www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

পোড়ো বাড়ির রহস্য - পর্ব - ৬

পর্ব - ৬

....................তাড়াতাড়ি করে বাড়ি ফিরলাম।

পটল আর পেঁচা'কে বিকেলে দেখা করার জন্য এস এম এস করলাম।

চুপচাপ বসে আছি। এমন সময় বাবা এসে বললেন, " কি ব্যপার খোকা ! গতকাল রাতে কোথায় ছিলি ! একটা ফোন তো করতে হয়। জানিস তো মা - বাবা'র চিন্তা হয়। বাবার মন বুঝলেও মায়ের মন বোঝে না। "
আমি কিছু বলতে যাব ভাবছি বাবা আবার শুরু করলেন। তবে এবার কাকুতি ভরা কন্ঠে, " জানিস খোকা। চিন্তা হওয়াটাই স্বাভাবিক। কয়েকদিন ধরে শুনছিস তো মানুষ নিখোঁজ হচ্ছে। পরের দিন থেকে যেখানেই থাকিস একটা কল করিস। "
এতক্ষণ পর জ্যাঠামশায়ের গলা শুনতে পেলাম। বললেন, " কি হয়েছে ? খোকা কোথায় ছিল গতকাল রাতে। "
জ্যাঠামশায় সবেমাত্র স্নান সেরে খবরের কাগজটা নিয়ে বসেছেন। বাবারও স্নান শেষ। সবাই ব্রেক ফাস্টের জন্য অপেক্ষারত। দিদিভাই ও মা রান্নাঘরে ।

মায়ের ব্রেক ফাস্ট নিয়ে আসতে এখনও মিনিট পাঁচেক বাকি। ততক্ষণে আমি আমাদের পরিবারের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তোমাকে দিচ্ছি। আমাদের পরিবারে মোট পাঁচ জন। আমি, বাবা, মা, জ্যাঠামশায় ও জ্যাঠামশায়ের মেয়ে অর্থাৎ আমার দি'ভাই। দি'ভাইয়ের মা বছর দশেক হল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দি'ভাই একটা বেসরকারী অফিসে বছর দুয়েক হল চাকরি পেয়েছে। আর জ্যাঠামশায় এক সময় চাকরি করলেও এখন রিটেয়ার হয়ে গিয়েছেন। আর আমার বাবা একজন শিক্ষক।

মা ব্রেক ফাস্ট দিয়ে গিয়েছেন। জ্যাঠামশায় খবরের কাগজ পাশে রেখে আফসোস করে বললেন, " ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে। কবে যে সেটা সম্ভব হবে ! কবে যে রাজনৈতিক দলগুলো নিজের স্বার্থে'র কথা না ভেবে দেশের স্বার্থে'র কথা ভাববে ! "
বাবা প্রত্যুত্তরে বললেন, " অনৈতিকতায় দেশ ছেঁয়ে গেছে। " জ্যাঠামশায় আমার দিকে ফিরে বললেন, " খোকা তোর দি'ভাইয়ের বিয়ের সম্বন্ধ তো শেষ। এবার কার্ড ছাপানো থেকে নিমন্ত্রণ করা, সব দায়িত্ব তোর কিন্তু। " দি'ভাই একটু আগে আমার পাশের চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসেছিল। আমি ওর দিকে ফিরে বললাম, " দি'ভাই তোর বিয়ের পর তুই কাকে সবচেয়ে বেশি মিস করবি !" দি'ভাই হাসতে হাসতে বললো, " তোকে তো একদমই নয়। "

আরও কিছুক্ষণ আড্ডা, ঠাট্টা চলার পর আমি ঘড়ির দিকে তাকালাম।

তোমরা এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছো, আমি কতটা অস্বস্তি অনুভব করছি।আর সেটাই স্বাভাবিক। কারণ আমার ভাবনায় এখন অন্যকিছু।

আজ ব্রেক ফাস্ট করতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছে। বাবা আর দি'ভাই গুছিয়ে ঘন্টাখানেকের মধ্যে অফিসে বেরিয়ে পড়লেন। জ্যাঠামশায় আবার খবরের কাগজের পাতা উল্টাতে লাগলেন। আর এখন আমাদের অনলাইনে ক্লাস হওয়ায় কলেজ যেতে হয় না।

বিকেলে পটল আর পেঁচা'র সাথে আবার দেখা হল।

পটল ব্যস্ততার সাথেই আমার দিকে ফিরে বললো, " বল। কি বলবি ? এস এম এস করে জরুরি তলব !"
আমি বললাম, " একজন গল্প প্রিয় বয়স্ক ব্যক্তি'র সাহায্য লাগবে পোড়োবাড়ির রহস্য ভেদ করতে। আগে ঐ বাড়ির সম্পর্কে সবকিছু জানতে হবে। "
পেঁচা তাড়াতাড়ি বললো, " তোর জ্যাঠামশায় আছে তো অগ্নি। উনাকে জিজ্ঞাসা করলেই তো উনি সাহায্য করতেন। আমি মুখের উপর একটা আঙুল দিয়ে চুপ করার ইঙ্গিত দিয়ে বললাম, " আমার বাড়িতে জানতে পারলে রহস্য রহস্যই থেকে যাবে বন্ধু। আর বাড়িতে জানানোর ইচ্ছা থাকলে বাড়িতে মিথ্যা কথা কখনও বলতাম না ভাই।" পেঁচা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, "তাহলে উপায় কি ? জানা শোনা এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়াও তো মুশকিল।" কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর মাথা চুলকাতে চুলকাতে পটল বললো, " একটা মানুষ আছেন, তবে খুব জানা শোনা নয়। আমি তার অপরিচিত বলতে পারিস। "

আমি ব্যস্ততার সাথেই জিজ্ঞাসা করলাম, " কে সেই গল্প প্রিয় একটু অপরিচিত মানুষ'টা ?? "

চলছে .............
বিষয়শ্রেণী: গল্প
ব্লগটি ১৯৫ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ০৬/০১/২০২২

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast