www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

সতী স্ত্রী (গল্প - দ্বিতীয় পর্ব)

।। পর্ব ২ ।।

রানি ভাবলো আমি ওকে কোনো প্রকার সন্দেহ করি। কিন্তু আমার অজান্তে রানি কী করে না করে, আমি তা জানি না। তাছাড়া অবিবাহিত বন্ধুদেরকেই বা কী করে বিশ্বাস করি। আমি জানি যে এখনকার ছেলেপিলে সুযোগ পেলেই লাভ ওঠায়। যদি কাল রানির কিছু হয়ে থাকে, সেটা রানির ইচ্ছা অনিচ্ছা, তাছাড়া রানি ড্রিঙ্ক করে, কাল নিশ্চয় করেছিলো জন্মদিন বলে কথা। আর ওই স্বপ্না, জেনে শুনেও একটা বাজে মেয়ের সঙ্গে মিশতে দিই, এতে আমারি কপাল দোষ। আমি শান্ত হয়ে রানিকে বোঝাতে লাগলাম।
- রানি, দেখো যদি তোমার অজান্তে কাল তোমার কিছু হয়ে যেতো, তখন? তুমি তো ফোন নিয়ে যাও নি, আমি কী করতাম?
রানি বললো,
- আমার অজান্তে এমন কিছুই হবে না যেটা আমি চাই না।
- দেখো তুমি কী চাও না চাও সেটা আমি জানি। আচ্ছা,তুমি কি কাল ড্রিঙ্ক করেছিলে?
- হোয়াট? কী বলতে চাও তুমি?
- আমি বলছি, তুমি কি কাল মদ-টদ খেয়েছিলে?
- দেখো, যদি তোমার কোনো রকম সন্দেহ হয়,তবে স্বপ্নাকে জিঘাংসা করতে পারো। আর অরবিন্দ এর সাথে তুমি কথা বলবে? কল করবো ওকে?
- না-না, তার দরকার নেই, আমি তোমাকে যথা বিশ্বাস করি। কিন্তু কাল রাতে তুমি বাড়ি ফিরলে না কেনো?
- সেটা তুমি প্রথমেই ভালো করে জিগ্যেস করতে পারতে?
- আচ্ছা বাবা,আমার ভুল হয়েছে, তার জন্য ক্ষমা চাইছি, পায়ে পড়তে হবে ? বলো ...

রানি আমাকে বললো যে, কাল রাত্রে নাকি খাওয়া-দাওয়া করতে দেরি হয়ে গেছিলো, তাই বন্ধুরা বারণ করেছিলো এত রাতে একা বাড়ি ফিরতে।
আমি আশ্বস্ত হলাম বটে, কিন্তু মনের মধ্যে একটা সন্দেহের দানা রয়েই গেলো । আমি ভাবতে লাগলাম রানিকে নিয়ে ও যদি আমাকে ফাঁকি দিয়ে...
দু'চার দিন বাদি আমার এক বন্ধু অরুন মিত্রের কাছ থেকে জানতে পারলাম যে প্রশান্ত পাল নামে রানির আরেক বন্ধু স্বপ্নার সাথে প্রেম করে। আমার বন্ধু অরুন মিত্রের স্ত্রী স্বপ্না। অরুনকে ছেড়ে চলে আসে। কিন্তু অরুন স্বপ্নাকে এখনো ভালোবাসা, যদিও জানে সবকিছুই। স্বপ্না এবং রানিকে অরবিন্দ এর বাড়ি আসতে দেখেছে অরুন।

আমি অফিস যাচ্ছিলাম হঠাৎ পিছন থেকে ডাক,
- হ্যালো অফিসার?
পিছন ঘুরে দেখি অরুন মিত্র। আমি দাঁড়ালাম ওকে জিগ্গাসা করলাম,
- কিছু বলবি নাকি?
অরুন বললো,
- ব্যস্ত আছিস, রাত্রে বাড়িতে আসিস, কথা আছে।
রাত্রে অরুনের বাড়ি গিয়ে শুনলাম এত সমস্ত কথা। অরুন তার পর আর বিবাহ করেনি । বেশ করে আড্ডা মেরে রাত দশটা নাগাদ বাড়ি ফিরলাম।
রাতে শুয়ে ভাবতে থাকলাম যে, আমার জীবনে যে ঘটনা ঘটছে, সে ঘটনা অরুনের জীবনে বছর খানেক আগে ঘটে গেছে। স্বপ্নার সঙ্গে রানি যদি মেশে তাহলে আমার জীবনের পরিনতিও অরুনের মত হবে। কাজেই সিদ্ধান্ত নিলাম, যে খেলা চলছে সেটাকে বন্ধ করতে হবে, কিন্তু কীভাবে কী করব ভেবে পেলাম না।

একবার ভাবলাম পুরোনো জিনিস পত্র নিয়ে অরুনের মত আবার ডাক্তার খানাটা খুলে বসি, তাতে রানিকে নজরে রাখা যাবে। আবার ভাবলাম রানিকে ডিভোর্স দিয়ে দিই। আবার মনে হল,রানিকে স্বপ্না এবং ওর বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে না দিলেই তো সমস্যার সমাধান।

অরুনের কথায় আমি বিপুল হাসলাম, কিন্তু পরক্ষণেই থামতে হল। নিজের কথা ভেবে লজ্জা পেলাম, আমি কিনা স্ত্রীকে কন্ট্রোল করতে পারছি না। অরুন বললো,
- হাসছিস কেন?
- সে কাজও করেছিলাম ভাই কিন্তু, এখন বুঝতে পারছি যে রানি সেখানে থাকতে চাইছিলো না কেন। আর এখনি শিওর হলাম যে রানি অরবিন্দ কিবা অন্য কারো সাথে প্রেম করছে।

(এরপর পরবর্তী পর্বে)
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৩৬৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৬/০১/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

 
Quantcast