জীবন এক টুকরা ফসলি জমিন
কখনো কখনো মনে হয় জীবন যেনো রাস্তার ট্রাফিক জ্যামে আটকা পড়া গাড়ির মত, চাকা ঘুরে ঘুরে আবার ঘুরে না।
পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় বাহিরে গিয়ে কাজ করতে মজিদ মিয়ার শরীর ও মন সায় দেয় না। তবুও টাকার মায়ায় কিছুটা বিকল শরীর সচল রাখতে হয়। অবশ্য এখন সাথের লোকজনকে কাজ দেখিয়ে ও বুঝিয়ে দিলে চলে।
মাথায় সেপটি ক্যাপ , মুখে গামছা বাঁধা ও হাতে কাজের মোজা পরা মজিদ মিয়া আকাশ পানে চেয়ে বিটবিট করে বলে আজ এত গরম। টপ টপ কয়েক ফোঁটা জল পড়ে বালুতে মিশে যায় কিন্তু বুঝা দায় এই জল কপালের নাকি চোখের। কোথায়ও কোনো মেঘ নাই আকাশে। একটা পাখিও নেই এই তপ্ত রোদে । কিন্ত একটা ইদুর গর্ত হতে বের হয়ে উঁকি দেয় বার বার। হয়তো আমাকে বিদ্রূপ করে বেটা জীবন দাও এই গরমে।
কাজ হতে এসে রান্নাঘরে একদম যেতে ইচ্ছে করছে না। এতোই ক্লান্ত যে বিছানায় পড়তেই ঘুমের রাজ্যে। চোখ খুলে হোসনা বেগমের ভিডিও কলের আওয়াজে।
আজ তোমাকে বলে ছিলাম কিছু টাকা দিতে
আর তুমি ঘুমাতেছো। টাকার মায়া এখন অনেক তোমার যখন মা বাপ ভাই বোনকে কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়েছো তখন মায়া ছিলো না I
ফুরুত করে একদলা পানির ফিনকি ফেলে হোসনা বেগম গদগদ করে কথাগুলি মজিদ মিয়াকে বলে।
আরে তুমি রাগ করছো কেনো!আমার বউ বাচ্চার জন্য টাকা দিবো এতে টাকার মায়া হবে কেনো। ধীর শান্ত কণ্ঠে মজিদ মিয়া বউকে শান্ত করতে চায়। আজ খুব গরম কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি তাই ঘুম দিলাম। রান্নাও করি নাই হোটেলে খেতে যাবো তখন টাকা পাঠিয়ে দিবো। মাত্র সন্ধ্যা হলো এখানে।
কেমন আছো। ছেলে-মেয়ে কেমন আছে? মজিদ মিয়া জিজ্ঞাসা করে বউকে।
ঠিক আছে এখন রেখে দাও, টাকা দিয়ে ফোন দিও। আবারও ফুরুত করে একদলা ফিনকি ছুড়ে ফেলে হোসনা বেগম।
আসলে বাহিরে যেতে এখন মন সায় দিচ্ছে না। কিন্তু এখন যেতে হবে। নিজের ওজনহীন শরীর হতে একটা বহু ওজনের দীর্ঘশ্বাস বের হয়। এখানে বহু বাংলাদেশী লোকজনের হোটেল আছে তবে মজিদ মিয়া অপারগ হলেই হোটেলে খেতে যায়। চলচাতুরি এবং বাটপারি এখানেও সমানে করে কিছু কিছু বাংলাদশী লোক।
একদম সস্তা দামের তেল ব্যবহার করা, পুরাতন খাবার নতুনের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রী করা, পচা ও অবিক্রীত সবজি কমদামে এনে রান্না করা, উটের মাংসকে গরুর মাংস বলে বিক্রী করা বাংলাদেশী হোটেল মালিকদের একদম ছোট্ট প্রতারণার নমুনা। আইনের প্যাচে পড়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে বেশী লাভের লোভ ছাড়তে পারে না , কঠোর আইন আছে আইনের প্রয়োগও আছে তবুও ভয় পায় না।
কারণ খরিদ্দারগণও বাংলাদেশী , একজন বাংলাদেশীকে ঝামেলায় ফেলতে চায় না বলে আইন প্রয়োগ সংস্থাকে ফোন করে ধরিয়ে দেয় না। তবে এখানে কিছু বাংলাদেশী লোক জুয়া মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কাজে জড়িত আছে এবং কখনো কখনো এইসব অপরাধী ধরা পড়ে দেশের বদনাম করে।
একজন সাধারণ লোক হতে একজন প্রবাসী বেশী তার পরিবার ভক্ত, বেশী সমাজ ভক্ত, বেশী দেশ ভক্ত। আর তাঁরাই পরিবার সমাজ দেশ হতে বেশী বঞ্চনার স্বীকার হয়। মনে হয় নিরীহ শ্রমিকগণ সবচেয়ে বেশী দেশপ্রেমিক ।
গল্পঃ প্রবাস(২)
২০/৭/২৫
পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় বাহিরে গিয়ে কাজ করতে মজিদ মিয়ার শরীর ও মন সায় দেয় না। তবুও টাকার মায়ায় কিছুটা বিকল শরীর সচল রাখতে হয়। অবশ্য এখন সাথের লোকজনকে কাজ দেখিয়ে ও বুঝিয়ে দিলে চলে।
মাথায় সেপটি ক্যাপ , মুখে গামছা বাঁধা ও হাতে কাজের মোজা পরা মজিদ মিয়া আকাশ পানে চেয়ে বিটবিট করে বলে আজ এত গরম। টপ টপ কয়েক ফোঁটা জল পড়ে বালুতে মিশে যায় কিন্তু বুঝা দায় এই জল কপালের নাকি চোখের। কোথায়ও কোনো মেঘ নাই আকাশে। একটা পাখিও নেই এই তপ্ত রোদে । কিন্ত একটা ইদুর গর্ত হতে বের হয়ে উঁকি দেয় বার বার। হয়তো আমাকে বিদ্রূপ করে বেটা জীবন দাও এই গরমে।
কাজ হতে এসে রান্নাঘরে একদম যেতে ইচ্ছে করছে না। এতোই ক্লান্ত যে বিছানায় পড়তেই ঘুমের রাজ্যে। চোখ খুলে হোসনা বেগমের ভিডিও কলের আওয়াজে।
আজ তোমাকে বলে ছিলাম কিছু টাকা দিতে
আর তুমি ঘুমাতেছো। টাকার মায়া এখন অনেক তোমার যখন মা বাপ ভাই বোনকে কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়েছো তখন মায়া ছিলো না I
ফুরুত করে একদলা পানির ফিনকি ফেলে হোসনা বেগম গদগদ করে কথাগুলি মজিদ মিয়াকে বলে।
আরে তুমি রাগ করছো কেনো!আমার বউ বাচ্চার জন্য টাকা দিবো এতে টাকার মায়া হবে কেনো। ধীর শান্ত কণ্ঠে মজিদ মিয়া বউকে শান্ত করতে চায়। আজ খুব গরম কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি তাই ঘুম দিলাম। রান্নাও করি নাই হোটেলে খেতে যাবো তখন টাকা পাঠিয়ে দিবো। মাত্র সন্ধ্যা হলো এখানে।
কেমন আছো। ছেলে-মেয়ে কেমন আছে? মজিদ মিয়া জিজ্ঞাসা করে বউকে।
ঠিক আছে এখন রেখে দাও, টাকা দিয়ে ফোন দিও। আবারও ফুরুত করে একদলা ফিনকি ছুড়ে ফেলে হোসনা বেগম।
আসলে বাহিরে যেতে এখন মন সায় দিচ্ছে না। কিন্তু এখন যেতে হবে। নিজের ওজনহীন শরীর হতে একটা বহু ওজনের দীর্ঘশ্বাস বের হয়। এখানে বহু বাংলাদেশী লোকজনের হোটেল আছে তবে মজিদ মিয়া অপারগ হলেই হোটেলে খেতে যায়। চলচাতুরি এবং বাটপারি এখানেও সমানে করে কিছু কিছু বাংলাদশী লোক।
একদম সস্তা দামের তেল ব্যবহার করা, পুরাতন খাবার নতুনের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রী করা, পচা ও অবিক্রীত সবজি কমদামে এনে রান্না করা, উটের মাংসকে গরুর মাংস বলে বিক্রী করা বাংলাদেশী হোটেল মালিকদের একদম ছোট্ট প্রতারণার নমুনা। আইনের প্যাচে পড়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে বেশী লাভের লোভ ছাড়তে পারে না , কঠোর আইন আছে আইনের প্রয়োগও আছে তবুও ভয় পায় না।
কারণ খরিদ্দারগণও বাংলাদেশী , একজন বাংলাদেশীকে ঝামেলায় ফেলতে চায় না বলে আইন প্রয়োগ সংস্থাকে ফোন করে ধরিয়ে দেয় না। তবে এখানে কিছু বাংলাদেশী লোক জুয়া মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমুলক কাজে জড়িত আছে এবং কখনো কখনো এইসব অপরাধী ধরা পড়ে দেশের বদনাম করে।
একজন সাধারণ লোক হতে একজন প্রবাসী বেশী তার পরিবার ভক্ত, বেশী সমাজ ভক্ত, বেশী দেশ ভক্ত। আর তাঁরাই পরিবার সমাজ দেশ হতে বেশী বঞ্চনার স্বীকার হয়। মনে হয় নিরীহ শ্রমিকগণ সবচেয়ে বেশী দেশপ্রেমিক ।
গল্পঃ প্রবাস(২)
২০/৭/২৫
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
আমি-তারেক ২১/০৭/২০২৫Sundor shironam