www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বিশ্ব ভালবাসা দিবসঃ মানবতার জয় হোক

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি উচ্চরিত শব্দগুলোর মধ্যে একটি হল লাভ বা ভালোবাসা। পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রাণীর মধ্যে ভালোবাসা বিদ্যমান। জীবজগতের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক হল ভালোবাসা। ভালোবাসা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না, শুধুমাত্র অনুভূতি দিয়ে প্রকাশ করতে হয়। ভালোবাসার রং রূপ গন্ধ কিছুই নেই আছে শুধু অনুভূতি। যার শক্তিতে পৃথিবীর এক প্রাপ্ত থেকে অন্য প্রাপ্ত জয় করা হয়।

যান্ত্রিক মানুষ পর্বতসম ব্যস্ততা উপেক্ষা করে আজ প্রিয়জনকে বলবে, ‘শুধু তোমাকেই ভালোবাসি’। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হয়তো ঠিক এমনই মুহূর্তকে স্মরণ করে লিখেছেন, ‘দোহাই তোদের, এতটুকু চুপ কর/ভালোবাসিবারে, দে মোরে অবসর।’ আজ সেই ভালোবাসার দিন। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস।

আজ সকলের জন্য ভালোবাসা। দুরন্ত মন আজ হারিয়ে যাওয়ার দিন। অন্যদিকে আজকের এ ভালোবাসা শুধুই প্রেমিক আর প্রেমিকার জন্য নয়। মা-বাবা, স্বামী-স্ত্রী, ভাইবোন, প্রিয় সন্তান এমনকি বন্ধুর জন্যও ভালোবাসার জয়গানে আপ্লুত হতে পারে সবাই। হতে পারে পরিবার, সমাজ এমনকি দেশের জন্য ভালোবাসা।

প্রাচীন ইতিহাস থেকে জানা যায়, দুটি প্রাচীন রোমান প্রথা থেকে এ উৎসবের সূত্রপাত। এক খ্রীস্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ফাদার সেন্ট ভ্যালেনটাইনের নামানুসারে দিনটির নাম ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ করা হয়। সুপ্রাচীন কাল থেকে অর্থাৎ ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেইটাইন’স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচারের অভিযোগে তৎকালীন রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিযাস তাকে বন্দি করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্য খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দি অবস্থায তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টহীন এক মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেইটাইনের জনপ্রিয়তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদন্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেইটাইন’স স্মরনে ১৪ই ফেব্রুয়রিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করেন। সেই থেকে দিবসটি পালন করা হয়।৪০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে রোমানরা যখন খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীতে পরিণত হয় তখন ‘জুনো’ উৎসব আর সেন্ট ভ্যালেনটাইনের আত্মত্যাগের দিনটিকে একই সূত্রে গেঁথে ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ভ্যালেনটাইনস ডে’ হিসেবে উদযাপন শুরু হয়।

আসলে ভালোবাসার কোন নির্দিষ্ট দিন নেই। প্রত্যেক দিন, প্রত্যেক মুহুর্তে প্রিয়জনকে ভালবাসতে হয়। প্রিয় অনভূতি, স্মৃতি, আবেক দিয়ে সমাজ টিকে আছে। ভালোবাসার আবদ্ধে মানুষ অমর হয়ে থাকে। আজকের এই দিনে সকলের উচিৎ প্রিয়জনের সাথে সমাজ দেশটাকে ভালোবাসা।

ভাষা দিবসের এই মাসে আমাদের পূর্ব পুরুষরা রক্তের বিনিময়ে মায়ের মুখের ভাষা প্রতিষ্ঠা করেছিল। তাদের রক্তে পিচঢেলা রাজপথ লাল হয়েছিল। আজ তাদের ভালোবাসার দিন।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের চলাফেরার স্বাধীনতা দিয়েছে, দিয়েছে নতুন মানচিত্র সেই সব বীর শহীদ ও গাজীদের ভালোবাসার দিন। সর্বপোরি মা, মাতৃভূমি দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশের প্রতিটা নাগরিককে ভালোবাসতে হবে। ভালোবাসা দিবসের প্রত্যয় হোক হিংসাত্মক রাজনীতি ভূলে দেশের মানুষের কথা ভেবে, তাদের কল্যানে কাজ করা। একটি পজেটিভ বাংলাদেশ গঠন করা। তবে সুফলা শস্য শ্যামলার দেশ সমৃদ্ধি হবে। সকলের ভালোবাসায় জঙ্গি, কুসংস্কার, ক্ষুধা-দারিদ্র্য মুক্ত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাক পৃথিবীর মানচিত্রে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৭৯০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৪/০২/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • আমি-তারেক ১৪/০২/২০১৭
    khub valo...
  • মানবতার জয় হোক !!!!
  • অনাদী রহমান ১৪/০২/২০১৭
    ভালবাসা দিবসে আপনার প্রত্যাশা অনেক সুন্দর, কিন্তু ভালবাসা দিবসের উত্পত্তি ইতিবৃত্তি খৃষ্ট ধর্ম প্রচারই বেশি প্রাধান্য পেয়েছে।
 
Quantcast