www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

উচ্চ রক্তচাপ

বিশ্বে বর্তমানে দেড়শ’ কোটি লোক ‘হাই ব্লাডপ্রেশার’ বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন এবং প্রতি বছর এই রোগে ৭০ লাখ লোক মৃত্যুবরণ করেন। শুধুমাত্র বাংলাদেশে শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ বয়স্ক লোক উচ্চ রক্তচাপ ব্যাধিতে আক্রান্ত। উপরের পরিসংখ্যানটি রীতিমতো উদ্বেগজনক। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এদেশের শতকরা ২০ থেকে ২৫ ভাগ বয়স্ক লোক যদি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তবে সে সংখ্যা নিশ্চয় কয়েক কোটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরাঞ্চলে এ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা অধিক। এর কারণ বিত্তবান পরিবারের সদস্যদের বিশেষভাবে শিশু কিশোরদের শুরু থেকেই মুটিয়ে যাওয়া, কায়িক পরিশ্রম না করা, ধূমপান, মদ্যপান, ঘন্টার পর ঘন্টা টিভি দেখা, ক্রমাগত অনিদ্রা, বিশৃংখল জীবনযাপন, জাংক ফুড অর্থাৎ ফাস্ট ফুডের প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ইত্যাদি কারণ বিশেষভাবে দায়ী। এছাড়া নগরজীবনের অতি ব্যস্ততা, কোলাহল এবং দুশ্চিন্তাও এই রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ।
দেখা যাচ্ছে, খাদ্যাভ্যাস পারিবর্তন, ধূমপান, শহুরে জীবনের প্রভাব ও কঠিন জীবন সংগ্রাম এক সময়ের শান্ত সজীব উচ্ছ্বল গ্রামীণ মানুষের জীবনেও ঢুকে পড়েছে উচ্চ রক্তচাপ। যা-ই হোক, একথা সত্য যে, বাংলাদেশে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও মানসিক রোগের মতো উচ্চ রক্তচাপও একটি বড়ো ধরণের ব্যাধি। এই রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ব্যাপারে কোনরূপ অবহেলা বা গাফলতির অবকাশ নেই। কোন রোগীর উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত না হলে তার হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং কিডনী রোগে আক্রান্ত হওয়ার সমূহ আশংকা। এসব রোগের চিকিৎসাও জটিল ও ব্যয়বহুল। তাই বিশেষজ্ঞরা এ ধরণের মারাত্মক রোগের প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তাদের মতে, সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ অর্থাৎ এ উপসর্গ যাতে সৃষ্টি না হয়, সেজন্য পূর্বাহ্নেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। এ রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ওষুধ সেবন, সুশৃংখল ও যথাসম্ভব দুঃশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন, ফার্স্টফুড বা চর্বিজাতীয় খাবার পরিহার, ধূমপানসহ সব ধরনের মাদকদ্রব্য বর্জন, বেশীক্ষণ টিভি বা কম্পিউটার ইত্যাদি নিয়ে বসে না থাকা এবং কায়িক শ্রমের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
আমরা দেশে উচ্চ রক্তচাপের মতো মারাত্মক রোগের বিস্তারে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন। আশা করি সংশ্লিষ্ট সবাই বিশেষজ্ঞদের এসব পরামর্শ মেনে চলবেন এবং এ রোগের আক্রমন ও ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকতে সচেষ্ট হবেন। যতœবান হবেন হাইপারটেনশনমুক্ত একটি সুস্থ সুন্দর ও নিরোগ জাতি গঠনে।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৯০২ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৯/১২/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast