www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

মাধুরী (প্রেমের গল্প পর্ব ১)

(পর্ব ১)

দিন নেই রাত নেই সংসারে অশান্তি লেগেই চলেছে, আজ এর জন্য চেঁচামেচি কাল ওর জন্য। আর ভালো লাগে না কিযে করি। চিন্তায় রেগে মাথা খারাপ হয়ে যেতে শুরু করেছে, আমি কী পাগল হয়ে যাবো? বৈবাহিক জীবন যে এত ঝকমাড়ির তা যারা বিয়ে করেছেন তারা জানেন।
আমার স্ত্রী মাধুরী, সবসময় নিজের দিক বিবেচনা করে কথা বলে, কী উপায়ে যে তাকে সন্তুষ্ট করা যায় বুঝে উঠতে পারছি না।
এ খাবো তা খাবো, আজ এখানে যাবো কাল ওখানে, এ দাও তা দাও – পুরো একেবারে মাথা খারাপ করে দেয়;দিলেও ওর হয়না। ছোট খাটো সমস্যায় দু’একদিন দেরি হলে হয়েছে, অমনি তিরস্কার,
- তুমি আমাকে পুরো জ্বালিয়ে দিলে, স্ত্রীর চাহিদা পূরণ করতে পারবে না, তবে বিয়ে করেছিলে কেন হ্যাঁ? শোনো কাল আমি বাপের বাড়ি যাবো, দু’হাজার টাকা লাগবে, যদি না পেয়েছি তো তোমার একদিন কী আমার একদিন !

আমি কিছু বলতে পারি না, মাধুরী যে ধরণের মেয়ে তাতে মনে হয় না ও কথা শুনবে, কিন্তু আজ আর কথা না বলে থাকতে পারলাম না,
- এইতো ক’দিন হলো ওখান থেকে ঘুরে আসলে, আর কত দূর তোমার বাপের বাড়ি যে এত টাকা লাগবে?
মাধুরী এমন ভাবে আমার দিকে তাকালো, তাতে আমি একটু ভয় ভয় পেলাম। যেন সে রাক্ষস হয়ে গেলো একথা শুনে। এরপর যা বললো তাতে আমার সর্বাঙ্গ জ্বলে উঠলো,
- ও, এত টাকা না? যখন বন্ধুদের নিয়ে এখানে ওখানে হাজার হাজার টাকা উড়াও, তখন মনে থাকে না? আর আমি মাত্র দু’হাজার টাকা চেয়েছি বাবাকে দেখতে যাবো বলে, তখনি তোমার…., দিতে হবে না টাকা ! দিতে হবে না।

মাধুরী রেগে ফুলে উঠলো, ছুঁটে গিয়ে পাশের ঘরে ঢুকে দরজায় খিল দিয়ে দিলো। একটু ভয় লাগলো, রাগের মাথায় যদি কিছু করে ফেলে। ও যেন কেমন প্রকৃতির মেয়ে, সংসারের সুবিধা অসুবিধা কিছু বোঝেই না।

বিয়ের আগে ওকে মনে হয়েছিল সংসারী মেয়ে, প্রবল সুখে দু’জনে জীবন কাটাবো। কিন্তু বিয়ের পর আমি বুঝেছি কী বিষ আমি ঘরে এনেছি ! সাপ যত সুন্দর হয়, বিষ তার বেশিই হয়; কিন্তু বশ মানাবার কৌশল টা জানতে পারিনি।

যায়হোক, মেয়েরা রাগ দেখালে সেই রাগ ভাঙাতে হয় ভালোবাসা দিয়ে, যারা স্ত্রীর রাগ দেখে নিজেও রেগে বসেন তারা মেয়ের চোখে হৃদয়হীনা হয়, কাজেই ছুঁটে গেলাম ওর কাছে।
- মাধুরী, মাধুরী? দরজা খোলো মাধুরী, আমার কথাতো শোনো একবার।

প্রতীক্ষায় রইলাম দরজার গোড়ায়, এত রাগ হচ্ছে আমার মনে হচ্ছে দরজা ভেঙে ওর গালে দু’তো চর কষিয়ে দিই। বৌ মানুষের এত আবদার কিসের? কিন্ত আমি জানি আবদার ভালোবাসার মানুষের উপরেই করা হয়, আর এটা মেয়েদের স্বভাব। তবু দরজা খুলছে না দেখে দরজায় পুনরায় ঘা মেরে নরম হয়ে বললাম,
- মাধুরী, লক্ষ্মী টি আমার সোনা দরজা খোলো। তোমার কত টাকা লাগবে? এই নাও টাকা।
রানি চিৎকার করে বললো,
- টাকা লাগবে না ! যাও না, বন্ধুদের সাথে পার্টি কোরো গিয়ে।
রাগের গলায় গদগদ সুরের এই কথাটা শুনে একটু আনন্দ পেলাম, যাক ওর রাগ কমেছে তবে, বললাম –
- আচ্ছা বাবা, ঠিক আছে কাল আমি তোমাকে নিয়েই যাবো ক্ষণিক, আমার সাথেই যেও।
- আমাকে ভোলানো হচ্ছে না?
- এই দেখো, বললাম তো কাল তোমাকে দিয়ে আসবো আমি প্রমিস…

কথা শেষ না হতেই মাধুরী দরজা খুলে আমার সম্মুখে দাঁড়িয়ে, আমার দিকে কটমট চোখে তাকিয়ে বললো,
- কাল… কী বলো বলো…
ওকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
- তুমি আমাকে বোলবে তো, তোমার বাবার শরীর খারাপ।
রানি হাত ছাড়িয়ে ওর ঘরে চলে গেলো, আমি ওকে বললাম,
- তোমার মা আমাকে ফোন করেছিলেন, তুমি উনাকে ফোন কোরো।

রানি ফোন নিয়ে নাম্বার টিপে ফোনে ব্যাস্ত হয়ে গেলো…



(এরপর পরবর্তী পর্বে)
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৩১০ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০২/০৫/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast