www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বিন্দু বিসর্গ

বিন্দু বিসর্গঃ
---
ঘটনা ঘটে যাবার পর আমাকে স্বাক্ষীগোপাল মানা হল,আমি আগাগোড়াই জানতাম তবুও বলে দিলাম আমি এর বিন্দুবিসর্গ জানি না।
আগাগোড়া-শুরু শেষ।
বিন্দুবিসর্গ এর সাথে আগাগোড়ার সম্পর্ক আছে।
বিন্দুবিসর্গঃযাহা বিন্দু হতে বিসর্গ পর্যন্ত প্রসারিত।
বিশ্বজগতের যাবতীয় কিছু শুরু হয় বিন্দু দিয়ে।
শুরুই বিন্দু।আপনি একটি রেখা আঁকবেন? প্রথম পেন্সিল ছোঁয়ালেন যা প্রথম ফোঁটা তাই বিন্দু।বিন্দু বড় রহস্যময়।বিন্দু থেকেই সিন্ধু।
রবীন্দ্রনাথ তো বলেছেন,
"বিন্দু বিন্দু জল
গড়ে তুলে মহাদেশ
সাগড় অতল।"
বিন্দু(.)হল বিশেষ রহস্যরূপের দান নবরূপে উত্তীর্ণ যাহাতে।
বিদ-বিন্দ্-বিন্দ
বিন্দ নবরূপে উত্তীর্ণ হয়ে যখন দৃশ্যমান হয় তখনই তা বিন্দু হয়।
( বিদ্- বিকল্প দান যাহাতে।কোনও সত্তা চোখে দেখা গেলনা,কিন্তু তার অস্তিত্ব যেভাবেই হোক টের পাওয়া গেল,সরাসরি না এসে বিকল্প ভাবে অস্তিত্বের জানান দিল তাই বিদ্।বিদ্ চেতনায় জানান দিয়ে বিদিত।বিদ্ যখন বিদিত হয় তখনই হয় বিন্দ্।বিন্দ নবরূপে উত্তীর্ণ হয়ে দৃশ্যমান হয় বিন্দু হয়ে)
আমাদের বর্ণগুলি কোথা থেকে এল?
ধ্বনি থেকে।
প্রকৃতির সবকিছুর নিজস্ব ধ্বনি আছে।বাতাসের আছে,জলের আছে,মেঘের আছে,এমনকি নির্জন রাত্রির একটি ধ্বনি আছে।
ভাষা আয়ত্ব করার আগে মানুষও বিভিন্ন ধ্বনির সাহায্যে মনোভাব প্রকাশ করত।
তারপর ধ্বনির হাত ধরে বর্ণ,বর্ণ থেকে বর্ণমালার চাদর।
বিন্দু. চিহ্ন দিয়ে প্রকাশ করে।
কিন্তু সকল বর্ণের মূলে?ং - এটি একটি বর্ণ,ধ্বনি এবং এর রূপ রহস্যময়।এটিও বিন্দু।আমাদের পূর্বপুরুষগণ এই রহস্যময় ধ্বনিকে (.) চিহ্নরূপে লিখতেন।
বিন্দু বা ং কেন রহস্যময়?
কারণ এর প্রকাশ ব্যক্ত অব্যক্তের মাঝে লুকিয়ে থাকে।একে ঠিক ধরা যায়না,দেখা যায়না।আছে কিন্তু দৃশ্যমান নয় সেরকম।যা ধরা ছোঁয়ার বাইরে অথচ অস্তিত্ব অনুভূত হয় তা তো রহস্যময়ই।
ং - রূপ কে কি করে পাবেন?
ইঙ উচ্চারণ করে মুখ বন্ধ করেন,এবার ইঙ থেকে ই বাদ দিয়ে শুধু ঙ্ করতে থাকেন তখন ং- রূপিনী পেয়ে যাবেন।
( ভারী মজার ব্যপার)
কাজেই বর্ণের শুরু ং দিয়ে যা বিন্দু (.) এবং শেষ বিসর্গ(ঃ) দিয়ে।
বিন্দু হল সূচণা, বিসর্গ হল শেষ।
মাঝখানে আরসব ধ্বনি, বর্ণ আর বর্ণমালা।
এবার আবার আসি--
বিন্দুর সূচণা অ ই উ ঋ এভাবে যায়
অ- অস্তিত্ব- আমি হই( রহস্য থেকে বের হয়ে স্পষ্ট হয়ে অস্তিত্বের জানান দেয়া)
ই- আমি যাই( আমি গতিশীল হল)
উ-আমি যা ছিলাম গতিশীল হয়ে তা আর নেই,বদলে গেছি,আমি উড়ছি।( নবরূপে উত্তীর্ণ)
ঋ-আমি উড়ছিলাম যেই নীচে তাকালাম পড়ে যাচ্ছিলাম,পাক খেয়ে আবার উপরে এতে আবর্ত্তন হল।
ঋ এর পর আবার শুরু যাত্রা অ এর দিকে।
ঋ হল এমন যেন সত্য ত্রেতা দ্বাপর কলি পেরিয়ে একার্ণব হয়ে পুনরায় সত্যযুগে যাত্রা।
বিন্দুর তেজ যখন অসীম রহস্যরূপী সজীব থাকে তখন সে ং রূপিনী।
যখন সে নিস্তেজ তখন ঃ রূপিনী।
ং যেহেতু পৃথকভাবে উচ্চারিত হতে পারেনা এজন্য তাকে অ-ই-উ এবং তাদের যোগফল 'ও' এর সাহায্য নিতে হয়।( অ+ই+উ=ও)
সেজন্য ং হল একটি অব্যক্ত ধ্বনি বা বর্ণ।
ং এর প্রথম সাহায্যকারী হিসেবে অ এর আবির্ভাব যা হল অস্তিত্ব।
------কৃতজ্ঞতাঃ বঙ্গীয় শব্দার্থকোষ।
**একার্ণবঃপ্রাচীন শাস্ত্রানুসারে জগত বিকাশের একটা চক্র আছে।
একার্ণব-সত্য-ত্রেতা-দ্বাপর-কলি- একার্ণব।
একার্ণবকালে মানুষ পুরোপুরি লোকস্বভাব অর্জন করে।এই কালকে ভাষার প্রলয়কালও বলা হয়।এ কাল হল অখণ্ড সমাজকাল।
তারপর সমাজ খণ্ডিত হয়,ক্রমশ বিচূর্ণীভূত হয়।
পরে আবার একার্ণবের দিকে যাত্রা শুরু,একালে যাকে গ্লোবালাইজেশান বলে।
-----শ্রদ্বেয় ভাষা গবেষক কলিম খান,জ্যাোতি থেকে মমতায়।
( এই হল বিন্দুবিসর্গের বিন্দু থেকে বিসর্গ)
---২৮/০২/২০১৯
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৪৪৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৯/০৩/২০১৯

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast