাক পরে হাটবে মানুষ ;এত বড় বেদনা সে কি করে সইতে পারে? না,এ যন্ত্রণা সে সহ্য করতে পারবেনা।
         সকালবেলা হাশেম গ্রামের নামকরা  সুদখোর আজিজ নিজামীর কাছে যায়। নিজামী অবশ্য টাকা দিতে রাজি হয়, তবে একটা শর্তে। যদি সে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা শোধ করতে না পারে তবে সে ঘরের সকল আসবাব পত্রের দখল নেবে-প্রয়োজনে ভিটেমাটিরও দখল নিতে পারে।এজন্য নিজামী হাশেমের কাছ থেকে টিপসই রাখে।
        খুশি মনে বাড়ি ফেরে হাশেম। পরে যা হবার  হবে।আপাতত ছেলেমেয়ে খুশি হবে-পেট পুরে কিছুদিন খেতে পারবে এটাই যথেষ্ট। সুদ  আর টিপসইয়ের কথাটা রুবাইয়ার কাছ থেকে গোপন রাখে হাশেম। সে বলে-"নিজামী সাবের কাছ থাইকা হাওলাত আনছি। পরে মিটায়া দিমু।" তবুও কেমন খটকা লাগে রুবাইয়ার।মিথ্যে কথা বললে হাশেমের কথা জড়িয়ে যায়। তখন যে কাউকেই তার বাঘ মনে হয়। আর, রুবাইয়া জানে যে, নিজামী বেটা কোন প্রতিদান ছাড়া উপকার করার মানুষ নয়।
         ঈদের দিন ছেলেমেয়েরা সকলের সাথে নতুন জামা পরে ঈদগাহে যায়।আয়শাকে নতুন একজোড়া জুতা কিনে দেয়।নিজের জন্য কিছু কিনেনি হাশেম -আর কিনেনি রুবাইয়ার জন্যও ;কারণ সে নিষেধ করেছিল। সে বলে -"এভাবে টাকা খরচ করলে চলব না।" তারপর সে হাশেমের কাছে সরে গিয়ে টানা টানা সুরে বলে,এমনভাবে বলে যেন কেউ শুনলে মস্ত ক্ষতি হবে-"নিজামী মানুষটা বেশি সুবিধার নয়।"  ঘরে তৈরী হয় মেলা জাতের পিঠা। খুব খুশির ভেতর দিয়ে কাটে ঈদ
          ঈদের পরে টাকা দেয় মুন্তাজ উদ্দিন।
           কারো কাছে ঋণী থাকতে সহজে রাজি নয় হাশেম। স্রীর পীড়াপীড়িতে আরো তাড়াহুড়ো করে সে। ঈদের কয়েক সপ্তাহ পরে হাশেম নিজামীর অর্ধেক টাকা ফেরত দিতে গেলে নিজামী বলে-"সে কিরে হাশেম! এই কয়দিন হল টাকা নিলি, আর এখনই ফিরায়ে দিতে চাস্। তা ফিরায়ে দিচ্ছিস ভালো কথা। পুরোটা একসাথেই দেনা বাপ। এমুন ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা দিলে কি আর হয়? আমি ত ভাইঙ্গা দেইনাই। একসাথে টাকা নিলি......" হাশেম বলে-"বাকিডা খরচ হইয়া গেছে সাব। তৈ এইডা রাখলে বাকিডা কিছুদিনের মধ্যেই ফিরায়া দিমু।" "দিবি যখন পুরোডা একসাথেই দিস্। সেদিন তোর বাড়ির পাশ দিয়া আসার সময় দেখে এলুম, তোর হালের গরুজোড়ার কি নাজেহাল অবস্থা। এইছাড়া তোর ঘরের ছাউনিডাও ত ফুঁটা হইয়া গেছে। আগে ওইসব মেরামত কর্। তারপর না হয় আসিস্। আমি অত কাঙ্গাল না, বুঝলি? "
           এতদিন নিজামী সম্বন্ধে  হাশেমের মনে একটা ভয় ছিল। আজ সেই ভয়টা কেটে গেছে তার। নিজামীর জন্য তার কিছু করতে মন চাচ্ছে। কিন্তু তার মত হতদরিদ্র মজুর নিজামীর মতো প্রতাপশালী  লোকের জন্য কিইবা করতে পারবে ভেবে পায়না।
             নিজামীর কথামতো ঘরে নতুন ছন লাগায় হাশেম। নতুন লাঙ্গল আর জোয়াল গড়ে। গরুগুলোকে একটু ভালো খাবার দেয়।
           তারপর কেটে যায় তিন মাস। একদিন পড়ন্ত বেলায় দাওয়ার ওপাশের বড় বড় ডালার পাতাওয়ালা গাছটির নিচে শুয়েছিল হাশেম ;সারাদিনের পরিশ্রমের পর। এমন সময় নিজামীর লোক আসে একজন। পরনে তার সাদা-কালো ডোরা কাটা পাজামা আকৃতির প্যান্ট। গায়ে দু'পকেটওয়ালা ফতুয়া। মাথায় লম্বা সাদা একটি টুপি, অযত্নে বাকাঁ করে পরা। লোকটি বলে -"নিজামী সাব পাঠাইছে আমারে। উনি কইছেন এক সপ্তার মইধ্যে তার টাকা সুদে আসলে মিটায়া দিবার লাগি। নইলে উনি যা কইছিল তা করব।"
            হঠাৎ একথায়  হকচকিয়ে ওঠে হাশেম। এতদিন বেশ নিশ্চিন্তে ছিল সে। সে যে একজনের কাছ থেকে সুদে টাকা এনেছে একথা প্রায় ভূলতেই বসেছিল। উপস্থিত দূতের কথায় তার মুখ থেকে শুধু বেরিয়ে আসে -"এক সপ্তা.....?"
              দূত চলে যায়।সৃষ্টি করে যায় এক মুহূর্তের ভেতরে আতঙ্ক। হাশেমের মনে জাগ্রত হয় সেই আগের ভয়।
               টনক নড়ে তার। রুবাইয়া বলে-"কিগ, তুমি না কইছ হাওলাত আন্ছ,এখন কি কয়ে গেল? " অপরাধ স্বীকার করে সে। সে বলে-"তোমার কাছে মিছা কইছি আমি। পাছে তুমি কিছু কও। " "কিন্তু এখন কি করবা? "উত্তেজিত হয়ে বলে রুবাইয়া।  হতাশভাবে হাশেম বলে -দেখি, কি করতে পারি।" কণ্ঠে যেন জোর নেই তার।
                কিন্তু কিছুই করতে পারেনি সে। এক সপ্তাহ বৃথাই দৌড়াদৌড়ি করে। নিজামী  তাকে আর একটি সপ্তাহ বেশতি সময় দেয়নি। অনেক কাকুতি-মিনতি করেছে হাশেম।
              এক সপ্তাহ পরে নিজামী  তার ঘরের সকল জিনিসপত্র  নিয়ে যায়। পানি খাবার একটি গ্লাসও রাখেনি ঘরে। গরুজোড়াও নিয়ে যায় নিজামীর  লোক। কিন্তু তাতেও দেনার শোধ না হওয়ায় অবশেষে ভিটেমাটিরই দখল নিতে বাধ্য হয় নিরুপায় নিজামী।
            সপরিবারে অন্তিম অন্ধকারের দিকে পা' বাড়ায় হাশেম।পড়ে থাকে শুধু সেই অলক্ষুণে জুতো জোড়া। এগুলো নিজামী এবং নিজামীর লোক কেউ নেয়নি।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১০৭৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৯/০৪/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast