www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

কবরে প্রশ্নটি কয়টি

খুব ছোট বেলা থেকেই শুনে এসেছি (পড়েনি কখনো) কবরে প্রশ্ন করা হবে তিনটি। আর এখন যাচাই করতে গিয়ে দেখছি কবরে নেককারকে প্রশ্ন করা হবে চারটি!

যা আমাদের পূর্বপুরুষ আলেম ওলামাদের শিক্ষার বিপরীত। যারা কাফের, মুনাফিক, মুরতাদ, নাস্তিক, জাহান্নামী ইত্যাদি, তাদেরকে কবরে প্রশ্ন করা হবে তিনটি। তাদের চার নাম্বার প্রশ্ন করা হবেনা। কেননা যারাই প্রথম তিন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে কেবলমাত্র তাদের জন্যই চার নাম্বার প্রশ্ন।

তাহলে আলেমগণ আমাদের নেককার না হয়ে বদকার হওয়ার জন্যই কি নসিহত করতো? যদি তাই না হতো তাহলে কেন আমাদের চার নাম্বার প্রশ্নের উত্তর শেখালেন না? এই চার নাম্বার প্রশ্নের উত্তরে রয়েছে যাবতীয় গোপন রহস্য!

আসুন আমরা পবিত্র হাদিস থেকেই জেনে নিই চার নাম্বার প্রশ্নটি কী? আল-বারাআ ইবনু ‘আবিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মৃত ব্যক্তি (যখন তার দাফন শেষ হয়) তাদের জুতার শব্দ শুনতে পায় যখন তারা ফিরে যেতে থাকে, অতঃপর তার নিকট দু’জন ফেরেশতা এসে তাকে বসিয়ে উভয়ে প্রশ্ন করে, (১) তোমার রব কে? তখন সে বলে, আমার রব আল্লাহ। তাঁরা উভয়ে তাকে প্রশ্ন করে, (২) তোমার দ্বীন কি? সে বলে, আমার দ্বীন হলো ইসলাম। তারা প্রশ্ন করে, (৩) এ লোকটি তোমাদের মধ্যে প্রেরিত হয়েছিলেন, তিনি কে? তিনি বলেন, সে বলে, তিনি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তারপর তারা উভয়ে আবার (প্রশ্ন করে) বলে,(৪) তুমি কী করে জানতে পারলে? সে বলে, আমি আল্লাহর কিতাব পড়েছি এবং তার প্রতি ঈমান এনেছি এবং সত্য বলে স্বীকার করেছি। (সংক্ষেপিত, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৭৫৩, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস)


উপরোক্ত সহিহ্ হাদিস থেকে সুস্পষ্ট যে, যে ব্যক্তি নেককার সে তিনটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে। এবং তাকে পরবর্তী চার নাম্বার প্রশ্ন করা হবে যে, এইসব তুমি জানলে কী করে? তার উত্তর সে দিবে আল্লাহ্‌র কিতাব তথা কুরআন থেকে জেনেছি।

সুতরাং কবরে প্রশ্নের যে সঠিক উত্তর দিতে পারবে, তাকে অবশ্যই কুরআন জানতে হবে। যে কুরআন জানবে না সে কখনোই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে না। হাদিসে এসেছে, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
"আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (কবরে) মুনাফিক বা কাফির ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা হবে, তুমি এ ব্যক্তি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে কী বলতে? সে উত্তরে বলবে, আমি জানি না। লোকেরা যা বলত আমি তা-ই বলতাম। তখন তাকে বলা হবে, তুমি না নিজে জেনেছ, না তিলাওয়াত করে শিখেছ। আর তাকে লোহার মুগুর দ্বারা এমনভাবে আঘাত করা হবে, যার ফলে সে এমন বিকট চিৎকার করে উঠবে যে, দু’ জাতি (মানুষ ও জ্বিন) ছাড়া তার আশপাশের সকলেই তা শুনতে পাবে। (সংক্ষেপিত, সহিহ বুখারী- ১৩৭৪)

অনুরূপভাবে অন্য হাদিসে এসেছে, আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কবরে কাফির বা মুনাফিককে বলা হবে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে তুমি কী বলতে? তখন সে বলবে, আমি কিছুই জানি না; অন্যান্যরা যেরূপ বলত আমিও তদ্রুপ বলতাম। তখন তাকে বলা হবে, তুমি কিছু বুঝতেও পারোনি এবং তুমি (শরীয়তের সঠিক জ্ঞানের অধিকারীদের) অনুসরণও করনি। অত:পর তার কর্ণদ্বয়ের মাঝখানে এক আঘাত করা হবে, তখন সে বিকট চিৎকার করে যা মানুষ এবং জিন ব্যতীত অন্য যারা তার আশে পাশে থাকবে তারা তা শুনতে পাবে। (সংক্ষেপিত সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ২০৫১, সহিহ হাদিস)

উপরোক্ত হাদিস সমূহ থেকে এটা প্রমাণিত যে, কবরে জান্নাতীদের অবশ্যই চারটি প্রশ্ন করা হবে। এবং যারাই আল্লাহ্‌র কিতাব সম্পর্কে জানবে এবং যাচাই করে সঠিক জ্ঞানের অনুসরণ করবে কেবলমাত্র তারাই কবরের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে। আর যারাই আল্লাহ্‌র কিতাব এবং যাচাই করে সঠিক জ্ঞানের অনুসরণ করবে না তারা সঠিক উত্তর দিতে ব্যর্থ হবে।

সুতরাং দ্বীন ইসলাম পালনের মূল হলো কুরআন জানা এবং যাচাই করে দ্বীন পালন করা। পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুসরণে শুনে শুনে দ্বীন পালন করলে তা কখনোই সঠিক হবে না।(হাদিসসমূহ আল হাদিস অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ থেকে কপিকৃত)




সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী
পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম।
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ১৭৩ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ১০/১১/২০২২

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast