আদিবাসী
১ম অধ্যায়:-
জুন মাসের এক ভেজা সকাল। আকাশ কাঁদছে হালকা করে, যেন বান্দরবানকে আরও মায়াবি করে তুলেছে। রুদ্র ছাতাটা গুটিয়ে রাখল—পাহাড়ি বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ধরে রাখা হাস্যকর লাগে। পাশে নিশি, ভেজা চুলে মুখ ঢেকে গেছে, কিন্তু ঠোঁটের কোণে সেই চেনা মৃদু হাসিটা আছে।
পেছনে রক্তিম ব্যাগ ঘাড়ে ক্যামেরা নিয়ে হাঁটছে, রিক্তা কাদায় হোঁচট খেয়ে ঠাট্টা করছে, স্টালিন আর ইজোমো রাস্তার খোঁজে মানচিত্রে মুখ গুঁজে রেখেছে। এই ছয়জন বন্ধুর দল শহর ছেড়ে পাড়ি দিয়েছে বান্দরবানের এক অজানা আদিবাসী পাড়ার খোঁজে—যেখানে না আছে মোবাইল টাওয়ার, না আছে ইন্টারনেট, এমনকি বিদ্যুতও না।
রুদ্র নিচু গলায় বলল,
"তুমি ঠিক আছো তো, নিশি?"
নিশি কাদা মাখা জুতো তুলে, হালকা হাসি দিয়ে বলল,
"তোমার পাশে থাকলে বর্ষাতেও হাঁটা সহজ লাগে।"
তিন ঘণ্টার টানা হেঁটে, ঝিরি পেরিয়ে, পাথুরে ঢাল বেয়ে, অবশেষে তারা পৌঁছাল পাহাড়ের বুকজোড়া ছোট্ট একটা পাড়া—যেখানে বাঁশের ঘর, কাঠের চুলা, আর মানুষগুলো অচেনা, কিন্তু চোখে মুখে এক অদ্ভুত আতিথেয়তা।
প্রথম দিনটা ঘুরে ঘুরে কাটল—ছেলেরা গ্রামের বুড়ো মাতব্বরের সাথে গল্প করল, মেয়েরা হাঁসুয়া দিয়ে কচুপাতা কেটেছে। নিশি ও রিক্তা পাড়া মেয়েদের সাথে মিলে বাঁশের কুটিরে রান্না শিখল।
রাতে আগুন জ্বালিয়ে সবাই মাটিতে বসে খিচুড়ি খেল—হলুদ আলো আর ঝিরঝির বৃষ্টির শব্দে যেন পৃথিবীটাই অন্যরকম।
রাত গভীর হলে রুদ্র ও নিশি একটু দূরে এক পাহাড়ের কিনারায় গিয়ে বসে। দূরে বিদ্যুৎ নেই, তবু তারা দেখতে পেল মেঘের আড়ালে চাঁদের আলো ঝলকাচ্ছে।
রুদ্র বলল,
"তুমি জানো নিশি, তোমাকে এই সবুজের মধ্যে দেখলে মনে হয় তুমিও প্রকৃতিরই একটা অংশ।"
নিশি একটু হেসে বলল,
"তুমি না থাকলে আমি এসব দেখতে আসতাম না। আমি শহরের মানুষ, আর তুমি আমাকে তুলে এনেছো পাহাড়ের কোলে।"
রুদ্র এক চিলতে চুপ করে থাকল। তারপর ধীরে ধীরে নিশির হাতে হাত রাখল।
তারা দু’জন চুপচাপ পাহাড়ের নিচে মেঘে ঢাকা পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে থাকল।
---
চলবে...
জুন মাসের এক ভেজা সকাল। আকাশ কাঁদছে হালকা করে, যেন বান্দরবানকে আরও মায়াবি করে তুলেছে। রুদ্র ছাতাটা গুটিয়ে রাখল—পাহাড়ি বৃষ্টির মধ্যে ছাতা ধরে রাখা হাস্যকর লাগে। পাশে নিশি, ভেজা চুলে মুখ ঢেকে গেছে, কিন্তু ঠোঁটের কোণে সেই চেনা মৃদু হাসিটা আছে।
পেছনে রক্তিম ব্যাগ ঘাড়ে ক্যামেরা নিয়ে হাঁটছে, রিক্তা কাদায় হোঁচট খেয়ে ঠাট্টা করছে, স্টালিন আর ইজোমো রাস্তার খোঁজে মানচিত্রে মুখ গুঁজে রেখেছে। এই ছয়জন বন্ধুর দল শহর ছেড়ে পাড়ি দিয়েছে বান্দরবানের এক অজানা আদিবাসী পাড়ার খোঁজে—যেখানে না আছে মোবাইল টাওয়ার, না আছে ইন্টারনেট, এমনকি বিদ্যুতও না।
রুদ্র নিচু গলায় বলল,
"তুমি ঠিক আছো তো, নিশি?"
নিশি কাদা মাখা জুতো তুলে, হালকা হাসি দিয়ে বলল,
"তোমার পাশে থাকলে বর্ষাতেও হাঁটা সহজ লাগে।"
তিন ঘণ্টার টানা হেঁটে, ঝিরি পেরিয়ে, পাথুরে ঢাল বেয়ে, অবশেষে তারা পৌঁছাল পাহাড়ের বুকজোড়া ছোট্ট একটা পাড়া—যেখানে বাঁশের ঘর, কাঠের চুলা, আর মানুষগুলো অচেনা, কিন্তু চোখে মুখে এক অদ্ভুত আতিথেয়তা।
প্রথম দিনটা ঘুরে ঘুরে কাটল—ছেলেরা গ্রামের বুড়ো মাতব্বরের সাথে গল্প করল, মেয়েরা হাঁসুয়া দিয়ে কচুপাতা কেটেছে। নিশি ও রিক্তা পাড়া মেয়েদের সাথে মিলে বাঁশের কুটিরে রান্না শিখল।
রাতে আগুন জ্বালিয়ে সবাই মাটিতে বসে খিচুড়ি খেল—হলুদ আলো আর ঝিরঝির বৃষ্টির শব্দে যেন পৃথিবীটাই অন্যরকম।
রাত গভীর হলে রুদ্র ও নিশি একটু দূরে এক পাহাড়ের কিনারায় গিয়ে বসে। দূরে বিদ্যুৎ নেই, তবু তারা দেখতে পেল মেঘের আড়ালে চাঁদের আলো ঝলকাচ্ছে।
রুদ্র বলল,
"তুমি জানো নিশি, তোমাকে এই সবুজের মধ্যে দেখলে মনে হয় তুমিও প্রকৃতিরই একটা অংশ।"
নিশি একটু হেসে বলল,
"তুমি না থাকলে আমি এসব দেখতে আসতাম না। আমি শহরের মানুষ, আর তুমি আমাকে তুলে এনেছো পাহাড়ের কোলে।"
রুদ্র এক চিলতে চুপ করে থাকল। তারপর ধীরে ধীরে নিশির হাতে হাত রাখল।
তারা দু’জন চুপচাপ পাহাড়ের নিচে মেঘে ঢাকা পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে থাকল।
---
চলবে...
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
শঙ্খজিৎ ভট্টাচার্য ১৪/০৬/২০২৫অনবদ্য
-
ফয়জুল মহী ১৩/০৬/২০২৫অপূর্ব সুন্দর লিখেছেন