www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

প্রতারনা এবং প্রতিশোধের গল্প

- মেয়েটিকে খুব ভালোবেসেছিল ছেলেটি। মা-বাবা কিছুতেই মেনে নিতে চায়নি সম্পর্কটি। কিন্তু ছেলেটি ছিল সম্পর্কের প্রতি প্রচন্ড কমিটেড। আর তাই মা-বাবা আদরের একমাত্র ছেলেটিকেই ঘর থেকে বের করে দেয়। তবু ছেলেটি মেয়েটির সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করেনি। জীবন সংগ্রামে বাধ্য হয়ে ছেলেটি কাজ নেয় একটি হোটেলে। চালিয়ে যেতে থাকে জীবনযাপন, পড়াশুনা এবং সম্পর্কটি সমান্তরাল রেখায়। কিন্তু প্রতারনা করলো মেয়েটি! ঐ ছেলটির থেকে আরো র্স্মাট এবং প্রতিষ্ঠিত ছেলের সাথে সাম্পর্কে জাড়ালো মেয়েটি। চার বছরের সম্পর্কটি ভেঙ্গে দিল নিমিষেই। প্রিয়তমা নামক একমাত্র তলোয়ারের ভরসায় জীবনের কঠিন যুদ্ধে নেমে সেই তলোয়ারটি হারিয়ে ছেলেটির প্রথম প্রথম খুব কষ্ট হলো; আধার নেমে এলো ছেলটির পৃথিবীতে। জীবন থেকে অব্যাহতি নিতে চাইলো ছেলেটি। কিন্তু জীবন থেকে অব্যাহতি নেওয়টা সোজা না; সবার সেই সাহস থাকে না। ছেলেটিও পারলো না। অতঃপর মেয়ে জাতটার উপর এক অদ্ভুৎ ঘৃণা চেপে বসলো ছেলেটির। তাই এক বুক কষ্ট নিয়ে এক অদ্ভুৎ প্রতিশোধের নেশায় মেতে উঠলো ছেলেটি। বিবেকে বোধ বিসর্জন হলো; শুধু চোখে জ্বলতে থাকলো প্রতিশোধের এক উন্মত্ত আগুন। বছর দু-তিনের ব্যবধানে অন্তত আড়াই ডজন মেয়ের সাথে সম্পর্কে জাড়ালো ছেলেটি। প্রতারিত করলো সবাইকে অবলীলায়। অবশেষ ছেলেটির প্রতিশোধের নেশা কিছুটা প্রশমিত হলো। কিন্তু তবু ছেলেটি মানসিক প্রশান্তি খুজে পেল না। ছেলেটি যেন ডুবে গেলো আরো বেশী হতাশায়। নিজের উপর প্রচন্ড ঘৃণা হতে থাকলো ছেলেটির। যে দিকেই তাকলো সে দিক থেকেই যেন ভেসে আসতে থাকলো সত্যিকারের ভালোবেসে প্রতারিত হওয়া মেয়েগুলার বুক ফাটা কান্নার আওয়াজ। ছেলেটি নিজে প্রতারিত হওয়ার পর নিজের জীবনকে যতটা ঘৃণা করতো তার থেকে বেশি ঘৃণা করে এখন নিজের জীবনকে। এখন ছেলেটি জীবনের পরিসমাপ্তিতেই একমাত্র মুক্তি দেখে; কিন্তু এই অপরূপ পৃথিবীটা মুক্তি দেয়না; ছেলটি বেঁচে থাকে এক বিষাক্ত জীবনের মাঝে।

- মেয়েটি খুব ভালোবাসতো ছেলটিকে। ঘন্টার পর ঘন্টা নীরব বয়ে চলা নদীর পাড়ে ছেলেটি মেয়েটির হাত ধরে বসে থাকতো। ছেলেটির চোখে চোখ রেখে মেয়েটি ডুবে থাকতো এক স্বর্গীয় মুগ্ধতায়। কিন্তু হঠাৎ-ই মেয়েটি নরকের হাওয়া অনুভব করলো। ছেলেটি প্রতারনা করলো মেয়েটির সাথে! মেয়েটির তীব্র কষ্টের আর্তনাদ বদ্ধ বাতাস আর বালিশটা ছাড়া কেউ জানলো না। পাথর হয়ে গেল মেয়েটির মন। পাথর শুধু আঘাত করতে জানে। প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত মেয়েটিও সেই পাথর দিয়ে খুব নিখুত কৌশলে, কখনোবা নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে আবার কখনো ছলনায় অন্তত ডজন খানেক নিষ্পাপ ছেলের হৃদয়ে বিষ ছড়িয়ে দিল। আর সেই বিষের যন্ত্রনায় বিষাক্ত হলো পৃথিবীর কিছুটা বাতাস; বাড়লো কিছু হৃদয়ে বিষক্ত কষ্টের জঞ্জাল। কিন্তু মেয়টি তবু আজ সুখি নয়। মেয়েটি এখন আগের থেকে বরং বেশী ঘৃণা করে নিজের জীবনকে। তার দু'চোখ জুড়ে আজ শুধুই এক অদ্ভুৎ আধার ঘেরা শূন্যতা।

- ভাবছেন এগুলো কোন কাল্পনিক গল্প? না, এগুলো বাস্তবতার গল্পের কিছু অংশ। সম্পূর্ণ বাস্তবটা হয় আরো বিভীষিকাময়।
আসলে ভালোবাসায় প্রতিশোধ বলে কিছু হয়না। একটা জিদে ঘেরা ঘৃণার ঘোরে যে প্রতিশোধের নেশা চাপে তাতে বরং নিজেকেই খন্ড-বিখন্ড করা হয় প্রতিনিয়ত। একটি প্রতারনায় জন্মানো বিষাক্ত বাষ্প খুব দ্রুত মিশে যায় মুক্ত বাতাসে। আর সে বিষাক্ত বাতাস কাউকে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে দেয়না; হোক সে প্রতারক কিংবা প্রতারিত হৃদয়!
বিষয়শ্রেণী: অভিজ্ঞতা
ব্লগটি ১৩৫০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৯/১২/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • নির্ঝর ১২/০১/২০১৬
    আরও ভালো লেখা চাই
  • জে এস সাব্বির ০৮/০১/২০১৬
    ফেসবুকে পড়েছিলাম একবার । জানিনা কোনটা কপিড ।

    ভালো গল্প নিঃসন্দেহে ।
    • তীর্থের কাক পেজে পড়েছেন সম্ভবত। আমার সন্মতিক্রমেই আমার নামসহ সেখানে প্রকাশিত হয়েছিল। তবে তার আগেই লেখাটি এখানে প্রকাশ করেছি। তাছাড়া আমার ব্যাক্তিগত এফবি আইডি এবং পেজেও প্রকাশ করেছিলাম লেখাটি সর্বপ্রথম।

      ধন্যবাদ ...
 
Quantcast