গোপলার কথা - ৯৮
অসফল
আমি বরাবর অসফল। কোন কাজ কখনও সফল ভাবে সবার আগে শেষ করতে পারি না। স্কুলে কলেজে পড়াশুনায় যাই হোক করে শেষ করেছি। কাজও জুটিয়েছি। নিজেদের সময়কে সামনে রেখে অনেকে বলে, সে সময় বলে সম্ভব হয়েছে এখন হলে হতো না।
আমিও ভাবি, আমার যা এবিলিটি তাতে সত্যি হয়তো আমি সফল হতে পারতাম না। কাজ করতে গিয়েও দেখেছি বুঝেছি একেবারে ওয়ার্থলেস। কোন কাজের নয়। সব কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে।
আর সংসার। যেখানেও এক লণ্ডভণ্ড অবস্থা। কোন কিছুই গুছিয়ে উঠতে পারি নি। সব যেন টালমাটাল অসফল অবস্থান।
আর অসফলের কোন দাম নেই। কোন মূল্য নেই। যদিও সফলতার পেছনে কখনও দৌড়াই নি। কোনদিন কোন মেডেল পাইনি। সবার সঙ্গে একসারিতে দাঁড়িয়ে আমি কখনও কোন ভিকট্রি পয়েন্ট ছুঁয়ে সবার প্রথম হতে পারিনি। শুধু পারিনি আর পারিনি।
তবু অসফল মানুষ অনেক পথ ঘুরে ঘুরে পায়ে ব্যথা নিয়ে বাড়ি ফিরে দুমুঠো গোগ্রাসে গিলে ঘুমোতে যায়। কিছু ভাবে না। ভাবার চেষ্টাও করে না। আর যারা সফল হয় তারা একটা পয়েন্ট ছেড়ে পরের পয়েন্টের দিকে এগিয়ে যায়।
আর যারা অসফল হয় তারা তো কোন পয়েন্ট তৈরিই করতে পারে না। যেমন আমার কর্মক্ষেত্র আমার সংসার তার বাইরে এই যে লেখালেখি এ সবের মধ্যেও আমি আছি। শুধু আছি। শুধুই আছি। অসফল দোলায় দুলতে থাকা এক পেন্ডুলাম।
তবু মাঝে মাঝে মনের মধ্যে এক ধরনের খোঁচা তৈরি হয়। আর একটু জোরে গেলে নিশ্চয়ই ছুঁতে পারতাম ভিকট্রি পয়েন্ট। আর একটু হলে নিশ্চয়ই আমার লেখা ছাপত কিংবা পত্রিকায় স্থান পেত। আর একটু হলে হয়তো আমি হাততালি পেতাম।
এই আর একটু আর একটু করতে করতে জীবন চলে যাচ্ছে পর্যাপ্ত সময়ের কাছাকাছি। অসফল এক প্রতিমূর্তি।
পৃথিবীতে কে সফল কে অসফল, সফলের মাপকাঠি ঠিক কি, অসফলের অবস্থান ঠিক কোন জায়গায় এসব জেনে কোন লাভ নেই। সফল হওয়াটাই আসল ব্যাপার।
আমাদের পাড়ার পচাদা এই তো বছর আট দশের মধ্যে তিনটে ফ্ল্যাট বাড়ি গাড়ি নাম ডাক পূজো ক্লাব ক্যাম্প সব কিছুতেই সফল একজন মানুষ। পাড়া ছাড়িয়ে শহর আধাশহর গলি সবাই তাকে চেনে জানে মান্য করে সম্মান জানায়।
আমার পাশের ফ্ল্যাটে থাকেন গোপালবাবু। কত বড় ডিগ্রী কত বড় অফিসার মাঝে মাঝে দেখি কত আর্দালি অফিসবয় নিতে আসে। কিন্তু এই মাস দুই আগে আমি উনার নাম জানলাম। তাও উনার বাড়ির কাজের মাসির দৌলতে। উনি উনার ক্ষেত্রে হয়তো সফল। কেন না সফলতা কতটা ছুঁয়েছেন তাও জানি না।
আবার আছে সফলও নয় অসফল নয় এমন মধ্যবর্তী মানুষেরা মধ্যবৃত্তের মত দুদিকেই ঘোরাফেরা করে। সফল মানুষের পাশে থাকতে চেষ্টা করে। কিংবা সমগোত্রীয় সফলদের ঈর্ষা করে। আর অসফলদের অবহেলা। দুটোই সমাজের পক্ষে খুব ভয়ঙকর এবং ক্ষতির সম্ভাবনা।
আবার অসফল যারা তারা বাটন বয়ে বেড়ায়। যেমন আমার মত কত অসফল কবি সাহিত্যিক আছে। কত অসফল ডাক্তার আছে ইঞ্জিনিয়ার আছে। বিজ্ঞানী আছে।যারা নীরবে লেখালেখি করে কাজ করে সমাজকে সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কত গবেষণা অকালে ঝরে যায় আমরা কেউ জানি না। তারা সফল নাকি অসফল আমরা কেউ জানি না। তার যারা সফল হয় আমরা তাদের নিয়ে নাচানাচি করে আবেগে ভেসে যাই। আর পেছনে থাকে অসফল। কিন্তু সবাইয়ের থাকার দরকার ছিল।
আমি বরাবর অসফল। কোন কাজ কখনও সফল ভাবে সবার আগে শেষ করতে পারি না। স্কুলে কলেজে পড়াশুনায় যাই হোক করে শেষ করেছি। কাজও জুটিয়েছি। নিজেদের সময়কে সামনে রেখে অনেকে বলে, সে সময় বলে সম্ভব হয়েছে এখন হলে হতো না।
আমিও ভাবি, আমার যা এবিলিটি তাতে সত্যি হয়তো আমি সফল হতে পারতাম না। কাজ করতে গিয়েও দেখেছি বুঝেছি একেবারে ওয়ার্থলেস। কোন কাজের নয়। সব কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে।
আর সংসার। যেখানেও এক লণ্ডভণ্ড অবস্থা। কোন কিছুই গুছিয়ে উঠতে পারি নি। সব যেন টালমাটাল অসফল অবস্থান।
আর অসফলের কোন দাম নেই। কোন মূল্য নেই। যদিও সফলতার পেছনে কখনও দৌড়াই নি। কোনদিন কোন মেডেল পাইনি। সবার সঙ্গে একসারিতে দাঁড়িয়ে আমি কখনও কোন ভিকট্রি পয়েন্ট ছুঁয়ে সবার প্রথম হতে পারিনি। শুধু পারিনি আর পারিনি।
তবু অসফল মানুষ অনেক পথ ঘুরে ঘুরে পায়ে ব্যথা নিয়ে বাড়ি ফিরে দুমুঠো গোগ্রাসে গিলে ঘুমোতে যায়। কিছু ভাবে না। ভাবার চেষ্টাও করে না। আর যারা সফল হয় তারা একটা পয়েন্ট ছেড়ে পরের পয়েন্টের দিকে এগিয়ে যায়।
আর যারা অসফল হয় তারা তো কোন পয়েন্ট তৈরিই করতে পারে না। যেমন আমার কর্মক্ষেত্র আমার সংসার তার বাইরে এই যে লেখালেখি এ সবের মধ্যেও আমি আছি। শুধু আছি। শুধুই আছি। অসফল দোলায় দুলতে থাকা এক পেন্ডুলাম।
তবু মাঝে মাঝে মনের মধ্যে এক ধরনের খোঁচা তৈরি হয়। আর একটু জোরে গেলে নিশ্চয়ই ছুঁতে পারতাম ভিকট্রি পয়েন্ট। আর একটু হলে নিশ্চয়ই আমার লেখা ছাপত কিংবা পত্রিকায় স্থান পেত। আর একটু হলে হয়তো আমি হাততালি পেতাম।
এই আর একটু আর একটু করতে করতে জীবন চলে যাচ্ছে পর্যাপ্ত সময়ের কাছাকাছি। অসফল এক প্রতিমূর্তি।
পৃথিবীতে কে সফল কে অসফল, সফলের মাপকাঠি ঠিক কি, অসফলের অবস্থান ঠিক কোন জায়গায় এসব জেনে কোন লাভ নেই। সফল হওয়াটাই আসল ব্যাপার।
আমাদের পাড়ার পচাদা এই তো বছর আট দশের মধ্যে তিনটে ফ্ল্যাট বাড়ি গাড়ি নাম ডাক পূজো ক্লাব ক্যাম্প সব কিছুতেই সফল একজন মানুষ। পাড়া ছাড়িয়ে শহর আধাশহর গলি সবাই তাকে চেনে জানে মান্য করে সম্মান জানায়।
আমার পাশের ফ্ল্যাটে থাকেন গোপালবাবু। কত বড় ডিগ্রী কত বড় অফিসার মাঝে মাঝে দেখি কত আর্দালি অফিসবয় নিতে আসে। কিন্তু এই মাস দুই আগে আমি উনার নাম জানলাম। তাও উনার বাড়ির কাজের মাসির দৌলতে। উনি উনার ক্ষেত্রে হয়তো সফল। কেন না সফলতা কতটা ছুঁয়েছেন তাও জানি না।
আবার আছে সফলও নয় অসফল নয় এমন মধ্যবর্তী মানুষেরা মধ্যবৃত্তের মত দুদিকেই ঘোরাফেরা করে। সফল মানুষের পাশে থাকতে চেষ্টা করে। কিংবা সমগোত্রীয় সফলদের ঈর্ষা করে। আর অসফলদের অবহেলা। দুটোই সমাজের পক্ষে খুব ভয়ঙকর এবং ক্ষতির সম্ভাবনা।
আবার অসফল যারা তারা বাটন বয়ে বেড়ায়। যেমন আমার মত কত অসফল কবি সাহিত্যিক আছে। কত অসফল ডাক্তার আছে ইঞ্জিনিয়ার আছে। বিজ্ঞানী আছে।যারা নীরবে লেখালেখি করে কাজ করে সমাজকে সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কত গবেষণা অকালে ঝরে যায় আমরা কেউ জানি না। তারা সফল নাকি অসফল আমরা কেউ জানি না। তার যারা সফল হয় আমরা তাদের নিয়ে নাচানাচি করে আবেগে ভেসে যাই। আর পেছনে থাকে অসফল। কিন্তু সবাইয়ের থাকার দরকার ছিল।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
এলিয়েন ২.২ ০২/০৯/২০২১অসাধারণ
-
আমান শেখ ৩০/০৮/২০২১অসাধারণ অভিজ্ঞতার প্রকাশ।
-
সাইয়িদ রফিকুল হক ২৯/০৮/২০২১ভাল। আমিও অসফল।