www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

হিটলারের ইয়াবা কথন ২য় পর্ব

ইয়াবা কি?এর ইতিহাস কি? এবং কেন এটাকে হিটলারের চকলেট বলে?
************
হিস্ট্রি অব মেডিসিন :
( একটু বেশী লিখলাম এই কারণে --- বাংলাদেশে প্রতি বছর ড্রাগস লেভেল -এর আওতায় , শুধু ইয়াবাতেই ১০ লাখের ও বেশী ছেলে মেয়ের জীবন বিপন্ন হইতেছে- তাই সকলের জেনেরাখা ভাল বা জেনে শুনে কেউ যদি নষ্ট হয়, তখন মনে করব সে তার নিজের ইচ্ছাতেই নষ্ট হল- তবে ইউ কে তে ইয়াবার তেমন মার্কেট নাই ভিন্ন কারণে
ইয়াবা সেবিরা উচ্চ রক্তচাপে ভোগে
দীর্ঘদিনের আসক্ত ব্যক্তিরা উচ্চ রক্তচাপে ভোগে। মস্তিষ্কের ভেতরকার ছোট রক্তনালিগুলো ক্ষয় হতে থাকে, এগুলো ছিঁড়ে অনেকের রক্তক্ষরণ শুরু হয়। স্মৃতিশক্তি কমে যায়, মানসিক নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, অহেতুক রাগারাগি, ভাংচুরের প্রবণতা বাড়ে। পড়াশোনা, কর্মক্ষেত্র বা পারিবারিক জীবনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতা বা পিছিয়ে পড়তে থাকায় আসক্ত ব্যক্তিরা বিষন্নতায় আক্রান্ত হয়। কারও কারও মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়। দৃষ্টি বিভ্রম, শ্রুতি বিভ্রম আর অস্বাভাবিক সন্দেহ প্রভৃতি উপসর্গ থেকে এক সময় জটিল মানসিক ব্যধিও দেখা দেয়। বেশি পরিমাণে নেওয়া
ইয়াবা সেবনের ফলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যত্যয় ঘটিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে।
সামগ্রিক দৃষ্টিতে ইয়াবা সেবনের ক্ষতি অসীম ও অপূরণীয়ও এটি পরিবারকে ধ্বংস করে। সমাজকে করে কলুষিত এবং দেশকে করে পঙ্গু। পারিবারিক ও সামাজিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরে। রাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়। এই মাদক জীবন থেকে জীবন এবং হূদয়ের আবেগ অনুভুতি কেড়ে নেয়। আলোর পথ ছেড়ে নিয়ে যায় অন্ধকার পথে। স্বাধীন হূদয় পরিণত হয় নেশার দাসে। ইয়াবার পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি আসক্ত ব্যক্তিরা এর ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। একবার ইয়াবা নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা বা নির্দিষ্ট সময় পর আবার না নিলে শরীরে ও মনে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে আসক্ত ব্যক্তিরা আবার ফিরে যায় নেশার জগতে।
*****************
ইতিহাস
*********
শুরুটা ১৯১৯ সালে। জাপানিরা ওষুধ হিসেবে ইয়াবা তৈরির পরিকল্পনা করে। মূলত জীবন বাঁচানোর জন্যই তাদের এ আবিস্কার।
এর পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জার্মান প্রেসিডেন্ট এডলফ হিটলার তার মেডিকেল চিফকে আদেশ দিলেন দীর্ঘ সময় ব্যাপি যুদ্ধক্ষেত্রের সেনাদের যাতে ক্লান্তি না আসে এবং উদ্দীপনায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে বা বিমানের পাইলটের নিদ্রাহীনতা, মনকে উৎফুল, চাঙ্গা রাখার জন্য একটা কিছু আবিস্কার করতে।
টানা ৫ মাস রসায়নবিদগণ চেষ্টা চালিয়ে মিথাইল অ্যামফিটামিন ও ক্যাফেইনের সংমিশ্রনে তৈরি করলেন ইয়াবা। ব্যাস! হিটলারের উদ্দেশ্য সফল। সেনারা মানসিক শক্তিতে বলিয়ান হল।
----
ইয়াবা ইতিহাস ও হিটলার
---------
এই ক্রিস্টাল মেথ জার্মানিতে মাদক হিসেবে নেয়া হয় এবং বাংলাদেশ সহ অনেক দেশে একে ইয়াবা বলা হয়। এই মাদককে আবার আমেরিকাতে বলা হয় ‘ডেসোজিন’। নাম যাই হোক উপাদান কিন্তু একি।
হিটলার এর তখনকার চিকিৎসক ড. থিওডর মোরেল নিজের নথিতে জানিয়েছিলেন, হিটাল নিজে বিভিন্ন মাদকে আসক্ত ছিলেন। এসব মাদক হিটাল নিজেকে আরো শক্তিশালী এবং মানসিক ভাবে কঠোর করতে ব্যবহার করতেন। এছাড়াও হিটাল নিজের পৌরুষত্ব নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না ফলে তিনি নিজের পৌরুষত্ব বাড়াতে বাড়টি মাদক সেবন করতেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা ৪৭ পৃষ্ঠার একটি নথিতে বলা হয় হিটলার ৭৪ রকমের মাদক সেবন করতেন। এসব মাদক অনেক উচ্চ মাত্রার ছিলো। এসব মাদক এক এক ক্ষেত্রে এক এক কাজে হিটালের মানসিক শারীরিক শক্তি বাড়াতে কাজ করতো। বিশেষ করে হিটাল বিভিন্ন বৈঠকে যাওয়ার আগেই মানসিক দৃঢ়তা বাড়ানোর নানান মাদক নিতেন।
নথিতে দেখা যায় ১৯৪৩ সালে ইতালির তৎকালীন সেনানায়ক মুসোলিনীর সাথে এক বিশেষ বৈঠকে বসেন, ওই বৈঠকে যাওয়ার আগেও হিটলার ক্রিস্টাল মেথ সহ দুই রকমের মাদক গ্রহন করেন। ওই বৈঠকে হিটলার এক টানা ২ ঘন্টা ভাষণ প্রদান করেন। তাকে এসময় সামান্য তম ক্লান্ত মনে হয়নি।
ইয়াবা মানুষের তাৎক্ষণিক অবসাদগ্রস্ততা, যৌন অক্ষমতা, মানসিক চাপ কমাতে এবং শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতে ব্যবহৃত হয়। এই মাদকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক। দীর্ঘদিন এই মাদক সেবনের ফলে মস্তিষ্কসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। শারীরিক গঠন এবং সামাজিক সৃজনশীলতা নষ্ট হয়ে যায়।
সূত্র- ডেইলি মেইল
হিটলার নিয়মিত ইয়াবা সেবন করতেন
***
হিটলারের চিকিৎসার নথিপত্র প্রমাণ করে, চিকিৎসক তাঁকে দিনে আশিটির মতো ড্রাগ পুশ করতেন। এর মধ্যে ছিল ইঁদুরের বিষ, অ্যামফিটামিন (ইয়াবার প্রধান উপাদান), ষাঁড়ের বীর্য এবং মরফিনের মতো ড্রাগ!
হিটলার মনে করতেন, কোকেইন তাঁর সাইনাসের সমস্যা এবং তোতলামি দূর করে।
হলোকাস্টের মতো ব্যাপক হত্যাকান্ডের সিদ্ধান্ত হিটলার নেশার ঘোরে নিয়েছিলেন!এত বছর পর হিটলার সংক্রান্ত এই বোমাগুলো ফাটিয়েছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির মতো বিশ্বখ্যাত টিভি চ্যানেল। চ্যানেলটি হিটলারের ব্যক্তিগত চিকিৎসক Dr Theodore Morell –এর বরাত দিয়ে জানায়, হিটলার একজন মাদক গ্রহণকারী স্নায়বিক রোগী ছিলেন। তিনি নিয়মিত ইয়াবার প্রধান উপাদান অ্যামফিটামিন, ষাঁড়ের বীর্য, ইঁদুরের বিষ, মরফিনসহ প্রায় আশিটি ড্রাগের তৈরি ককটেইল খেতেন। সম্প্রতি আবিষ্কৃত কিছু চিঠি এবং রেকর্ড থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
অধিকাংশ মনোবিজ্ঞানী এবং ইতিহাসবিদগণ মনে করেন, মিলিয়ন মিলিয়ন নির্দোষ লোককে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার পেছনে এই মাদক গ্রহণের বিশেষ ভূমিকা ছিল।
পাঁচ ফিট আট ইঞ্চি উচ্চতার এই জার্মান নেতা একাধারে একজন বিকৃত লিঙ্গের অধিকারীও ছিলেন বলে ন্যাশনাল জিওগ্রাফী দাবি করে। এবং এর পিছনের কারণ হিসাবে ড্রাগ গ্রহণকেই দায়ী করা হয়।
মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক নাসেইর ঘাইমি দাবি করেন, হিটলারের এই মাদক গ্রহণ তাঁকে একজন খেদোম্মত্ত, হতাশাবাদী করে তুলছিলো। তিনি আস্তে আস্তে শুকিয়ে যাচ্ছিলেন এবং তাঁর শরীর সবসময় কাঁপতো। তিনি বলেন, ‘‘হয়তোবা হিটলার অ্যামফিটামিনে আসক্ত ছিলেন অথবা ছিলেন না, কিন্তু এটা সত্য যে হিটলার একজন মানসিক রোগী ছিলেন এবং ড্রাগ এই আশঙ্কা দিন দিন বাড়িয়েই দিচ্ছিল। আর এটাই হচ্ছে মূল বিষয়, যেহেতু ১৯৩০ সালের আগে হিটলার কখনো মাদক গ্রহণ করতেন না তাই এর পরবর্তী সময়ে তাঁর বদলে যাবার পিছনে ড্রাগই ছিল মূল কারিগর।’’
সম্প্রতি উদ্ধারকৃত সাতচলিশ পৃষ্ঠার একটি গোপন রিপোর্টে বলা হয়, হিটলারের একাধারে খোস-পাঁচড়া, পাকস্থলীর সঙ্কোচন এবং ঘন ঘন বায়ু নির্গমণের রোগ ছিল। ড. মরেলুএর ড্রাগ প্রেসক্রিপশনের পূর্বে আর কেউ তাদের নেতার উলেখিত রোগগুলি সারাতে পারে নি।
#
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জার্মান
প্রেসিডেন্ট এডলফ হিটলার
তার মেডিকেল চিফকে আদেশ দিলেন দীর্ঘ সময় ব্যাপি যুদ্ধক্ষেত্রের সেনাদের যাতে ক্লান্তি না আসে এবং উদ্দীপনায় যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে বা বিমানের পাইলটের নিদ্রাহীনতা, মনকে উৎফুল, চাঙ্গা রাখার জন্য একটা কিছু আবিস্কার করতে।
টানা ৫ মাস রসায়নবিদগণ চেষ্টা চালিয়ে মিথাইল অ্যামফিটামিন ও ক্যাফেইনের সংমিশ্রনে তৈরি করলেন ইয়াবা। ব্যাস! হিটলারের উদ্দেশ্য সফল। সেনারা মানসিক শক্তিতে বলিয়ান হল।
শুরুটা ১৯১৯ সালে।
জাপানিরা ওষুধ হিসেবে ইয়াবা তৈরির পরিকল্পনা করে।
মূলত জীবন বাঁচানোর জন্যই তাদের এ আবিস্কার।
***
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি কি?
রাত কাটে নির্ঘুম, ইয়াবা প্রতিক্রিয়ায় টানা সাত থেকে ১০ দিনও জেগে থাকতে বাধ্য হয় অনেকে। শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়তে থাকে, মেজাজ হয় খিটখিটে, গলা-মুখ শুকিয়ে আসতে থাকে অনবরত। প্রচণ্ড ঘাম আর গরমের অসহ্য অনুভূতি বাড়তে থাকে। বাড়ে নাড়ির গতি, রক্তচাপ, দেহের তাপমাত্রা আর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি। দীর্ঘদিনের আসক্ত ব্যক্তিরা উচ্চরক্তচাপের রোগীই হয়ে পড়ে। মস্তিষ্কের ভেতরকার ছোট রক্তনালিগুলো ক্ষয় হতে থাকে, এগুলো ছিঁড়ে অনেকের রক্তক্ষরণ শুরু হয়। স্মৃতিশক্তি কমে যায়, মানসিক নানা রোগের উপসর্গ দেখা দেয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, অহেতুক রাগারাগি, ভাঙচুরের প্রবণতা বাড়ে। পড়াশোনা, কর্মক্ষেত্র বা পারিবারিক জীবনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। সব ক্ষেত্রে ব্যর্থতা বা পিছিয়ে পড়তে থাকায় আসক্ত ব্যক্তিরা বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়।
কারও কারও মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়। দৃষ্টিবিভ্রম, শ্রুতিবিভ্রম আর অস্বাভাবিক সন্দেহ প্রভৃতি উপসর্গ থেকে একসময় সিজোফ্রেনিয়ার মতো জটিল মানসিক ব্যাধিও দেখা দেয়। বেশি পরিমাণে নেওয়া ইয়াবা শারীরবৃত্তীয় স্বাভাবিক কার্যক্রমের ব্যত্যয় ঘটিয়ে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে। আর যারা সিরিঞ্জের মাধ্যমে দেহে ইয়াবা প্রবেশ করায়, তারা হেপাটাইটিস বি, সি ও এইডসের মতো মারাত্মক রক্তবাহিত রোগের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে।
নেশা ছাড়তে চাইলেও ছাড়া যায় না কেন?
ইয়াবার পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি আসক্ত ব্যক্তিরা এর ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। একবার ইয়াবা নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা বা নির্দিষ্ট সময় পর আবার না নিলে শরীরে ও মনে নানা উপসর্গ দেখা দেয়, ফলে বাধ্য হয়ে আসক্ত ব্যক্তিরা আবার ফিরে যায় নেশার জগতে।

তথ্যসূত্র -বিভিন্ন ব্লগ। উইকিপিডিয়া বাংলা। ফিকশন ব্লগ।
বিষয়শ্রেণী: প্রবন্ধ
ব্লগটি ৮৪৭ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৭/০১/২০১৮

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast