টাট্টি কথা
আজকে চৈত্রের শেষ দিন, মানে বসন্তের শেষ দিন । বাংলা সনের শেষ দিন । বাঙালির ঘরে ঘরে চৈত্র সংক্রান্তির ধুম, অন্যান্য জাতি-সম্প্রদায়ের মানুষও অন্য কোন নামের পার্বনে ব্যস্ত থাকে । নাড়ু খাওয়ার দিন, দই চিড়া খাওয়ার দিন ইত্যাদি আরও অনেক কিছুই থাকে আজকের এই দিনটাতে । সব চাইতে বড় কথা আগামীকাল পহেলা বৈশাখ, নববর্ষ উদযাপনের একটা উদ্যাম আগ্রহ সকল বাঙালির মনে মনে । কিন্তু আজকের দিনটা এলেই আমার একটা বিশেষ স্মৃতির কথা খুব মনে পরে, আজকে শেষ অব্দি সিদ্ধান্ত নিলাম আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করেই ফেলবো। আপনারা হাসলে ভালো, আমাকে গাল দিলেও ভালো, কেননা আজকেরটা আজকেই শেষ, আগামীকালটা সবার ভালো আসুক ।
আমাদের প্রজন্ম অনেক ভাগ্যবান । সভ্যতার আদি অন্ত যেন আমরাই দেখে যাচ্ছি । এই যেমন ধরুন আজকের দিনের আধুনিক টয়লেট, যাকে আরোও আধুনিক করে বললে ওয়াশ রুম বা রেষ্ট রুম বলা হয়, আমাদের সময়ে সেটাকে সাধারনতঃ এটাকে পায়খানা বলা হতো, যদিও আমার ঠাকুমা দাদু’রা একে টাট্টি বলতো । সেই টাট্টির রূপটাও ছিল সম্পুর্ণ ভিন্ন । যদিও আজকাল অনেক কথাই শুনি, আগে মানুষ ঘরে খেত আর বাইড়ে গিয়ে মল ত্যাগ করতো আর এখন মানুষ বাইড়ে থেকে খেয়ে এসে ওয়াশ রূমে গিয়ে ফ্রেশ হয় ইত্যাদি ইত্যাদি । তবে আমি যখনকার কথা বলছি তখন সাধারণতঃ টাট্টিগুলো বাড়ি শেষ সীমান্তে যেখানে একটু ঝোপঝাড় থাকতো সেখানে একটা বড় কূয়া মতন গর্ত করে তার উপরে কেউ কেউ কুলীন হলে বাঁশের বেড়া বাঁশের দড়জা বানাতো অন্যথায় কলাপাতার বেড়া ও চটের দরজা যা আজকালকার দরজার পর্দ্দার মতোই উড়তো এরকম হতো ; এবং তার ভেতরের ব্যবস্থা বড়লোকদের হলে হতো গাড়ির টায়ারের উপরে না হলে দুটো বড় গাছের গুড়ি দিয়ে মাঝখানে ফাঁকা রাখা হতো । প্রত্যেকটা মানুষের অতি আবশ্যক যে কর্ম সেই মলত্যাগ শিল্পটি কিন্তু আমাদের দেশে দীর্ঘ্যদিন এভাবেই অবহেলিত ছিল, যদিও ইদানিং এই শিল্পের বেশ উন্নতি হয়েছে তবে ইণ্ডিয়ান প্যান কিন্তু এখনো সেই পুরানো আদলেরই আধুনিক সংস্করণ । সে যাই হোক আমার স্মৃতিকথার মূল বিষয় বস্তু যদিও টাট্টি বিষয়ক তবে টাট্টির রূপ ও বিবর্তন নিয়ে নয় । আজ থেকে প্রায় ছত্রিশ বছর আগের কথা, তখন আমি ক্লাস নাইনের ছাত্র । আমি আমার বড় পিশির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতাম । পিশির বাড়িটি ছিল সেকেলে খামার বাড়ি টাইপের । বিরাট বড় বাড়ি, বাড়ীর সামনের দিকে ঘর মন্দির ইত্যাদি তার পরেই বিরাট কাঁঠাল আর আনারসের বাগান । সেই কাঁঠাল আনারস নিয়ে অনেক কথা আছে, সেগুলো না হয় অন্য দিন হবে । আজকে যে টাট্টির কথা বলছি সেটা ছিল বাগানের শুরুতেই মানে যে রকম হয়ে থাকে , তবে থাকার ঘরগুলো থেকে প্রায় পঞ্চাষ ষাট হাত দূরে । সেবছর চৈত্র সংক্রান্তির দিনেও ছিল প্রচন্ড রোদ, গরম ইত্যাদি তবে এখনো মনে আছে সেদিন বিকেলে প্রচন্ড ঝড় হয়েছিল । যদিও বাড়িতে সব্বাই ছিল, পিশি সংক্রান্তির পূজো নিয়ে ব্যস্ত, পিশেমশাই এমনিতে হেডমাষ্টার হলেও যেমন ছিল অমায়িক তেমনি পারিবারিক । পাঁচন রান্নার জন্য কাঁঠাল কাটতে ব্যস্ত ছিল পিশেমশাই, অন্যান্যরাও সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত । প্রকৃতির ডাকে সারা দিয়ে প্রাকৃতিক কাজ করার জন্য কলতলার ঘটিটায় জল ভরে একটু তাড়াতাড়ি করে সেই টাট্টির দিকে ছুটলাম । প্রসঙ্গতঃ বলে রাখি আমার পিশির বাড়িতে কেউ লেট্রিন বা পায়খানাকে টাট্টিও বলত না আবার সেটি ছিল সম্পুর্ণ বাঁশের তৈরী । যাই হোক, প্রকৃতিকে অবলোকন করার জন্য তখনকার সময়ে যেমন কোন পায়খানারই ছাদ বা চালা থাকতো না তেমনি আমার পিশির বাড়ীর পায়খানারও কোন চালা ছিল না । প্রথম দিকে যদিও অন্য কোন খেয়াল ছিল না কিন্তু প্রাথমিক তাড়াহুড়ো শেষ হয়ে গেলেই যেমন হয়, আমার মাথায় যখন রৌদ্রের তাপ লাগলো আমি চোখ তোলে উপরের দিকে দেখতে গিয়েই হল আসল বিপত্তি । আগে কোথায় ছিল কিভাবে এলো এসব কিছু না জানলেও হঠাৎ করে দেখলাম আমি যে বাঁশের দড়জাটা দিয়ে ঢুকেছি ঠিক তার মাথায় নীল রঙের এক সাপ বাবাজি একেবারে মাথা উঁচিয়ে আমার দিকে চেয়েই যেন বসে আছে । মুহুর্তের মধ্যে আমার কি প্রতিক্রিয়া হবে বুজতেই পারছেন । আর প্রাকৃতিক কাজ ! মানে মলত্যাগ ! মল তখন মাথায় উঠে গেছে বলাই বাহুল্য । আমার হাতে অস্ত্র বলতে শৌচ কাজের জন্য নেওয়া জলের ঘটিখানা । আমি সেই সাপ বাবাজির থেকে অন্য দিকে চোখ ঘোরানোর সাহস পর্যন্ত পাচ্ছিলাম, সে ব্যাটা আবার মাঝে মধ্যেই রোদের তাপে হোক বা অন্য কোন কারনে ঘাড় ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখছে । এমতাবস্থায় আমি আওয়াজ দিলে সাপটি যে লাফ দিয়ে আমার উপরেই পরবে কোন সন্দেহ নাই । কি করব ভেবে কূল পাচ্ছিলাম না, ঘেমে ঘেমে একাকার হচ্ছি, নিজের অজান্তেই চোখের জল ঝরছে টের পাচ্ছি কিন্তু সেই জল যে মুছবো সেই উপায়ও নেই কেননা হাত তুলতে গেলেই যদি সাপ ব্যাটা আমার উপস্থিতি টের পায় ! সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, আমি কতটা বুজাতে পারলাম জানিনা কিন্তু আপনারা যদি এই লেখাটি পড়ে এতটুকু অব্দি পৌছে থাকেন তবে আমি নিশ্চিত আপনারা আমার সেই মুহুর্তের শারিরীকও মানসিক অবস্থার কথা উপলব্দি করতে পারছেন । এভাবে কতক্ষন সময় কেটেছিল সেই হিসেব আজও মেলাতে পারিনি কিন্তু সেই দিনের কথা মনে পরে, বার বার মনে পরে, যখন কোন সাপের গল্প শুনি তখন মনে পরে, যখন কোন ঘোঢ় সংকটের কথা শুনি তখন মনে পরে, আর মনে পরে প্রতি চৈত্র সংক্রান্তির দিনে । কাউকে ডাকার সাহস থাকলেও আওয়াজ করার মতো নির্বুদ্ধিতা করা ঠিক হবে না জেনেই চুপচাপ বসে বসে ঘামছিলাম । আরোও বড় কষ্টের কথা কি জানেন, কিছুক্ষণ পরে যখন পিশেমশাই কল তলায় এসেছিল, দূর থেকে হলেও কলের আওয়াজ পেয়েই হয়তোবা সাপ বাবাজি আস্তে আস্তে দড়জার বাইড়ের দিকে নীচের দিকে নেমে গেল বটে কিন্তু সে গেল কি গেল না তা নিশ্চিত হই কিভাবে ! এবারে ভেতর থেকে আওয়াজ পেলে সে যদি আবার উপরের দিকে উঠে আসে, আমার উপরেই যদি লাফ দিয়ে পরে ! অগত্যা চুপ চাপ বসে বসে ঘেমে যাওয়া ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই । বসে আছি তো বসেই আছি । মনে মনে কতো আকাশ পাতাল ভাবনা যে আসছিল, সে কি আর বলে বুজানো যায় ! একবার ভাবছি, কেউ যদি আসতো, আবার ভাবছি কেউ আসলেই তো তের পেয়ে সে ব্যাটা আবার আমার দিকে চলে আসবে ! এভাবে আরো কিছুক্ষন কাটার পরে আমার শরীর আর দিচ্ছিল না । ক্লান্ত, শ্রান্ত, অবসন্ন হয়ে নিস্তেজের মতো পরে আছি সেই স্বাস্থ্যকর স্থানে । ওদিকে সবাই পূজা পার্ব্বন নিয়ে ব্যস্ত বলেই হয়তো আমার কথা খেয়াল করে নি কিন্তু কি একটা কাজে আমার ডাক পরেছিল বলেই পিসতুতো বোনটা এদিকে এসে জোড়ে হাঁক পেরেছিল আর সেই সুযোগে আমি পরি কি মরি করে এক দৌড়ে এক্কেবারে পায়খানার বাইড়ে এসে হুমড়ি খেয়ে পরেছিলাম । সেই থেকে যখন যখন মানে প্রতি বছর যখন চৈত্র সংক্রান্তির দিনটা আসে, আমার মনে পরে, কখনো মনে মনে হাসি, কখনো স্ত্রী-ছেলেকে বলে বলে হাসি আবার কখনো কোন পাওনাদার বাড়িতে তাগাদা দিতে আসলে চা খাইয়ে গল্প করতে করতে হাসি । হাসি কিন্তু চলছে । আপনাদের কারোর কি এরকম কোন অভিজ্ঞতা বা স্মৃতি কথা আছে ? থাকবে না, কেননা অকপটে বলতে পারবেন না, তাই থাকবে না, আমি কিন্তু বলে ফেললাম, জানাবেন কেমন লাগলো ।
আমাদের প্রজন্ম অনেক ভাগ্যবান । সভ্যতার আদি অন্ত যেন আমরাই দেখে যাচ্ছি । এই যেমন ধরুন আজকের দিনের আধুনিক টয়লেট, যাকে আরোও আধুনিক করে বললে ওয়াশ রুম বা রেষ্ট রুম বলা হয়, আমাদের সময়ে সেটাকে সাধারনতঃ এটাকে পায়খানা বলা হতো, যদিও আমার ঠাকুমা দাদু’রা একে টাট্টি বলতো । সেই টাট্টির রূপটাও ছিল সম্পুর্ণ ভিন্ন । যদিও আজকাল অনেক কথাই শুনি, আগে মানুষ ঘরে খেত আর বাইড়ে গিয়ে মল ত্যাগ করতো আর এখন মানুষ বাইড়ে থেকে খেয়ে এসে ওয়াশ রূমে গিয়ে ফ্রেশ হয় ইত্যাদি ইত্যাদি । তবে আমি যখনকার কথা বলছি তখন সাধারণতঃ টাট্টিগুলো বাড়ি শেষ সীমান্তে যেখানে একটু ঝোপঝাড় থাকতো সেখানে একটা বড় কূয়া মতন গর্ত করে তার উপরে কেউ কেউ কুলীন হলে বাঁশের বেড়া বাঁশের দড়জা বানাতো অন্যথায় কলাপাতার বেড়া ও চটের দরজা যা আজকালকার দরজার পর্দ্দার মতোই উড়তো এরকম হতো ; এবং তার ভেতরের ব্যবস্থা বড়লোকদের হলে হতো গাড়ির টায়ারের উপরে না হলে দুটো বড় গাছের গুড়ি দিয়ে মাঝখানে ফাঁকা রাখা হতো । প্রত্যেকটা মানুষের অতি আবশ্যক যে কর্ম সেই মলত্যাগ শিল্পটি কিন্তু আমাদের দেশে দীর্ঘ্যদিন এভাবেই অবহেলিত ছিল, যদিও ইদানিং এই শিল্পের বেশ উন্নতি হয়েছে তবে ইণ্ডিয়ান প্যান কিন্তু এখনো সেই পুরানো আদলেরই আধুনিক সংস্করণ । সে যাই হোক আমার স্মৃতিকথার মূল বিষয় বস্তু যদিও টাট্টি বিষয়ক তবে টাট্টির রূপ ও বিবর্তন নিয়ে নয় । আজ থেকে প্রায় ছত্রিশ বছর আগের কথা, তখন আমি ক্লাস নাইনের ছাত্র । আমি আমার বড় পিশির বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতাম । পিশির বাড়িটি ছিল সেকেলে খামার বাড়ি টাইপের । বিরাট বড় বাড়ি, বাড়ীর সামনের দিকে ঘর মন্দির ইত্যাদি তার পরেই বিরাট কাঁঠাল আর আনারসের বাগান । সেই কাঁঠাল আনারস নিয়ে অনেক কথা আছে, সেগুলো না হয় অন্য দিন হবে । আজকে যে টাট্টির কথা বলছি সেটা ছিল বাগানের শুরুতেই মানে যে রকম হয়ে থাকে , তবে থাকার ঘরগুলো থেকে প্রায় পঞ্চাষ ষাট হাত দূরে । সেবছর চৈত্র সংক্রান্তির দিনেও ছিল প্রচন্ড রোদ, গরম ইত্যাদি তবে এখনো মনে আছে সেদিন বিকেলে প্রচন্ড ঝড় হয়েছিল । যদিও বাড়িতে সব্বাই ছিল, পিশি সংক্রান্তির পূজো নিয়ে ব্যস্ত, পিশেমশাই এমনিতে হেডমাষ্টার হলেও যেমন ছিল অমায়িক তেমনি পারিবারিক । পাঁচন রান্নার জন্য কাঁঠাল কাটতে ব্যস্ত ছিল পিশেমশাই, অন্যান্যরাও সবাই যে যার কাজে ব্যস্ত । প্রকৃতির ডাকে সারা দিয়ে প্রাকৃতিক কাজ করার জন্য কলতলার ঘটিটায় জল ভরে একটু তাড়াতাড়ি করে সেই টাট্টির দিকে ছুটলাম । প্রসঙ্গতঃ বলে রাখি আমার পিশির বাড়িতে কেউ লেট্রিন বা পায়খানাকে টাট্টিও বলত না আবার সেটি ছিল সম্পুর্ণ বাঁশের তৈরী । যাই হোক, প্রকৃতিকে অবলোকন করার জন্য তখনকার সময়ে যেমন কোন পায়খানারই ছাদ বা চালা থাকতো না তেমনি আমার পিশির বাড়ীর পায়খানারও কোন চালা ছিল না । প্রথম দিকে যদিও অন্য কোন খেয়াল ছিল না কিন্তু প্রাথমিক তাড়াহুড়ো শেষ হয়ে গেলেই যেমন হয়, আমার মাথায় যখন রৌদ্রের তাপ লাগলো আমি চোখ তোলে উপরের দিকে দেখতে গিয়েই হল আসল বিপত্তি । আগে কোথায় ছিল কিভাবে এলো এসব কিছু না জানলেও হঠাৎ করে দেখলাম আমি যে বাঁশের দড়জাটা দিয়ে ঢুকেছি ঠিক তার মাথায় নীল রঙের এক সাপ বাবাজি একেবারে মাথা উঁচিয়ে আমার দিকে চেয়েই যেন বসে আছে । মুহুর্তের মধ্যে আমার কি প্রতিক্রিয়া হবে বুজতেই পারছেন । আর প্রাকৃতিক কাজ ! মানে মলত্যাগ ! মল তখন মাথায় উঠে গেছে বলাই বাহুল্য । আমার হাতে অস্ত্র বলতে শৌচ কাজের জন্য নেওয়া জলের ঘটিখানা । আমি সেই সাপ বাবাজির থেকে অন্য দিকে চোখ ঘোরানোর সাহস পর্যন্ত পাচ্ছিলাম, সে ব্যাটা আবার মাঝে মধ্যেই রোদের তাপে হোক বা অন্য কোন কারনে ঘাড় ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখছে । এমতাবস্থায় আমি আওয়াজ দিলে সাপটি যে লাফ দিয়ে আমার উপরেই পরবে কোন সন্দেহ নাই । কি করব ভেবে কূল পাচ্ছিলাম না, ঘেমে ঘেমে একাকার হচ্ছি, নিজের অজান্তেই চোখের জল ঝরছে টের পাচ্ছি কিন্তু সেই জল যে মুছবো সেই উপায়ও নেই কেননা হাত তুলতে গেলেই যদি সাপ ব্যাটা আমার উপস্থিতি টের পায় ! সুপ্রিয় পাঠক বৃন্দ, আমি কতটা বুজাতে পারলাম জানিনা কিন্তু আপনারা যদি এই লেখাটি পড়ে এতটুকু অব্দি পৌছে থাকেন তবে আমি নিশ্চিত আপনারা আমার সেই মুহুর্তের শারিরীকও মানসিক অবস্থার কথা উপলব্দি করতে পারছেন । এভাবে কতক্ষন সময় কেটেছিল সেই হিসেব আজও মেলাতে পারিনি কিন্তু সেই দিনের কথা মনে পরে, বার বার মনে পরে, যখন কোন সাপের গল্প শুনি তখন মনে পরে, যখন কোন ঘোঢ় সংকটের কথা শুনি তখন মনে পরে, আর মনে পরে প্রতি চৈত্র সংক্রান্তির দিনে । কাউকে ডাকার সাহস থাকলেও আওয়াজ করার মতো নির্বুদ্ধিতা করা ঠিক হবে না জেনেই চুপচাপ বসে বসে ঘামছিলাম । আরোও বড় কষ্টের কথা কি জানেন, কিছুক্ষণ পরে যখন পিশেমশাই কল তলায় এসেছিল, দূর থেকে হলেও কলের আওয়াজ পেয়েই হয়তোবা সাপ বাবাজি আস্তে আস্তে দড়জার বাইড়ের দিকে নীচের দিকে নেমে গেল বটে কিন্তু সে গেল কি গেল না তা নিশ্চিত হই কিভাবে ! এবারে ভেতর থেকে আওয়াজ পেলে সে যদি আবার উপরের দিকে উঠে আসে, আমার উপরেই যদি লাফ দিয়ে পরে ! অগত্যা চুপ চাপ বসে বসে ঘেমে যাওয়া ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই । বসে আছি তো বসেই আছি । মনে মনে কতো আকাশ পাতাল ভাবনা যে আসছিল, সে কি আর বলে বুজানো যায় ! একবার ভাবছি, কেউ যদি আসতো, আবার ভাবছি কেউ আসলেই তো তের পেয়ে সে ব্যাটা আবার আমার দিকে চলে আসবে ! এভাবে আরো কিছুক্ষন কাটার পরে আমার শরীর আর দিচ্ছিল না । ক্লান্ত, শ্রান্ত, অবসন্ন হয়ে নিস্তেজের মতো পরে আছি সেই স্বাস্থ্যকর স্থানে । ওদিকে সবাই পূজা পার্ব্বন নিয়ে ব্যস্ত বলেই হয়তো আমার কথা খেয়াল করে নি কিন্তু কি একটা কাজে আমার ডাক পরেছিল বলেই পিসতুতো বোনটা এদিকে এসে জোড়ে হাঁক পেরেছিল আর সেই সুযোগে আমি পরি কি মরি করে এক দৌড়ে এক্কেবারে পায়খানার বাইড়ে এসে হুমড়ি খেয়ে পরেছিলাম । সেই থেকে যখন যখন মানে প্রতি বছর যখন চৈত্র সংক্রান্তির দিনটা আসে, আমার মনে পরে, কখনো মনে মনে হাসি, কখনো স্ত্রী-ছেলেকে বলে বলে হাসি আবার কখনো কোন পাওনাদার বাড়িতে তাগাদা দিতে আসলে চা খাইয়ে গল্প করতে করতে হাসি । হাসি কিন্তু চলছে । আপনাদের কারোর কি এরকম কোন অভিজ্ঞতা বা স্মৃতি কথা আছে ? থাকবে না, কেননা অকপটে বলতে পারবেন না, তাই থাকবে না, আমি কিন্তু বলে ফেললাম, জানাবেন কেমন লাগলো ।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
অর্ঘ্যদীপ চক্রবর্তী ০৩/১১/২০২৫খুব সুন্দর
-
ফয়জুল মহী ০৩/১১/২০২৫বাহ চমৎকার লিখেছেন
