www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

দুষ্ট ছেলের দল

স্কুলে আসার সময় ব্যাহেলাটা সঙ্গে নিয়েছিল যাতে স্কুলে বন্ধুদের নিয়ে বাজাতে পারে। তার আগমনে সবাই যখন কাছে এলো তখন টোটন ব্যাহেলাটা দেখালো।
বলল জানিস এটা অনেক দামি। মাঝে মাঝে সিনেমাতে এমন ব্যাহেলা দেখানো হয়।
সবার দেখি দেখি করে সগ্রেহে হাত বাড়ালো । অনিক টোটনের ক্লাস ফ্রেন্ড। আবার দুর সম্পর্কের ভাগনেও হয়। অনিক ব্যাহেলাটি হাতে নিতেই ক্লাসের ঘন্টা পড়লো। বাইরে থেকে কজোন দৌড়ে এসে বলল এই স্যার আসছে ,স্যার আসছে। সবাই যে যার মত ক্লাসে বসে পড়লো। ক্লাসে ঢুকলেন মোতালেব স্যার। স্যার কদিন হল দাওয়াতে তাবলিগে গিয়েছিলেন। ফিরে আসার পর এই প্রথম ক্লাস। টোটন লক্ষ্য করলো স্যার মেয়েদের দিকে তাকাচ্ছে না। দরজা দিয়ে বাহিরে তাকিয়েই কথা কলছে আর মাঝে মাঝে ছেলেদের দিকে তাকাচ্ছে। টোটন অনেক ক্ষণ লক্ষ্য করতে করতে হঠাৎ ফিক করে হেসে দিল।
স্যার উদাস ছিলেন এবার তিনি সজাগ হয়ে টোটন কে ডাকলেন।
এই টোটন এখানে এসো।
টোটন কাচু মাচু করে শেষে স্যারের সামনে এসে দাড়ালেন।
কি হয়েছে তোমার, হাসলে কেন?
এমনি স্যার একটা কথা মনে পড়লো তাই।
ওহ, আচ্ছা, এই স্যারটা টোটনকে অন্ধেুর মত ভালোবাসে টোটন যা বলে তাই বিশ্বাস করে। কিন্তু আজ তার মনে হল টোটন তাকে দেখেই হেসেছে। স্যার দাড়ি রেখেছে এটায় টোটনের হাসির কারন হয়তো। টোটন তুমি আজ এখানে দাড়িয়ে সবটুকু পড়া পড়ে সবাইকে শুনাবে।
স্যার  !
হা। টোটন এবার সত্যি সত্যি ভয় পেল। সবার সামনে দাড়িয়ে এত পড়া তবু তা যদি শুধু ছেলেদের সামনে হতো এতগুলো মেয়ে টোটন একবার আড় চোঁখে মেয়েদের দিকে তাকালো। মেয়েরা চেয়ে আছে তার দিকে। দর্শক যেমন সার্কাস দেখার জন্য চেয়ে থাকে ঠিক সেভাবে চেয়ে আছে সাবাই।
টোটন কি হল এভাবে চুপ করে আছো কেন? শুরু করো।
টোটন আর দেরি করলোনা বইখানা হাতে ধরে পড়তে লাগলো।
কিছুক্ষণ পড়তেই স্যার বলল হয়েছে যাও ফের যদি কখনো ক্লাসে অকারনে হাসতে দেখি তবে শাস্তিটা ঢের হবে।
টোটন এবার অবাক হল ক্লাসে এসে বই পড়া, সে আবার শাস্তি হল নাকি?
টোটন তার আসনে গিয়ে বসলো। মোতালেব স্যার ক্লাস নিলেন। ক্লাস শেষ হতেই সবাই আবার এক জায়গায় হল। বেহেলাটা অনিক প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে বাজাতে লাগলো।পাশের ঘরে ক্লাশ চলছে কিšতু না সে খেয়াল নেই কারোরই..।
আর সকলে সুর করে গান ধরলো এবার । কাঠের বেণ্চিতে তাল উঠালো ঢোল -তবলার।দারুন হচ্ছে এক সঙে গান ।
অন্য ক্লাসের এক ছাত্র এসে বলল এ্যাই তোমরা কি করছো ,ও ঘরে খালেক স্যার ক্লাস নিচ্ছে।
নিচ্ছে তো কি হয়েছে ,বল্ল একজন।
চলে গেল ছেলেটা,এবার কিছুটা শান্ত হল ওরা ।সবার কাছেই মনে হল স্যার রেগে যাবেন । আর খালেক স্যারের যে রাগ রে বাবা ভাবতেই গা শিউরে উঠে। টোটন বল্ল চল বাহিরে যাই.,
নারে  বাহিরে না ,তার চেয়ে আমরা আস্তে আস্তে বলবো
হা ,সবাই তাল মিলালো জোবাইদের কথায় ।আবার শুরু হল  গান।বেহেলা বাজাছে যে যার মত।
কখন যে তাদের শুর আবার জোর পেল ওরা বুঝতেই পারলো না ।খালেক স্যারকে বেত হাতে আসতে দেখে কে একজন বল্ল এ্যই স্যার আসচ্ছে।
কেউ দেরি না করে যে যার মত দিল ছুট..
ওরা আর পরের ক্লাসেও এলো না ।টিফিন বিরতির পর যথারিতি ক্লাস করলো সবাই।


স্কুল মাঠে খেলা হচ্ছে এ স্কুলেরি নাইন টেন ব্যাচ,সবাই খেলা দেখায় ব্যাস্ত,হঠাৎ টোটন দেখলো রাইহান মিটমিট করে হাসচ্ছে ,।
কিরে বাপার কি ?
জোবাইদের সাইকেলের বাতাস ছেরেছি..।
বলিস কি ,অনিকের টাও  ছার ,।
ছাড়বো...ছাড়লাম কিন্তু
এবার দেখতে পেল অন্যরা। সকলেই শুরু করলো সাইকেলের বাতাস ছাড়ার কাজ ।একে একে নিজেদের ক্লাস অতিক্রম করে সিনিয়র জুনিয়র সকল ক্লাসের ছাত্র এমন কি শেষে স্যারদের  কেই ছাড়লো না ওরা।
কিছুক্ষন পর স্কুল ছুটি হল ,হুল্লর দিয়ে যে যার মত সাইকেলে উঠতে গিয়ে দেখলো চাকায় বাতাস নেই । স্কুলের পেছনে একটি মাত্র সাইকেল মেরামতের দোকান,সেখানে গিয়ে ভিড় জমালো সবাই।কারোরই বুঝতে বাকি রইলো না আর যে এটা  দুষ্ট ছেলেদের কাজ...সবার শেষে যখন স্যারেরা বুঝতে পারলো তখন নিজেদের মধ্যে বলা বলি করতেই দেখলেন সপ্তম শ্রেনীর ছাত্ররা হাসাহাসি করছে ।খালেক স্যার এবার দুষ্ট হাসি দিয়ে বললেন ঐ যে দেখেন বাদর গুলো ওখানে সবগুলোই আছে ।

ওরা একটু দুরে হলে ও বুঝতে পারলো স্যারের কথা বলার ধরন,হেড মাষ্টারকে এদিকে আসতে দেখে টোটন বল্ল
এই স্যার মনে হয় বুঝতে পেরেছে,দেখ এদিকেই আসচ্ছে। পালা পালা ও সবাই । ওরা যে যার মত যেতে উদÍত হতেই হেড স্যার হুংকার ছেরে বল্ল এ্যই কেউ পালাবিনা,সবগুলো আমার কাছে আয়।স্যারের কন্ঠে কঠিন কথা শুনে সবগুলো একসঙে দিল ছুট ।
এ্যই জাসনে,জাসনে বলছি ,বল্ল মোতালেব স্যার ।
মোতালেব যাও তো ধরে নিয়ে এসো ওদের ।হেড স্যারের কথায় মোতালেব স্যার এবার ওদের পিছে দিল দৌড় ।হঠাৎ ওরা দেখলো সামনে থেকে তহিদুল স্যার আসছে। পিছন থেকে স্যার বল্ল ধর ওদের ধর।ওরা একবার পালানোর চেষ্টা করে থেমে গেল ।স্যারের সঙে তো আর বেয়্যাদবি করা যায়না ,এমনিতে কথা না শুনে দোষ করেছে ।
সবাই মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে ।
হেড স্যার বল্লেন এটা কার বুদ্ধি ?
কেউ কোন কথা বলছেনা ।
কিরে তোরা মানুষ হবিনা ? খালেক স্যার এবার বেত এনে বললেন,মোতালেব ওদের মাঠের মধ্যে আধাঘন্টা দাড় করে রাখ ।
হা স্যার ।
ওরা খাঁ খাঁ রোদের মধ্যে দারিয়ে বলাবলি করছে,ভাগ্যিস মেয়েরা চলে গেছে।নয়তো অপমানের শেষ হতো না ।তাও যে বেত মারলো না এই ঢ়ের ,কি বলিস ?
হা আমার তো ভয়ে...কথা শেষ হলনা মোতালেব স্যার এসে বল্ল কিরে তোদের কি লজ্জা হবেনা । এখন কেমন লাগছে ?
সবগুলো এক সঙে বল্ল
মজায় লাগছে স্যার ।
স্যার হেসে বল্ল আধাঘন্ট হয়ে গেছে যা এবার যা।
ওরা যে যার মত চলে গেল...।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৬৮১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ৩১/১২/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast