www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

জীবন এক টুকরা ফসলি জমিন

ঝলমল আলোয় চিকন চিকন চোখের পানির কণা ঝিলিক মেরে গড়িয়ে পড়ে মোবাইলটার উপর। দুইটা শালিক পাখি বসে আছে অতিদূরে,খেজুর গাছে জড়িয়ে আছে একটা বাগান বিলাস ফুল গাছ, এতে পানি দিচ্ছে একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী । মজিদ মিয়া সন্ধ্যার পর একটা সুপার মলের সামনে গাড়ি পার্কিং-এ খেজুর গাছের পাশে বসে দেশে বউ বাচ্চার সাথে কথা বলে। কখনো কান্না করে, কখনো হাসে, কখনো জোর গলায় চিল্লাচিল্লি করে সংসারের হিসাব মিলায়। বৈদ্যুতিক আলোর ঝলকানিতে গাড়ি আসা যাওয়া করে। আবার কখনো কখনো মনের গভীর হাহাকার মিলিয়ে যায় মাসিক বেতনের সুগন্ধীতে। মজিদ মিয়া এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে বহুক্ষণ মোবাইলটার দিকে। স্কিনটা হাত দিয়ে মুছে একবার আবার দেখে আবার হিপ সাইড়ে প্যান্টে মুছে স্কিন আবারও মনোযোগ দিয়ে দেখে ছোট মেয়েটার মায়াবী মুখ l এই মেয়েটাই কখনো কখনো বলে আব্বু তুমি কখন আসবে দেশে।

একজনকে কষ্ট দিয়ে ও নিজেকে কষ্টে রেখে বহুজনকে সুখ দেওয়াই হলো একজন প্রবাসী। আবার বহুজন প্রবাসীকে নেত্রজল বিসর্জন দিতে বাধ্য করা হলো সেই বহুজনের সুখ । মজিদ মিয়া সুখের অর্থ খুজতে চায় বাপ মা, ভাই বোন কিংবা বউ বাচ্চার কাছে।

সেই পঁয়ত্রিশ বছর আগে মজিদ মিয়া দেশ ছেড়ে প্রবাসী হয় যখন দাড়ি-গোঁফই গজাইনি।
পাসপোর্ট করতে ছবির জন্য মুখে কাজল দিয়ে কৃত্রিম গোঁফ করতে হয়েছে কারণ মধ্যপাচ্যে গোঁফের কদর পাহাড় সমান। কৃত্রিম গোঁফের পাসপোর্ট নিয়ে কিশোর কালে পাড়ি জমান মধ্যপাচ্যে তাও আবার নির্মাণ শ্রমিক হয়ে। এরপর আর কখনো পিছনে ফিরে দেখা হয়নি জীবনের অলিগলি। এখনতো মজিদ মিয়ার বৃদ্ধাকাল। প্রবাসের প্রথম মাসে অল্প কিছু দিনার বেতন পেয়ে মায়ের জন্য স্বর্ণের চুড়ি কিনার স্মৃতি মনে পড়লে দেহ মন শিহরিত হয় আজও ।

পর্ব ঃ প্রবাস
১৫/৭/২৫
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ৫২৬৬ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১৫/০৭/২০২৫

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast