www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

Jewel sadat

যুক্তরাষ্ট্রেরে সেল ফোন নিষিদ্ধ শহরের নাম “ গ্রীন বাংক ”

গোলাম সাদত জুয়েল :


বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ আমেরিকা , যেখানে ৯৭ শতাংশ মানুষ সেল ফোন ব্যবহার করে , স্মাট ফোন ব্যবহার করে ৪৭ শতাংশ আমেরিকান । আমেরিকার জনসংখ্যা ৩৭ কোটি তার সিংহ ভাগ মানুষ সেল ফোন ব্যবহার করছেন । বিগত ১৫ বছরে আমেরিকায় সেলফোন ব্যবহার বেড়েছে ৭০ শতাংশ । সেল ফোন ছাড়া কোন আমেরিকান এক দিন বা কয়েক ঘন্টা চলতে পারবে না । অথচ আমেরিকার একটি শহরের মানুষ সেল ফোন ছাড়া চলে । যদিও শহরের লোকসংখ্যা ১৪৭ জন , শহরটি ওয়েষ্ট ভাজিনিয়ার কোলাহল হীন নীরব শহর খ্যাত গ্রীন বাংক । গ্রীন বাংক শহরটি উনিশ শতকের প্রথম দিকে গোরাপত্তন , সেখানে আছে বিজনেস স্ট্রিপ সেন্টারে আট সেন্টার, এনটিক শপ, বাসকেট ষ্টোর, গ্রীন বাংক এনকরড স্কুল, পোষ্ট অফিস, ডলার জেনারেল ও একটি বারবার শপ, জাতীয় ভাবে স্বীকৃত নাম্বার ১ রোরাল লাইব্রেরী প্রতিষ্টিত ২০০৩ সালে, শহরে রয়েছে একটি গ্যাস ষ্ট্রেশন । সারা বছর ২৫০০০ ভিজিটর শহরটি দেখতে আসেন ।
শহরের নাম গ্রিন ব্যাংক। সেখানে প্রবেশের পর মুঠোফোন বা বেতারযন্ত্রের কোনো নেটওয়ার্ক মিলবে না। তারবিহীন ইন্টারনেট ব্যবহারের ওয়াই-ফাই প্রযুক্তিও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে। খোদ মার্কিন মুলুকেরই শহর এটি, অবস্থান ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের অ্যালেগেনি পার্বত্য এলাকায়। গ্রিন ব্যাংকের আরেক নাম ‘যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে নীরব শহর’। সারাক্ষণ মুঠোফোন আর ইন্টারনেট যোগাযোগে অভ্যস্ত শহরবাসী যে কেউ সেখানে গেলে নিজেকে বিচ্ছিন্ন ভেবে আতঙ্কিত হয়ে উঠতে পারেন। মুঠোফোন বা স্মার্টফোনসহ তারবিহীন যন্ত্রপাতি সেখানে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা কেউ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ পর্যন্ত রয়েছে।
প্রযুক্তি বিশ্বজুড়েই জীবন ও যোগাযোগের ধরনে নিরন্তর পরিবর্তন ঘটালেও গ্রিন ব্যাংকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ইচ্ছে করেই বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি মাইক্রোওয়েভ বা অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গের ব্যবহারেও বিধিনিষেধ আছে। তার মানে এই নয় যে গ্রিন ব্যাংকের বাসিন্দারা অনগ্রসর ও অতীতমুখী অথবা প্রযুক্তি নিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত। বরং উল্টোটাই সত্যি ,অ্যালেগেনি পর্বতমালা এলাকায় একদল গবেষক মহাবিশ্বের সুদূর প্রান্তে সশব্দে ফেটে পড়া ছায়াপথের আওয়াজ শুনছেন। এই সংকেত বা শব্দ অত্যন্ত ক্ষীণ, যা মুঠোফোন থেকে নির্গত শক্তির মাধ্যমে ভেসে যেতে পারে। এতে ছায়াপথের উৎপত্তি রহস্য জানতে উদ্‌গ্রীব বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বিঘ্ন ঘটবে।যুক্তরাষ্টের ওয়েষ্ট ভার্জিনিয়ায় গ্রীন বাংক শহরটিতে ১৪৭ জন অধিবাসী বাস করেন, আয়তন ১৩ হাজার স্কয়ার মাইল। ১৯৩২ সালে যখন বেল ল্যাব ইনষ্টল করছিলেন সারা আমেরিকায় টেলি কমিউনিকেশন টান্সমিশন, তথন আমেরিকায় ইলেকচ্রিক্যাল প্রকৌশলী হায়ার করে ডিসকাভার চেষ্টা করছিলেন সকল ধরনের শব্দ, দ্যা মিলকি ওয়ে গ্যালাক্সি , মা্ইক হলসটাইন যিনি একজন টেলিস্কোপ ম্যানেজার , তার কাজ ছিল টেলিস্কোপের মাধ্যমে শব্দের তরঙ্গ হ খুজে বেড়ানো । দু দশক পরে আমেরিকা অনুধাবন করে তাদের ইনভেষ্ট করতে হবে দুরের শব্দ তরঙ্গ যা টেলিস্কোপের মাধ্যমে কিন্তু কোথায় টেলিস্কোপ প্রতিষ্তাপন করা যায় , ‍১৯৫৮ সালে তারা পেয়ে যায় গ্রীন ব্যাংক ৩৮ তম প্যারালাল যা আইডিয়াল ফর মিলকী ওয়ে ,তখন তারা ১৩ হাজার স্কয়ার ফুটের জায়াগা কুইট জোন হিসাবে ঘোষনা করে । গ্রীন ব্যাংক শহরে প্রতিস্তাপন করা হয় বৃহদাকার টেলিস্কোপ এবং শহরটি রাখা হয় দিন রাত শব্দের নীরব জায়গা হিসাবে ও সকল ধরনের ইলেকট্রনিক্স সুবিধা বিহীন এলাকা হিসাবে ঘোষনা করা হয় । এমনি শহরের অটোমেটিক দরজাও খুলে ফেলা হয় । এবং নিষিদ্ব করা হয় সেল ফোন , টিভি, কম্পিউটার, ওয়াই ফাই , রেডিও সহ সকল তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার । যদিও শহরের ১৪৭ জন অধিবাসী ল্যান্ড ফোন বা তারের সাহা্য্য ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন তা তা খুব ধীর গতির । খুব সীমিত করে ফেলা হয় শহরের সকল ইলেকট্রিক ব্যবহার ।
তাই ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার পূর্বাঞ্চলের অর্ধেক, ভার্জিনিয়ার নির্দিষ্ট কিছু অংশ থেকে শুরু করে মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের সীমান্ত পর্যন্ত মুঠোফোন ও অন্যান্য তারবিহীন যন্ত্রের ব্যবহার সীমিত, আর গ্রিন ব্যাংকে পুরোপুরিই বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।কারণ, এ শহরের কাছাকাছি এলাকায় বিজ্ঞানীরা স্থাপন করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেডিও টেলিস্কোপ (রবার্ট সি বার্ড গ্রিন ব্যাংক টেলিস্কোপ)। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রেডিও অ্যাস্ট্রোনমি অবজারভেটরি এটি নিয়ন্ত্রণ করে। দুই একর এলাকাজুড়ে বসানো সুবিশাল যন্ত্রটির ওজন ৭৭ লাখ ১১ হাজার কেজির বেশি। এটি কোটি কোটি মাইল দূরের আওয়াজ শুনতে পায় । গ্রিন ব্যাংক টেলিস্কোপ প্রকল্পের প্রধান বিজ্ঞানী জে লকম্যান বলেন, ‘ছোট্ট গ্রামীণ একটা পরিবেশে তাঁরা অত্যন্ত উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার সমন্বিত পরিবেশ পেয়েছেন। অতি ধীর শব্দ শুনতে চাইলে আশপাশের সব কোলাহল বন্ধ রাখা চাই।
গোলাম সাদত জুয়েল : সাংবাদিক ( ফ্লোরিডা )
বিষয়শ্রেণী: তথ্যপ্রযুক্তি
ব্লগটি ১২০৯ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৬/১১/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast