www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রাত পোহাবার আগে ২

সে যাকগে, মেয়েটার নাম জেবা। প্রায় প্রতিদিন সাঁজগোজ করে মাসুমের ঘরে আসবে, অকারণে কথা বলবে। এখানে সেখানে যাবার বায়না ধরবে। আর এর সুযোগ করে দিয়েছে তার মা। বাসায় উঠবার পরদিনই মহিলা মুন্নিকে বললো, নতুন শহর ঘুরিয়ে দেখার জন্য। মাসুম সেখানে উপস্থিত থাকায় মুন্নির সাহস হলো না। মুন্নি বললো, দেখুন আন্টি, আমরা তো অকারণে শহরে কখনো ঘুরি না? প্রয়োজন পড়লে ভাইয়াকে নিয়ে যাই।

ঃ হ্যাঁ তোমাদের তো বড় ভাই আছে কিন্তু আমার জেবার তো ভাই নেই। মেয়েটা আমার বড় শখ করে রেডি হয়েছে, দরকারি কিছু কেনাকাটা ও করবে বলেছিলো। তো মুন্নি যখন যাবে না তো তুমিই একটু যদি নিয়ে যাও বাবা। আমার তো আর বড় ছেলে নাই। তুমি আমার ছেলের মতো। ওকে ছোট বোন মনে করে একটু যদি...?

মাসুম দেখলো, একবার মেয়েটার দিকে। এই প্রথম দেখা। মায়াবির মুখে অনেক মায়া। পোশাক কিছুটা মার্জিতই ছিলো। তবু কি যেন ভাবলো সে।
মহিলা তাকে ভাবতে দেখে আবারো বললো,“বাবাজী, আজকে তো অফিসও নেই।”
মাসুম মহিলার দিকে তাকিয়ে বললো,“আপনার ছেলেটা কোথায়?”
ঃ ও তো বাসায় নেই বাবা। বাইরে গেছে।
আর কথা বললো না মাসুম। মম মুন্নিকে কি বলে বেরিয়ে গেলো জবাকে সঙ্গে করে। সেদিন মাসুম বুঝতে পেরেছে, জেবার মায়ার মাধুর্য। মাসুমের সরলতা আর যা হোক, অন্যায় কারির প্রতি কখনো ছিলো না থাকবেও না। ওর সততা, নিষ্ঠা আর আদর্শতা ওর বোনদের একমাত্র সম্বল। মাসুম পারবে সত্য সৌন্দর্যের জন্য ত্যাগি হতে। কিন্তু মিথ্যের প্রবঞ্চনা সে সইবে না। সে ভাবে, ত্যাগের দুয়ারে পাবার আকাংক্ষা ম্লান। সে সকল কিছু ত্যাগ করবে তার বোনদের জন্য। কারণ, তারা হাজারো কষ্ট শয়েও তার মযার্দা রেখেছে। কোনো দিনো এতোটুকু অসম্মান বয়ে আনেনি। কিন্তু জবা? না, আর কোনো দিনো নয়। সে তার বোনদের কাছে আসবার মতো কিঞ্চিৎ যোগ্যতাও রাখে না। মাসুম ওর ব্যবহারে সেদিন যা বলেছিলো এরপর কোনো সম্মানী ব্যক্তি নিজেকে এতোটা অশ্লীল করে সাজাতে পারে না। তবু যখন তাই করেছে আর তাকে শাসন করার মধ্যে সম্মান হীনতায় থাকবে অতএব মাসুম তাকে শাসন করে না, তবু যখন দেখছে প্রতিদিন তার কাছে আসবার প্রবণতাটা বেড়েই চলেছে, অশ্রিল সব ভঙ্গিমায়, কথাবার্তায় অতিষ্ট করে তোলে মাসুমকে।

মাসুম বিষয়টা জানায় মমকে। মম শুনে উদাস হয়। ভাবে, কি যেন। তারপর জেবাকে সুধরাবার চেষ্টা করে। বুঝানোর চেষ্টা করে তাকে। বলে, জেবা, তুমি কী জানো আমাদের সম্পর্কে? আমরা তিন বোন। কখনো কোনো দিন ভাইয়ার মুখের উপর কথা বলতে পারি না। ভাইয়া বেহায়াপনা একদম পছন্দ করেন না।
ঃ হ্যাঁ, মাসুম ভাইয়া আমাকেও তাই বলেছে।
ঃ তাহলে যে এই পোশাক পরেছো, দেখেছো আয়নাতে একবার নিজেকে?
ঃ হ্যাঁ, দেখেছিতো।
ঃ কেমন দেখেছো?
ঃ এক্সিলেন্ট। জানেন মম আপু, আমার বন্ধুরা বলতো, আমাকে নাকি শট পোশাকে সুন্দর লাগে। আমি না বড় কাপড় পড়লে ওরা বকা দিতো।
ঃ তাই নাকি?
ঃ হ্যাঁ। সেই জন্যই তো এসব পোশাক পরি।
ঃ জেবা, তুমি তোমার এই সুন্দর পোশাক পরে আমাদের বাসায় এসো না।
ঃ কেন?
ঃ কারণ, ভাইয়া সুন্দরী মেয়েদের দেখতে পারে না। তুমি অনেক সুন্দর তো, তাই। ভাইয়া বকবে।
ঃ বকুক গা। জানেন তো ওনাকে আমার খুব ভালো লাগে। মাসুম ভাইয়া বকলে আমার খুব ভালো লাগে।


চমকে উঠে মম। বুঝতে পারে কিছু। তাই প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বলে,“আচ্ছা জেবা, তুমি কী জানো, এই যে তুমি এতো সেজেছো, এই সাজে তুমি বাইরে গেলে তোমার পাপ হবে?”
ঃ হোক গে। জানেন , আমি যখন বাইরে যাই তখন সবাই আমার দিকে কেমন চেয়ে থাকে। আমার না খুব মজা লাগে। কতো ছেলে আমাকে বিয়ে করতে চায়। আমার কাউকে ভালো লাগে না। শুধু মাসুম ভাইয়াকে ভালো লাগে।

[প্রতি বৃহঃপতিবার] চলবেই..
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৬১৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৩/১০/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast