www.tarunyo.com

সাম্প্রতিক মন্তব্যসমূহ

রাত পোহাবার আগে ৮

দুই ভাই বনের মধ্যে ছোট অন্তু।অন্তুর বড়বোন আফরুজা অমি একসময় শিক্ষকতা করতেন।এখন তিনি শুধু মাত্র গৃহিনী ।তার ¯স্মামী চাননা স্ত্রী অন্যর অধীনস্ত থাক,তাছাড়াও পর পুরুষদের সঙে মেলা মেশা তার মোটে ও পছন্দ নয়।মোট কথা স্বামী সন্তষ্ঠীর জন্যই চাকুরী ছাড়লো অমি,।
নিজের যে ভালো লাগতো তা নয়। বিয়ের সাত বছর পর সন্তান আরাফাতের জন্ম । অনেক সাধনার সে সন্তান কে রেখে স্কুলে গিয়ে মোটে ও স্থীর হতে পারেননা অমি।হোক অল্প  আয়ের জীবন তবু ও সুখ আছে,সান্তি আছে এ জীবনে।সারা  দিন অফিস করে ঘরে ফিরে নিজেরি  ভালো লাগতো না তার,কে স্মীমী আর কে সন্তান,কাজের মেয়ে যা রাধতো তাই খেয়ে শইতে পারলেই বাচি..।
স্বামী রেজু সারাক্ষন রাগা রাগি করতেন।বলতেন তার পয়সার দরকার নেই, তার একটা সংসার দরকার,একটু সুখ দরকার।ঘরের বউ বাহিরে থাকলে ঘরের সেৌন্দয্য থাকে কেমন করে। আমার বউ চাই আমার সন্তান চাই টাকা চাইনা আমার।
অমির শশুর শাশুড়ী চাননা ছেলের বউ ঘরের বাহিরে যাক।টাকার কাঙাল নয় তারা ।তারা একটু সুখ চায় ভালোবাসা চায়  ।
এ সংসারের সব দায়িত্ব বড়ছেলের বউ হিসেবে অমির,অমিই যদি চাকুরি নিয়ে বাহিরে পরে থাকে তবে ঘর সামলাবে কে ।কে ধরবে এ সংসারের ভার ।তার শাশুরির বয়স হয়ে গেছে ,তিনি আর তেমন চোঁখে দেখতে পাননা। চার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, বড় ছেলের বউ অমি,
আর ছোট দুই ছেলের এখনো বিয়ে হয়নি ।সবায় অমিকে খুব ভালোবাসে কিন্তু সে ভালোবাসা গোপনে ফিকে হয়ে উঠছিল ,অমি বুদ্ধি মতি মেয়ে বুঝতে পেরেই চাকুরি টা ছারলেন।অমি বুঝতে পেরেছে সবার জন্য সব কিছু নয় ।এখন সুখে আছে অমি,খাস পর্দা নিয়েছেন ,শশুর পরহেজগার,ছেলেরা ও সবাই নামাজি।শাশুড়ি সব সময় ছেলের বউয়ের কাছে হাদিছি বই পড়ে শোনেন ।
অন্তুর খুব ভালোলাগে বনের বাসায় আসলে,মনে হয় এমন একটি পরিবার তার ও হবে ।সে বিয়ে করলে হানিমন টা বনের বাসায় করবে।বউ যেন বুঝতে পারে তার স্বামি কি চায় ।বুঝবে তো ,নাকি ?
কেমন যেন অন্য মনস্ক হয়ে যায় অন্তু...

মাসুম কদিন থেকেই লক্ষ্য করছে মুন্নি কলেজে যাচ্ছে না। মম’র কাছে বলে কোনো কারণ জানতে পারেনি সে। তার অফিসে ক’দিন বাড়তি চাপের কারণে সংসারের কোনো খবর রাখতে পারেনি। কিন্তু আজ অফডে থাকায় বাসায় থাকলো সারাদিন। সংসারের খুটিনাটি অনেক কাজ করলো। বাগান পরিস্কার, ড্রেন পরিস্কার, ঘরের বাইরে-ভিতরে ঝাঁড়া মুছা কতো কাজ করলো সকলে মিলে। মুন্নি রাঁধছিলো সেখানেও কিছুটা সহযোগিতা করলো মাসুম। মুন্নিকে রাঁধতে দেখে কেন জানি বার বার মনে পড়ছিলো তার মাকে। একদিন মা মুন্নিকে রাঁধতে বলায় মাসুম বলেছিলো রেঁধে খেতে হবে। এখন থেকে রেধে খাইতে হলে শশুর বাড়ি গিয়ে হাফিয়ে উঠবে মা তুমি বরং একটা বেটি রাখো। মা হেসে বলেছিলো, কেন শিখতে হবে না। পরের বাড়ি গিয়ে করতে হবে না। তুই বুঝি সেখানে যাবি?
ঃ কি যে বলো না মা। সেখান গিয়ে রাঁধতে রাঁধতেই শিখে যাবে। তোমার মেয়ে না। আমি যাবো বইকি প্রতি সপ্তাহে। কি বলিস মুন্নি?

ঃ তোমাকে না দেখে আমি থাকতেই পারবো না।
    ঃ দেখেছো মা। শুনেছো এবার।
ঃ হ্যাঁ, এই জন্যই তো তোদের নিয়ে আমার এতো ভাবনা। জীবন বাস্তবতার কাঠিন্যকে তোরা মানতে চাস না। কি যে আছে তোদের ভাগ্যে আল্লাহই ভালো জানে।
মা যেন সেদিন দেখতে পেয়েছিলো তাদের কঠিন জীবনের রূপ।
ঃ ভাইয়া, দেখতো বিরানিটা। কেমন হয়েছে?
মুন্নির কথাই ফিরে আসে মাসুম। তবু সে মায়ের মুখের ছবি ভুলে না সে। মম মুক্তা ফুল গাছগুলো পরিচর্চা করেছে এখন। ওপর থেকে চেয়ে আছে একজোড়া চোখ। সবাই এক সংগে খেতে বসে মাসুম বললো,“জানিস আমাদের অর্ফিসে না একটা মজার ঘটনা ঘটেছে।”
মম উৎসুক চোখে বললো,“তাই নাকি?”
মুন্নিও তাকালো। মুক্তা মজা কথাটা শুনেই হাঁ হাঁ করে হাসতে লাগলো।
ঃ কিরে তুই হাসছিস কেন?
ছোট্ট মেয়েটার নিষ্পাপ হাসি যেন মুহূর্তেই উদাস করে তুললো সবাইকে। মম এবার নড়ে সড়ে বসে বললো,“বলো ভাইয়া, তোমার সেই মজার ঘটনাটা বলো।”
মুক্তা তখনো হাসছে। এই পিচ্চি আবার তুই। মুক্তা ভয় পেয়ে গেলো মম’র ধমকে। মাসুম আদর করে দিলো মুক্তাকে। মমকে বললো,“মম, এভাবে কখনো মুক্তাকে ধমক দিবি না। ও ছোট মানুষ না? ছোট মস্তিষ্কের আঘাত, মস্তিককে ক্ষতিগ্রস্থ করে।”


চলবেই
বিষয়শ্রেণী: অন্যান্য
ব্লগটি ৬৫১ বার পঠিত হয়েছে।
প্রকাশের তারিখ: ২৪/১১/২০১৬

মন্তব্য যোগ করুন

এই লেখার উপর আপনার মন্তব্য জানাতে নিচের ফরমটি ব্যবহার করুন।

Use the following form to leave your comment on this post.

মন্তব্যসমূহ

 
Quantcast