www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মেল আইডি

মেল আইডি
ট্রেন থেকে নেমে সুমনের মনে হলো , না ওখানে আজ আর যাবে না, আবার মনে হলো এসেছে যখন তখন একবার ঘুরেই যাবো | চুপচাপ নিজের মনে প্লাটফর্মের ফাকা একটা বেঞ্চিতে গিয়ে বসলো. এখন বিকেল চারটে , ঘন্টা দুয়েক আগে শিয়ালদহ থেকে ট্রেন এ উঠেছিলো, তার আগে লোকটাকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছিলো যে সে আসছে এবং পাঁচটার মধ্যেই পৌছে যাবে, যদিও পাঁচটা বাজতে এখনো এক ঘন্টা বাকি, আর লোকটার কথা মতো প্লাটফোর্ম থেকে এখনো আধঘন্টার রাস্তা |
আজ শনিবার, কলেজ থেকে একটার সময় বেরিয়ে এসেছে, অভীন প্রশ্ন করেছিল|
- কোথায় যাচ্ছিস?
- কাজ আছে, বাড়িতে |
- তোর শালা প্রতি শনিবার যে কী কাজ থাকে কে জানে?
- তোর জেনে কাজ নেই শালা|
সুমন আর কিছু না বলেই বেরিয়ে এলো , কী কাজ সেটা ও ছারা আর কেউ জানেনা এবং কাজটা অভীন কে বলাও যায়না | আর তাছাড়া এটা কোনো কাজ না, এটা একটা তার অদভূত নেশা, আদিম রিপুর নেশা, পেপার থেকে কন্টাক্ট নংবর জোগার করে , তাদের ফোন করে ওখানে যায়া, আর কম বেশি এক ঘন্টা কাটিয়ে আবার ফিরে আসা. যাবার আগে যে উত্তেজনা, ফেরার সমই ততই নিজের প্রতি ঘেন্না আর প্রতিবার ভাবা আর নয়...এবারই লাস্ট, কিন্তু আবার দিন তিনেক পরে সেই নেশা ফিরে আসে আবার নতুন যায়গা খোজা শুরু হয় |
বাড়িতে মা, বাবা আর ভাই | বাবার সাথে দেখা হয় শুধু রাত্রি বেলা আর রবিবার | কলেজ যাবার পর মা আর ভাই এর সাথেও গল্পো করার সমই কমে এসেছে আর কলেজ শুরু হবার পর গতো কয়েক মাস ধরে তার এই আদিম রিপুর অভিসার চলছে | পেপারে রঙ্গিন বিজ্গাপন দেখে আর নতুন কেনা মোবাইল ফোনে কৌতুহলী হয়ে তার এই যাত্রা শুরু, কখন যে এটা একটা তার অভ্যাস হয়ে গেলো তা আর এখন মনে নেই |
প্রাইভেট টিউশন করিয়ে টাকার বেশির ভাগটাই চলে যায় এটার পিছনে | তার সে অর্থে সেরকম কোনো বন্ধু নেই, সুমন নিজেকে খুব একা মনে করে, ছোটো বেলা থেকেই সে নিজেকে নিয়ে খুব ভাবতো, অনেক রঙ্গিন স্বপ্নো দেখতো, দেখতো সে ক্রিকেটার হবে, নয়তো বড় ডাক্তার হবে, কিন্তু মধ্যামিক পাশের পর সব ছন্দ কেটে যায়, কোনোরকমে উচ্চ মধ্যামিক পাস করে কলেজে ভর্তি হ্য় , জীবনের সব স্বপ্নো ভেঙ্গে চুরমার হযেগেছে , জীবন এখন হতাশায় ভরা | এ কলেজে আসার পর সে একটু অভিনের সাথেই মন খুলে কথা বলতে পারে, কেনো জানেনা অভীন কে তার খুব নিজের মনে হয়|
অভীন তার অনেক কাছের বন্ধু, ছেলেটি একটু চুপচাপ, বাড়িতে মা আর ছেলে, বাবা মারা গেছেন অনেক দিন আগে, অভাবের সংসার তাই এখনো মোবাইলের প্রতি নির্ভরতা নেই | খুব সাধারণ ভাবে থাকে, কিন্তু কেউ কোনদিন আজ পর্যন্ত কারু বাড়ি যায়নি, বলা ভালো কেউ কাউকে তাদের বাড়ি নিয়ে যাবার আগ্রহও দেখায়নি|
এক কাপ চা খেয়ে , সুমন ফোন করলো লোকটাকে|
- আমি স্টেশন-এ এসেগেছি |
- ওকে, স্টেশন থেকে নেমে বাদিকে যাবেন, ওখানে রিক্স স্টান্ড আছে, কুড়ি টাকা নেবে, বলবেন পুরনো দমকল বাড়ি, ওখানে এসে আমায় ফোন করবেন |
সুমন আর কথা না বলে, উঠে পড়লো, মনে একটা উত্তেজনা নিয়ে রিক্সায় বসে পড়লো | একটা মেন রোড দিয়ে গিয়ে রিক্সা টা একটা মেঠো পথ ধরলো, চার পাশে বেশ গাছপালা ভর্তি , তবে রাস্তার ধারে অনেক খানা খন্দ আছে,মাঝে মাঝে নোংরা গন্ধও নাকে আসছে, কিন্তু মনটা বেশ উত্তেজিতো হচ্ছে সুমনের, সব খারাপ লাগাগুলো মন থেকে সরে গিয়ে একটা নারীর নগ্ন শরীর স্পর্শ করার অনুভূতি..না সুমনের মনটা কেমন অবশ হয়ে যাচ্ছে |
জায়গাটা মফস্বল , কোলকাতার দিকের মেয়েদের চার্জ বেশি, অতো সাধ্য নেই সুমনের , তার বাজেট খুব বেশি হলে ১০০০ টাকা |
আবার রিংগ হলো মোবাইল-এ, লোকটা ফোন করেছে |
সুমন নেমে পড়লো, লোকটাকে দেখতে পেলো সামনের একটা বাড়ির ছাদে দাড়িয়ে মোবাইল-এ কথা বলছে |
-দরজা দিয়ে ঢুকে সোজা গেলে একটা সিরি পাবেন, ওটা দিয়ে ওপরে চলে আসুন |
বাড়িটা ওনেক পুরনো, একটু ভাঙ্গা , একটু গন্ধও আসছে নাকে, কিন্তু সুমনের মনে তখন আগুনের স্ফূলিংগো ছুটছে. সুমন সিরি দিয়ে উপরে উঠে এলো, একটা রোগা মতো লোক তাকে নিয়ে কোনার দিকে একটা ঘরে ঢুকল|
-আসতে অসুবিধে হ্য়নিতো ? -কী রকম বাজেট আপনার?
ঘরটা দেখতে দেখতে উত্তর দিচ্ছিলো, অনেক পুরনো দিনের ঘর, ওপরে কড়িখাটের ঢালাই ঠিক তার মামা বাড়ির মতন |
-৫০০ টাকা|
-ওতে কী আর এখন হয় দাদা, ওটাকে ১০০০ করূন , ভালো মাল পাবেন |
সুমনের কী মনে হলো, বললো ঠিক আছে |
লোকটা বললো,
-আপনি বরং একটু ফ্রেশ হয়ে আসুন টয়লেট থেকে আমি মেয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছি|
লোকটা টয়লেট -এর দিকে নিশানা করে বললো, একটু সাবধানে যাবেন অনেক দিনের পুরনো তো |
সুমন যাবার পথে দেখলো এর পাশে আরও দুটো ঘর আছে, আর তার সামনে অনেক গুলো মেয়েদের জুতো, তার মানে কপতিরা এই ঘরেই আছে,সুমনের মনে একটা উত্তেজনা অনুভব করলো |
ফ্রেশ হয়ে সুমন বসে আছে দশ মিনিট হয়ে গেলো , ঘরটা চারপাশ দেখতে দেখতে মনে হলো বাড়ি টা খুবই পুরনো , জানালা গুলো সেই আগেকার দিনের মতন লম্বা লম্বা লোহার শিকের , পর্দা ঝুলছে বটে তবে খুব অপরিষ্কার -
এমন সময় একটা মেয়ে নাইটী পরে ঘরে এলো হাতে কিছু একটা নিয়ে | সুমন ভালো তাকিয়ে দেখলো ওটা একটা তেলের বোতল |
মেয়েটা এবার সুমনের কাছে এলো,সুমন মাথা থেকে পা পর্যন্ত ভালো ভাবে চেয়ে দেখলো, একটু আশাহতো হলো|

মেয়েটা একটু মোটা, মেয়ে না বলে মহিলা বলা উচিত | বয়স আন্দাজ ৩৫-৪০ হবে,কিন্তু সুমন এখন উত্তেজনার চরম যায়গায় |
সুমন প্রশ্ন করলো -
- তোমার , আপনার নাম কী?
- নাম জেনে কী হবে ?
- নাম জানলে , কথা বার্তা বলতে সুবিধা হয়| যেমন আমার নাম ভুবন |
সুমন নিজের নাম কখনো বলে না|কোথাও একটা পড়েছিলো, পাপ কাজে নিজের পরিচয় গোপন করতে হয় |
মেয়েটা তারদিকে তাকিয়ে হাসলো আর বললো
- বেশ , টাকা টা দিন |
- সুমন ১০০০ টাকার একটা নোট দিয়ে দিলো |
- আর আমার টিপ্স টা?
-এখনই কী, আগে কাজ শেষ করো |
- নানা আগেই দিন,
সুমন কথা না বাড়িয়ে একটা ১০০ টাকার নোট দিয়ে দিলো |
মহিলাটি টাকা টা নিয়ে ঘরের কোণে রাখা একটা টেবিলের পাশে একটা ব্যাগে রেখে আসলো|

মহিলা টির নাইটীর সামনের দিকটা বেশ খোলা, কিন্তু তাতে একটা গামছা জরানো |পেটে একটু মেদ আছে, সুমনের এবার মনে হলো ইনার বয়স চল্লিশের ওপর হবেই, মনে হলো চলে যায় , কিন্তু ১১০০ টাকা দিয়ে দিয়েছে, যেটা ওর আয়ের অর্ধেক|
মহিলাটি একটা ছোটো বাটিতে তেল নিয়ে এসে বিছানার ওপর রাখলো |
- তোমাকে কী মালিস করবো?
- করূন|
সুমন জামা আর পেন্ট খুলে শুয়ে পড়লো শুধু জঙ্গিয়া পড়ে |
মহিলা টি বুকের সামনের গামছা টা আরও টেনে নিয়ে , সুমনের পায়ে তেল মালিস শুরু করলো |
মালিস টা সুমনের খুব একটা খারাপ লাগলো না, উত্তেজনা কম আর আরাম বেশি মনে হলো| সবাই চুপচাপ, সুমন চোখ বন্ধ করে অনেক কিছু ভাবা শুরু করতে যাচ্ছিলো , ঠিক তখুনি মহিলাটি প্রশ্ন করলো,

- আপনি কী করেন?
সুমন চোখ তা খুলে ভাবলো , এ আবার কেমন প্রশ্ন? তাও বল্লো,
-আমি চাকরী করি, এটাই সে সব জাগায় বলে|
- কোথায়?
- অফিস..সুমন বিরক্ত হলো এবার, ধুর শালা একেই মুটী মাল তার ওপর আবার চাকরির গল্প করছে, সুমন এক টানে বুকের থেকে কাপড় সরিয়ে দিলো | বুকটা এখন অনেক উন্মুক্তও |
-সুমন কিন্তু তা দেখে ওতটা উত্তেজিতো হলোনা, অতটা সেক্সী নয় | সুমন জিগগেস করলো
- এখানে পুলিশের ভয় নেই তো?
মহিলাটী হাসলো ,বললো,
- না , ওরা প্রতি মাসে টাকা পায় |
মহিলাটি আবার বলে উঠলো,
-আপনার হাতে কোনো কাজ আছে?
- কার জন্য?
মহিলাটি একটু ভেবে বল্লো,
- আমার ভাইয়ের জন্য|
- কী পাশ?
- কলেজে পরে|
সুমন একটু অবাক হলো, এই বয়সী মহিলার ভাই কলেজে ...? যাকগে ওর জেনে কাজ নেই, মুখটা ঘুরিয়ে বল্লো,
- আগে পাশ করুক , তার পর দেখা যাবে |
- না, একটা কাজ পেলে ওর ভালো হয়, যেকোনো কাজ, আছে ?
মহিলাটি এবার সুমনের পিঠ মালিস শুরু করলো |
- পাশ না হলে কিন্তু কোথাও ভালো কাজ পাবে না |
- যা হোক একটা হলেই হবে | একটু দেখুন না ?

সুমন এবার রেগে গিয়ে বলে উঠলো, আমি কী শালা চাকরী দেবার জন্য এখানে এসেছি, মহিলাটি এবার বিছানা থেকে নেমে গেলো , নাইটী টা পুরো খুলে সুমনের শরীরের ওপর শুয়ে পড়লো | সুমন বুঝলো মহিলার বয়েস আছে কিন্তু শরীরের উত্তাপও আছে|

আদিম রিপুর কাজ শেষ হয়ে যাবার পর সুমনের প্যান্ট পরার সময় মনে মনে একটু অনুতপ্ত হলো, যেটা ও সবসময়ই হয়, সুমন তার দিকে তাকিয়ে বললো,
-একটা কাগজ দিন, আমি একটা মেল আইডি দিচ্ছি, আপনার ভাই কে বলবেন ওর একটা বায়োডাটা এখানে পাঠিয়ে দিতে | তা আপনার ভাই ইন্টারনেট জানে তো?
- জানে বোধহয়| তাও আপনি দিন, আমি ওকে বলে দেবো|
সুমন কাগজ টী দিয়ে কোনরকমে বেরিয়ে এলো |

আজ অনেক রাত হয়ে গেলো বাড়ি ফিরতে , এখনো মনটা অন্য রকম, মহিলাটির কথাই তার মনে হতে লাগলো, না আর ও এসব জায়গায় যাবে না, মজার থেকে সাজাটা যেন তার বেশি হয়| মনটা ভালোলাগলো না, রাতে কিছু না খেয়ে শুয়ে পড়লো সুমন |

সোমবার সকালে কলেজ গিয়ে ওর মনে পড়লো গত শনিবারের কথা, কেন জানেনা সুমন, কিন্তু মহিলাটির কথা মনে এলেই সুমনের মন টা একটু কেমন হয়ে গেলো|
সাথে সাথে মনে পড়লো উনার ভাইয়ের কথা , না একবার মেইল টা চেক করতে হবে, এই প্রথম বার এইরকম জায়গায় তাকে কেউ চাকরির কথা বলেছে, সুমনের ইচ্ছা হলো কিছু একটা করার |
কলেজ ল্যাব এ গিয়ে মেল টা চেক করলো , এটা তার ভেরি পার্সোনাল মেল আইডি, কেউ জানেনা খুব একটা, লগ্ ইন করলো তা প্রায় দিন দশ পর |
অনেক মেল এসেছে, সুমন ডিলিট করা শুরু করলো, একটা খুব চেনা মেল দেখে ওর চোখ আটকে গেলো...
ফ্রম: অভীন রয়
সাবজেক্ট - বায়োডাটা অফ অভীন রয়
- গত শনিবার আমার মায়ের সাথে আপনার কথা মতো আমি আমার বায়োডাটা পাঠালাম |
সুমন মেল টা ডিলিট করে ল্যাব থেকে বেরিয়ে এলো|
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৮৮ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৭/০২/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • প্লটটা ভালো, তবে নামটা মেল আইডি কেন হল, বোঝা গেল না, ওটা ই-মেল হলে আরো ভালো লাগত বলে মনে হয়,
  • ধ্রুব রাসেল ১৭/০২/২০১৬
    তারুণ্যে স্বাগত। বানানের ক্ষেত্রে সচেতন হন। যেমন:পৌছে-পৌঁছে
    জিগগেস- জিজ্ঞেস
    জরানো- জড়ানো
    মহিলাটী- মহিলাটি
    ইত্যাদি।
  • প্রচুর বানান ভুল/ টাইপো আছে। দেখে শুদ্ধ করে নিন।
    • সুকান্ত ০৯/০২/২০১৬
      দাদা আমি আমি আমার সাধ্য মতন বানান ঠিক করলাম, যদি আরো ভুল থাকে তাহলে অনুগ্রহ করে একটু ধরিয়ে দিন|
 
Quantcast