www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

গণতন্ত্র না সৈরতন্ত্র

সম্প্রতি মহামান্য রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনের দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করছেন। দেখা সাক্ষাত করছেন। তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে বঙ্গভবনে দাওয়াত দিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশন নিয়ে আলোচনা করার জন্য। সেই সূত্র অনুযায়ী বড় ছোট বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীগণ পর্যায়ক্রমে রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাত করেছেন। এটাকে অনেকে স্বাগত জানিয়েছেন। দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন। কেউ কেউ এতে গণতন্ত্রের উত্তরণও দেখছেন।
আবার কেউ কেউ মনে করছেন এসব কেবলই “আই ওয়াশ”। এখানে তাল গাছটা আমার চাই নীতিই বহাল থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। সব কিছুর পরও দেশের অধিকাংশ মানুষ রাষ্ট্রপতির এমন উদ্যোগকে ইতিবাচক মনে করছেন। কেননা দেশে দীর্ঘদিন যাবৎ গণতান্ত্রিক পরিবেশ উপস্থিতি নেই। রাষ্ট্রপতির সাথে এমন আলোচনায় জামায়াত দাওয়াতও পায়নি। এটাকে অনেকে নেতিবাচক দেখছেন। কারণ জামায়াতে ইসলামী নামের দলটি অনেক পুরনো এবং তাদের রয়েছে অনেক জনসমর্থন। তাছাড়া দলটি থেকে জাতীয় সংসদের আইন প্রণেতা হয়েছেন বহুবার। এছাড়া স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনেও তাদের বহু লোক জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও জামায়াতের নিবন্ধন নির্বাচন কমিশন বাতিল করেছেন। তারপরও রাজনৈতিক দল হিসেবে রাষ্ট্রপতি তাদেরকে আলোচনায় বসার সুযোগ দিতে পারতেন। বর্তমান মহামান্য রাষ্ট্রপতি একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তিনি একাধিকবার সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ছিলেন ডেপুটি স্পিকার, স্পিকার। তিনি একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবেও পরিচিত। তিনি এমন সংকট মুহূর্তে সবাইকে ঐক্যের ছাতার তলে বসাতে পারতেন বলে অনেকে মনে করেন। কারণ আমাদের ঐক্য বড়ই প্রয়োজন।
আমাদের স্বাধীনতার সম্মানটুকু রক্ষা করা দরকার। এজন্য গণতন্ত্রের উপস্থিতি থাকা দরকার।
গণতন্ত্রের কথা উঠলেই অনেকে এখন পর্যন্ত আইয়ুব খান এবং হুসেইন মুহাম্মদ  এরশাদকে গালি দেন। কারণ ওরা গণতন্ত্র হরন করেছিলেন। ছিলেন স্বৈরাচার। তারা ক্ষমতায় এসেছিলেন সামরিক বাহিনী থেকে এসে। যদি আন্তর্জাতিকভাবে গণতন্ত্রের কথা আসে তখন গালি দেয়া হয় গাদ্দাফীকে, সাদ্দামকে, হিটলারকে। সাদ্দাম সামরিক বাহিনী থেকে ক্ষমতায় না এলেও তিনি গণতন্ত্রকে লাথি মেরে এককভাবে ক্ষমতায় বসেছিলেন। গাদ্দাফী, হিটলার তো সামরিক বাহিনী থেকে এসেছিলো। কিন্তু আমাদের দেশে এখন যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন। তারা কোথা থেকে এসেছেন? কীভাবে ক্ষমতা চালাচ্ছেন? তারা কি গণতান্ত্রিক সরকার না রাজতান্ত্রিক সরকার? এটার উত্তর মিলবে কীভাবে? ক’দিন আগে আমার বাসায় এসেছিল আমার ভায়রার ছেলে। সে কিশোর বয়সের।
জেলা স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ছে। সে টি.ভি.তে খবর দেখে আমাকে প্রশ্ন করলো- “আঙ্কেল আমাদের দেশ কি গণতান্ত্রিক বা রাজতান্ত্রিক? আরো জিজ্ঞেস করলো- গণতন্ত্র কি? রাজতন্ত্র কি? তার কথার উত্তরটা দেয়া কঠিন ছিল। আমাদের দেশের মিডিয়াগুলো গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কম বলছেনা। কোথায় আমাদের গণতন্ত্র? কোথায় আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? বর্তমানে যারা দেশ শাসন করছেন, যেভাবে শাসন করছেন, সেটাকে কি বলা যায়? গণতন্ত্র কি বলা যায়? যদি এটাকে গণতন্ত্রই বলতে হয়, তাহলে গণতন্ত্র শব্দের অর্থ পরিবর্তন করতে হবে! না হয় সকল ভন্ডামী বাদ দিয়ে প্রকৃত গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসতে হবে। তাহলেই গণতন্ত্রের উত্তরণ হবে।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৯৩৪ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৫/০১/২০১৭

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast