মানবতা
সেদিন দুই মহিলা কে দেখলাম,চুপচাপ হসপিটালের এক কোনে বসে আছে।খবর নিয়ে জানলাম এদের মধ্যে একজন চল্লিশ এর কাছাকাছি,তার নাকি কয়েকমাস আগে HIV পজেটিভ ধরা পড়ছে।আমার খুব ইচ্ছে হল মহিলা দুজন এর সাথে কথা বলি।কিন্তু আমাকে সবাই নিষেধ করল,মহিলা দুটা নাকি খারাপ পাড়ার।ওরা নাকি খারাপ!!!!
তবুও গেলাম মনের অদম্য ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে।শুনলাম এক যুদ্ধের গল্প,মানবতার গল্প।
চল্লিশ বছরের এই মহিলার সাথে যে আসছে তার বয়স আনুমানিক ২৫/২৬ হবে।সেই বলল গল্পটা।
"আমার যখন মাত্র ১৩/১৪ বছর তখন আমার সৎ বাবা আমাকে এখানে বিক্রি করে দিয়ে যায়।আমার অনেক কষ্ট হত থাকতে।আর তার থেকেও বেশি কষ্ট হত ক্ষুধার।আমাদের ম্যাডামের(যিনি প্রধান) নিয়ম ছিল প্রতিদিন আগে প্রথম দুই খদ্দের এর টাকা তাকে দিয়ে পরের সব আমার।সবার জন্যই এই নিয়ম।কিন্তু আমি এত অত্যাচার সহ্য করতে পারতাম না।প্রায়ই আমার সব টাকা ম্যাডামের কাছে জমা হত,আর আমার ৫ টাকার ভাত খাওয়ার ও পয়সা থাকত না।উল্টা মার খেতাম। আমার সেই দুঃসময়ে এই খালা আমাকে দেখছে।সে ম্যাডাম কে বলে আমার ঘরে একটার বেশি খদ্দের ঢুকাতে নিষেধ করে।আমার ভাগের টাকা এই খালাই ম্যাডাম কে দিত।আমার খাবারের ব্যবস্থাও এই করছে।আমাকে খাওয়াও দিত সে সুযোগ পেলে।
ওসব অনেক আগের কথা।এখন খালা অসুস্থ, খালার ঘরে খদ্দের ঢুকা নিষেধ।খালার ব্যবসা বন্ধ।এখন ম্যাডাম খালা কে বের করে দিতে চায়।আমি দিতে দেইনি।খালা এখন আমার কাছে থাকে।খালার খাবার,ওষুধ সব এখন আমিই দেখি।খালার সব দায়িত্ব এখন আমার।" কথাগুলো শেষ করে মহিলা একটা প্রশান্তির হাসি হাসল।আর সেই চল্লিশ বছরের মহিলাও হাসছে।দেখে খুব ভাল লাগল।
এমন সময়ে তাদের ডাক আসায়,তারা দুজনে উঠে রওনা দিল।আমি পিছন থেকে ডেকে বললাম,"আচ্ছা,কখনও যদি ওই নরক থেকে বের হয়ে আসার সুযোগ হয়,আপনি আসবেন?" মহিলা হেসে বলল "আপু ছোট আছো,তাই দুনিয়াটা এখনও বুঝোনি।এটা সম্ভব না আপু।ওটা নরক ঠিক,কিন্তু এই সমাজে আমাদের মত মেয়েদের জন্য কোন জায়গা নেই।আমাদের জন্য এই সমাজে না আছে ভালবাসা,না আছে মায়া।আছে শুধুই লোভ।"
আমি অবাক হয়ে চেয়ে ভাবলাম হয়ত এটাই সত্যি।
তবুও গেলাম মনের অদম্য ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে।শুনলাম এক যুদ্ধের গল্প,মানবতার গল্প।
চল্লিশ বছরের এই মহিলার সাথে যে আসছে তার বয়স আনুমানিক ২৫/২৬ হবে।সেই বলল গল্পটা।
"আমার যখন মাত্র ১৩/১৪ বছর তখন আমার সৎ বাবা আমাকে এখানে বিক্রি করে দিয়ে যায়।আমার অনেক কষ্ট হত থাকতে।আর তার থেকেও বেশি কষ্ট হত ক্ষুধার।আমাদের ম্যাডামের(যিনি প্রধান) নিয়ম ছিল প্রতিদিন আগে প্রথম দুই খদ্দের এর টাকা তাকে দিয়ে পরের সব আমার।সবার জন্যই এই নিয়ম।কিন্তু আমি এত অত্যাচার সহ্য করতে পারতাম না।প্রায়ই আমার সব টাকা ম্যাডামের কাছে জমা হত,আর আমার ৫ টাকার ভাত খাওয়ার ও পয়সা থাকত না।উল্টা মার খেতাম। আমার সেই দুঃসময়ে এই খালা আমাকে দেখছে।সে ম্যাডাম কে বলে আমার ঘরে একটার বেশি খদ্দের ঢুকাতে নিষেধ করে।আমার ভাগের টাকা এই খালাই ম্যাডাম কে দিত।আমার খাবারের ব্যবস্থাও এই করছে।আমাকে খাওয়াও দিত সে সুযোগ পেলে।
ওসব অনেক আগের কথা।এখন খালা অসুস্থ, খালার ঘরে খদ্দের ঢুকা নিষেধ।খালার ব্যবসা বন্ধ।এখন ম্যাডাম খালা কে বের করে দিতে চায়।আমি দিতে দেইনি।খালা এখন আমার কাছে থাকে।খালার খাবার,ওষুধ সব এখন আমিই দেখি।খালার সব দায়িত্ব এখন আমার।" কথাগুলো শেষ করে মহিলা একটা প্রশান্তির হাসি হাসল।আর সেই চল্লিশ বছরের মহিলাও হাসছে।দেখে খুব ভাল লাগল।
এমন সময়ে তাদের ডাক আসায়,তারা দুজনে উঠে রওনা দিল।আমি পিছন থেকে ডেকে বললাম,"আচ্ছা,কখনও যদি ওই নরক থেকে বের হয়ে আসার সুযোগ হয়,আপনি আসবেন?" মহিলা হেসে বলল "আপু ছোট আছো,তাই দুনিয়াটা এখনও বুঝোনি।এটা সম্ভব না আপু।ওটা নরক ঠিক,কিন্তু এই সমাজে আমাদের মত মেয়েদের জন্য কোন জায়গা নেই।আমাদের জন্য এই সমাজে না আছে ভালবাসা,না আছে মায়া।আছে শুধুই লোভ।"
আমি অবাক হয়ে চেয়ে ভাবলাম হয়ত এটাই সত্যি।
মন্তব্য যোগ করুন
এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।
মন্তব্যসমূহ
-
সুকান্ত ১৪/১০/২০১৬মন খারাপ করে দেওয়া ঘটনা। ভালো লেখা