www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

ঈদ মহামারী বন্যা ও আমরা ।

কোরবানের শাব্দিক অর্থ হল- নৈকট্য অর্জন করা, কাছাকাছি যাওয়া। পারিভাষিক অর্থে ‘কোরবানি’ ঐ মাধ্যমকে বলা হয়, যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাসিল হয়। মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ঈদ উৎসব ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ, কোরবানির মূল দীক্ষাই হল আল্লাহর সকল হুকুমের প্রতি পূর্ণ আত্মসমার্পণ করা। আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্যের নমুনাস্বরূপ হযরত ইবরাহীম (আঃ) নিজ প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে (আঃ) আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর হুকুমের প্রতি অতিশয় আনুগত্যের কারণে আল্লাহ তায়ালা তার এ কোরবানিকে কবুল করে নেন, এ ঘটনা আল্লাহর হুকুমের পূর্ণ আনুগত্যতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাই কোরবানিতে মানুষের জন্য অসংখ্য শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে।

কোরবানি অন্যতম শিক্ষা হলো দরিদ্র ও অনাথের সুখ দুঃখে ভাগিদার হওয়া । নামাজে ধনী দরিদ্রের সহাবস্থান এবং কোরবানির মাংস গরিবের মাঝে বিলীয়ে দেওয়ার ইসলামী নির্দেশ তা প্রমাণ করে। মাংস বিলীয়ে দেওয়ার আদেশ এই প্রমাণ করে যে ধনীদের সম্পদে অসহায়দের অধিকার আছে। কোরবানি মুসলমানদের শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব না বলে একে শুদ্ধ জীবন গঠনের অনুশীলন বলা উচিত। যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহের প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ করি। তাওহীদ , একনিষ্ঠতা ও আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা এইটা। দরিদ্র জনগণের দুঃখের ভাগীদার হয়ে আল্লাহের সন্তুষ্টি অর্জনই কোরবানির লক্ষ্য হওয়া উচিত । কোনরকম নিজেকে জাহির করা কিংবা ফায়দা হাসিল এর মনোভাব স্থান লাভ করতে পারবে না । পবিত্র কোরানের সুরা আল -আমের ১৬২ নাম্বার আয়াতে ইরশাদ করেছেন ‘বলুন হে নবী (সাঃ) আমার সালাত আমার কোরবানি আমার জীবন আমার মৃত্যু , শুধুমাত্র বিশ্ব জগতের প্রতিপালক মহান রাব্বুল আলামিনের জন্যই” ।

করোনা কালে খাদ্য এবং চিকিৎসার জন্য যেভাবে হাহাকার দেখা গিয়েছে বন্যাতেও দেখা যাবে। রাষ্টের উচিত ঘুষখোর , চাঁদাবাজ , দুর্নীতিবাজ , মানব পাচারকারি ও জুয়াড়ি হতে জনগণের সম্পদ উদ্ধার করে দুঃস্থ মানুষের মাঝে বিলীয়ে দেওয়া।


মুখ ডুবিযে খাওয়া লোকেরা দেশটার রস খেয়ে ঈদে খাবে বড় বড় গরু , তাদের জন্য প্রতিদিনই ঈদ। কিন্তু আজ এই ঈদ মহামারী ও বন্যার মাঝে খাওয়ার জন্য নিজের ইজ্জত আব্রু বাঁচানোর জন্য ও একটু আশ্রয়স্থলের জন্য যারা সংগ্রামে লিপ্ত তাদের ত্যাগ ও তিতিক্ষার ঈদ । ঈদ আসলে এখনো সাম্য আনতে পারেনি বৈষম্যও কমাতে পারিনি কিন্তু নেতারা ভাষণ দিবেন সাম্যের। সুদখোর, ঘুষখোর , চাঁদাবাজ , দুর্নীতিবাজ , মানব পাচারকারি ও জুয়াড়িরা আজ টাকা দেশে আলমারি ভর্তি করে আবার বিদেশে পাচার করেছে । সিঙ্গাপুর মালেশিয়া যেমন বাড়ি করেছে ব্যবসা পেতেছে তেমনি কানাডা আমেরিকাসহ ইউরোপ এর বিভিন্ন দেশেও তাই করেছে। এই মহামারীতে এই বন্যায় এইসব মানুষ কতটুকু সাহায্যে এগিয়ে এসেছে , মোটেও আসেনি। এসেছে সৎ মানবিক দরদি লোকেরা । কিন্তু দুঃখের বিষয় যারা এগিয়ে আসেনি তারাই নামের সাথে জনদরদি ও সমাজসেবক লিখে কিংবা লিখবে ভোটের সময় ও অন্য সময়।

কিছু কিছু এলাকায় কোরবানি আসলে মেয়ে পক্ষ থেকে জামাই বাড়িতে গরু ছাগল পাঠাইতে হয় । এই মহামারী সময় এইটা বন্ধ করা দরকার । এইসব নিয়মের ফলে প্রায় মেয়ের পরিবারকে হিমশিম খেতে হয়। অনেক এলাকায় মেয়ের বিয়ের সময় একবার কষ্ট করে দিয়ে দেয় যেটা যৌতুকই। ঈদ আসলে আমরা আনন্দিত হই, আরেক পক্ষ আতঙ্কিত হয়।

দয়া করে এসব বন্ধ করুণ লজ্জাজনক কাজ। কোরবানি ওয়াজিব হলে নিজের টাকায় পশু খরিদ করে আল্লাহর নামে কোরবানি করুণ। পাড়া প্রতিবেশী , আত্মীয় স্বজন ,গরিব দুঃস্থ , এতিম ও বিপদগ্রস্ত মানুষের সাধ্যমত খোঁজ খবর রাখতে চেষ্টা করি।
LinkedIn +Facebook
বিষয়শ্রেণী: সমসাময়িক
ব্লগটি ৩৪১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ৩১/০৭/২০২০

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

  • খুবই সুন্দর
  • ইদ মোবারক ভাই।
  • ভালো লাগলো।
 
Quantcast