www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

বৃষ্টি ভেজা তুমি

রাফি একটু বোকা-সোকা টাইপের । বলাচলে সহজ সরল । তবে মেধাবী বটে । বোকা না হলে কেউ কি সুন্দরী মেয়েদের দিকে ভ্যাভ্যা করে তাকিয়ে থাকে । তবে রাইছার কাছে বোকা বা সহজ সরল কোনটি- ই না । ওর ভাষায় হাবলু । হাবলু হউক আর যাই হোক বরাবরই রাইছা ,রাফির প্রশংসায় পঞ্চমুখ । রাফি সব সময় একটু চুপচাপ থেকে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত থাকে । রাইছাটা অন্য রকম চটপটে , দুষ্ট বুদ্ধি সম্পন্ন, অন্যকে বোকা বানানো ইত্যাদি নানা কৌশল আবিষ্কারে ব্যস্ত থাকে । কারনে অকারনে রাফিকে বিরক্ত করাও ওর একটা কাজের মধ্যে পরে।
যেমন ধরুন রাফির ডাইরিতে হাবলু, হনুমান, বানর ইত্যাদি জাতির কথা লেখা । কিন্তু হাবলু বেচারা নিজের চুল টানা ছারা কিছুই করতে পারে না। কারন রাইছার সামনে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করার দু:সাহস কখনো ওর হবে না ।
তবে মাঝে মাঝে রাইছাকে একটু অন্য রকম মনে হতো ওর। কেমন যেন কোমল, নমনীয় টাইপের । আবার মাঝে মাঝে বোঝাই যেত না ওর মেঝাঝ এখন কোন দিকে যাচ্ছে ।
দুজনে একই ক্লাসে হওয়ার প্রায়ই রাইছা ক্লাস ওয়ার্ক বোঝার জন্য রাফির স্বরনাপন্ন হত । রাফি বেশ গম্ভির হয়ে পাঠ গুলো বুঝিয়ে দিত । আর রাইছা ওর মুখের দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসতো । আর শেষমেষ রাফির পুরুস্কার হত হাবলু ।
গা জ্বালা করলে ও কিছুই বলা যেতনা । ওরে বাবা রাইছাকে বলবে । তবেই হয়েছে ।
এভাবে ভালই চলত তাদের ঠোকা ঠুকি । অবশ্য ঠোকাই চলত, ঠুকিটা আর হয়ে ওঠেনি কখনও ।
শ্রাবনের আকাশ, আকাশে কালো মেঘ । স্কুল ছুটি হয়েছে । দু'জনে গ্রামের আধা পাকা(ইট বিছান) রাস্তা ধরে বাড়ি ফিরছে । দু'জনে পাশা পাশি । হঠাৎ বৃষ্টি । রাইছা ব্যাগ থেকে ছাতা বের করে মাথায় ধরল । কিন্তু রাফির ব্যাগে ছাতা নেই আজ।
রাইছা বলল, শোন আমার ব্যাগ তুই নেয় আর ছাতাটা তুই-ই মাথায় দে । আমি বৃষ্টতে ভিজব । রাইছা বৃষ্টিতে ভিজছে । আর ছাতা মাথায় রাফি পাশা পাশি হাটছে । রাইছাকে ভেজা চুলে বেশ লাগছে , এমন সুন্দর মোহনীয় দৃশ্য রাফি miss করতে চাইছে না, তাই আড় চোখে দেখছে। রাফির আড় চোখের চাহনি রাইছা বেশ উপভোগ করছে ।
বৃষ্টির ভেজা শিতল হাওয়ার মত রাইছার কন্ঠেও এক শীতল সুর বেজে উঠল । আচ্ছা তুই কি কাউকে পছন্দ করিস?
রাফিঃ কি ! না রে। মেয়েরা অনেক ফাজিল ।
রাইছাঃ তুই জানিস তোকে একটি মেয়ে পছন্দ করে ?
রাফি: জানি, সহজ সরল উত্তর।
রাইছা: জানিস ? কে বলতো ?
রাফি: বলতে পারি । তবে আমাকে কিছু বলতে পারবিনা ।
রাইছা: ঠিক আছে বলবোনা ।
রাফি: মেয়েটা অনেক সুন্দর । তবে বৃষ্টিতে ভিজলে তাকে আরো অনেক সুন্দর লাগে ।
রাইছা: বাহ বাহ, কে বলে তুই হাবলু । তুইতে অনেক সেয়ানা ।
রাফি: এই কারনেই বলছি বলবনা ।
রাইছা: ঠিক আছে এবার নামটা বল । আর কিছু বলব না । promiss করলাম।
রাফি: তুই আমার কাছ থেকে তিন হাত দূরে যা তবে-ই বলছি ।
রাইছা: গেলাম, বল এবার ।
রাফি: বলব ?
রাইছা: হ্যা বল
রাফি: তুই । কি রে তুই আমাকে পছন্দ করিস না ?
চট-পটে রাইছা হঠাৎ যেন লজ্জায় লাল হয়ে গেল। কিছুক্ষন নিরবতা, কেউ কাউ-কে কিছু বলছে না। রাইছাই নিরবতা ভেঙ্গে বললঃ আরে তুইতো হাবলু না । আমার চেয়েও শেয়ানা ।
এরপর দুই জন ছাতা বন্ধ করে ভিজতে ভিজতে বাড়ি ফিরল । ব্যাগের ভিতরে পানি ঢুকে কিছু বই ভিজে গেল । ছাতা থাকা সত্ত্বেও বই ভিজায় রাইছাকে ওর মা বেশ বকল । রাইছাটা বকা শুনছে আর হাসছে আর ভাবছে হাবলুটা আমার চেয়ে অনেক সেয়ানা । মা এক সময় বিরক্ত হয়ে চলে গেল । আর রাইছা ডুব দিল কল্পনার জগতে , তার হাবলুকে নিয়ে ।
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৯৮৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৮/০৫/২০১৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • আবিদ আল আহসান ১৮/০৫/২০১৫
    Shundor
  • স্বপন শর্মা ১৫/০৫/২০১৫
    osadharonন
  • বয়সটা কম হয়ে গেল না??
  • ভালো লিখেছেন।
  • খোরশেদ আলম ০৯/০৫/২০১৫
    অসাধারন
  • অগ্নিপক্ষ ০৯/০৫/২০১৫
    ভেরি গুড!
  • ভালো লিখেছেন। তবে বানানের ক্ষেত্রে একটু যত্নবান হলে আরো সুখপাঠ্য হবে।
 
Quantcast